‘১৬ বছর তারেক রহমান আন্দোলন করে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার করেছে’
Published: 18th, March 2025 GMT
দীর্ঘ ১৬ বছর তারেক রহমান আন্দোলন করে বাংলাদেশে আবার গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার করেছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা মন্ডলীর সদস্য ও ডাকসুর সাবেক ভিপি আমানুল্লাহ আমান।
তিনি বলেছেন, “দীর্ঘ ১৬টি বছর তারেক রহমান আন্দোলন করে এই বাংলাদেশে আবার গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার করল। আন্দোলন যখন শুরু হলো, তার নেতৃত্বে ছাত্রদলের বীর সাধারণ সম্পাদক ইলিয়াস আলীকে গুম করা হলো। শত শত নেতাকর্মীকে গুম করেছে। আজ যিনি প্রধান অতিথি (মামুনুল হক) উনাকেও গুম করতে চেয়েছিল।”
মঙ্গলবার (১৮ মার্চ) দুপুর ১২টায় পবিত্র মাহে রমজান উপলক্ষে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল আয়োজিত ‘হিফজুল কোরআন ও কোরআন তেলাওয়াত’ প্রতিযোগিতার চূড়ান্ত পর্ব ও পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
আরো পড়ুন:
বহিষ্কৃতদের তালিকায় নেই ঢাবি শাখা ছাত্রলীগ সম্পাদক সৈকত
জুলাই গণঅভ্যুত্থানে ঢাবির আহত শিক্ষার্থীদের পাশে সাদা দল
তিনি বলেন, “তিনি (শেখ হাসিনা) ভাবছিল প্রতি ৫ বছর পর পর নির্বাচন হবে, দিনের ভোট রাতে হবে। কিন্তু দেশ ছাড়া হলেন ফ্যাসিস্ট খুনি শেখ হাসিনা। শত শত জাতীয়তাবাদী নেতাকর্মীদের, সর্বশেষ ছাত্র-জনতার রক্তের বিনিময়ে আমরা পেলাম সেই কাঙ্ক্ষিত বাংলাদেশ। যে কথাটি তারেক রহমান বলেছিলেন আরো চার-পাঁচ বছর আগে। তিনি (তারেক রহমান) বলেছিলেন, দেশ যাবে কোন পথে, ফয়সালা হবে রাজপথে। তার সুদূরপ্রসারী চিন্তার কথাই আজ প্রমাণিত হলো।”
আমান বলেন, “তারেক রহমানের গায়ে এরশাদের পেটোয়া বাহিনী দ্বারা রক্তের কালো দাগ ছিল । বেগম খালেদা জিয়ার বাড়ি ঘেরাও করে এরশাদ তাকে মৃত্যুর পথে নিয়ে গিয়েছিল। কিন্তু পেছাননি খালেদা জিয়া। তিনি বলেছিলেন, আমার ছাত্র হত্যা করেছে, আমার ড.
আমান আরো বলেন, “১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ যখন বাংলাদেশ হানাদার বাহিনীর আক্রমণের শিকার হলো, বাংলাদেশের মানুষ কোথায় যাবে, কী করবে, কী সিদ্ধান্ত নিবে বুঝতে পারছিল না। সেই সময়ে শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান চট্টগ্রামের কালুরঘাট বেতার কেন্দ্র থেকে স্বাধীনতার ঘোষণা দিলেন। সশস্ত্র সংগ্রাম শুরু হলো। লক্ষ লক্ষ শহীদের বিনিময়ে আমরা পেলাম স্বাধীনতা।”
অনুষ্ঠানে ছাত্রদল সভাপতি রাকিবুল ইসলাম রাকিবের সভাপতিত্বে এবং সম্পাদক নাসির উদ্দিন নাসিরের সঞ্চালনায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে খিলাফত মজলিস আমীর আল্লামা মামুনুল হক বলেন, “অনেকে বিএনপি এবং আওয়ামীলীগকে এক পাল্লায় বিচার করে। আমি মনে করি এটা অনেক বড় অবিচার। আওয়ামী লীগ ও বিএনপি কোনো ইসলামিক রাজনৈতিক সংগঠন নয়। তবে এই দুটির মধ্যে ঐতিহাসিক অনেক ব্যবধান রয়েছে।”
তিনি বলেন, “আমরা যদি এ দেশের রাজনীতি ইতিহাস পরিচালনা পরিচালোচনা করলে আমরা সবসময়ই দুটি ধারা লক্ষ্য করতে পাই। সেই অবিভক্ত ব্রিটিশ আমল থেকে যখন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার ঘোষণা এসেছিল, ঢাকাকে কেন্দ্র করে পূর্ববঙ্গের উত্থান ও মুসলিম জাতিসত্তা প্রতিষ্ঠার ঘোষণা এসেছিল, তখন এই বঙ্গ অঞ্চল থেকে কিছু মানুষ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার বিরোধিতা করেছিল। তারা ঢাকাকে কেন্দ্র করে পূর্ব বাংলার উত্থানকে ঠেকিয়ে দিতে চেয়েছিল, যারা মুসলিম জাতিসত্তার বিরোধী ছিল। সেই ঐতিহাসিক ধারা ব্রিটিশ আমল থেকে চলে এসেছে।”
তিনি আরো বলেন, “এভাবে দুটি ধারা প্রতিষ্ঠিত হয়েছে, সংঘাত লড়াই চলেছে। একটি ধারা ছিল পূর্ববঙ্গ কেন্দ্রিক, যারা বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদ তথা মুসলিম জাতিসত্তা গঠনের যে ঐতিহাসিক ধারা, বিএনপির সেই ধারার প্রতিনিধিত্ব করে। বিএনপিকে যেমন এই কথাটা মনে রাখতে হবে, তেমনি যারা বিএনপির সমালোচনা করে তাদেরও মনে রাখতে হবে।”
