‘মব জাস্টিস’ বা ‘মোরাল পুলিশিংয়ের’ বিরুদ্ধে সরকার সব সময় শক্ত অবস্থানে: সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান
Published: 4th, March 2025 GMT
অন্তর্বর্তী সরকার সব সময়ই ‘মব জাস্টিস’ বা ‘মোরাল পুলিশিংয়ের’ বিরুদ্ধে শক্ত অবস্থায় আছে বলে উল্লেখ করেছেন পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন এবং পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান। আজ মঙ্গলবার উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকের পর রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে সংবাদ ব্রিফিংয়ে তিনি এ কথা বলেন।
সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেন, সরকার বারবার তার অবস্থান স্পষ্ট করেছে এই বলে যে মব জাস্টিস (দলবদ্ধ সহিংসতা) বা মোরাল পুলিশিংয়ের (নীতি পুলিশিং) কোনো সুযোগ এ দেশে নেই। সরকার এর বিরুদ্ধে সব সময়ই শক্ত অবস্থায় আছে। যেহেতু আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি সম্পূর্ণভাবে আগে যেভাবে ছিল সেভাবে ফেরত আনা যায়নি, এখনো ফেরত আসেনি, সে ক্ষেত্রে দেখা যাচ্ছে কোনো কোনো জায়গায় এ রকম মব জাস্টিস বা মোরাল পুলিশিংয়ের ঘটনা ঘটছে। সরকারের অবস্থান একেবারে স্পষ্ট, এ রকম মব জাস্টিস বা মোরাল পুলিশিংয়ের কোনো সুযোগ নেই।
রাজধানীর মোহাম্মদপুর এলাকার একটি ঘটনার কথা উল্লেখ করে সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেন, এ বিষয়ে জেনেছেন, উভয় পক্ষ পুলিশের সামনে একটি আপসনামায় স্বাক্ষর করেছে। যেহেতু দুই পক্ষ আপসনামায় স্বাক্ষর করেছে, কাজেই সে ক্ষেত্রে সেটিকে চূড়ান্ত বলে বিবেচনা করতে হচ্ছে। তবে কোনোভাবেই নারীর প্রতি সহিংসতা এবং এ–জাতীয় আচরণ সরকার সমর্থন করে না। এটি আগেই স্পষ্ট করা হয়েছে, আজ আবারও এই বার্তা সাংবাদিকদের মাধ্যমে সবার কাছে পৌঁছে দেওয়া হচ্ছে।
একজন সাংবাদিক প্রশ্ন করেন, মোহাম্মদপুর থানার লালমাটিয়া এলাকার ঘটনার বিষয়ে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা যে বক্তব্য দিয়েছেন তাতে পরোক্ষভাবে মব জাস্টিসকে সমর্থন করা হয়, এ বিষয়ে তিনি উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে দুঃখ প্রকাশ করেছেন কি না বা তাঁর পদত্যাগের যে দাবি উঠেছে তাতে তিনি পদত্যাগ করবেন কি না।
জবাবে সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেন, ‘আবারও বলছি মব জাস্টিস বা মোরাল পুলিশিং এগুলোর কোনো স্থান বাংলাদেশে নেই। এগুলো সমাজে যখনই ঘটছে তখনই ব্যবস্থা গ্রহণ করছি, যে মুহূর্তে আমাদের নজরে আসছে। মোহাম্মদপুরের ব্যাপারেও বলেছি, যেহেতু উভয় পক্ষ মিলে একটি আপস করেছে। কাজেই স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে এর বাইরে যাওয়ার আর কোনো সুযোগ থাকছে না। আর স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা মহোদয় স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টাই থাকছেন।’
সংবাদ ব্রিফিংয়ে একজন সাংবাদিক প্রশ্ন করেন, বিশেষ একটি দলের তৃণমূল থেকে বিভিন্ন পর্যায়ে চাঁদাবাজির সঙ্গে জড়িয়ে পড়ছে বলে প্রায়ই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম বা গণমাধ্যমে আসছে। এটি রোধ করতে সরকার কী পদক্ষেপ নিচ্ছে? জবাবে সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেন, সরকার চাঁদাবাজি রোধে পদক্ষেপ নেবে ও নিচ্ছে। কোন দল বা কোন ব্যক্তি চাঁদাবাজি করল সেটি সরকার দেখবে না। কোনো বিশেষ দলের প্রতি ইঙ্গিত করে থাকলে সে প্রশ্নটি সেই বিশেষ দলকেই করতে হবে। সরকারের অবস্থান হচ্ছে, চাঁদাবাজি বা অন্য অপরাধের বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করছে, যখন তা সরকারের দৃষ্টিতে আসছে।
