কুমিল্লায় ২১ কিলোমিটার সড়কের বেশির ভাগেই বন্যার ক্ষত, চলাচলে ভোগান্তি
Published: 5th, March 2025 GMT
কুমিল্লা নগরের প্রবেশপথ শাসনগাছা থেকে ব্রাহ্মণপাড়া উপজেলার মীরপুর পর্যন্ত সড়কটির দৈর্ঘ্য প্রায় ২১ কিলোমিটার। জেলার বুড়িচং ও ব্রাহ্মণপাড়া উপজেলা সদর থেকে জেলা সদরে যাতায়াতের প্রধান মাধ্যম এই সড়ক। এটি মেজর এম এ গনি সড়ক নামে পরিচিত। দীর্ঘদিন ধরেই সড়কটির প্রায় পুরোটায় অসংখ্য গর্ত ও খানাখন্দে ভরপুর। ফলে এ পথে চলাচলকারীদের দুর্ভোগের যেন শেষ নেই।
স্থানীয় লোকজনের ভাষ্য, প্রায় এক বছরের বেশি সময় ধরে সড়কটির বিভিন্ন স্থান ভাঙাচোরা। গত বছরের ২২ আগস্ট রাতে বুড়িচং উপজেলার বুড়বুড়িয়া এলাকায় গোমতী নদীর প্রতিরক্ষা বাঁধ ভেঙে বুড়িচং, ব্রাহ্মণপাড়াসহ কয়েকটি উপজেলা প্লাবিত হয়। এর স্রোত বয়েছে সড়কটির ওপর দিয়ে। বর্তমানে ২১ কিলোমিটার সড়কের বেশির ভাগ স্থানেই বন্যার স্পষ্ট ক্ষত। দ্রুত এটি সংস্কার না করা হলে যান চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়তে পারে। এ ছাড়া এসব খানাখন্দ আর গর্তের কারণে প্রায়ই ঘটছে ছোট-বড় দুর্ঘটনা।
দেখা গেছে, গুরুত্বপূর্ণ এই সড়কে শতাধিক স্থানে পিচ ঢালাই উঠে ইট-সুরকির কঙ্কাল বেরিয়ে এসেছে। সড়কের বেশির ভাগ এলাকাতেই ছোট-বড় অসংখ্য গর্ত। খানাখন্দের কারণে যান চলাচলে চরম সমস্যার সৃষ্টি হচ্ছে। বেহাল সড়কটি নিয়ে গন্তব্যে পৌঁছাতে দ্বিগুণের বেশি সময় লাগছে। শাসনগাছা সংলগ্ন কুমিল্লা আদর্শ সদর উপজেলার পালপাড়া গোমতী সেতু পার হলেই সড়কটিতে ভাঙাচোরা শুরু। ছোট-বড় গর্তের কারণে গাড়ি হেলেদুলে চলে। কুমিল্লা আদর্শ সদর উপজেলার অংশ পার হয়ে বুড়িচং উপজেলার অংশে প্রবেশ করতেই আরও খারাপ অবস্থা চোখে পড়ে। বুড়িচংয়ের ভরাসার, ইছাপুরা, খাড়াতাইয়া এলাকায় খানাখন্দে ভরা সড়কটি। এসব স্থানের অনেক জায়গায় পিচ ঢালাইয়ের কোনো অস্তিত্ব নেই। খাড়াতাইয়া থেকে বুড়িচং উপজেলা সদর পর্যন্ত অবস্থা আরও খারাপ। বেশির ভাগ স্থানেই সড়কের পিচ ঢালাইয়ের কোনো অস্তিত্ব নেই। ব্রাহ্মণপাড়া উপজেলা সদর থেকে টাটারা পর্যন্ত অংশটির একই দশা। কয়েকটি স্থানে পিচঢালাই ও সুরকিও বিলীন হয়ে গেছে।
খাড়াতাইয়া ইসলামিয়া ফাজিল মাদ্রাসার অধ্যক্ষ মাওলানা মো.
