ধর্ষণের শিকার কিশোরীকে সালিসে ডেকে অপবাদ, আত্মহত্যা
Published: 10th, March 2025 GMT
লক্ষ্মীপুরের রামগতি উপজেলায় সালিসে ডেকে ধর্ষণের শিকার এক কিশোরীকে উল্টো অপবাদ দেওয়ার পর ক্ষোভে আত্মহত্যা করেছে সে। ৬ মার্চ ওই কিশোরী আত্মহত্যা করে। এ ঘটনায় পরদিন মামলা করেন তার মা। ওই মামলার প্রধান অভিযুক্ত আসামি রাকিব হোসেনকে (২৪) গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। আজ সোমবার সকালে কুমিল্লার লাকসাম এলাকা থেকে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়। বিকেলে তাঁকে আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে।
গ্রেপ্তার রাকিব হোসেন রামগতি উপজেলার পশ্চিম চর কোলাকোপা এলাকার মো.
ধর্ষণ ও আত্মহত্যার প্ররোচনায় ৭ মার্চ ১২ জনের বিরুদ্ধে ওই কিশোরীর মা বাদী হয়ে মামলা করেন। এতে রাকিব হোসেনকে প্রধান আসামি করা হয়। মামলার পর হেলাল উদ্দিন নামের আরও একজনকে গ্রেপ্তার করেছিল পুলিশ। এ নিয়ে এই মামলায় দুজনকে গ্রেপ্তার করা হলো।
পুলিশ জানায়, ১ মার্চ ওই কিশোরী ধর্ষণের শিকার হয়। পরদিন ঘটনাটি জানাজানি হলে এলাকায় সালিস বৈঠকের আয়োজন করা হয়। কিন্তু সেখানে কোনো বিচার পায়নি ওই কিশোরী। উল্টো তাকে অপবাদ দেওয়া হয়। ৬ মার্চ বৃহস্পতিবার সকালে কিশোরীকে বাড়িতে রেখে তার মা বাড়ির পাশের জমিতে ফসল দেখতে যান। এসে দেখেন, মেয়ে আত্মহত্যা করেছে। পরে পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে মরদেহ উদ্ধার করে।
কিশোরীর পরিবারের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ১ মার্চ রাতে ঘরে ঢুকে কিশোরীকে রাকিব ধর্ষণ করেন। কিশোরীর মা টের পেয়ে ঘরে ঢুকলে রাকিব পালিয়ে যান। তাৎক্ষণিকভাবে ঘটনাটি তিনি রাকিবের মা–বাবাকে জানান। পরে এ নিয়ে অভিযুক্ত রাকিবের পরিবার একটি সালিস বৈঠকের আয়োজন করে। বৈঠকে ধর্ষণের ঘটনায় কোনো বিচার করা হয়নি। উল্টো কিশোরীকে অপবাদ দেওয়া হয়। এরপর মামলার আরেক আসামি হেলাল উদ্দিন কিশোরীর বাড়িতে ঢুকে তার চুল কেটে গ্রামে ঘোরানোর হুমকি দেন। ওই দিনই কিশোরী আত্মহত্যা করে।
রামগতি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. কবির হোসেন বলেন, কিশোরীর আত্মহত্যার ঘটনায় করা মামলার প্রধান অভিযুক্ত রাকিব হোসেনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। আর সালিসি বৈঠকের হেলাল উদ্দিন অপবাদ দিয়ে হুমকি দেন। তাঁদের দুজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। অন্য আসামিদের গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে।
উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: গ র প ত র কর ওই ক শ র অপব দ দ
এছাড়াও পড়ুন:
প্রেম ছিল না তবু কেন মধুবালাকে বিয়ে করেছিলেন কিশোর কুমার
দিলীপ কুমারের সঙ্গে বিচ্ছেদের কিছুদিন পরই কিশোর কুমারকে বিয়ে করেন অভিনেত্রী মধুবালা। তবে তখন তিনি ছিলেন অসুস্থ। কিশোর কুমার জানিয়েছিলেন, ভালোবাসা থেকে নয়, বরং কথা রাখতেই তিনি এ বিয়ে করেছিলেন।
