আসন্ন মহাতীর্থ লাঙ্গলবন্দ অষ্টমী স্নান উৎসব সুষ্ঠু ও সুন্দরভাবে উদযাপন করার লক্ষ্যে মহাতীর্থ লাঙ্গলবন্দ  স্নান উৎসব উদযাপন ফ্রন্ট এর নতুন কমিটির আত্মপ্রকাশ হয়েছে।

‎‎শনিবার (১৫ মার্চ) দুপুরে নগরীর নিতাইগঞ্জস্থ বলদেব জিউর আখড়া ও শিব মন্দির প্রাঙ্গনে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। ‎‎অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, বাংলাদেশ পূজা উদযাপন ফ্রন্ট কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি অপর্ণা রায় দাস।

‎‎প্রধান অতিথি তার বক্তব্যে বলেন, আজকে এখানে এসে অনেক কথা জানতে পারলাম। অনেকের মনে প্রশ্ন ছিলো কেনো আমরা এখানে আসতে পারিনি। গতকাল পর্যন্ত নানা জায়গা বাঁধা প্রদান করা হয়েছে। দুষ্কৃতকারীদের কাজ হচ্ছে খারাপ কাজ করা আর দুবৃত্তদের কাজ হচ্ছে অন্যের জায়গা দখল করা। লাঙ্গলবন্দ হচ্ছে একটি আন্তর্জাতিক তীর্থস্থান।

এখানে বিশ্বের বিভিন্ন স্থান মানুষ আসে। বিএনপির কর্মী হিসেবে আমি মনে করি জিয়াউর রহমান সকলকে নিয়ে কাজ করেছেন এবং সকল ধর্মের মানুষকে নিয়ে বহুদলীয় গণতন্ত্রের প্রতিষ্ঠা করেছেন। তিনি কোন মানুষের জায়গা-জমি দখল করতে যান নি।

এরপর স্বৈরশাসক এরশাদ কত অত্যাচার নির্যাতন করেছে। সেটার শিকার আপনার হয়েছেন। এরপর এসেছেন প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়া। তিনি আমাকে শিক্ষা দিয়েছেন কিভাবে দেশের সম্পদ রক্ষা করতে হবে, কিভাবে দেশের সার্বভৌমত্ব রক্ষা করতে হবে।

‎তিনি আরও বলেন, বেগম খালেদা জিয়া তিনবার আপনাদের ভোটে নির্বাচিত হয়েছিলেন। তিনি কখনো হিন্দুদের জায়গা দখল করেন নি বরং বলেছেন কেউ যদি জমি দখল কর রাখে তাহলে সেটা উদ্বারের ব্যবস্থা করে দিয়েছেন। বিগত ১৫ বছর বিভিন্ন স্থানে আমাদের উপর অত্যাচার করা হয়েছে, বাড়ি-ঘর লুটপাট করা হয়েছে।‎

‎তিনি আরো বলেন,  নারায়ণগঞ্জে আমাদের মূর্তি ভাঙ্গা হয়েছে, স্নান ঘাট দখল করে তাদের নামকরণ করেছে। আমরা এর ধিক্কার জানাই। গত ১৭ বছর আপনাদের বাক স্বাধীনতা ঐ ফ্যাসিষ্ট সরকার হাসিনা বন্ধ করে রেখেছিলো। জনগণের ভোটের অধিকার কেড়ে নিযেছিলো।

হিন্দুরা বিবেকহীন নয়, তাদেরও বিবেক রয়েছে। অনেকে বলেছেন পূর্বের কমিটি কেনো নয়, আমি হাসির সাথে বলতে চাই ৫ আগষ্টের পর আমাদের কর্মীরা কেনো মন্দির পাহারা দিলো।

কারন প্রতিটি মন্দিরে ছিলে দলীয়করণ। কিন্তু আমরা সেটা করবোনা। সম্মিলিতভাবে আমরা প্রতিটি উৎসব পালন করবো। তীর্থস্থানের যত কাজ বাকী রয়েছে প্রতিটি কাজ আমরা মিলেমিশে করতে চাই।

‎বক্তব্য শেষে মহাতীর্থ লাঙ্গলবন্দ  স্নান উৎসব উদযাপন ফ্রন্ট এর নতুন কমিটির ননী গোপাল দাসকে প্রধান উপদেষ্টা, অর্পণা রায় দাসকে সভাপতি ও জয় কে রায় চৌধুরী বাপ্পীকে সাধারণ সম্পাদক ঘোষনা করা হয়।

‎‎এসময় আরো উপস্থিত ছিলেন, মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক এড.

