Samakal:
2025-07-31@06:26:21 GMT

রমজানে কোরআন অধ্যয়ন

Published: 27th, February 2025 GMT

রমজানে কোরআন অধ্যয়ন

রমজান মাসে সপ্তম আকাশের লওহে মাহফুজ থেকে দুনিয়ার আকাশে বায়তুল ইজ্জতে পবিত্র কোরআন একবারে নাজিল হয়। সেখান থেকে আবার রমজান মাসে অল্প অল্প করে মহানবী হজরত মুহাম্মদ (সা.)-এর প্রতি নাজিল হতে শুরু করে। কোরআন নাজিলের দুটি স্তরই রমজান মাসকে ধন্য করেছে। শুধু আল কোরআনই নয়, বরং হজরত ইব্রাহিম (আ.)-এর সহিফা, তাওরাত, যাবুর, ইঞ্জিলসহ সব ঐশীগ্রন্থ রমজান মাসে অবতীর্ণ হয়েছে বলে তাবরানি বর্ণিত একটি সহি হাদিসে উল্লেখ করা হয়েছে (সহি আল-জামে)।

এ মাসে মানুষের হেদায়াত ও আলোকবর্তিকা যেমন নাজিল হয়েছে, তেমনি আল্লাহর রহমত হিসেবে এসেছে সিয়াম। তাই এ দুই নিয়ামতের শুকরিয়া আদায় করতে বেশি বেশি কোরআন তেলাওয়াত করা উচিত। প্রতিবছর রমজান মাসে হজরত জিব্রাইল (আ.

) মহানবী (সা.)কে পূর্ণ কোরআন পড়ে শোনাতেন এবং মহানবী (সা.)ও তাঁকে পূর্ণ কোরআন পড়ে শোনাতেন। জীবনের শেষ রমজানে আল্লাহর রাসুল (সা.) দু’বার পূর্ণ কোরআন তেলাওয়াত করে শুনিয়েছেন। 
পবিত্র কোরআনের অংশবিশেষ পাঠ ব্যতীত প্রধান ইবাদত নামাজও আদায় হয় না। এ জন্যই সহিভাবে পবিত্র কোরআন শিক্ষা করা সবার জন্য অত্যন্ত জরুরি। কমপক্ষে নামাজ পড়তে যতটুকু প্রয়োজন, ততটুকু শেখা ফরজে আইন। যে ব্যক্তি যত বেশি কোরআনের ধারক-বাহক হবেন, তাঁর সম্মান তত বেশি হবে। রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, ‘কোরআনওয়ালাই আল্লাহওয়ালা এবং আল্লাহর খাস পরিবারভুক্ত।’ ‘যে অন্তরে কোরআন নেই, তা যেন পরিত্যক্ত বিরান ভূমি।’ 

কোরআন মজিদ দুনিয়ার সর্বাধিক পঠিত, সর্বাধিক ভাষায় অনূদিত ও সর্বাধিকসংখ্যক প্রকাশিত গ্রন্থ। যারা কোরআন তেলাওয়াত, চর্চা ও অনুশীলন করবে না, তাদের বিরুদ্ধে রোজ কিয়ামতে আল্লাহ তায়ালার আদালতে মহানবী (সা.) অভিযোগ করবেন। তিনি বলবেন, ‘হে আমার রব! এই লোকেরা কোরআন পরিত্যাগ করেছিল (সুরা ফুরকান, আয়াত: ৩০)।’
কোরআন শিক্ষা করা ফরজ; শিখে ভুলে গেলে মারাত্মক গুনাহ হয়; অশুদ্ধ বা ভুল পাঠ করলে কঠিন পাপের কারণ হতে পারে। তাই কোরআন সহি ও শুদ্ধভাবে শেখা ও তেলাওয়াত করা জরুরি। যারা পড়তে জানেন না, তাদের শিখতে হবে। যারা শিখে ভুলে গেছেন, তাদের পুনরায় পড়তে হবে। যারা ভুল পড়েন, তাদের সহিভাবে পড়া শিখতে হবে।
রমজান মাস ব্যতীত বছরের ১১ মাসে কোরআন তেলাওয়াতে ১টি হরফ পাঠ করলে ১০টি নেকি; আর পবিত্র কোরআন নাজিলের মাসে রমজানুল মোবারকে ১টি হরফ তেলাওয়াতের বদলে ৭০ নেকি পাওয়া যায়। রমজানুল মোবারক হলো মুসলিম উম্মাহর জন্য সুপার অফার। যে যত বেশি কোরআন তেলাওয়াত করবে, সে তত বেশি আল্লাহর নৈকট্য লাভ করবে। তাই সহি ও শুদ্ধভাবে কোরআন তেলাওয়াতে আমরা আরও বেশি মনোযোগী হবো ইনশাআল্লাহ।

