ঈদে তানজিলা ও আনজিলার কালেকশনে ফিউশন পোশাক
Published: 16th, March 2025 GMT
ইয়ামিন আরা তানজিলা এবং ইয়ামিন আরা আনজিলা দুই বোন। তাদের যৌথ উদ্যোগে গড়ে উঠেছে অলাইন উদ্যোগ ‘ইয়ামিন’স’। এই প্রতিষ্ঠানের সিগনেচার পণ্য থ্রিপিস। ব্লাউজেরও রয়েছে সমৃদ্ধ সংগ্রহ। আরও রয়েছে লেদারের ব্যাগ। ইয়ামিন’স এর পণ্যে ফিউশন ওয়ার্ক বেশি দেখা যায়। কটন, টাইডাই, কাঠ ব্লকের সঙ্গে অনায়াসে মিলিয়ে দেন হাতের কাজ। ইয়ামিন’স এর ঈদ কালেকশনে কামিজের গলা ও হাতায় হাতের কাজ বেশি দেখা গেছে। ব্লাউজে যোগ হয়েছে হাতের কাজের জামদানি মোটিফ। স্পেশালি কামিজে স্থান পেয়েছে বাংলার ঐতিহ্যবাহী যানবাহন রিকশা। তবে রিকশা প্রিণ্ট নয়, এই মোটিফ পোশাকে ফুটিয়ে তোলা হয়েছে হাতের কাজের মাধ্যমে।
ঈদ উপলক্ষ আর আবহাওয়াকে প্রাধান্য দিয়ে ইয়ামিন’স-এর পোশাকে রং বেছে নেওয়া হয়েছে। একই রঙের বিভিন্ন শেডও থাকছে তাদের পোশাকে।
ইয়ামিন আরা তানজিলা রাইজিংবিডিকে বলেন, ‘‘আমাদের সিগনেচার প্রোডাক্ট হচ্ছে থ্রিপিস। এবার ঈদে বাজেট ফ্রেন্ডলি এবং হাই রেইঞ্জ দুই ধরণের থ্রিপিসই থাকছে। থাকছে কটনের নানা নকশার ব্লাউজ এবং লেদারের ব্যাগ। আমরা এবার নতুন লঞ্চ করেছি কুর্তি। সামারকে প্রাধান্য দিয়ে বিভিন্ন রং নিয়ে কাজ করেছি। হালকা গোলাপি, হালকা ইয়োলো এবং মেরুন বেশি প্রাধান্য পেয়েছে। রং নিয়ে আরও আছে ইটা রং, পুই রং এর বিভিন্ন শেডের পোশাক।’’
আরো পড়ুন:
দিবার ঈদ কালেকশনে যা থাকছে
ঈদে তাঁতের শাড়ির পসরা সাজিয়েছেন ফাহমিদা ও কাকলী
ইয়ামিন আরা তানজিলা আরও বলেন, ‘‘ব্লাউজের ক্ষেত্রে আমরা প্রাধান্য দিয়েছি সাদা, অ্যাশ, অ্যাশ-ব্লাক রংকে। যেহেতু সাদা রঙের ব্লাউজ প্রায় প্রত্যেকেই সংগ্রহে রাখতে চায়। কালো রঙের ব্লাউজেরও অনেক চাহিদা। কালো রঙের চিকেন ফেব্রিকে ব্লাউজ তৈরি করা হয়েছে। এ ছাড়া আছে হাতে কাজ করা ব্লাউজ।
দরদাম: ত্রিপিস ২৮০০ থেকে ৩৪০০ টাকার মধ্যে। ফুলস্টিচ থ্রিপিস তৈরি করে নেওয়ারও সুযোগও রেখেছি ইয়ামিন’স। এই ফ্যামন হাউসের ব্লাউজ দাম ৯৯৫ টাকা থেকে ১৪০০ টাকার মধ্যে। কুর্তির দাম ১৪০০ টাকার মধ্যে।
তানজিলাকে প্রশ্ন করা হয়েছিল, ঈদের দিন কেমন পোশাক পরবেন? তিনি বলেন, ‘‘ঈদের দিন সকালে ইয়ামিন’স এর কটনের থ্রিপিস পরবো। বিকালে রিকশা প্রিণ্টের থ্রিপিস পরে বাইরে বের হবো। রাতে যদি শাড়ি পরবো সঙ্গে অবশ্যই আমাদের ইয়ামিন’স-এর ব্লাউজ পরবো।’’
