বিশ্বে গত বছর সবচেয়ে দূষিত বলে বিবেচিত ২০টি শহরের ১৯টিই এশিয়া অঞ্চলের। সুইজারল্যান্ডভিত্তিক প্রতিষ্ঠান আইকিউএয়ারের প্রতিবেদন থেকে এমন তথ্য জানা গেছে। আজ মঙ্গলবার আইকিউএয়ারের ওয়েবসাইটে প্রতিবেদনটি প্রকাশ করা হয়।

তালিকায় থাকা প্রথম ২০টি শহরের মধ্যে ১৩টিই ভারতের। তালিকায় এশিয়া অঞ্চলের অপর ছয়টি শহরের মধ্যে চারটি পাকিস্তানের, একটি চীনের ও একটি কাজাখস্তানের।
এশিয়ার বাইরে যে শহরটি আছে, তা মধ্য আফ্রিকার দেশ চাদের রাজধানী এনজামেনা।

এদিকে উত্তর আমেরিকা অঞ্চলের সবচেয়ে দূষিত শহরের সবগুলোর অবস্থান যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়া অঙ্গরাজ্যে।

সুইজারল্যান্ডভিত্তিক প্রতিষ্ঠান আইকিউএয়ার বাতাসের মান পর্যবেক্ষণ করে থাকে। বিশেষ করে বাতাসে অতিক্ষুদ্র বস্তুকণা বা পিএম২.

৫-এর উপস্থিতি পরীক্ষা করে তারা। এটি অত্যন্ত ছোট বস্তুকণা হলেও সবচেয়ে বিপজ্জনক দূষণকারী।

জীবাশ্ম জ্বালানি পোড়ানো, ধূলিঝড় এবং দাবানলের মতো ঘটনাগুলো পিএম২.৫-এর উৎস। এ কণা এতটাই ক্ষুদ্র যে তা মানুষের একটি চুলের প্রস্থের ২০ ভাগের এক ভাগ। এটি খুব সহজেই মানুষের ফুসফুস কিংবা রক্তপ্রবাহে চলাচল করতে পারে।

পিএম২.৫ বস্তুকণার কারণে জ্বালাপোড়া ও প্রদাহ হতে পারে। এ ছাড়া শ্বাসপ্রশ্বাসের সমস্যা এবং দীর্ঘমেয়াদি কিডনি রোগের সঙ্গেও এর সম্পৃক্ততা আছে। এ ক্ষুদ্রকণার সংস্পর্শে এলে ক্যানসার, স্ট্রোক ও হৃদ্‌রোগে আক্রান্ত হওয়ার ঘটনা ঘটতে পারে। বিষণ্নতা ও উদ্বেগে ভোগার ঝুঁকিটাও উচ্চ।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) বলেছে, পিএম২.৫-এর গড় বার্ষিক মাত্রা প্রতি ঘনমিটারে ৫ মাইক্রোগ্রামের বেশি হওয়া উচিত নয়। ভারতের উত্তর পূর্বাঞ্চলীয় শিল্প শহর বিরনিহাটের বাতাসে গত বছর বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার গ্রহণযোগ্য মানের চেয়ে ২৫ গুণেরও বেশি পিএম২.৫ শনাক্ত হয়েছে।

ভারতের রাজধানী নয়াদিল্লি এবার টানা ষষ্ঠবারের মতো বিশ্বের সবচেয়ে দূষিত শহরের তালিকায় নাম লিখিয়েছে। তালিকায় ভারতের স্যাটেলাইট শহর ফরিদাবাদ, লোনি, দিল্লি, গুরুগ্রাম, নয়ডা এবং গ্রেটার নয়ডার নামও রয়েছে।

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: র সবচ য় শহর র

এছাড়াও পড়ুন:

৫ আগস্টের মধ্যে জুলাই সনদ না হলে অবরোধের হুঁশিয়ারি আপ বাংলাদেশের

জুলাই সনদ ও ঘোষণাপত্র জারির দাবিতে অন্তর্বর্তী সরকারকে ৫ আগস্ট পর্যন্ত সময় বেঁধে দিয়েছে ইউনাইটেড পিপলস (আপ) বাংলাদেশ। আজ শুক্রবার রাজধানীর শাহবাগে গণজমায়েত থেকে এ ঘোষণা দেওয়া হয়। দাবি পূরণ না হলে ৬ আগস্ট থেকে দেশজুড়ে অবরোধ কর্মসূচি পালনের হুঁশিয়ারি দিয়েছে সংগঠনটি।