মামুনুল হক বলেন, “আবু জাহেল ও আবু তালেব- কেউই ইসলামের অনুসারী ছিলেন না। কিন্তু কেউ যদি আবু জাহেল এবং আবু তালেবকে এক পাল্লায় মাপে, তার চেয়ে বড় জাহেল আর কেউ হতে পারে না। আমি মনে করি ইসলামী রাজনীতির দৃষ্টিকোণ থেকে বিএনপি আবু তালেবের ভূমিকায়। আর আওয়ামীলীগ আগাগোড়ায় আবু জাহেলের ভূমিকায়।”
এ সময় অন্যদের মাঝে উপস্থিত ছিলেন, বিএনপির যুগ্ম-মহাসচিব শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানী, যুগ্ম মহাসচিব ও ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি হাবিব উন নবী খান সোহেল, প্রচার সম্পাদক সুলতান সালাউদ্দিন টুকু, ছাত্র বিষয়ক সম্পাদক রকিবুল ইসলাম বকুল, ঢাবি ছাত্রদল সভাপতি গণেশ চন্দ্র রায় সাহস, সাধারণ সম্পাদক নাহিদুজ্জামান শিপন প্রমুখ।
ঢাকা/সৌরভ/মেহেদী
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ত র ক রহম ন ছ ত রদল ব এনপ র ইসল ম
এছাড়াও পড়ুন:
কোনও মহামানবকে দায়িত্ব দেওয়ার জন্য মানুষ আন্দোলন করেনি: আমির খসরু
কোনও মহামানবকে বাংলাদেশের দায়িত্ব দেওয়ার জন্য দেশের মানুষ আন্দোলন-সংগ্রাম করেনি বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী।
সোমবার রাজধানীর গুলশানে চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে সমমনা দলগুলোর সঙ্গে বিএনপির লিয়াজোঁ কমিটির বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি একথা বলেন।
তিনি বলেন, কোনও মহামানব কোনও দেশের গণতন্ত্রের সমাধান দেবে তার জন্য দেশের জনগণকে অপেক্ষা করতে হবে, এটা বিশ্বাস করার কারণ নেই।
এদিন বিকেল সাড়ে ৩টায় ন্যাপ ভাসানীর সঙ্গে বৈঠক করে বিএনপি। ন্যাপ ভাসানীর চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট আজহারুল ইসলামের নেতৃত্বে ১০ সদস্যের একটি প্রতিনিধি দল বৈঠক উপস্থিত উপস্থিত ছিলেন।
পরে বিকাল ৪টা ২০ মিনিটে আমজনতার দলের সঙ্গে বৈঠকে করে বিএনপির লিয়াজোঁ কমিটি। আমজনতার দলের আহ্বায়ক কর্নেল অব. মিয়া মশিউজ্জামানের নেতৃত্বে ১২ সদস্যের একটি প্রতিনিধি দল বৈঠক উপস্থিত ছিলেন। এছাড়া বিকেল ৫টা ১০ মিনিটে বাংলাদেশ পিপলস পার্টির সঙ্গে বৈঠক করেন বিএনপির নেতারা।
বিএনপির পক্ষে বৈঠকে দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী, ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু, ভাইস চেয়ারম্যান বরকত উল্লাহ বুলু উপস্থিত ছিলেন।
আল জাজিরাকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের বক্তব্যের বিষয়ে এক প্রশ্নের জবাবে আমির খসরু বলেন, মানুষ বলতে কারা? আমার বুঝতে একটু অসুবিধা হচ্ছে। বাংলাদেশে প্রধান রাজনৈতিক দল বিএনপি, যারা জনগণকে প্রতিনিধিত্ব করছে। যারা রাজনৈতিক দল হিসেবে শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে রাস্তায় লড়াই করেছে, আমাদের সঙ্গে যারা রাস্তায় ছিল, ইতোমধ্যে প্রায় ৫০টি দল, পরিষ্কারভাবে ব্যক্ত করেছে ডিসেম্বরের আগেই নির্বাচনের জন্য।
তিনি আরও বলেন, সংস্কারের জন্য যে কথাগুলো বলা হয়, সংস্কারের ব্যাপারে যেখানে ঐকমত্য হবে- সেই সংস্কারগুলো দ্রুত করে নির্বাচন কমিশনকে বলা হোক, নির্বাচনের দিনক্ষণ ঠিক করে রোডম্যাপ দিয়ে ভোটের দিকে এগিয়ে যাওয়ার জন্য। তো জনগণ বলতে কারা?
এ প্রসঙ্গে তিনি আরও বলেন, এখন জনগণ বলতে যদি কোনও একটি বিশেষ গোষ্ঠী, সুবিধাভোগী- যারা গণতন্ত্রের বিরুদ্ধে গিয়ে, জনগণের ভোটাধিকারের বিরুদ্ধে গিয়ে গণতন্ত্রকে সংস্কারের মুখোমুখি করছে! এটা তো কারও বুঝতে অসুবিধা হওয়ার কারণ নেই। ১৬ বছরের যুদ্ধটা ছিল গণতন্ত্রের জন্য, দেশে গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা ফিরিয়ে আনার জন্য, জনগণের ভোটাধিকার ফিরিয়ে আনার জন্য, জনগণের মালিকানা ফিরিয়ে আনার জন্য। যে সরকার জনগণের ভোটে নির্বাচিত হবে, তারা জনগণের কাছে দায়বদ্ধ থাকবে। সেটা যে সরকারই হোক।