Samakal:
2025-11-03@05:03:00 GMT

কৃষ্ণচূড়ার মতো স্বপ্নগুলো

Published: 10th, March 2025 GMT

কৃষ্ণচূড়ার মতো স্বপ্নগুলো

প্রতিশ্রুতি 
গোলাম সরোয়ার 

আমি স্বপ্ন দেখি শ্রেণিহীন পৃথিবীর,
কল্পনায় চলে যাই শৃঙ্খলহীন সমাজে, 
জানি হবে মুক্তি, হবে যুক্তির জয়। 
হবে না অস্ত্রের লড়াই, বৈষম্যের খেলা
হবে না সাম্প্রদায়িক হিংসা, 
কোনো ভাই-বোন বর্ণবাদের শিকার হবে না, 
ধর্ষিত হবে না আমার কোনো বোন, 
নিপীড়িত হবে না আমার কোনো ভাই, 
শৃঙ্খলের নামে পড়বে না শিকল, 
বিনা দোষে ফাঁসির কাষ্ঠে ঝুলবে না, 
খাদ্যের জন্য কোনো মা কাঁদবে না, 
কোনো প্রৌঢ় অসহায় ভাববে না। 
শোষকের দ্বারা শোষিত হবে না, 
আর কোনো শিশু উদ্বাস্তু হবে না, 
পথে-প্রান্তরে উলঙ্গ হয়ে ঘুরবে না কেউ, 
জন্ম নেবে না শরণার্থী শিবিরে, 
শুনবে না অভাব আর অনটনের গল্প, 
ঈদের চাঁদের অপেক্ষায় চেয়ে থাকবে না, 
বড় হবে না অন্যের আশ্রয়ে, 
ফিরে আসবে আবার সজীবতা–
কেটে যাবে সব নির্জনতা।

 

আধপোড়া এক চাঁদ 
শাহজালাল সুজন

রাতের তারায় চেয়ে দেখি
আধপোড়া এক চাঁদ,
দিনের আলোয় অমাবস্যা
পাতছে যেন ফাঁদ।

শিয়াল হাঁকে দিনদুপুরে
নাহি তাদের ভয়,
মানুষগুলো গর্তে ঢুকে
করছে নীতির ক্ষয়।

জরাজীর্ণ ব্যাধির দেহে
দেখায় পেশি বল,
সুঠামদেহী বাঁচার তরে
করছে নানান ছল।

বাঘ ও মহিষ খায় যে বসে
এক ঘাটেতে জল,
আবেগ ছকে অঙ্ক কষে 
বিবেক পায়না ফল।

স্বার্থে ঘেরা যুগের আয়নায়
প্রশ্নবিদ্ধ হই,
সাদা পাতায় কালো ভরা
লাভ কি খুলে বই?

 

রঙিন স্পন্দন 
তাসনিম মীম

রুক্ষতা কাটিয়ে এলো নতুন পল্লব
কুঁড়ি ও ফুলের মেলা, 
চারিদিকে রঙিন বসন্তের শোভা। 
গাছে গাছে নতুন পাতা
শিমুল পলাশের লাল আভা,
জীবনের স্পন্দন, প্রকৃতির নবজাগরণ
গান ও কবিতার মোড়ক উন্মোচন
কাঙ্ক্ষিত স্বপ্নের যেন পুনরুজ্জীবন। 


রং, গন্ধ, সুর আর স্পর্শ, বসন্ত যেন
জীবনের সবটুকু আনন্দের এক মহামিলনক্ষেত্র।
কৃষ্ণচূড়ার মতো স্বপ্নগুলো হয়ে উঠুক রঙিন 
কোকিলের সুরের মতো প্রতিটা জীবন হোক
সুরেলা– এটাই বসন্তের প্রতি আমার বন্দনা।

 

একাকিত্ব 
নকুল শর্ম্মা

সৃষ্টির গল্পরা হারিয়ে ফেলে সব কাহিনি 
আঁশটে গন্ধে দৌড়াচ্ছে অস্থির সময়, 
যেখানে তোমার উপস্থিতি নেই বহুকাল ধরে।
বৃথা চিৎকারে কেঁপে উঠে আকাশ
ম্লান হয়ে আসে তোমাকে 
পাওয়ার অদম্য স্পৃহা, 
কুয়াশার কোলে প্রহর কাটায় একাকিত্ব হৃদয় 
সময়ের তলানিতে পড়ে থাকে প্রশ্নবান স্মৃতি। 
কোলাহল থামে না 
নিস্তব্ধতার মিনার জাগে বৈভবে
টুকরো টুকরো হয়ে যায় গল্পের সংলাপ, 
ঔদ্ধত্য তীরন্দাজের অশনিসংকেত 
দক্ষযজ্ঞের বার্তায় অন্য এক কাহিনির জন্ম।

.

