আগামী ২৪ ঘন্টার মধ্যে ধর্ষকের সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিত করতে আলটিমেটাম (সময় বেঁধে) দিয়েছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। দেশের বিভিন্ন স্থানে ধর্ষণের প্রতিবাদে শনিবার মধ্যরাতে রাজু ভাস্কর্যে দুই ঘণ্টা অবস্থান শেষে এ কর্মসূচি ঘোষণা করে হলে ফিরে যান তাঁরা।

শনিবার দিবাগত রাত দুইটার দিকে এই কর্মসূচি ঘোষণা করেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মুখপাত্র উমামা ফাতেমা। তিনি বলেন, আগামী ২৪ ঘন্টার মধ্যে অন্তর্বর্তী সরকারকে ধর্ষণের বিচার নিশ্চিত করতে হবে। তা না হলে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টাকে পদত্যাগ করতে হবে।

দেশের বিভিন্ন স্থানে ধর্ষণের ঘটনার প্রতিবাদে ‘ধর্ষণবিরোধী মঞ্চ’ নামে একটি ফেসবুক গ্রুপ খুলেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। সেখানে আনিকা তাহসিনা নামের এক ছাত্রী লিখেছেন, ‘ধর্ষণ ও নারী নির্যাতনের বিরুদ্ধে প্রতিবাদী কণ্ঠস্বর হিসেবে আজ থেকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজু ভাস্কর্যকে ‘‘ধর্ষণবিরোধী মঞ্চ’’ হিসেবে ঘোষণা করেছে শিক্ষার্থীরা। আমরা আর চুপ থাকব না।’

এর আগে দেশের বিভিন্ন স্থানে ধর্ষণের ঘটনার প্রতিবাদে শনিবার দিবাগত রাত ১২টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের কবি সুফিয়া কামাল হলের ছাত্রীরা বিক্ষোভ-মিছিল নিয়ে বাইরে বেরিয়ে আসেন। তাঁদের সঙ্গে একাত্মতা ঘোষণা করে ড.

মুহম্মদ শহীদুল্লাহ্‌ হলের শিক্ষার্থীরাও যোগ দেন। এরপর হল পাড়া থেকে শিক্ষার্থীদের মিছিল বের হয়। একপর্যায়ে শিক্ষার্থীরা রাজু ভাস্কর্যের সামনে জড়ো হন।

বিক্ষোভে স্লোগান ওঠে, ‘ফাঁসি ফাঁসি ফাঁসি চাই, ধর্ষকের ফাঁসি চাই’, ‘আমার সোনার বাংলায়, ধর্ষকদের ঠাঁই নাই’, ‘ধর্ষকদের কালো হাত, ভেঙে দাও গুঁড়িয়ে দাও’।

শিক্ষার্থীরা জানান, দেশের বিভিন্ন জায়গায় সাম্প্রতিক সময়ে যেসব ধর্ষণের ঘটনা ঘটেছে তার সুষ্ঠু তদন্ত এবং দ্রুততম সময়ের মধ্যে দোষীদের সর্বোচ্চ শাস্তি দেখতে চান তারা। বিশেষ করে মাগুরায় ৮ বছরের শিশু ধর্ষণের ঘটনায় জড়িতদের সর্বোচ্চ শাস্তির দাবি করেন তারা।

এর আগে গতকাল শনিবার সন্ধ্যা সাতটায় ধর্ষকদের প্রকাশ্য ফাঁসির দাবি জানিয়ে রোকেয়া হলের নারী শিক্ষার্থীরা মশাল মিছিল করেন। মিছিলটি রোকেয়া হলের সামনে থেকে শুরু হয়ে ভিসি চত্বর প্রদক্ষিণ করে আবার হলের সামনে ফিরে আসে। সেখানে শিক্ষার্থীরা ধর্ষকদের প্রকাশ্য মৃত্যুদণ্ড কার্যকর ও বিগত বছরগুলোয় যারা ধর্ষণের জড়িত ছিল তাদের বিচার নিশ্চিতের দাবি জানান।

রোকেয়া হলের শিক্ষার্থীদের মিছিলে ‘উই ওয়ান্ট জাস্টিস, হ্যাং দ্য রেপিস্ট’, ‘সারা বাংলায় খবর দে, ধর্ষকদের কবর দে’সহ বিভিন্ন স্লোগান দেওয়া হয়।