বুড়িচং প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক জহিরুল হক প্রথম আলোকে বলেন, বন্যার সময় সড়কটি অধিকাংশ অংশেই কোমর বা বুকসমান পানি ছিল। পুরো স্রোত গেছে সড়কের ওপর দিয়ে। এর কারণে তীব্র স্রোতে সড়কের খাড়াতাইয়া, নতুন বাজার, ইছাপুরাসহ কয়েকটি স্থান পুরোপুরি ভেঙে যায়। বন্যার আগেও সড়কটিতে খানাখন্দ ছিল, তবে বন্যার পর অবস্থা বেশি খারাপ হয়ে পড়েছে।
বুড়িচং সদরের সিএনজিচালিত অটোরিকশাচালক মহিউদ্দিন প্রথম আলোকে বলেন, ‘সড়কটির এত খারাপ অবস্থা গত ১৫ বছরের মধ্যে দেখিনি। বুড়িচং থেকে কুমিল্লা শহরে যেতে আগে সময় লাগত ২০ মিনিট, এখন সেখানে ১ ঘণ্টা লেগে যায়।’
এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে সড়ক ও জনপথ (সওজ) বিভাগ, কুমিল্লার উপবিভাগীয় প্রকৌশলী মো. আদনান ইবনে হাসান প্রথম আলোকে বলেন, বন্যার কারণে সড়কটি বেশি বেহাল ও ভাঙাচোরা হয়ে পড়েছে। এরই মধ্যে সড়কটির সংস্কারকাজের দরপত্রপ্রক্রিয়া শেষ হয়েছে। দ্রুত সময়ের মধ্যে সড়কটির সংস্কারকাজ শুরু হবে বলে আশা করছি। এতে মানুষের দুর্ভোগ দূর হবে।
উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: প রথম আল ক উপজ ল র সড়কট র বন য র অবস থ ই সড়ক বছর র সড়ক র
এছাড়াও পড়ুন:
বেহাল সড়ক
মুন্সিগঞ্জ জেলার পাঁচটি উপজেলার সঙ্গে জেলা শহরের সংযোগ স্থাপনকারী প্রধান সড়কটি হলো মুক্তারপুর তেলের পাম্প থেকে মানিকপুর পর্যন্ত সড়ক। অথচ এই গুরুত্বপূর্ণ সড়কটি বর্তমানে চরম বেহাল। যান চলাচল প্রায় সম্পূর্ণভাবে বন্ধ হয়ে গেছে।
কিছুদিন আগে ৩৫ লাখ টাকা ব্যয়ে সড়কটির সংস্কার করা হয়েছিল। কিন্তু কয়েক দিনের মধ্যেই সড়কটি আগের চেয়ে আরও খারাপ হয়েছে। অভিযোগ রয়েছে, ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান দায়সারাভাবে কাজ করেছে, ব্যবহার করেছে নিম্নমানের উপকরণ। ফলে সামান্য বৃষ্টিতেই সড়কটি ভেঙে গিয়ে খানাখন্দে পরিণত হয়েছে।
একটি জেলা শহরের প্রবেশপথের এমন করুণ অবস্থা সাধারণ মানুষের চরম দুর্ভোগের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। বিশেষ করে সবচেয়ে বেশি ভোগান্তিতে পড়ছে রোগীবাহী অ্যাম্বুলেন্স ও জরুরি যানবাহন। ফলে বাধ্য হয়ে ভাঙা সড়ক দিয়েই মুন্সিগঞ্জ সদর হাসপাতালে যেতে হচ্ছে।
সড়কটির এমন করুণ অবস্থার পেছনে মূলত দুর্নীতিই দায়ী। কোথায় পানি জমে, কোথায় ঢালু রাখা প্রয়োজন—এসব মৌলিক বিষয়ও পরিকল্পনায় উপেক্ষিত ছিল। প্রকল্প বাস্তবায়নে দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রকৌশলীর জবাবদিহির অভাব ও নজরদারির ঘাটতির কারণেই আজ এ দুরবস্থা।
সড়কের খারাপ অবস্থার জন্য এবং এর পেছনের অনিয়ম-দুর্নীতির প্রতিবাদে মুন্সিগঞ্জ শহরের সাধারণ মানুষ এখন রাস্তায় নেমেছেন। তাঁরা প্রেসক্লাবের সামনে জড়ো হয়ে দ্রুত সংস্কার ও দোষীদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা গ্রহণের দাবিতে আন্দোলন করছেন।
মো. রাসেল ভূঁইয়া
খলিফাবাড়ী, সিপাহীপাড়া, মুন্সিগঞ্জ