মহাতীর্থ লাঙ্গলবন্দ স্নান উৎসব উদযাপন ফ্রন্ট’র নতুন কমিটির আত্মপ্রকাশ
Published: 15th, March 2025 GMT
আসন্ন মহাতীর্থ লাঙ্গলবন্দ অষ্টমী স্নান উৎসব সুষ্ঠু ও সুন্দরভাবে উদযাপন করার লক্ষ্যে মহাতীর্থ লাঙ্গলবন্দ স্নান উৎসব উদযাপন ফ্রন্ট এর নতুন কমিটির আত্মপ্রকাশ হয়েছে।
শনিবার (১৫ মার্চ) দুপুরে নগরীর নিতাইগঞ্জস্থ বলদেব জিউর আখড়া ও শিব মন্দির প্রাঙ্গনে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, বাংলাদেশ পূজা উদযাপন ফ্রন্ট কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি অপর্ণা রায় দাস।
প্রধান অতিথি তার বক্তব্যে বলেন, আজকে এখানে এসে অনেক কথা জানতে পারলাম। অনেকের মনে প্রশ্ন ছিলো কেনো আমরা এখানে আসতে পারিনি। গতকাল পর্যন্ত নানা জায়গা বাঁধা প্রদান করা হয়েছে। দুষ্কৃতকারীদের কাজ হচ্ছে খারাপ কাজ করা আর দুবৃত্তদের কাজ হচ্ছে অন্যের জায়গা দখল করা। লাঙ্গলবন্দ হচ্ছে একটি আন্তর্জাতিক তীর্থস্থান।
এখানে বিশ্বের বিভিন্ন স্থান মানুষ আসে। বিএনপির কর্মী হিসেবে আমি মনে করি জিয়াউর রহমান সকলকে নিয়ে কাজ করেছেন এবং সকল ধর্মের মানুষকে নিয়ে বহুদলীয় গণতন্ত্রের প্রতিষ্ঠা করেছেন। তিনি কোন মানুষের জায়গা-জমি দখল করতে যান নি।
এরপর স্বৈরশাসক এরশাদ কত অত্যাচার নির্যাতন করেছে। সেটার শিকার আপনার হয়েছেন। এরপর এসেছেন প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়া। তিনি আমাকে শিক্ষা দিয়েছেন কিভাবে দেশের সম্পদ রক্ষা করতে হবে, কিভাবে দেশের সার্বভৌমত্ব রক্ষা করতে হবে।
তিনি আরও বলেন, বেগম খালেদা জিয়া তিনবার আপনাদের ভোটে নির্বাচিত হয়েছিলেন। তিনি কখনো হিন্দুদের জায়গা দখল করেন নি বরং বলেছেন কেউ যদি জমি দখল কর রাখে তাহলে সেটা উদ্বারের ব্যবস্থা করে দিয়েছেন। বিগত ১৫ বছর বিভিন্ন স্থানে আমাদের উপর অত্যাচার করা হয়েছে, বাড়ি-ঘর লুটপাট করা হয়েছে।
তিনি আরো বলেন, নারায়ণগঞ্জে আমাদের মূর্তি ভাঙ্গা হয়েছে, স্নান ঘাট দখল করে তাদের নামকরণ করেছে। আমরা এর ধিক্কার জানাই। গত ১৭ বছর আপনাদের বাক স্বাধীনতা ঐ ফ্যাসিষ্ট সরকার হাসিনা বন্ধ করে রেখেছিলো। জনগণের ভোটের অধিকার কেড়ে নিযেছিলো।
হিন্দুরা বিবেকহীন নয়, তাদেরও বিবেক রয়েছে। অনেকে বলেছেন পূর্বের কমিটি কেনো নয়, আমি হাসির সাথে বলতে চাই ৫ আগষ্টের পর আমাদের কর্মীরা কেনো মন্দির পাহারা দিলো।
কারন প্রতিটি মন্দিরে ছিলে দলীয়করণ। কিন্তু আমরা সেটা করবোনা। সম্মিলিতভাবে আমরা প্রতিটি উৎসব পালন করবো। তীর্থস্থানের যত কাজ বাকী রয়েছে প্রতিটি কাজ আমরা মিলেমিশে করতে চাই।
বক্তব্য শেষে মহাতীর্থ লাঙ্গলবন্দ স্নান উৎসব উদযাপন ফ্রন্ট এর নতুন কমিটির ননী গোপাল দাসকে প্রধান উপদেষ্টা, অর্পণা রায় দাসকে সভাপতি ও জয় কে রায় চৌধুরী বাপ্পীকে সাধারণ সম্পাদক ঘোষনা করা হয়।
এসময় আরো উপস্থিত ছিলেন, মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক এড.
