বিএসইসির চেয়ারম্যান পরিস্থিতি সামলাবেন: অর্থ উপদেষ্টা
Published: 6th, March 2025 GMT
বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) পরিস্থিতি নিয়ে অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ বলেছেন, “ওটা আমার কিছু করার নেই। বিএসইসির চেয়ারম্যান আছেন, উনি সামলাবেন।”
বৃহস্পতিবার (৬ মার্চ) সচিবালয়ে অর্থ মন্ত্রণালয় থেকে বের হয়ে যাওয়ার সময় উপস্থিত সাংবাদিকদের তিনি এ কথা বলেন।
বিএসইসি চেয়ারম্যান খন্দকার রাশেদ মাকসুদের নেতৃত্বাধীন কমিশনের পদত্যাগের দাবিতে বুধবার বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করেন নিয়ন্ত্রক সংস্থাটির কর্মকর্তা-কর্মচারীরা।এরপর বৃহস্পতিবার তারা কর্মবিরতি পালন করেন।
এ বিষয়ে নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন বাংলাদেশ মার্চেন্ট ব্যাংকার্স এসোসিয়েশন (বিএমবিএ) এবং স্টক ব্রোকারদের সংগঠন ডিএসই ব্রোকার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ডিবিএ)-এর পক্ষ থেকে।
এমন পরিস্থিতিতে বিএসইসির বর্তমান ইস্যু নিয়ে সাংবাদিকরা জানতে চাইলে অর্থ উপদেষ্টা বলেন, “না ওটা আমার কিছু করার নেই। ওটা উনি দেখবেন। ওনাকে সব দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।”
আপনাদের অবস্থান কি-এমন প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, “সরকারের অবস্থান সিকিউরিটিজ এক্সচেঞ্জ দেখবে ব্যাপারটা। আমার এ ব্যাপারে বক্তব্য নেই। চেয়ারম্যান আছেন একজন উনি দেখবেন।”
কর্মকর্তা ঘেরাও করেছে, দাবি-দাওয়া জানিয়েছেন সেটার বিষয়ে আপনাদের অবস্থান কি-এমন প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, “যার যেটা করার করুক। প্রতিষ্ঠান কিভাবে চলবে তারাই জানে। অনেকেই তো কর্মবিরতি পালন করছে।”
এদিকে বিএসইসির চেয়ারম্যান সচিবালয় থেকে ঘুরে এসে সাংবাদিকদের বলেন, “আজ সরকারের সঙ্গে কথা হয়েছে। তারা আমাদের বলেছেন, যে কাজটা করে যাচ্ছি, সেটা যেন করে যাই, আরো জোরদার করি।”
বিএসইসির কর্মকর্তা-কর্মচারীরা আপনাদের পদত্যাগ চায় এবং কর্মবিরতি পালন করছে-এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, “সরকারের সঙ্গে কথা হয়েছে। আমরা যে মিশন নিয়ে নেমেছি, সেই মিশন থেকে এক চুল পরিমাণ নড়ব না। কোন ধরনের অন্যায়ের কাছে মাথা নত করব না। আমরা যে কাজ নিষ্ঠা ও নিয়মের সঙ্গে করে আসছি, সেটা করে যাব।”
কর্মকর্তারা কাজ না করলে কি করবেন-এমন প্রশ্নে বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের কমিশনার ফারজানা লালারুখ বলেন, “আমরা আহ্বান জানাব তাদের কাজে যোগদানের জন্য। তারপরও যদি কাজে না আসেন সেটা দেখা যাবে।”
অন্যদিকে বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন অফিসার্স ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশন থেকে বিবৃতি দিয়ে জানানো হয়েছে, মিথ্যা তথ্যের মাধ্যমে পুলিশ ও সেনাবাহিনীকে ডেকে এনে বিএসইসি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের ওপর লাঠিচার্জ ও হামলা চালিয়ে আহত করা হয়েছে।
অ্যাসোসিয়েশনের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, ‘ফ্যাসিস্ট সরকারের নিয়োগপ্রাপ্ত কমিশনার মহসীন চৌধুরী অন্য কমিশনার এবং চেয়ারম্যানকে সঙ্গে নিয়ে বিগত সরকারের এজেন্ডা বাস্তবায়ন করছেন। যার পরিপ্রেক্ষিতে অভিজ্ঞ কর্মকর্তাদের বাধ্যতামূলক অবসর এবং শোকজসহ নানাবিধ হয়রানি করছে।’
বিবৃতিতে অ্যাসোসিয়েশনের পক্ষ থেকে চারটি প্রস্তাব তুলে ধরা হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে-বর্তমান কমিশনকে অনতিবিলম্বে পদত্যাগ করতে হবে। কমিশন কর্তৃক মিথ্যা তথ্যের মাধ্যমে সেনাবাহিনীকে ডেকে কমিশনের-কর্মকর্তা কর্মচারীদের লাঠিচার্জ করার জন্য নিঃশর্ত ক্ষমা চাইতে হবে। প্রধান উপদেষ্টার সরাসরি হস্তক্ষেপের মাধ্যমে বিএসইসির জন্য পুঁজিবাজার সম্পর্কে অভিজ্ঞ ও যোগ্য চেয়ারম্যান এবং কমিশনার নিয়োগ দিতে হবে। সংস্কারের অংশ হিসেবে কমিশনকে রাজনৈতিক হস্তক্ষেপমুক্ত একটি স্বাধীন ও স্বতন্ত্র প্রতিষ্ঠান হিসেবে স্বীকৃতি প্রদান এবং দ্রুত বাস্তবায়ন করতে হবে।
