মাদারীপুর সদর উপজেলার খোয়াজপুর এলাকায় মসজিদে ঢুকে তিন ভাইকে কুপিয়ে হত্যার ঘটনায় প্রধান অভিযুক্ত মো. হোসেন সরদার (৬০) ও মামলার এজাহারভুক্ত আরেক আসামি সুমন সরদারকে গ্রেপ্তার করেছে র‌্যাব। পৃথক দুটি অভিযানে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়। 

র‌্যাব- ৮ সদর দপ্তরে বুধবার এক সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, ঢাকা জেলার আশুলিয়া থানার চিত্রাশাইল এলাকায় কাঠালতলা কেন্দ্রীয় জামে মসজিদ থেকে মঙ্গলবার হোসেন সরদারকে গ্রেপ্তার করা হয়। তিনি নিহতদের সম্পর্কে চাচা হন। শরীয়তপুরের পালং থানার আরিগা এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করা হয় সুমন সরদারকে। 

র‌্যাব-৮ এর অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল নিস্তার আহমেদ বলেন, প্রাথমিকভাবে যেটুকু জানা গেছে মারামারি ঘটনায় উভয়পক্ষ আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে সম্পৃক্ত ছিল। সম্প্রতি উভয়পক্ষের মধ্যে বালুর ব্যবসা নিয়ে বিরোধ দেখা দিলে এ হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। 

৮ মার্চ গ্রেপ্তার হোসেন সরদারের নেতৃত্বে এজাহারনামী ৪৯ জন এবং অজ্ঞাতনামা ৮০-৯০ জন আসামি দেশীয় অস্ত্র নিয়ে সাইফুল সরদারের বাড়িতে হামলা চালায়। এ সময় সাইফুল সরদার ও তার দুই ভাই প্রাণ বাঁচাতে সরদার বাড়ি মসজিদে আশ্রয় নেন। আসামিরা মসজিদে ঢুকে সাইফুল সরদার ও তার ভাই আতাউর সরদারকে কুপিয়ে হত্যা করে। আরও কয়েকজনকে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে আহত অবস্থায় ফেলে রেখে যায়। হামলার সময় আসামিরা চারটি বাড়িতে অগ্নিসংযোগ ও লুটপাট করে। আহত পলাশ সরদার (১৮) ঢাকায় চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: গ র প ত র কর ন সরদ র মসজ দ

এছাড়াও পড়ুন:

৫ আগস্টের মধ্যে জুলাই সনদ না হলে অবরোধের হুঁশিয়ারি আপ বাংলাদেশের

জুলাই সনদ ও ঘোষণাপত্র জারির দাবিতে অন্তর্বর্তী সরকারকে ৫ আগস্ট পর্যন্ত সময় বেঁধে দিয়েছে ইউনাইটেড পিপলস (আপ) বাংলাদেশ। আজ শুক্রবার রাজধানীর শাহবাগে গণজমায়েত থেকে এ ঘোষণা দেওয়া হয়। দাবি পূরণ না হলে ৬ আগস্ট থেকে দেশজুড়ে অবরোধ কর্মসূচি পালনের হুঁশিয়ারি দিয়েছে সংগঠনটি।

‘৩৬ জুলাইয়ের মধ্যে জুলাই ঘোষণাপত্র ও সনদের দাবি’ শীর্ষক গণজমায়েতে অংশ নেন দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে আসা আপ বাংলাদেশের নেতা–কর্মীরা। জুলাই গণ–অভ্যুত্থানের এক বছর পার হলেও জুলাই সনদ ও ঘোষণাপত্র জারি না হওয়াকে অন্তর্বর্তী সরকারের ব্যর্থতা হিসেবে দেখছেন তাঁরা।