ধর্ষণের প্রতিবাদে গত রাত সাড়ে আটটার দিকে রাজু ভাস্কর্যের সামনে বিক্ষোভ সমাবেশ করেছে গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদও।

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ভ স কর য র স মন

এছাড়াও পড়ুন:

করিডর দেওয়ার সিদ্ধান্ত আসতে হবে নির্বাচিত সংসদ থেকে: তারেক রহমান

করিডর দেওয়া না–দেওয়ার বিষয়ে সিদ্ধান্ত জনগণের কাছ থেকে আসতে হবে বলে মনে করেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। তিনি বলেন, এ ধরনের সিদ্ধান্ত আসতে হবে জনগণের প্রত্যক্ষ ভোটে নির্বাচিত জাতীয় সংসদের মাধ্যমে।

রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে আজ বৃহস্পতিবার বিকেলে মহান মে দিবসে আয়োজিত শ্রমিক সমাবেশে ‘করিডর’ নিয়ে কথা বলেন তারেক রহমান। জাতিসংঘের তত্ত্বাবধানে মিয়ানমারের রাখাইনে সহায়তা পাঠানোর জন্য ‘মানবিক করিডর’ স্থাপন নিয়ে চলমান আলোচনা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘দেশের স্বাধীনতাপ্রিয় জনগণ মনে করে, করিডর দেওয়া না–দেওয়ার বিষয়ে সিদ্ধান্ত আসতে হবে জনগণের কাছ থেকে। সিদ্ধান্ত আসতে হবে জনগণের প্রত্যক্ষ ভোটে নির্বাচিত জাতীয় সংসদের মাধ্যমে। এ ধরনের পরিস্থিতিতে গণতান্ত্রিক বিশ্বের দেশে দেশে এটাই নিয়ম, এটাই রীতি।’

জাতীয়তাবাদী শ্রমিক দল আয়োজিত এই সমাবেশে ভার্চ্যুয়ালি যুক্ত হয়ে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বলেন, অভ্যন্তরীণ যুদ্ধে লিপ্ত মিয়ানমারের রাখাইনে মানবিক সাহায্য পৌঁছানোর জন্য বাংলাদেশকে করিডর হিসেবে ব্যবহারের অনুমতি দেওয়ার ব্যাপারে অন্তর্বর্তী সরকার নাকি নীতিগতভাবে সিদ্ধান্ত নিয়েছে। দেশের স্বাধীনতা–সার্বভৌমত্বের সঙ্গে জড়িত এমন একটি স্পর্শকাতর বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষেত্রে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার কিন্তু জনগণকে জানায়নি। এমনকি জনগণের প্রতিনিধিত্বকারী রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গেও কোনো আলোচনা করার প্রয়োজন বোধ করেনি।

দেশের জনগণকে না জানিয়ে অন্তর্বর্তী সরকার এ ধরনের সিদ্ধান্ত নিতে পারে কি না কিংবা নেওয়া উচিত কি না, এই মুহূর্তে সেই বিতর্ক তুলতে চান না উল্লেখ করে তারেক রহমান বলেন, বিএনপির বক্তব্য স্পষ্ট—বিদেশিদের স্বার্থ নয়, অন্তর্বর্তী সরকারকে সবার আগে দেশের জনগণের স্বার্থ নিশ্চিত করতে হবে।

ফ্যাসিবাদী শাসনের অবসানের পর এ বছর রমজান মাসে নিত্যপণ্যের দাম তুলনামূলকভাবে সহনীয় থাকায় অন্তর্বর্তী সরকারকে ধন্যবাদ জানান তারেক রহমান। তবে তিনি বলেন, রমজান শেষ হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে আবার চাল ও তেলের দাম বাড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। চাল–তেলের দাম বেড়েছে কিন্তু মানুষের আয় বাড়েনি। তাহলে জনগণ এখন তাদের এমন ভোগান্তির কথা কার কাছে, কোথায় কীভাবে বলবে?

নয়াপল্টনে মহান মে দিবস উপলক্ষে জাতীয়তাবাদী শ্রমিক দলের উদ্যোগে সমাবেশে নেতা-কর্মীদের একাংশ। ঢাকা, ১ মে

সম্পর্কিত নিবন্ধ