অনেক সময় দেখা যায়, কোনো কোনো কোম্পানি বিশেষ পণ্যের অফার বা ডিসকাউন্ট দিয়ে বিক্রি করে এর সময় বেঁধে দিয়ে। মহান আল্লাহ তাঁর প্রিয় হাবিব মহানবী হজরত মুহাম্মদ (সা.)-এর উম্মতকে তাঁর নৈকট্য লাভের জন্য বিশেষ অফার দিয়েছেন। তা হলো রমজানুল মোবারক। রমজান মাসেই রয়েছে এমন এক রাত, যা হাজার মাস অপেক্ষা উত্তম।
উল্লেখ্য, পূর্বেকার নবী-রাসুল (আ.)-এর উম্মতরা দীর্ঘ হায়াত পেতেন। কিন্তু উম্মতে মুহাম্মদী সাধারণত ৭০-৮০ বছর হায়াত পান। উম্মতে মুহাম্মদীর আয়ু যেহেতু খুবই স্বল্প, তাই মহান আল্লাহ দয়া করে তাদের জন্য কোরআন নাজিলের এ মাসের শেষ দশকে লাইলাতুল কদর উপহার ‍দিয়েছেন। যে রাতের একটি নেক আমল হাজারটি নেক আমলের চেয়ে উত্তম। তাই আমরা যদি স্বাভাবিক ইবাদত-বন্দেগির পাশাপাশি হায়াতে জিন্দেগিতে পাওয়া সব রমজান মাসে এবং কদরের রাতে ফরজ ইবাদতের পাশাপাশি অন্যান্য নফল ইবাদত যেমন– কোরআন তেলাওয়াত, জিকির- আসকার, কবর জিয়ারত ও দান- খয়রাত বেশি বেশি করতে পারি, তাহলে অল্প আয়ুতেও অনেক বেশি নেকি অর্জন করা সম্ভব।

ড. মো. শাহজাহান কবীর: বিভাগীয় প্রধান, ইসলামিক স্টাডিজ, ফারইস্ট ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি, ঢাকা

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: রমজ ন ম স ক রআন ন র জন য আল ল হ

এছাড়াও পড়ুন:

ঢাকার রানওয়ে প্রশিক্ষণ বিমান ওড়ানোর জন্য কতটা নিরাপদ

হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর দেশের সবচেয়ে ব্যস্ততম আকাশপথ। প্রতিদিন অসংখ্য যাত্রীবাহী বিমান, কার্গো, ভিআইপি ও সামরিক-বেসামরিক বিমান, হেলিকপ্টার ওঠানামা করছে এই একমাত্র আন্তর্জাতিক হাব থেকে।

হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর সলো ফ্লাইট প্রশিক্ষণের জন্য উপযুক্ত বা নিরাপদ নয়, কারণ এখানে একাধিক গুরুত্বপূর্ণ ঝুঁকি ও সীমাবদ্ধতা রয়েছে। বিমানবন্দরটি একটি নিয়ন্ত্রিত ক্লাস সি–ডি এয়ারস্পেসের মধ্যে পড়ে, যেখানে প্রতিটি ফ্লাইটকে এয়ার ট্রাফিক কন্ট্রোলের সঙ্গে প্রতি পদক্ষেপে যোগাযোগ রাখতে হয়।

একজন নতুন প্রশিক্ষণার্থী পাইলট, বিশেষ করে একা থাকার সময়, এ ধরনের জটিল রেডিও যোগাযোগ ও সেই নির্দেশ পালন করতে গিয়ে মানসিকভাবে চাপে পড়ে, ককপিট ওয়ার্কলোড বা ককপিটে কাজের চাপ বেড়ে যায়, যা বড় দুর্ঘটনার আশঙ্কা তৈরি করে। 

এ ছাড়া এই বিমানবন্দরে বোয়িং ৭৭৭ বা এয়ারবাস এ-৩৩০-এর মতো বড় বিমানগুলো ওঠানামা করে, যেগুলোর পেছনে তৈরি হওয়া ওয়েক টারবুলেন্স বা আকাশ ঝাঁকুনি ছোট প্রশিক্ষণ বিমানের জন্য মারাত্মক বিপদ সৃষ্টি করতে পারে।