সাখাওয়াত হোসেন খান, সদস্য সচিব এড. আবু আল ইউসুফ খান টিপু, শংকর সাহা, পরিতোষ কান্তি সাহা, অসিত বরণ বিশ্বাস, প্রবাস সাহা সহ অন্যান্য নেতৃবৃন্দ।
 

উৎস: Narayanganj Times

কীওয়ার্ড: ন র য়ণগঞ জ স ন ন উৎসব কম ট র

এছাড়াও পড়ুন:

তুলশীগঙ্গার তীরে সন্ন্যাসতলীর শতবর্ষী ঘুড়ির মেলা

জয়পুরহাটের ক্ষেতলাল উপজেলার মামুদপুর ইউনিয়নের মহব্বতপুর গ্রাম ঘেঁষে তুলশীগঙ্গা নদীর অদূরে সন্ন্যাসতলীর বটতলা। জায়গাটিতে প্রায় একশ বছর আগে থেকে বাংলা জ্যৈষ্ঠ মাসের শেষ শুক্রবার আয়োজন হয় ঘুড়ির মেলা। এবারও এর ব্যতিক্রম হয়নি। অন্তত ৫০ গ্রামের হাজারো মানুষের উপস্থিতিতে শুক্রবার সন্ন্যাসতলী ঘুড়ি উৎসব অনুষ্ঠিত হয়েছে। 

মেলার দিনক্ষণ মনে রেখে সময়মতো দোকানিদের পাশাপাশি দর্শনার্থীরা ভিড় জমান নিভৃত পল্লীতে। আগে মেলার দিন বৃষ্টি হওয়া যেন নিয়ম হয়ে দাঁড়িয়েছিল। কিন্তু এবার ব্যতিক্রম ঘটনা ঘটেছে। প্রচণ্ড গরম ও তাপপ্রবাহের মধ্যেই চলে এ আয়োজন। বৈরী পরিবেশের কারণে উৎসবের স্বাভাবিক কর্মকাণ্ডে কিছুটা ব্যাঘাত ঘটেছে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।

স্থানীয় প্রবীণ বাসিন্দারা বলছেন, সন্ন্যাসতলীর এ ঘুড়ি উৎসব শুরুর দিন বিকেলে বটতলায় স্থানীয় হিন্দু সম্প্রদায় সন্ন্যাস পূজা পালন করেন। তাদের এ পূজা-অর্চনা ঘিরেই মূলত এ মেলার উৎপত্তি। তবে শুরুর কথা কেউ বলতে পারেননি। প্রবীণরা শুধু জানেন, একশ বছরের বেশি সময় ধরে তারা এ মেলার আয়োজন দেখে আসছেন।

মেলার নিজস্ব জায়গা না থাকলেও এর ব্যাপ্তি প্রায় দুই কিলোমিটার এলাকাজুড়ে। প্রচণ্ড গরমের মধ্যেই এক দিনের এ মেলা ঘিরেই জেলার জামালগঞ্জ চারমাথা থেকে ঐতিহাসিক আছরাঙ্গাদীঘি পর্যন্ত রকমারি পণ্যের দোকান বসে। এখান থেকে সংসারের প্রয়োজনীয় বিভিন্ন আসবাব থেকে শুরু করে ছোট মাছ ধরার বাঁশের তৈরি পণ্য খলসানি, টোপা, ডালা, চালুন কিনে নেন অনেকে।

