পদ্মায় ডুবে যাওয়া নৌযান থেকে ২ শ্রমিকের লাশ উদ্ধার
Published: 13th, March 2025 GMT
শরীয়তপুরের নড়িয়ায় পদ্মা নদীতে ডুবে যাওয়া বালুবাহী নৌযান (বাল্কহেড) থেকে দুই শ্রমিকের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। আজ বৃহস্পতিবার বিকেলে ডুবুরিদের সহায়তায় উপজেলার মুলফৎগঞ্জ এলাকা থেকে তাঁদের লাশ উদ্ধার করে নৌপুলিশ। সন্ধ্যায় তাঁদের লাশ স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হয়।
পদ্মা নদীর তীর রক্ষা বাঁধের কাজে ব্যবহৃত বালুবাহী একটি নৌযান মঙ্গলবার গভীর রাতে নদীতে ডুবে যায়। তখন ওই নৌযানে দুই শ্রমিক ঘুমিয়ে ছিলেন। লাশ উদ্ধার হওয়া শ্রমিকেরা হলেন নড়িয়ার নাওপাড়া ইউনিয়নের খালাসিকান্দি এলাকার বারেক সরদারের ছেলে আল আমিন সরদার (৩৭) ও পিরোজপুরের নাজিরপুরের মধ্য লেবুজিল বুনিয়া এলাকার মোস্তফার ছেলে আরিফ মিয়া (২৬)।
শরীয়তপুরের সুরেশ্বর নৌপুলিশ ফাঁড়ি সূত্র জানায়, জাজিরার কুন্ডেরচর থেকে নড়িয়ার সুরেশ্বর পর্যন্ত ১০ কিলোমিটার এলাকায় পদ্মা নদীর তীর রক্ষা বাঁধ নির্মাণ করছে পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো)। বাঁধ শক্তিশালী করতে বাঁধের পাশে নদীতে বালুভর্তি জিও ব্যাগ ফেলা হচ্ছে। মঙ্গলবার বিকেলে নড়িয়ার মুলফৎগঞ্জ এলাকায় কিছু জিও ব্যাগ ফেলা হয়। পরে সেটি আরেকটি নৌযানের সঙ্গে রশি দিয়ে বেঁধে রাখা হয়। রাত ১২টার দিকে হঠাৎ রশি ছিড়ে নৌযানটি ডুবে যায়। তখন নৌযানে দুই শ্রমিক ঘুমিয়ে ছিলেন। তাঁরাও নৌযানটির সঙ্গে তলিয়ে যান।
বুধবার সকাল থেকে কোস্টগার্ড, নৌপুলিশ, ফায়ার সার্ভিস ও পাউবোর লোকজন দুই শ্রমিককে উদ্ধারে অভিযান শুরু করেন। শ্রমিকদের স্বজনেরাও বেসরকারি ডুবরি দল দিয়ে আজ সেখানে অভিযান চালান। ওই ডুবুরি দলের সদস্যরা বিকেল পাঁচটার দিকে ডুবে যাওয়া নৌযান থেকে দুজনের লাশ উদ্ধার করেন। পরে স্বজনদের কাছে লাশ দুটি হস্তান্তর করে নৌ পুলিশ।
সুরেশ্বর নৌ পুলিশ ফাঁড়ির পরিদর্শক আবদুর জব্বার বলেন, বালুবাহী নৌযানটি ডুবে যাওয়ার পর তাঁরা জানতে পারেন, দুই শ্রমিক আটকা পড়েছেন। তারপরই তাঁরা উদ্ধার অভিযান শুরু করেন। আজ বিকেলে ডুবুরিরা নৌযানের ভেতর থেকে তাঁদের লাশ দুটি উদ্ধার করেন। এ ঘটনায় একটি সাধারণ ডায়েরি করা হয়েছে। পরিবার চাইলে মামলা করতে পারেন। পরিবারের কোনো অভিযোগ না থাকায় ময়নাতদন্ত ছাড়াই লাশ হস্তান্তর করা হয়েছে।
শরীয়তপুর পাউবোর উপসহকারী প্রকৌশলী জসিম উদ্দিন প্রথম আলোকে বলেন, নড়িয়ায় নদীর তীর রক্ষা বাঁধের শক্তিশালীকরণের কাজ চলছে। সেই কাজের ঠিকাদার নৌযানে করে বালুভর্তি জিও এনেছিলেন। বালু পরিবহনের একটি বাল্কহেড মঙ্গলবার গভীর রাতে হঠাৎ পদ্মায় ডুবে যায়। ওই নৌযানে আটকে পড়া দুই শ্রমিকের লাশ আজ উদ্ধার হয়েছে। তাঁরা যেকোনো প্রযোজনে ওই দুই শ্রমিকের পরিবারের পাশে থাকবেন।
.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
সিজারের সময় নবজাতকের পা ভেঙে ফেলার অভিযোগ