মধুবালা ও দিলীপ কুমারের প্রেম নিয়ে একসময় মুখর ছিল মুম্বাই ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রি। কিন্তু অভিনেত্রীর বাবার বাধার কারণে সে সম্পর্কে ফাটল ধরে এবং দুজনের বিচ্ছেদ ঘটে। কিছুদিন পরেই কিশোর কুমারকে বিয়ে করেন মধুবালা। তাঁদের এই বিয়ে অনেককে চমকে দিয়েছিল। কারণ, তাঁদের প্রেমের কথা তখনো গোপন ছিল। তবে মধুবালার শরীর তখন ভালো যাচ্ছিল না। বলা হয়, দীর্ঘ রোগভোগের সময় কিশোর কুমার তাঁকে মায়ের বাড়িতে রেখেই চলে যান।
দ্য ইলাস্ট্রেটেড উইকলি অব ইন্ডিয়াকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে কিশোর কুমার বলেছিলেন, ‘বিয়ের আগেই জানতাম, ও খুব অসুস্থ। কিন্তু কথা তো দিয়েছিলাম। তাই সে কথা রেখেই ওকে ঘরে এনেছিলাম স্ত্রী হিসেবে। জানতাম, ওর জন্মগত হৃদ্রোগ আছে। তবু ৯ বছর ধরে সেবা করেছি। চোখের সামনেই ওকে মরতে দেখেছি। কেউ বুঝবে না এর যন্ত্রণা, না ভুগলে। ও অসম্ভব সুন্দরী ছিল। আর কত যন্ত্রণায় মারা গেছে, সেটা চোখে না দেখলে বিশ্বাস হবে না। হতাশায় চিৎকার করত, কান্নাকাটি করত। এত প্রাণোচ্ছল মানুষ নয়টা বছর বিছানায় শুয়ে থাকবে—এ কল্পনাই করা যায় না। ডাক্তার বলেছিল, ওকে হাসিখুশি রাখতে হবে। আমি তা–ই করেছি—ওর শেষনিশ্বাস পর্যন্ত। কখনো হেসেছি, কখনো কেঁদেছি ওর সঙ্গে।’
তবে কিশোর কুমারের এই বক্তব্য নিয়ে সংশয় তৈরি হয়। কারণ, পরে ফিল্মফেয়ার সাময়িকীতে দেওয়া সাক্ষাৎকারে একেবারে ভিন্ন কথা বলেন তিনি। সেই সাক্ষাৎকারে কিশোর কুমার বলেন, ‘মধুবালার সঙ্গে আমি প্রেমে পড়িনি কখনো। বরং ওর প্রেমিক ছিল আমার বন্ধু দিলীপ কুমার। আমি তো শুধু ওদের বার্তা পৌঁছে দিতাম। বিয়ের প্রস্তাবটা দিয়েছিল মধুবালাই। এমনকি, যখন আমার প্রথম স্ত্রী রুমা তখনো আমার সঙ্গে ছিল, তখনো মধু বলত, “ওকে কখনো ছেড়ো না, না হলে আমি তোমার হয়ে যাব।”’
আরও পড়ুনকিশোর কুমার কি সত্যিই ঘরে কঙ্কাল আর মাথার খুলি নিয়ে ঘুমাতেন২৭ মে ২০২৫মধুবালার পরিবারের ভাষ্য অনুযায়ী, চিকিৎসকেরা তখন বলেছিলেন, অভিনেত্রীর পক্ষে শারীরিক সম্পর্ক কিংবা সন্তানধারণ কোনো কিছুই সম্ভব নয়। সেই বাস্তবতা হয়তো প্রভাব ফেলেছিল কিশোরের সিদ্ধান্তে। এক ঘনিষ্ঠজন বলেন, ‘আমরা বলছি না কিশোরদা ভুল করেছিলেন। ডাক্তার তো স্পষ্ট বলেছিল—শারীরিক সম্পর্ক বা সন্তান কোনোটাই সম্ভব নয়। তবে একজন নারীর তো মানসিক সঙ্গীও দরকার হয়।’
ওই ঘনিষ্ঠজন আরও জানান, কিশোর কুমার তিন মাসে একবার আসতেন মাত্র। বলতেন, ‘আমি এলে তুমি কাঁদবে, আর এতে তোমার হৃদ্যন্ত্রের ক্ষতি হবে। তুমি বিষণ্ন হয়ে পড়বে।’ সে সময় মধু অনেক ছোট ছিলেন, ঈর্ষাও ছিল স্বাভাবিক। হয়তো এ দূরত্বই ধীরে ধীরে তাঁকে শেষ করে দিয়েছিল।
১৯৬৯ সালে মাত্র ৩৬ বছর বয়সে না ফেরার দেশে পাড়ি জমান বলিউড অভিনেত্রী মধুবালা