সংস্কার, নির্বাচন ও বিচারে অগ্রাধিকারজাতীয় নির্বাচন নিয়ে করা এক প্রশ্নের জবাবে উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেন, নির্বাচনের বিষয়ে প্রধান উপদেষ্টা বলেছেন, ডিসেম্বর থেকে আগামী বছরের জুনের মধ্যে নির্বাচনটি হবে। যখন ডিসেম্বর থেকে আগামী বছরের জুনের মধ্যে বলেন, তখন ডিসেম্বর নিয়েই বলা হয়। কাজেই চূড়ান্ত তারিখ প্রধান উপদেষ্টার কাছ থেকে শোনার জন্য অপেক্ষা করার পরামর্শ দেন উপদেষ্টা। তিনি বলেন, ‘আমাদের প্রাধিকারের মধ্যে সংস্কার, নির্বাচন ও বিচার—এই তিনটি। এ ছাড়া দ্রব্যমূল্য, আইনশৃঙ্খলা যেকোনো সরকারের প্রাধিকারের মধ্যে সব সময় থাকে।’
সংবাদ ব্রিফিংয়ে আরও উপস্থিত ছিলেন প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম, উপপ্রেস সচিব মোহাম্মদ আবুল কালাম আজাদ মজুমদার, প্রধান উপদেষ্টার সহকারী প্রেস সচিব সুচিস্মিতা তিথি।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: হ স ন বল ন মব জ স ট স র উপদ ষ ট সরক র র অবস থ ন র জওয় ন
এছাড়াও পড়ুন:
হান্নান এবার বিসিবির কোচিংয়ে
কোচিং ক্যারিয়ারে মনোযোগ দিতে জাতীয় দলের সাবেক নির্বাচক হান্নান সরকার বিসিবির চাকরি ছেড়েছিলেন। এরপর আবাহনী লিমিটেডে যোগ দিয়ে ঢাকা প্রিমিয়ার লিগে দলকে চ্যাম্পিয়ন করেছিলেন। তাঁর কোচিং, খেলোয়াড় ম্যানেজমেন্ট এবং পরিকল্পনায় মুগ্ধ হয়েছিলেন অনেকেই। পরের ঢাকা লিগের জন্য এরই মধ্যে তাঁকে দলে ভিড়িয়েছে লিজেন্ডস অব রূপগঞ্জ। তবে নিজের ক্যারিয়ারকে আরও একধাপ এগিয়ে নিতে আবার বিসিবিতে যুক্ত হচ্ছেন তিনি।
চলতি মাসে বাংলাদেশ অনূর্ধ্ব-১৭ দলের প্রধান কোচ হিসেবে যোগ দিচ্ছেন হান্নান। সামাজিক মাধ্যমে এক ভিডিওবার্তায় তিনি নিজেই জানিয়েছেন এই খবর। এসি রুমের আরামের জীবন ছেড়ে মাঠের ক্রিকেটে কাজ করে বেশি অবদান রাখার ইচ্ছা থেকে নির্বাচকের পদ ছেড়েছিলেন হান্নান। আমিনুল ইসলাম বুলবুলের বোর্ড তাঁকে তাঁর পছন্দের জায়গাতেই ফিরিয়েছে। বিসিবির গেম ডেভেলপমেন্টের আওতায় কাজ করবেন যুবা ক্রিকেটারদের নিয়ে।
ভিডিওবার্তায় হান্নান বলেছেন, ‘‘নির্বাচকের দায়িত্ব থেকে সরে আসার কারণ যা ছিল, কোচিংয়ে পূর্ণ মনোযোগ দেওয়া, কোচিং দিয়ে দেশের ক্রিকেটে অবদান রাখা। সেই চিন্তা থেকে কোচিংয়ে এসে ঢাকা প্রিমিয়ার লিগ করলাম। আবাহনীর হয়ে চ্যাম্পিয়ন হয়েছি।’’
আরো পড়ুন:
এইচপি স্কোয়াডে মোহাম্মদ সালাউদ্দিনের ছেলে সানদিদ
ছন্দে ফিরে ইবাদতের মুখে হাসি, উদযাপনে স্যালুট
‘‘তারপরই ক্রিকেট বোর্ডে যোগদানের ব্যাপারে বলছিলাম। সেটা এইচপি বা অন্য কোথাও হতে পারে। এইচপিতে হয়নি, কারণ অন্য কোচরা ওখানে কাজ করছেন। তাই ক্রিকেট বোর্ড আমাকে বয়সভিত্তিক ক্রিকেটে ব্যবহার করতে চাচ্ছে। আমিও চাচ্ছিলাম, যে কোনো একটা জায়গায় কাজ করে বাংলাদেশ ক্রিকেটে অবদান রাখব।’’
বিকেএসপিতে শুরু হচ্ছে অনূর্ধ্ব-১৬ দলের চ্যালেঞ্জার সিরিজ। তিন দলের এই প্রতিযোগিতা থেকে গঠন করা হবে অনূর্ধ্ব-১৭ দল। তাদেরকেই এগিয়ে নেওয়ার কাজ করবেন হান্নান, ‘‘আপাতত অনূর্ধ্ব-১৭ দিয়ে শুরু করছি। সামনে আরও কিছুর পরিকল্পনা আছে। বয়সভিত্তিক ক্রিকেট দিয়ে যে যাত্রা শুরু করছি, ইনশাআল্লাহ সামনে এক সময় এটি আরও বড় স্বপ্ন পূরণে বড় ভূমিকা রাখবে।’’
৪২ পেরোনো হান্নানের স্বপ্ন জাতীয় দলকেও কোচিং করানো। বয়সভিত্তিক দলের দায়িত্ব নিয়ে আরও একবার নিজের স্বপ্নের কথা বলেছেন তিনি।
ঢাকা/ইয়াসিন/আমিনুল