আবার কোনো কারণে এই যোগাযোগব্যবস্থা ব্যাহত হলে মাঝ আকাশে সংঘর্ষও হতে পারে। এর ওপর হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর এবং এর আশপাশের এলাকা অত্যন্ত ঘনবসতিপূর্ণ, ফলে কোনো ইমার্জেন্সি বা বিশেষ পরিস্থিতিতে জরুরি অবতরণের উপযুক্ত জায়গা খুঁজে পাওয়া প্রায় অসম্ভব।

সবশেষে এই বিমানবন্দরে প্রশিক্ষণের জন্য নির্ধারিত কোনো আলাদা সময়সূচি বা নির্দিষ্ট ট্রেনিং এলাকা নেই, যা অনেক দেশের প্রশিক্ষণবান্ধব বিমানবন্দরগুলোতে থাকে। এসব কারণেই এই বিমানবন্দর ছাত্র পাইলটদের একক ফ্লাইট অনুশীলনের জন্য উপযুক্ত নয়। বিকল্প হিসেবে লালমনিরহাট, রাজশাহী, সিলেট, চট্টগ্রাম, যশোরের মতো তুলনামূলকভাবে কম ব্যস্ত ও নিরাপদ বিমানবন্দরগুলো প্রশিক্ষণের জন্য বেশি কার্যকর ও নিরাপদ বলে বিবেচিত।

যেদিন ফ্লাইট লেফটেন্যান্ট তৌকির ইসলাম এফ-৭ যুদ্ধবিমান নিয়ে সলো ফ্লাইটে (একা বিমান নিয়ে)  উড়েছিলেন, সেদিনের আবহাওয়া ছিল একেবারে অনুকূলে—উড়ানের জন্য যথাযথ। তৌকির নিঃসন্দেহে একজন মেধাবী, দক্ষ ও চৌকস বৈমানিক।

আশির দশকে যখন ঢাকা রানওয়ে তৈরি হয়, তা শহর থেকে দূরে নিয়ম মেনেই তৈরি হয়েছিল। রানওয়ে শহরে ঢোকেনি। আমরা আমাদের শহর বানিয়ে রানওয়ে গিলে খেয়েছি। এখন যদি আরও নতুন রানওয়ে বানাই, লাভ হবে কী?

তাঁকে সলো ফ্লাইটের অনুমতি প্রদানকারী প্রশিক্ষকও নিঃসন্দেহে একজন অভিজ্ঞ ও বিচক্ষণ পাইলট। একজন শিক্ষার্থী পাইলটকে ১০০-তে ১০০ বিবেচনা করেই প্রশিক্ষক তাঁর ছাত্র পাইলটকে একা বিমান চালাতে পাঠান। প্রতিটা পদক্ষেপে কোথায় কেমন জরুরি পরিস্থিতি হতে পারে এবং সে ক্ষেত্রে সেই জরুরি পরিস্থিতি মোকাবিলার বিষয়গুলো বাস্তবিকভাবেই হাতে–কলমে আকাশে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়। এসব শেষ হওয়ার পরই একজন প্রশিক্ষণার্থী পাইলটকে একক ফ্লাইট বা একা বিমান উড়াতে দেওয়া হয়।

একজন বিমানচালক হিসেবে আমার প্রথম প্রশ্ন, ঢাকা রানওয়ের আশপাশে কোথাও কি এই অনুশীলনগুলো করা হয়েছে? ফাঁকা জায়গাটা কোথায়?

ঢাকা টাওয়ার যখন প্রশিক্ষণ যুদ্ধবিমানের একক ফ্লাইটের অনুমতি দিল, তখন কি টাওয়ার জানত না, সেই সময় রেগুলার শিডিউল ফ্লাইটের অবতরণ আছে এবং নিয়মিত ট্রাফিক চলাচল বিঘ্নিত হতে পারে এ ধরনের ফ্লাইটের অনুমতি দিলে?

রাজধানীর উত্তরার মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজ ক্যাম্পাসে বাংলাদেশ বিমানবাহিনীর যুদ্ধবিমান বিধ্বস্তের ঘটনায় ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে সিআইডি। অন্যদিকে বিধস্ত বিমানের বিভন্ন অংশ সংগ্রহ করেন বিমান বাহিনীর সদস্যরা। ২২ জুলাই

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • খুলনা প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ে ১৬০ দিন পর শ্রেণিকক্ষে শিক্ষার্থীরা, উৎসবের আমেজ
  • কুয়েটে অচলাবস্থার ১৬০ দিন, ক্লাস শুরু মঙ্গলবার
  • রংপুরে হামলার শিকার পরিবারগুলো আতঙ্কে, বাড়ির মালামাল সরিয়ে নিচ্ছে
  • ঢাকার রানওয়ে প্রশিক্ষণ বিমান ওড়ানোর জন্য কতটা নিরাপদ