দেশের বিভিন্ন স্থানে খুন, সন্ত্রাস ও মব সন্ত্রাসে জনজীবনে আতঙ্ক বেড়ে যাওয়ায় তীব্র ক্ষোভ ও উদ্বেগ প্রকাশ করেছে বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিবি)। দলটির সভাপতি মোহাম্মদ শাহ আলম ও সাধারণ সম্পাদক রুহিন হোসেন প্রিন্স আজ বুধবার দেওয়া এক বিবৃতিতে এ ক্ষোভ জানান। তাঁরা বলেন, সরকারপ্রধান থেকে শুরু করে উপদেষ্টারা সংকটের কথা স্বীকার না করলেও দিন দিন জনজীবনে নিরাপত্তাহীনতা বেড়েই চলেছে। এর দায় অন্তর্বর্তীকালীন সরকার এবং তার প্রধান ড.

মুহাম্মদ ইউনূসকেই নিতে হবে।

বিবৃতিতে সিপিবির নেতারা বলেন, তথ্যে দেখা যাচ্ছে, ‘জনজীবনের সংকট বেড়েছে। অথচ সরকারপ্রধান বিবিসি বাংলার সঙ্গে সাক্ষাৎকারে বলেছেন, “অপরাধের পরিমাণ মোটেই বড়েনি।” আমরা প্রশ্ন করতে চাই, তাহলে এ সময় যেসব ঘটনা ঘটছে, এগুলো কি অপরাধ নয়?’

বিবৃতিতে বলা হয়, ‘পরিস্থিতির উন্নয়ন ঘটছে’—সরকারের স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার এই বক্তব্য যেদিন পত্রিকায় প্রকাশ পেয়েছে, ওই দিনই পত্রিকার প্রথম এবং শেষ পৃষ্ঠাজুড়েই সারা দেশে খুন, সন্ত্রাস ও ধর্ষণের খবরও ছাপা হয়েছে।

সিপিবির এই দুই নেতা বলেন, গতকাল (৪ মার্চ) সরকারের একজন উপদেষ্টা উপদেষ্টা পরিষদের সিদ্ধান্ত জানিয়ে বললেন, ‘মব জাস্টিস’ ও ‘মোরাল পুলিশিং’-এর কোনো সুযোগ এ দেশে নেই। ওই দিন রাতেই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ঘোষণা দিয়ে গুলশানের একটি বাড়িতে ন্যক্কারজনক সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড পরিচালনা করা হলো। আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা ও আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি অবনতির কারণ হলো চোখ বুজে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের ‘মব সন্ত্রাস’ চলতে দেওয়া। এদেরকে আইনের আওতায় না আনা।

সিপিবির বিবৃতিতে বলা হয়, এর আগেও এ ধরনের অসংখ্য কর্মকাণ্ড সংঘটিত হয়েছে। এমনকি বাংলাদেশ এবং তার ইতিহাস–ঐতিহ্যের অংশ ঘোষণা দিয়ে ধ্বংস করা হয়েছে। সরকার এসব বিষয়ে এখন পর্যন্ত কোনো দৃশ্যমান ভূমিকা নেয়নি। ‘সরকার না চাইলে বা প্রশ্রয় না থাকলে এ ধরনের কোনো ঘটনা ঘটতে পারে না’—এই বিখ্যাত উক্তি সর্বজন স্বীকৃত।

বিবৃতিতে সিপিবির নেতারা অবিলম্বে এ ধরনের সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড এবং অতীতের এসব কর্মকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত এবং তার মদদদাতাদের চিহ্নিত করে বিচারের সম্মুখীন করার জোর দাবি জানান। জনজীবনসহ জানমালের নিরাপত্তায় সারা দেশের বিবেকবান মানুষকে নিজে নিজে এলাকায় ঐক্যবদ্ধ হওয়ার এবং সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তোলারও আহ্বান জানান।

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: উপদ ষ ট সরক র

এছাড়াও পড়ুন:

