দীর্ঘ ১৬ বছর তারেক রহমান আন্দোলন করে বাংলাদেশে আবার গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার করেছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা মন্ডলীর সদস্য ও ডাকসুর সাবেক ভিপি আমানুল্লাহ আমান।

তিনি বলেছেন, “দীর্ঘ ১৬টি বছর তারেক রহমান আন্দোলন করে এই বাংলাদেশে আবার গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার করল। আন্দোলন যখন শুরু হলো, তার নেতৃত্বে ছাত্রদলের বীর সাধারণ সম্পাদক ইলিয়াস আলীকে গুম করা হলো। শত শত নেতাকর্মীকে গুম করেছে। আজ যিনি প্রধান অতিথি (মামুনুল হক) উনাকেও গুম করতে চেয়েছিল।”

মঙ্গলবার (১৮ মার্চ) দুপুর ১২টায় পবিত্র মাহে রমজান উপলক্ষে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল আয়োজিত ‘হিফজুল কোরআন ও কোরআন তেলাওয়াত’ প্রতিযোগিতার চূড়ান্ত পর্ব ও পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। 

আরো পড়ুন:

বহিষ্কৃতদের তালিকায় নেই ঢাবি শাখা ছাত্রলীগ সম্পাদক সৈকত

জুলাই গণঅভ্যুত্থানে ঢাবির আহত শিক্ষার্থীদের পাশে সাদা দল

তিনি বলেন, “তিনি (শেখ হাসিনা) ভাবছিল প্রতি ৫ বছর পর পর নির্বাচন হবে, দিনের ভোট রাতে হবে। কিন্তু দেশ ছাড়া হলেন ফ্যাসিস্ট খুনি শেখ হাসিনা। শত শত জাতীয়তাবাদী নেতাকর্মীদের, সর্বশেষ ছাত্র-জনতার রক্তের বিনিময়ে আমরা পেলাম সেই কাঙ্ক্ষিত বাংলাদেশ। যে কথাটি তারেক রহমান বলেছিলেন আরো চার-পাঁচ বছর আগে। তিনি (তারেক রহমান) বলেছিলেন, দেশ যাবে কোন পথে, ফয়সালা হবে রাজপথে। তার সুদূরপ্রসারী চিন্তার কথাই আজ প্রমাণিত হলো।”

আমান বলেন, “তারেক রহমানের গায়ে এরশাদের পেটোয়া বাহিনী দ্বারা রক্তের কালো দাগ ছিল । বেগম খালেদা জিয়ার বাড়ি ঘেরাও করে এরশাদ তাকে মৃত্যুর পথে নিয়ে গিয়েছিল। কিন্তু পেছাননি খালেদা জিয়া। তিনি বলেছিলেন, আমার ছাত্র হত্যা করেছে, আমার ড.

মিলনকে মেরেছে। কিন্তু বাংলাদেশের সব ছাত্ররা আমার সন্তান।”

আমান আরো বলেন, “১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ যখন বাংলাদেশ হানাদার বাহিনীর আক্রমণের শিকার হলো, বাংলাদেশের মানুষ কোথায় যাবে, কী করবে, কী সিদ্ধান্ত নিবে বুঝতে পারছিল না। সেই সময়ে শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান চট্টগ্রামের কালুরঘাট বেতার কেন্দ্র থেকে স্বাধীনতার ঘোষণা দিলেন। সশস্ত্র সংগ্রাম শুরু হলো। লক্ষ লক্ষ শহীদের বিনিময়ে আমরা পেলাম স্বাধীনতা।”

অনুষ্ঠানে ছাত্রদল সভাপতি রাকিবুল ইসলাম রাকিবের সভাপতিত্বে এবং সম্পাদক নাসির উদ্দিন নাসিরের সঞ্চালনায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে খিলাফত মজলিস আমীর আল্লামা মামুনুল হক বলেন, “অনেকে বিএনপি এবং আওয়ামীলীগকে এক পাল্লায় বিচার করে। আমি মনে করি এটা অনেক বড় অবিচার। আওয়ামী লীগ ও বিএনপি কোনো ইসলামিক রাজনৈতিক সংগঠন নয়। তবে এই দুটির মধ্যে ঐতিহাসিক অনেক ব্যবধান রয়েছে।”

তিনি বলেন, “আমরা যদি এ দেশের রাজনীতি ইতিহাস পরিচালনা পরিচালোচনা করলে আমরা সবসময়ই দুটি ধারা লক্ষ্য করতে পাই। সেই অবিভক্ত ব্রিটিশ আমল থেকে যখন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার ঘোষণা এসেছিল, ঢাকাকে কেন্দ্র করে পূর্ববঙ্গের উত্থান ও মুসলিম জাতিসত্তা প্রতিষ্ঠার ঘোষণা এসেছিল, তখন এই বঙ্গ অঞ্চল থেকে কিছু মানুষ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার বিরোধিতা করেছিল। তারা ঢাকাকে কেন্দ্র করে পূর্ব বাংলার উত্থানকে ঠেকিয়ে দিতে চেয়েছিল, যারা মুসলিম জাতিসত্তার বিরোধী ছিল। সেই ঐতিহাসিক ধারা ব্রিটিশ আমল থেকে চলে এসেছে।”