ঢাকা/হাসনাত/এসবি
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর কর মকর ত ব এসইস র সরক র র উপদ ষ ট
এছাড়াও পড়ুন:
পুঁজিবাজারে আস্থা ফেরাতে একগুচ্ছ পদক্ষেপ নেবে বিএসইসি
শেয়ার সূচকের নিয়মিত পতনের মূল কারণ খুঁজে বের করে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেবে বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)। সেই সঙ্গে যেসব শেয়ারের অস্বাভাবিক বিক্রির চাপ দেখা যাচ্ছে, বাজার তদারকির মাধ্যমে সেসব শেয়ার চিহ্নিত করা হবে বলেও জানিয়েছে তারা।
দেশের পুঁজিবাজারে সাম্প্রতিক নিম্নমুখী প্রবণতার পরিপ্রেক্ষিতে বিনিয়োগকারীদের আস্থা পুনরুদ্ধারের লক্ষ্যে বেশ কিছু পদক্ষেপ গ্রহণের সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিএসইসি। গতকাল মঙ্গলবার এক সভায় এ সিদ্ধান্ত হয়। সভায় পুঁজিবাজারের বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয় এবং বিনিয়োগকারীদের আস্থা ফেরাতে তাৎক্ষণিক কিছু কর্মপরিকল্পনা গ্রহণের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
সভায় উপস্থিত ছিলেন প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী আনিসুজ্জামান চৌধুরী। এ ছাড়া সভায় বিএসইসির চেয়ারম্যান খন্দকার রাশেদ মাকসুদ, আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের সচিব নাজমা মোবারেক, বিএসইসির কমিশনার মু. মোহসিন চৌধুরী, মো. আলী আকবর, ফারজানা লালারুখ, আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের যুগ্ম সচিব দেলোয়ার হোসেন, পুঁজিবাজার সংস্কার টাস্কফোর্সের প্রতিনিধি ও বিএসইসির নির্বাহী পরিচালকেরা উপস্থিত ছিলেন।
সভার সিদ্ধান্ত হয়, বিনিয়োগকারীদের জ্ঞান ও সচেতনতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে ইলেকট্রনিক মিডিয়ায় টক শো ও বিনিয়োগ শিক্ষা কার্যক্রম পরিচালনা করা হবে। পাশাপাশি বিআইসিএম ও বিএএসএম পুঁজিবাজার-বিষয়ক শিক্ষণীয় ভিডিও তৈরি করবে। ফেসবুক ও ইউটিউবের মতো সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ব্যবহার করে পুঁজিবাজার সম্পর্কে ইতিবাচক বার্তা প্রচার ও সাধারণ বিনিয়োগকারীদের সচেতন করা হবে।
প্রাথমিক গণপ্রস্তাবের (আইপিও) মাধ্যমে মৌলভিত্তিসম্পন্ন কোম্পানির শেয়ার পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে রাষ্ট্রমালিকানাধীন লাভজনক কোম্পানির শেয়ার অফলোড করা, বহুজাতিক কোম্পানিগুলোকে তালিকাভুক্তিতে উৎসাহিত করা এবং টেক্সটাইল ও ওষুধ খাতের দেশী লাভজনক কোম্পানিগুলোর শেয়ার পুঁজিবাজারে নিয়ে আসা হবে।
যেসব কোম্পানি এখনো পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত হয়নি, তাদের তালিকাভুক্ত হতে উৎসাহিত করার জন্য আকর্ষণীয় করছাড় দেওয়া হবে। পাশাপাশি ব্যাংকিং খাত থেকে দীর্ঘমেয়াদি অর্থায়নের সুযোগ সীমিত করা এবং পুঁজিবাজারকে দীর্ঘমেয়াদি অর্থায়নের প্রধান উৎস হিসেবে প্রতিষ্ঠা করার পদক্ষেপ নেওয়া হবে।
সভায় আরও সিদ্ধান্ত হয়, পুঁজিবাজারের উন্নয়নের স্বার্থে দেশের আর্থিক খাতের অন্যান্য নিয়ন্ত্রক সংস্থার মধ্যে সমন্বয় বাড়ানো হবে। সমন্বিত উদ্যোগের মাধ্যমে পুঁজিবাজারের স্থিতিশীলতা ও প্রবৃদ্ধি নিশ্চিত করা হবে। এ ছাড়া আসন্ন জাতীয় বাজেটে বিনিয়োগকারীদের জন্য করছাড়ের সুবিধা দেওয়ার প্রস্তাব করা হবে। এর মধ্যে লভ্যাংশ আয়ের ওপর করছাড় এবং পুঁজিবাজারের বিনিয়োগের ওপর বিশেষ করছাড়ের সুবিধা অন্তর্ভুক্ত থাকতে পারে।