সুতার তৈরি তৌরা জাল, গৃহস্থালি কাজে ব্যবহৃত দ্রব্যাদি, বিভিন্ন ধরনের খেলনা, মিষ্টান্ন, প্রসাধনী, মাটির তৈজসপত্রসহ বিভিন্ন সামগ্রী বিক্রি হয়। শিশুদের বিনোদনের জন্য ছিল নাগরদোলার ব্যবস্থাও। আর মেলার বড় আকর্ষণ ঘুড়ি ওড়ানো ও বিক্রি। পার্শ্ববর্তী বিভিন্ন জেলা থেকে ব্যবসায়ীরা এসেছিলেন ঘুড়ি বিক্রি করতে।

প্রচণ্ড গরমের পাশাপাশি তেমন হাওয়া-বাতাস না থাকায় এবার ঘুড়ি ওড়ানোর প্রতিযোগিতা সেভাবে জমে ওঠেনি। তবে ঘুড়ি বেচাকেনা ও শিশু-কিশোরদের উচ্ছ্বাস ছিল চোখে পড়ার মতো। এ উপলক্ষে আসা হাজার হাজার দর্শনার্থীর নিরাপত্তার জন্য মেলায় সার্বক্ষণিক আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের টহল ছিল।

আদমদীঘির শিববাটি গ্রামের ঘুড়ি ব্যবসায়ী সালাম হোসেনের ভাষ্য, সন্ন্যাসতলীর মেলা বড় হওয়ায় তিনি এসেছেন ঘুড়ি বিক্রির জন্য। মেলায় প্রত্যাশা অনুযায়ী ঘুড়ি বিক্রি করতে পেরে তিনি খুশি। জয়পুরহাটের পার্বতীপুর এলাকার ঘুড়ি ব্যবসায়ী মফিজ উদ্দিন ও মজনু সরদার বলেন, পূর্বপুরুষের আমল থেকে এ মেলার কথা শুনে আসছেন তারা।

মেলা উদযাপন ও পূজা কমিটির সদস্য মহব্বতপুর গ্রামের মন্টু মণ্ডল বলেন, মেলাটি হিন্দু সম্প্রদায়ের হলেও এটি আসলে সব ধর্মালম্বীর মিলনমেলায় পরিণত হয়েছে। 

মামুদপুর ইউনিয়ন পরিষদের প্যানেল চেয়ারম্যান মিলন হোসেনের ভাষ্য, এক দিনের আয়োজনে যে এত লোকের সমাগম হতে পারে, তা চোখে না দেখলে বিশ্বাস করা কঠিন। মেলায় যেন অনৈতিক কর্মকাণ্ড না হয়, সে ব্যাপারে ইউনিয়ন পরিষদের পক্ষ থেকে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।

ক্ষেতলাল থানার ওসি মোহাম্মদ ফরিদ হোসেন বলেন, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে এবং মেলায় আসা দর্শনার্থীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে পুলিশ প্রশাসন সতর্ক আছে। মেলায় অনৈতিক আচরণ লক্ষ্য করা গেলে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে। 

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • বকুলতলায় বৃষ্টির সুর
  • কলকাতায় নতুন সিনেমার শুটিং শুরু করলেন জয়া
  • বর্ষা উৎসবে বন ও পরিবেশ ধ্বংসের প্রতিবাদ, পান্থকুঞ্জ পার্ক রক্ষাসহ কয়েকটি দাবি
  • নাচ-গান-আবৃত্তিতে চারুকলায় বর্ষাবরণ
  • মেঘ-রোদের লুকোচুরির সকালে নাচে-গানে বর্ষাবরণ 
  • মেঘ-রোদের লুকোচুরি সকালে নাচে-গানে বর্ষাবরণ 
  • আষাঢ়ের প্রথম দিন আজ
  • কলিজা ঠান্ডা করে দেওয়া ছবি ‘উৎসব’
  • তুলশীগঙ্গার তীরে সন্ন্যাসতলীর শতবর্ষী ঘুড়ির মেলা
  • ভালোবাসার ফ্রেমে মেহজাবীন-রাজীব, পেছনে আইফেল টাওয়ার