তিনি আরো বলেন, “এভাবে দুটি ধারা প্রতিষ্ঠিত হয়েছে, সংঘাত লড়াই চলেছে। একটি ধারা ছিল পূর্ববঙ্গ কেন্দ্রিক, যারা বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদ তথা মুসলিম জাতিসত্তা গঠনের যে ঐতিহাসিক ধারা, বিএনপির সেই ধারার প্রতিনিধিত্ব করে। বিএনপিকে যেমন এই কথাটা মনে রাখতে হবে, তেমনি যারা বিএনপির সমালোচনা করে তাদেরও মনে রাখতে হবে।”

মামুনুল হক বলেন, “আবু জাহেল ও আবু তালেব- কেউই ইসলামের অনুসারী ছিলেন না। কিন্তু কেউ যদি আবু জাহেল এবং আবু তালেবকে এক পাল্লায় মাপে, তার চেয়ে বড় জাহেল আর কেউ হতে পারে না। আমি মনে করি ইসলামী রাজনীতির দৃষ্টিকোণ থেকে বিএনপি আবু তালেবের ভূমিকায়। আর আওয়ামীলীগ আগাগোড়ায় আবু জাহেলের ভূমিকায়।”

এ সময় অন্যদের মাঝে উপস্থিত ছিলেন, বিএনপির যুগ্ম-মহাসচিব শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানী, যুগ্ম মহাসচিব ও ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি হাবিব উন নবী খান সোহেল, প্রচার সম্পাদক সুলতান সালাউদ্দিন টুকু, ছাত্র বিষয়ক সম্পাদক রকিবুল ইসলাম বকুল, ঢাবি ছাত্রদল সভাপতি গণেশ চন্দ্র রায় সাহস, সাধারণ সম্পাদক নাহিদুজ্জামান শিপন প্রমুখ।

ঢাকা/সৌরভ/মেহেদী

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ত র ক রহম ন ছ ত রদল ব এনপ র ইসল ম

এছাড়াও পড়ুন:

লন্ডনে ড. ইউনূস-তারেক রহমানের বৈঠককে স্বাগত জানাল জেএসডি

লন্ডনে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস ও বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের বৈঠকের আলোচনা ও ঐকমত্যের সূচনাকে স্বাগত জানিয়েছে জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল (জেএসডি)। দলটি বলেছে, আমরা স্মরণ করিয়ে দিতে চাই, জনগণ শুধু কথায় নয়, বাস্তবে সংস্কার ও বিচারের দৃশ্যমান অগ্রগতির পদক্ষেপ দেখতে চায়।

শুক্রবার জেএসডির সভাপতি আ স ম আবদুর রব ও সাধারণ সম্পাদক শহীদ উদ্দিন মাহমুদ স্বপন এক বিবৃতিতে এ কথা বলেন।

তারা বলেন, এই উচ্চপর্যায়ের সংলাপ দেশে রাজনৈতিক সমঝোতা ও জাতীয় ঐক্যের মাধ্যমে গণঅভ্যুত্থানের কাঙ্ক্ষিত অভিপ্রায় অনুযায়ী রাষ্ট্র সংস্কার, শান্তিপূর্ণ ক্ষমতা হস্তান্তর এবং গণতন্ত্রের ধারাবাহিকতা প্রতিষ্ঠার পথে এক গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলক।

বিবৃতিতে নেতারা বলেন, অধ্যাপক ইউনূস এবং তারেক রহমানের বৈঠক ও বিবৃতিতে আগামী বছরের পবিত্র রমজানের আগেই একটি নির্বাচন অনুষ্ঠানের সম্ভাবনার ওপর গুরুত্বারোপ এবং তার পূর্বশর্ত হিসেবে কাঙ্ক্ষিত সংস্কার ও ফ্যাসিস্ট সরকারের বিচারের প্রক্রিয়ায় দৃশ্যমান অগ্রগতি অর্জনের ঘোষিত প্রত্যয়ে রাজনীতিতে স্থিতিশীলতা নিশ্চিত করবে।

বিবৃতিতে বলা হয়, গণমানুষের রক্তস্নাত গণঅভ্যুত্থানের অন্যতম দাবি- গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠার জন্য কাঠামোগত মৌলিক সংস্কার এবং গণহত্যাকারী ফ্যাসিবাদী শক্তির বিচারের ব্যবস্থা। এই বিষয় দুটির দৃশ্যমান অগ্রগতিই কেবল একটি গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের ভিত্তি রচনা করতে পারে।

রাজনৈতিক দলগুলোর পাশাপাশি সমাজের শ্রমজীবী, কর্মজীবী ও পেশাজীবীদের মতামত, আকাঙ্ক্ষা ও অংশগ্রহণে রাষ্ট্রীয় রাজনীতির মৌলিক সংস্কারের লক্ষ্যে দ্রুত ‘জাতীয় সনদ’ প্রণয়নের আহ্বান জানায় জেএসডি।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • রাষ্ট্র ও রাজনীতিতে জনগণের হিস্যা কোথায়
  • প্রধান উপদেষ্টা অনেক বিচক্ষণতার পরিচয় দিয়েছেন: ফখরুল
  • ইউনূস-তারেকের বৈঠক দেশের মানুষের জন্য স্বস্তির বার্তা, আশার আলো
  • বর্তমান সংকটে হবস, রবীন্দ্রনাথ ও অমর্ত্য সেন যেখানে প্রাসঙ্গিক
  • ড. ইউনূস ও তারেকের বৈঠক জাতির জন্য স্বস্তির বার্তা: ১২ দলীয় জোট
  • লন্ডনে ড. ইউনূস-তারেক রহমানের বৈঠককে স্বাগত জানাল জেএসডি