গাজায় একটি ভঙ্গুর যুদ্ধবিরতির মেয়াদ দ্বিতীয় দফা বাড়ানোর বিষয়ে আলোচনার জন্য সোমবার কাতারের রাজধানী দোহায় একটি প্রতিনিধি দল পাঠিয়েছে ইসরায়েল। এর মধ্যেই গতকাল মঙ্গলবার ইসরায়েলি হামলায় মধ্য ও দক্ষিণ গাজায় ছয়জন এবং জেনিনে একজন বয়স্ক নারীসহ চারজন নিহত হয়েছেন। এ নিয়ে এখন পর্যন্ত ৪৮ হাজার ৫০৩ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। ইয়েমেনের হুতিরা হুমকি দিয়েছে, ইসরায়েল অবরোধ প্রত্যাহার না করলে লোহিত সাগরে ইসরায়েল-সংযুক্ত জাহাজগুলোতে তারা পুনরায় হামলা শুরু করবে।

এদিকে ইসরায়েলি জিম্মির মুক্তি নিয়ে যুক্তরাষ্ট্র সরাসরি হামাসের সঙ্গে বৈঠক করার পর চটেছে ইসরায়েল। হামাসের সঙ্গে গত সপ্তাহে যুক্তরাষ্ট্রের বিশেষ দূত অ্যাডাম বোয়েলার বৈঠকটি করেন। পরে তিনি সিএনএনের এক অনুষ্ঠানে বলেন, ফিলিস্তিনে শান্তি প্রতিষ্ঠায় আরেকটি চুক্তির দেখা মিলতে পারে এবং হামাসের হাতে থাকা জিম্মিরা কয়েক সপ্তাহের মধ্যে মুক্তি পেতে পারে। তবে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রবিও বলেছেন, বৈঠকটি ছিল গাজায় স্থায়ী শান্তি প্রতিষ্ঠায় প্রাথমিক পদক্ষেপ। 

হামাসের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের কর্মকর্তাদের এই বৈঠকের ব্যাপারটিকে ভালো চোখে দেখছে না ইসরায়েলি কর্মকর্তারা। তারা আনুষ্ঠানিক কিছু না বললেও ক্ষোভ প্রকাশ করেছে। কারণ, ইসরায়েলের বিরোধিতা সত্ত্বেও হামাস নেতাদের সঙ্গে ট্রাম্পের দূত বৈঠক করেছেন। 
বোয়েলার সিএনএনের ‘স্টেট অব দ্য ইউনিয়ন’ অনুষ্ঠানে আরও বলেন, আমরা যুক্তরাষ্ট্রের স্বার্থ আগে দেখব। পাশাপাশি অন্যদের বোঝা উচিত, ওয়াশিংটন ইসরায়েলের এজেন্ট নয়।  

এদিকে ইসরায়েলের অবরোধ যুদ্ধ অব্যাহত রাখার শামিল বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। ইসরায়েলের অবরোধ এমন একসময়ে শুরু হয়েছে, যখন হামাসকে যুদ্ধবিরতি চুক্তির প্রথম পর্যায়ের মেয়াদ বাড়াতে চাপ দেওয়া হচ্ছে। কাতারের জর্জটাউন বিশ্ববিদ্যালয়ের সহযোগী অধ্যাপক আবদুল্লাহ আল-আরিয়ান বলেন, অবরোধ জারি রাখার মাধ্যমে ইসরায়েল মূলত অন্য উপায়ে যুদ্ধ অব্যাহত রাখতে চাচ্ছে। 
অবরোধের ফলে জীবনের সব ক্ষেত্রেই ফিলিস্তিনিরা সংগ্রাম করছে। তারা জানে দ্বিতীয় ধাপের যুদ্ধবিরতির আলোচনায় কেবল দুর্ভোগের অবসান ঘটাতে পারে।