উৎস: Narayanganj Times
কীওয়ার্ড: ন র য়ণগঞ জ স ন ন উৎসব কম ট র
এছাড়াও পড়ুন:
খুলনা প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ে ১৬০ দিন পর শ্রেণিকক্ষে শিক্ষার্থীরা, উৎসবের আমেজ
খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (কুয়েট) দীর্ঘ ১৬০ দিন পর একাডেমিক কার্যক্রম শুরু হয়েছে। আজ মঙ্গলবার সকাল থেকে টানা বৃষ্টি উপেক্ষা করে শিক্ষার্থীরা ক্যাম্পাসে এসেছেন। সকাল থেকেই ক্যাম্পাসে বইছে উৎসবের আমেজ।
সকালে কুয়েট ক্যাম্পাসে দেখা যায় শিক্ষার্থীদের মধ্যে উচ্ছ্বাস। ছাতা মাথায় দল বেঁধে ছুটছেন ক্লাসরুমের দিকে। কখনো এক ছাতার নিচে দু-তিনজন। কারও সঙ্গে অভিভাবকও এসেছেন। সকাল নয়টা থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের দুটি শিক্ষাবর্ষের প্রায় দুই হাজার শিক্ষার্থী ক্লাসে যোগ দেন। নতুন উপাচার্য অধ্যাপক মাকসুদ হেলালী বিভিন্ন বিভাগ ঘুরে শ্রেণি কর্মসূচি পর্যবেক্ষণ করেন।
ইলেকট্রনিকস অ্যান্ড কমিউনিকেশন ইঞ্জিনিয়ারিং (ইসিই) বিভাগের ২২তম ব্যাচের শিক্ষার্থী দীপ্ত বলেন, ‘আমাদের প্রায় এক সেমিস্টার নষ্ট হয়ে গেছে। এই সময়টা খুব অস্বস্তিতে কেটেছে। ক্ষতি যা হওয়ার হয়েছে, তবে এখন আবার ক্লাস শুরু হওয়াটা ইতিবাচক দিক। আমরা আশাবাদী।’ একই ব্যাচের শিক্ষার্থী আম্মান বলেন, ‘অনেক দিন জীবনটা থেমে ছিল। আজকের দিনটা বিশেষ মনে হচ্ছে। ঠিক যেন স্কুলজীবনের প্রথম দিনের মতো। সব হতাশা কাটিয়ে আমরা অনেকটা নতুন করে শুরু করছি।’
হুমায়ুন কবির নামের এক অভিভাবক বলেন, ‘আমার ছেলে বিল্ডিং ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগে পড়ে। পাঁচ মাস ধরে ক্লাস বন্ধ থাকায় ও মানসিকভাবে খুব চাপের মধ্যে ছিল। একসময় অসুস্থও হয়ে পড়ে। কুয়েটে এমন পরিস্থিতি আগে দেখিনি। কর্তৃপক্ষ দায়িত্ব ঠিকভাবে পালন করলে হয়তো আগেই খুলে যেত। তারপরও এখন অন্তত খুলেছে, এটা বড় স্বস্তি।’
কুয়েটের ছাত্র পরিচালক আবদুল্লাহ ইলিয়াস আক্তার বলেন, আজ থেকে কুয়েটে ক্লাস শুরু হয়েছে। তবে এখনো সব শিক্ষার্থী আসেননি। যাঁদের কেবল ক্লাস রয়েছে, তাঁরা অংশ নিচ্ছেন। যাঁদের পরীক্ষা ছিল, তাঁরা প্রস্তুতির জন্য কিছুটা সময় চেয়েছে। প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থীদের ওরিয়েন্টেশন হবে ১৪ আগস্ট, ক্লাস শুরু ১৭ আগস্ট।
গত ১৮ ফেব্রুয়ারি ছাত্ররাজনীতি নিষিদ্ধের দাবিকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষে শতাধিক ব্যক্তি আহত হন। ওই রাতেই তৎকালীন উপাচার্য ও কয়েকজন শিক্ষককে লাঞ্ছিত করার অভিযোগ ওঠে। এরপর শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের মুখে ২৬ এপ্রিল শিক্ষা মন্ত্রণালয় উপাচার্য অধ্যাপক মুহাম্মদ মাছুদ ও সহ-উপাচার্য অধ্যাপক শরিফুল আলমকে অব্যাহতি দেয়। ১ মে চুয়েটের অধ্যাপক হজরত আলীকে অন্তর্বর্তীকালীন উপাচার্য হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়। পরবর্তী সময়ে শিক্ষক লাঞ্ছনার ঘটনার বিচার দাবিতে ৪ মে থেকে একাডেমিক ও প্রশাসনিক কার্যক্রম বর্জনের ঘোষণা দেয় শিক্ষক সমিতি। এরপর কোনো শিক্ষকই ক্লাসে ফেরেননি। শিক্ষক সমিতির বিরোধিতার মুখে হজরত আলী দায়িত্ব পালন করতে না পেরে ২২ মে পদত্যাগ করেন।
এরপর ১০ জুন নতুন উপাচার্য নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি দেয় সরকার। সেই ধারাবাহিকতায় গত বৃহস্পতিবার কুয়েটের উপাচার্য হিসেবে নিয়োগ পান বুয়েটের যন্ত্রকৌশল বিভাগের অবসরপ্রাপ্ত অধ্যাপক মাকসুদ হেলালী। পরদিন শুক্রবার তিনি খুলনায় এসে দায়িত্ব নেন। দায়িত্ব নেওয়ার পরপরই শিক্ষার্থী, শিক্ষক, কর্মকর্তা ও রাজনৈতিক ব্যক্তিদের সঙ্গে একাধিক বৈঠক করেন। এরই ধারাবাহিকতায় গতকাল শিক্ষক সমিতির সাধারণ সভায় আন্দোলন কর্মসূচি তিন সপ্তাহের জন্য স্থগিত করে ক্লাসে ফেরার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। এরপর বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে গতকাল সোমবার ক্লাস শুরুর নোটিশ জারি করা হয়।