ঢাকা/লিপি
.উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
‘আমরার এইতা দিবস-টিবস দিয়া কী অইব’
ঘড়ির কাঁটায় তখন দুপুর ২টা ২০ মিনিট। মাথার ওপর প্রখর রোদের উত্তাপ। প্রচণ্ড গরমে ত্রাহি অবস্থায় একটু বিশ্রাম নিতে গাছের ছায়ার খোঁজে ক্লান্ত পথিক। এমন সময় ঘর্মাক্ত শরীরে একটি ভবন নির্মাণের কাজ করতে দেখা গেল কয়েকজন শ্রমিককে। তাদের একজন তোঁতা মিয়া, অপরজন হাবিবুল।
হাবিবুল পাথর ভরেই যাচ্ছেন, তোঁতা মিয়া সেগুলো মাথায় করে একের পর এক টুড়ি ছাদ ঢালাইয়ের জন্য পৌঁছে দিচ্ছেন নির্দিষ্ট স্থানে। সেখানেও বালু-পাথরের মিশ্রণ করছেন আরও কয়েকজন। তাদের কর্মযজ্ঞের এক ফাঁকে কথা হয় তোঁতা মিয়ার সঙ্গে।
আলাপকালে তোঁতা মিয়া বলেন, ‘সারাদিন কাম (কাজ) কইরা ৫০০ ট্যাহা (টাকা) হাজিরা পাই। এইডি দিয়া কোনোমতে বউ-পুলাপান নিয়া দিন পার করতাছি। মে দিবস-টিবস কী কইতারতাম না। আমরার মতো গরিব মানুষ কাম না করলে পেডে ভাত জুটতো না এইডাই কইতারবাম।’
গতকাল বুধবার ঈশ্বরগঞ্জ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভবন নির্মাণকাজ করার সময় এসব কথা বলেন তোঁতা মিয়া (৪৫)। তাঁর বাড়ি ময়মনসিংহ সদর উপজেলার আকুয়া এলাকায়। এ সময় কথা হয় আরেক নির্মাণ শ্রমিক একাদুল মিয়ার সঙ্গে। একাদুলও জানেন না মে দিবস কী। তিনি বলেন, ‘এই কাম কইরা খাইয়া-না খাইয়া বউ-পুলাপান লইয়া কোনোরহমে দিন পার করতাছি। বর্তমান বাজারো জিনিসপাতির দাম বাড়লেও আমরার মজুরি বাড়ে না। পাঁচ বছর আগেও যা পাইতাম, অহনও তাই পাই।’ তিনি বলেন, ‘কয়েক ট্যাহা সঞ্চয় করবাম এই বাও (উপায়) নাই। অসুখ অইয়া চার দিন ঘরে পইড়া থাকলে না খাইয়া থাহন লাগব। আমরার এইতা দিবস-টিবস দিয়া কী অইব?’
আজ বৃহস্পতিবার মহান মে দিবস। শ্রমজীবী মানুষের অধিকার আদায়ের এই দিনটি সারাবিশ্বের শ্রমিক শ্রেণির কাছে গুরুত্বপূর্ণ। বহির্বিশ্বের মতো বাংলাদেশেও দিবসটি পালিত হয় নানা আয়োজনে। কিন্তু যাদের অধিকার আদায়ের জন্য এ দিনটি পালন করা হয়– তারাই জানেন না দিবসটি সম্পর্কে। তাদের আরেকজন দিনমজুর রাজন মিয়া। রাজন জানান, এসব দিবসে তাদের মতো গরিব মানুষের কোনো লাভ-লোকসান নেই।