উত্তরাঞ্চলে এক সময়ের দুই খরস্রোতা নদী সূতিখালী ও করতোয়া। নিয়মিত পণ্য নিয়ে বিভিন্ন ধরনের নৌযান চলাচল করত। মাছ ধরে জীবিকা নির্বাহ করতেন হাজারো মানুষ। নদীর পানি সেচের পাশাপাশি বিভিন্ন কাজে ব্যবহার হতো। কিন্তু দখল-দূষণে সংকুচিত হয়ে নাব্য হারিয়েছে নদী দুটি। আগের মতো মাছ মেলে না। পৌরসভার নালার সংযোগ দেওয়ায় পানি কালচে হয়ে দুর্গন্ধ ছড়াচ্ছে, আবর্জনায় হচ্ছে ভরাট। পানি না থাকায় নদীর বুকে হচ্ছে বিভিন্ন ধরনের ফসলের আবাদ। খনন করে নদী দুটিতে নাব্য ফেরানোর দাবি স্থানীয় বাসিন্দাদের। এরই মধ্যে একটি নদী খননের উদ্যোগও নেওয়া হয়েছে।


একসময় বাজারে সূতিখালী নদীর মাছের ব্যাপক চাহিদা ছিল। দখল-দূষণে নদী সংকুচিত হয়ে শুকিয়ে যাওয়ায় মাছশূন্য হয়ে পড়েছে। বর্ষা মৌসুমে কারেন্ট জালে অবাধে মা মাছ ও পোনা শিকার করায় বংশবিস্তারও ব্যাহত হচ্ছে। বেড়া উপজেলার নাজিম বাজারে ৩৫ বছর ধরে মাছ বিক্রি করা সুকান্ত হালদার বলেন, এখন অনেক জেলে অপরিচিতদের কাছে সূতিখালীর নামেই মাছ বিক্রি করেন। এতে তাড়াতাড়ি বিক্রি হয়ে যায়।
একসময়ের খরস্রোতা সূতিখালী এখন পানিশূন্য। সরু খালে পরিণত হওয়া নদীর দুই পারে চলছে ধানসহ বিভিন্ন ধরনের ফসলের আবাদ। পাবনা জেলার একসময়ের মৎস্যভান্ডার হিসেবে পরিচিত খরস্রোতা নদীটি এখন মৃতপ্রায়। আগের মতো দু’কূল ভাঙা উত্তাল স্রোত নেই। তলদেশ ভরাট হয়ে দখল-দূষণে সংকুচিত হয়ে যাচ্ছে। দেশি মাছও আর আগের মতো মেলে না।
সাঁথিয়া উপজেলা মৎস্য অফিস ও বেড়া পানি উন্নয়ন বোর্ডের তথ্য অনুযায়ী, দুই উপজেলার ওপর দিয়ে বয়ে চলা সূতিখালী নদীর দৈর্ঘ্য প্রায় ৯০ কিলোমিটার। কৃষক নদী থেকে সেচ দিয়ে ফসল ফলাতেন। নদী শুকিয়ে যাওয়ায় শ্যালো মেশিন বসিয়ে পানি তোলা হচ্ছে। এতে ভূগর্ভের স্তরও নেমে গেছে। ফলে ফসল উৎপাদন ব্যয় বেড়েছে। 
বেড়ার বৃশালিখা গ্রামের কৃষক হামিদুল ইসলাম বলেন, সূতিখালীর পানি ধান ও রবিশস্য আবাদে সেচে ব্যবহার করা হতো। এতে খরচ কম হতো। এখন নদীটি পলিমাটি পড়ে ভরাট হয়ে যাওয়ায় আগের মতো পানি পাওয়া যায় না। 
বর্তমানে সূতিখালী নদীর একাংশ পাবনা সেচ ও পল্লী উন্নয়ন প্রকল্পের পানি নিষ্কাশন খাল হিসেবে ব্যবহার হয়ে আসছে। পানির অভাবে নদীটি বর্ষাকাল ছাড়া অন্য সময় থাকে পানিশূন্য। এতে জীববৈচিত্র্য, মৎস্য, কৃষি অর্থনীতি, নৌ-যোগাযোগ ও পরিবেশ বিপর্যয়ের মুখে পড়েছে। সাঁথিয়া উপজেলার সোনাতলা গ্রামের কাছে ইছামতী নদী থেকে উৎপত্তি সূতিখালী নদীর। দুটি ধারায় বিভক্ত হয়ে একটি ধারা পশ্চিমে ফরিদপুর, ভাঙ্গুড়া, চাটমোহরের ওপর দিয়ে চলনবিলে মিলিত হয়েছে।
অপর ধারাটি পূর্বদিকে প্রবাহিত হয়ে বেড়া উপজেলার অধিননগরে হুড়াসাগর নদে মিলেছে। এদিকে ফরিদপুর, ভাঙ্গুড়া ও চাটমোহর অংশের সূতিখালী নদীর প্রায় পুরোটাই দখল হয়ে গেছে। সাঁথিয়া ও বেড়া অংশ দখল-দূষণে মৃতপ্রায়। অথচ একসময় দেশি মাছের ভান্ডার হিসেবে পরিচিত ছিল। এখানে পুঁটি, চাপিলা, মাগুর, ট্যাংরা, কৈসহ প্রায় সব ধরনের দেশি মাছ পাওয়া যেত।
বেড়া পাউবো নির্বাহী প্রকৌশলী জাহিদুল ইসলাম বলেন, সূতিখালী নদী খননের ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট দপ্তরে সারাদেশে (৬৪ জেলা) খাল খনন প্রকল্প ফেজ টু-তে আবেদন করা হয়েছে। অনুমোদন হলে খননকাজ শুরু হবে।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: নদ উপজ ল র ধরন র

এছাড়াও পড়ুন:

তিন সাংবাদিকের চাকুরিচ্যুতির ঘটনায় ডিআরইউ’র উদ্বেগ

ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির (ডিআরইউ) সদস্য সাংবাদিক রফিকুল বাসার, মুহাম্মদ ফজলে রাব্বি ও মিজানুর রহমানসহ কয়েকজন সংবাদকর্মীর চাকরিচ্যুতির ঘটনায় উদ্বেগ জানিয়েছে ডিআরইউ।

বুধবার (৩০ এপ্রিল) ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির কার্যনির্বাহী কমিটির পক্ষে সভাপতি আবু সালেহ আকন ও সাধারণ সম্পাদক মাইনুল হাসান সোহেল সংবাদকর্মীদের চাকুরিচ্যুতির ঘটনায় এ উদ্বেগ জানান।

উল্লেখ্য, চ্যানেল আই’র সাংবাদিক রফিকুল বাসার, এটিএন বাংলার মুহাম্মদ ফজলে রাব্বি ও দীপ্ত টিভির সাংবাদিক মিজানুর রহমানকে মঙ্গলবার কোনো রকম পূর্ব নোটিশ ছাড়াই চাকরিচ্যুত করে কর্তৃপক্ষ।

ডিআরইউ নেতৃবৃন্দ তিন সাংবাদিককে চাকরিচ্যুতির কারণ ব্যাখ্যা করার দাবি জানিয়েছেন।

এএএম//

সম্পর্কিত নিবন্ধ