পটুয়াখালীর কলাপাড়ায় সিজারিয়ান অপারেশনের সময় এক নবজাতকের পা ভেঙে ফেলার অভিযোগ উঠেছে ক্লিনিকের চেয়ারম্যান ও আবাসিক চিকিৎসকের বিরুদ্ধে। রবিবার (১৪ সেপ্টেম্বর) রাতে বিষয়টি নিয়ে রোগীর স্বজনদের সঙ্গে বাকবিতণ্ডা হয়। একপর্যায়ে নবজাতকসহ তাদেরকে ক্লিনিক থেকে বের করে দেওয়া হয়। ওই রাতেই শিশুটিকে উন্নত চিকিৎসার জন্য বরিশালের শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে (শেবাচিম হাসপাতালে) নেওয়া হয়।
অভিযুক্ত চিকিৎসক পার্থ সমদ্দার কলাপাড়া পৌর শহরের জমজম ক্লিনিক অ্যান্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টারের আবাসিক চিকিৎসক এবং চেয়ারম্যান।শিশুটির
স্বজনদের অভিযোগ, গত বৃহস্পতিবার (১১ সেপ্টেম্বর) প্রসব বেদনা নিয়ে জমজম ক্লিনিক অ্যান্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টারে ভর্তি হন লালুয়ার ইউনিয়নের গোলবুনিয়া গ্রামের সিদ্দিক মিয়ার মেয়ে ও রফিকুলের স্ত্রী মিম বেগম। ওই রাতেই মিমের সিজারিয়ান অপারেশন করেন ডা. পার্থ সমদ্দার। সিজারের কিছুক্ষণ পরই টিকার কথা বলে নবজাতকের পায়ে একটি ইনজেকশন পুশ করা হয়। পরের দিন থেকেই নবজাতকের বাম পা ফুলতে শুরু করে এবং কান্না বাড়তে থাকে। বিষয়টি চিকিৎসক ও নার্সদেরকে অবহিত করলে তারা তাতে কর্ণপাত করেননি। উল্টো ওই ক্লিনিকের কর্মী ও নার্সরা নবজাতকের স্বজনদের সঙ্গে অসদাচরণের পাশাপাশি তাদের ক্লিনিক থেকে বের করে দেন। পরে অন্যত্র এক্সরে করে জানা যায়, সিজারের সময় নবাজতকের পা ভেঙে ফেলেছেন চিকিৎসক।
নবজাতকের মা মিম আক্তার বলেছেন, বাচ্চা অনবরত কান্না করলে প্রথমে নার্স ও পরে চিকিৎককে অবহিত করা হয়। বাচ্চার বাম ফুলে গেলে তা জানানো হয়। কিন্তু, তারা এর কোনো প্রতিকার না করে আমাদের ধমকাতে থাকেন। ক্লিনিক ছেড়ে চলে যেতে চাপ প্রয়োগ করেন।
নবজাতকের নানা সিদ্দিক বলেন, টিকার কথা বলে আমার নাতিকে শরীর অবশ করার ইনজেকশন দিয়েছিল নার্সরা। ইনজেকশনের কার্যকারিতা শেষ হওয়ার পরপরই আমার নাতি অনেক কান্না করে। আমার স্ত্রী নার্সদের বললে তারা তাকে মারধরের চেষ্টা করে। আমাদের সঙ্গে ক্লিনিকের সবাই অনেক খারাপ আচরণ করেছে। এভাবে রোগীদের সঙ্গে প্রাইভেট ক্লিনিকের কর্মকর্তারাও যদি অসদাচরণ করে, তাহলে আমরা কোথায় যাব?
সিজারের সময় নবজাকের পা ভাঙেনি, দাবি করে জমজম ক্লিনিক অ্যান্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টারের চেয়ারম্যান ডা. পার্থ সমদ্দার বলেছেন, আমি শিশু বিশেষজ্ঞ নই। নবজাতককে একজন শিশু বিশেষজ্ঞের কাছে নিয়ে যাওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।
কলাপাড়া উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. শংকর প্রসাদ অধিকারী বলেছেন, যদি সিজারিয়ান অপারেশনের প্রশিক্ষণ থাকে, তাহলে এনেস্থেসিস্টও সিজার করতে পারেন। তবে, এনেস্থেসিস্ট একাই সিজারিয়ান অপারেশন করতে পারেন না।
ঢাকা/ইমরান/রফিক