অনুমোদনের প্রথম দিন সেন্ট মার্টিন যায়নি কোনো পর্যটকবাহী জাহাজ

দীর্ঘ ৯ মাস পর শনিবার থেকে সেন্ট মার্টিনে পর্যটকবাহী জাহাজ চলাচলের অনুমতি দিয়েছে সরকার। কিন্তু প্রথম দিন কোনো জাহাজ সেন্ট মার্টিনে না যাওয়ার কারণে পর্যটকেরা দ্বীপে যেতে পারেননি। হাজারো পর্যটক সেন্ট মার্টিনে যেতে না পেরে হতাশ হয়ে ফিরে গেছেন। অন্যদিকে জাহাজমালিকেরা বলছেন, সরকারের বিভিন্ন শর্তের কারণে পর্যটকদের আগ্রহ না থাকায় জাহাজ চলাচল বন্ধ ছিল।

কক্সবাজার জেলা প্রশাসন সূত্র জানায়, পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা অনুযায়ী দ্বীপটি পর্যটকদের জন্য উন্মুক্ত করা হয়েছে। ১ নভেম্বর থেকে সেন্ট মার্টিনে পর্যটকবাহী জাহাজ চলাচলে সরকারের কোনো বাধা নেই। লিখিতভাবে জাহাজ চলাচলের অনুমতি দেওয়া হয়েছে। তবে দিনে গিয়ে দিনেই চলে আসতে হবে; রাতে থাকা যাবে না।

এদিকে রাতে থাকার সুযোগ না থাকায় পর্যটকেরা যেতে আগ্রহী হচ্ছেন না। কারণ, দীর্ঘ সময় ভ্রমণ করে দ্বীপে গিয়ে আবার সেদিনই চলে আসতে হবে। এ কারণে জাহাজমালিকেরাও জাহাজ চালাতে অনীহা প্রকাশ করছেন। তাঁদের দাবি, দিনে গিয়ে দিনে ফিরে আসার সিদ্ধান্ত বাস্তবসম্মত নয়।

কক্সবাজারের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট (এডিএম) মো. শাহিদুল আলম বলেন, জাহাজমালিকেরা যদি জাহাজ চলাচল বন্ধ রাখেন, সেটা তাঁদের ব্যাপার। সেন্ট মার্টিনের জীববৈচিত্র্য রক্ষায় সরকারের জারি করা ১২টি নির্দেশনা এবার কঠোরভাবে বাস্তবায়ন করবে জেলা প্রশাসন।

শাহিদুল আলম বলেন, আগে টেকনাফ থেকে পর্যটকবাহী জাহাজ চলাচল করলেও নিরাপত্তার কারণে এখন কক্সবাজার শহর থেকে পর্যটকবাহী জাহাজ বঙ্গোপসাগর পাড়ি দিয়ে সেন্ট মার্টিনে যাতায়াত করবে।

সি ক্রুজ অপারেটরস ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (স্কোয়াব) সাধারণ সম্পাদক হোসাইন ইসলাম বাহাদুর বলেন, কক্সবাজার শহরের নুনিয়ারছড়া ঘাট থেকে জাহাজ ছেড়ে গেলে সেন্ট মার্টিন পৌঁছাতে সাত থেকে আট ঘণ্টা সময় লাগে। ফলে পর্যটকেরা কিছুই ঘুরে দেখতে পারবেন না। দিনে গিয়ে দিনে ফিরে আসা যেমন কষ্টসাধ্য, তেমনি ব্যবসার জন্যও তা অলাভজনক। এ কারণেই অনেক পর্যটক সেন্ট মার্টিন যেতে অনীহা প্রকাশ করেছেন।

হোসাইন ইসলাম আরও বলেন, রাতযাপন করার সুযোগ না থাকলে সেন্ট মার্টিনের পর্যটন মৌসুম জমে না। পর্যটকেরা রাতের সৈকত দেখতে চান, ঢেউয়ের শব্দ শুনতে চান। সেটাই তো সেন্ট মার্টিনের আসল আকর্ষণ।

পরিবেশ অধিদপ্তরের কক্সবাজার জেলা কার্যালয়ের পরিচালক মো. জমির উদ্দিন বলেন, সেন্ট মার্টিন দ্বীপে ভ্রমণের ক্ষেত্রে সরকারের নির্দেশনা কঠোরভাবে কার্যকর করা হবে। এ লক্ষ্যে পরিবেশ অধিদপ্তরের পক্ষ থেকে ব্যাপক প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে।

আরও পড়ুনসেন্ট মার্টিনে নিষেধাজ্ঞা উঠছে কাল, তবে জাহাজ চলবে কি৩১ অক্টোবর ২০২৫

সম্পর্কিত নিবন্ধ