উৎস: Samakal

এছাড়াও পড়ুন:

চলন্ত অবস্থায় বৈদ্যুতিক গাড়ি চার্জ করতে সক্ষম সড়ক চালু ফ্রান্সে

জ্বালানিসাশ্রয়ী ও পরিবেশবান্ধব হওয়ায় বর্তমানে বিশ্বব্যাপী বৈদ্যুতিক গাড়ির উৎপাদন ও ব্যবহার বাড়ছে। তবে এসব গাড়ি বাসা বা নির্দিষ্ট স্থানেই শুধু চার্জ করা যায়। ফলে দূরে ভ্রমণের সময় গাড়ির চার্জ শেষ হয়ে গেলে বিপদে পড়েন অনেকেই। এ সমস্যা সমাধানে তারের সংযোগ ছাড়াই বৈদ্যুতিক গাড়ি চার্জ করতে সক্ষম ১ দশমিক ৫ কিলোমিটার দীর্ঘ ‘ওয়্যারলেস চার্জিং সড়ক’ চালু করেছে ফ্রান্স। প্যারিসের উপকণ্ঠে চালু হওয়া সড়কটিতে চলাচলের সময় বিভিন্ন ধরনের বৈদ্যুতিক গাড়ি, বাস ও ভারী ট্রাকের ব্যাটারি স্বয়ংক্রিয়ভাবে চার্জ হয়ে যাবে।

বৈদ্যুতিক গাড়ি চার্জ করার জন্য সড়কটিতে নিরবচ্ছিন্নভাবে ২০০ কিলোওয়াট পর্যন্ত বিদ্যুৎ সরবরাহ করা হবে। প্রয়োজনে সেটি ৩০০ কিলোওয়াট পর্যন্ত পৌঁছাতে পারে, যা টেসলার ভি থ্রি সুপারচার্জারের মতো বিশ্বের দ্রুততম চার্জারগুলোর সমান শক্তি সরবরাহ করতে সক্ষম। এই সড়কের নিচে স্থাপন করা হয়েছে অসংখ্য তামার কুণ্ডলী। এসব কুণ্ডলী চৌম্বক ক্ষেত্র তৈরি করে, যা বিশেষ রিসিভারযুক্ত বৈদ্যুতিক গাড়িতে শক্তি স্থানান্তর করে। পদ্ধতিটি অনেকটা ওয়্যারলেস চার্জিং প্রযুক্তির মতো, যেখানে পাওয়ার ব্যাংক বা চার্জিং প্যাডে মোবাইল ফোন রেখে চার্জ নেওয়া হয়। চৌম্বক ক্ষেত্রের মাধ্যমে বিদ্যুৎ স্থানান্তর হওয়ায় ভারী বৃষ্টি, বরফ বা তুষারপাতেও চার্জিং প্রক্রিয়ায় কোনো ব্যাঘাত ঘটে না। দ্রুত চার্জিং সুবিধার ফলে গাড়ি ও ট্রাক এখন দীর্ঘ পথ পাড়ি দিতে পারবে, মাঝপথে চার্জ নিতে থামার প্রয়োজন হবে না। ফলে গাড়িতে বড় ও ভারী ব্যাটারি বহনের প্রয়োজনীয়তা অনেক কমে যাবে।

এরেনা ইভির প্রতিবেদন অনুযায়ী, এই স্বয়ংক্রিয় চার্জিং সড়কে মাত্র কয়েক মিনিট চললেই বৈদ্যুতিক গাড়ির রেঞ্জ বা চলার সক্ষমতা উল্লেখযোগ্যভাবে বাড়ে। ফলে বৈদ্যুতিক গাড়ির দীর্ঘ যাত্রায় চার্জ ফুরিয়ে যাওয়ার আশঙ্কা সমাধানে প্রযুক্তিটি নতুন সম্ভাবনা দেখাচ্ছে। প্রযুক্তিটি যদি ব্যাপকভাবে চালু করা যায়, তবে তুলনামূলকভাবে হালকা, সাশ্রয়ী এবং কম ব্যাটারিসমৃদ্ধ বৈদ্যুতিক গাড়ি তৈরি করা সম্ভব হবে। এতে গাড়ির উৎপাদন খরচও কমবে বলে আশা করা হচ্ছে।

প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান ইলেকট্রিওনের তৈরি সড়কটির নকশাতেও রয়েছে বাড়তি সুবিধা। বৈদ্যুতিক গাড়ি চার্জ করার প্রযুক্তি রাস্তার ভেতরের অংশে থাকায় ক্ষয়ক্ষতির ঝুঁকি কম। ফ্রান্সের পরিবহন মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, ২০৩৫ সালের মধ্যে দেশজুড়ে প্রায় ৯ হাজার কিলোমিটার ওয়্যারলেস চার্জিং সড়ক নির্মাণের পরিকল্পনা করা হয়েছে, যাতে বৈদ্যুতিক যানবাহন চলাচল আরও সহজ, কার্যকর ও পরিবেশবান্ধব হয়ে ওঠে।

সূত্র: ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস

সম্পর্কিত নিবন্ধ