‘৩৬ জুলাইয়ের মধ্যে জুলাই ঘোষণাপত্র ও সনদের দাবি’ শীর্ষক গণজমায়েতে অংশ নেন দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে আসা আপ বাংলাদেশের নেতা–কর্মীরা। জুলাই গণ–অভ্যুত্থানের এক বছর পার হলেও জুলাই সনদ ও ঘোষণাপত্র জারি না হওয়াকে অন্তর্বর্তী সরকারের ব্যর্থতা হিসেবে দেখছেন তাঁরা।

আপ বাংলাদেশের আহ্বায়ক আলী আহসান জুনায়েদ বলেন, ‘আমরা একটি বৈষম্যহীন বাংলাদেশ চেয়েছিলাম। কিন্তু আহতদের ভাগ্যের পরিবর্তন হয়নি। আমরা দেখেছি, যারা জুলাইয়ের নেতৃত্বে ছিল, জুলাইয়ের পরে তাদের পকেট ভারী হয়েছে। আমি বলতে চাই, আপনাদের এই পকেটের হিসাব দিতে হবে।’

অন্তর্বর্তী সরকারকে উদ্দেশ করে আলী আহসান বলেন, ‘আপনারা জুলাই ঘোষণাপত্র দিতে পারবেন কি পারবেন না, তা জানান; না পারলে আমরা আছি। যারা জীবন দিতে প্রস্তুত ছিলাম, বাংলাদেশের (সেই) ২০ কোটি জনগণ জুলাই ঘোষণাপত্র জারি করবে।’

আপ বাংলাদেশের আহ্বায়ক বলেন, ‘৩৬ জুলাইয়ের মধ্যে যদি জুলাই ঘোষণাপত্র না হয়, তাহলে ৬ আগস্ট থেকে দেশজুড়ে অবরোধ শুরু হবে। এ সরকারের কোনো হুমকি আমাদের দমিয়ে রাখতে পারবে না।’

গণজমায়েতে অংশ নিয়ে ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরীফ ওসমান বলেন, আপ বাংলাদেশের নেতারা এখনো কোনো প্রটোকল ছাড়া রাস্তাঘাটে হাঁটেন। কিন্তু তাঁরা যেদিন প্রটোকল নিতে শুরু করবেন, সেদিন থেকে তাঁদের বিরুদ্ধেও তিনি কথা বলা শুরু করবেন।

জুলাই সনদ ও ঘোষণাপত্র জারির আহ্বান জানিয়ে শরীফ ওসমান বলেন, এখন পর্যন্ত বিদ্যমান আইনি কাঠামোয় জুলাই শহীদেরা রাষ্ট্রদ্রোহী। তাঁদেরকে আইনি স্বীকৃতি দেওয়া হয়নি। আজকের মধ্যে সরকার দিনক্ষণ না জানালে আগামী ৩ তারিখ (আগস্ট) ইনকিলাব মঞ্চের উদ্যোগে কফিন মিছিল নিয়ে সচিবালয় অবরোধ করা হবে।

বিগত এক বছর থেকে একটি দুর্বল সরকার দেশ চালাচ্ছে উল্লেখ করে আপ বাংলাদেশের সদস্যসচিব আরেফিন মোহাম্মদ বলেন, ‘জুলাই গণ–অভ্যুত্থানের এক বছর পূর্তিতে ঘোষণাপত্রের জন্য আমাদের আবারও গণজমায়েত করতে হচ্ছে। এর চেয়ে লজ্জাজনক আর কী হতে পারে?’

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী এ বি জুবায়ের বলেন, ‘আমরা যে মৌলিক সংস্কার চেয়েছিলাম, এখনো তার কিছুই হয়নি। এখনো শহীদ পরিবারের পুনর্বাসন ও আহতদের চিকিৎসা নিশ্চিত হয়নি। আমি উপদেষ্টাদের উদ্দেশে বলতে চাই, অবিলম্বে জুলাই সনদ ঘোষণা করুন। আপনাদের কাছে আমাদের চাওয়া–পাওয়া খুব বেশি নেই।’

গণজমায়েতে র‌্যাপ গান পরিবেশন করেন আপ বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় সদস্য আহনাফ তাহমিদ। স্বাগত বক্তব্য দেন জুলাই শহীদ ওসমান পাটোয়ারীর বাবা আবদুর রহমান। গণজমায়েতে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন আপ বাংলাদেশের প্রধান সমন্বয়কারী রাফে সালমান রিফাত, প্রধান সংগঠক নাঈম আহমেদ, মুখপাত্র শাহরিন সুলতানা প্রমুখ।

সম্পর্কিত নিবন্ধ