অন্যদিকে, গাজা উপত্যকায় বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন করায় ইসরায়েলের নিন্দা জানিয়েছে সৌদি আরব, কাতার, জর্ডানসহ মানবাধিকার সংস্থা। ইসরায়েলের বক্তব্য, তারা গাজায় যে বিদ্যুৎ সরবরাহ করে থাকে, তার পুরোটাই বন্ধ করে দেবে। হামাস বলেছে, দখলদার বাহিনী গাজার জনগণকে চাপে ফেলতে মরিয়া হয়ে উঠেছে।  খবর আলজাজিরা ও ডনের।  

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ইসর য় ল ইসর য় ল র ইসর য অবর ধ

এছাড়াও পড়ুন:

শি জিনপিং ফোন করেছিলেন, ট্রাম্পের এমন দাবি প্রত্যাখ্যান চীনের

শুল্ক আরোপ নিয়ে চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং তাকে ফোন করেছিলেন বলে যে দাবি করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প তা প্রত্যাখ্যান করেছে চীন। সোমবার বেইজিং জানিয়েছে, শি জিনপিং সম্প্রতি মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে ফোনে কথা বলেননি। এমনকি দুই দেশের মধ্যে শুল্কযুদ্ধ মেটাতে কোনো আলোচনাও হচ্ছে না। চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একজন মুখপাত্র এক বিবৃতিতে এ কথা জানিয়েছে। খবর-সিএনএন

গত সপ্তাহে টাইম সাময়িকীকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে ডোনাল্ড ট্রাম্প দাবি করেছিলেন, চীনের প্রেসিডেন্ট সি তাঁকে ফোন করেছেন। এ ঘটনায় চীন তাৎক্ষণিক কোনো প্রতিক্রিয়া না জানালেও আজ দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে ট্রাম্পের এমন দাবি নাকচ করে দিয়েছে।

চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র গুয়ো জিয়াকুন নিয়মিত সংবাদ সম্মেলনে বলেন, ‘আমার জানামতে, সম্প্রতি দুই রাষ্ট্রপ্রধানের মধ্যে ফোনে কোনো কথা হয়নি। আমি আবারও স্পষ্ট করে বলতে চাই, চীন ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে শুল্ক ইস্যু নিয়ে কোনো আলোচনা বা দর–কষাকষি চলছে না।’

গত শুক্রবার টাইম সাময়িকীতে প্রকাশিত সাক্ষাৎকারে সির প্রতি ইঙ্গিত করে ট্রাম্প বলেন, ‘তিনি আমাকে ফোন করেছিলেন। আমি মনে করি না এটি তাঁর পক্ষ থেকে কোনো দুর্বলতার ইঙ্গিত।’

ট্রাম্প বারবার সি চিন পিংকে ‘বন্ধু’ বলে উল্লেখ করেছেন। তবে টাইম সাময়িকীকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে চীনের নেতার সঙ্গে কথিত ফোনালাপের বিষয়বস্তু বা সময় সম্পর্কে কোনো নির্দিষ্ট তথ্য দেননি। এমনকি সিএনএন শুক্রবার জানতে চাইলেও তিনি এ বিষয়ে কিছু বলতে চাননি।

শুক্রবার হোয়াইট হাউসে সিএনএনের সাংবাদিক অ্যালাইনা ট্রিনের প্রশ্নের জবাবে ট্রাম্প বলেন, ‘আমি এ বিষয়ে মন্তব্য করতে চাই না। তবে আমি তাঁর (সি চিন পিং) সঙ্গে অনেকবার কথা বলেছি।’

সর্বশেষ গত ১৭ জানুয়ারি ট্রাম্প দ্বিতীয় দফায় যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব নেওয়ার কয়েক দিন আগে দুই নেতা ফোনে কথা বলেন।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • শি জিনপিং ফোন করেছিলেন, ট্রাম্পের এমন দাবি প্রত্যাখ্যান চীনের
  • ট্রাম্পের সঙ্গে সাম্প্রতিক সময়ে চীনের প্রেসিডেন্টের কোনো কথা হয়নি: বেইজিং