আপ বাংলাদেশের আহ্বায়ক আলী আহসান জুনায়েদ বলেন, ‘আমরা একটি বৈষম্যহীন বাংলাদেশ চেয়েছিলাম। কিন্তু আহতদের ভাগ্যের পরিবর্তন হয়নি। আমরা দেখেছি, যারা জুলাইয়ের নেতৃত্বে ছিল, জুলাইয়ের পরে তাদের পকেট ভারী হয়েছে। আমি বলতে চাই, আপনাদের এই পকেটের হিসাব দিতে হবে।’

অন্তর্বর্তী সরকারকে উদ্দেশ করে আলী আহসান বলেন, ‘আপনারা জুলাই ঘোষণাপত্র দিতে পারবেন কি পারবেন না, তা জানান; না পারলে আমরা আছি। যারা জীবন দিতে প্রস্তুত ছিলাম, বাংলাদেশের (সেই) ২০ কোটি জনগণ জুলাই ঘোষণাপত্র জারি করবে।’

আপ বাংলাদেশের আহ্বায়ক বলেন, ‘৩৬ জুলাইয়ের মধ্যে যদি জুলাই ঘোষণাপত্র না হয়, তাহলে ৬ আগস্ট থেকে দেশজুড়ে অবরোধ শুরু হবে। এ সরকারের কোনো হুমকি আমাদের দমিয়ে রাখতে পারবে না।’

গণজমায়েতে অংশ নিয়ে ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরীফ ওসমান বলেন, আপ বাংলাদেশের নেতারা এখনো কোনো প্রটোকল ছাড়া রাস্তাঘাটে হাঁটেন। কিন্তু তাঁরা যেদিন প্রটোকল নিতে শুরু করবেন, সেদিন থেকে তাঁদের বিরুদ্ধেও তিনি কথা বলা শুরু করবেন।

জুলাই সনদ ও ঘোষণাপত্র জারির আহ্বান জানিয়ে শরীফ ওসমান বলেন, এখন পর্যন্ত বিদ্যমান আইনি কাঠামোয় জুলাই শহীদেরা রাষ্ট্রদ্রোহী। তাঁদেরকে আইনি স্বীকৃতি দেওয়া হয়নি। আজকের মধ্যে সরকার দিনক্ষণ না জানালে আগামী ৩ তারিখ (আগস্ট) ইনকিলাব মঞ্চের উদ্যোগে কফিন মিছিল নিয়ে সচিবালয় অবরোধ করা হবে।

বিগত এক বছর থেকে একটি দুর্বল সরকার দেশ চালাচ্ছে উল্লেখ করে আপ বাংলাদেশের সদস্যসচিব আরেফিন মোহাম্মদ বলেন, ‘জুলাই গণ–অভ্যুত্থানের এক বছর পূর্তিতে ঘোষণাপত্রের জন্য আমাদের আবারও গণজমায়েত করতে হচ্ছে। এর চেয়ে লজ্জাজনক আর কী হতে পারে?’

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী এ বি জুবায়ের বলেন, ‘আমরা যে মৌলিক সংস্কার চেয়েছিলাম, এখনো তার কিছুই হয়নি। এখনো শহীদ পরিবারের পুনর্বাসন ও আহতদের চিকিৎসা নিশ্চিত হয়নি। আমি উপদেষ্টাদের উদ্দেশে বলতে চাই, অবিলম্বে জুলাই সনদ ঘোষণা করুন। আপনাদের কাছে আমাদের চাওয়া–পাওয়া খুব বেশি নেই।’

গণজমায়েতে র‌্যাপ গান পরিবেশন করেন আপ বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় সদস্য আহনাফ তাহমিদ। স্বাগত বক্তব্য দেন জুলাই শহীদ ওসমান পাটোয়ারীর বাবা আবদুর রহমান। গণজমায়েতে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন আপ বাংলাদেশের প্রধান সমন্বয়কারী রাফে সালমান রিফাত, প্রধান সংগঠক নাঈম আহমেদ, মুখপাত্র শাহরিন সুলতানা প্রমুখ।

সম্পর্কিত নিবন্ধ