ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে ১৫ কিলোমিটার যানজট
Published: 19th, March 2025 GMT
ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের কুমিল্লার চান্দিনা থেকে দাউদকান্দির গৌরিপুর অংশে ১৫ কিলোমিটার যানজট সৃষ্টি হয়েছে। দীর্ঘ সময় যানজটে আটকে থেকে যানবাহনের চালক ও যাত্রীদের ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে।
বুধবার সকাল থেকে মহাসড়কের কুমিল্লার চান্দিনা উপজেলার গৌরিপুর পর্যন্ত যানজট সৃষ্টি হয়। বিকেলেও ধীরগতিতে যান চলাচল করতে দেখা যায়।
স্থানীয়রা জানান, চান্দিনা ফুটওভার ব্রিজ নির্মাণের কাজ চলায় যানজটের সূত্রপাত হয়েছে। এছাড়াও দূর পাল্লার বাস এবং মিনিবাসের চালকরা যত্রতত্র পার্কিং করে যাত্রী ওঠা-নামা করার কারণে খণ্ড খণ্ড যানজট সৃষ্টি হয়। একপর্যায়ে চট্টগ্রামগামী লেনে যানের জটলা বাঁধে। ধীরে ধীরে চান্দিনা থেকে মাধাইয়া অতিক্রম করে গৌরিপুর পর্যন্ত যানজটের বিস্তার ঘটে। বিকেল সাড়ে ৪টায় এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত ঢাকামুখী লেনের বেশ কিছু স্থানেও থেমে থেমে যান চলাচল করতে দেখা যায়।
হাইওয়ে পুলিশ জানায়, আন্তঃজেলা বাসগুলো ছাড়াও কুমিল্লা থেকে বিভিন্ন উপজেলায় চলাচলকারী, একতা পরিবহন, পাপিয়া পরিবহন, সততা পরিবহনসহ বেশ কিছু বাসের চালকরা মহাসড়কে যত্রতত্র পার্কিং করে যাত্রী ওঠা-নামা করেন। বিশেষ করে চান্দিনা এলাকায় যাত্রীর জন্য অনেকক্ষণ দাঁড়িয়ে থাকে সড়কে। ফলে ছোট আকারে যানের জটলা বাঁধে। দীর্ঘক্ষণ দাঁড়িয়ে থাকার ফলে ধীরে ধীরে যানজটের সৃষ্টি হয়ে সেটির আকার বাড়তে থাকে।
হাইওয়ে পুলিশের দাবি, মহাসড়কের চান্দিনা অংশের ফুটওভার ব্রিজ ভেঙে যাওয়ায় নতুন ব্রিজ নির্মাণ করছে সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তর। ফলে মহাসড়কের ওপর দিয়েই মানুষ একপাশ থেকে অন্যপাশে যাচ্ছেন। এর ফলে যানবাহনগুলোকে দাঁড়িয়ে থেকে মানুষ পারাপার করতে হচ্ছে। যার কারণে মহাসড়কের চান্দিনা অংশে যানজট চলছে।
কুমিল্লা সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তরের নির্বাহী প্রকৌশলী খন্দকার গোলাম মোস্তফা সমকালকে বলেন, ফুটওভার ব্রিজটি ভেঙে যাওয়ায় এটি নির্মাণ করা খুবই জরুরি, তাই আমরা ব্রিজটি নির্মাণ কম সময়ে শেষ করতে যথেষ্ট চেষ্টা করছি। যতদ্রুত সম্ভবত ব্রিজের কাজ শেষ করা হবে।
ইলিয়টগঞ্জ হাইওয়ে থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) দেওয়ান কৌশিক আহমেদ বলেন, আমরা মহাসড়ককে যানজটমুক্ত রাখতে সর্বোচ্চ চেষ্টা করছি। যত্রতত্র পার্কিং করা বাসের বিরুদ্ধে মামলা দিচ্ছি। যানজট নিরসনে শুধু পুলিশ নয়, সকলের এগিয়ে আসতে হবে। একটি সমন্বিত প্রচেষ্টায় যানজট মুক্ত মহাসড়ক উপহার দেওয়া সম্ভব।
উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
ভারত-পাকিস্তানের মধ্যে উত্তেজনা কমাতে গুরুত্ব আরোপ
কাশ্মীরের পেহেলগামে হামলার পর ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে উত্তেজনা কার্যত সামরিক সংঘাতে রূপ নেওয়ার আশঙ্কা ক্রমেই বাড়ছে। এ পরস্থিতিতে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ ও ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্করকে ফোন করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও। বুধবার দুজনকে করা এ ফোন কলে তিনি ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে সৃষ্টি হওয়া উত্তেজনা কমানোর ওপর গুরুত্ব আরোপ করেন। এছাড়া দুই
ফোনালাপের বিষয়ে মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তর থেকে দেওয়া পৃথক বিবৃতিতে এই তথ্য জানানো হয়েছে।
ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্করের সঙ্গে ফোনে কথা বলার সময় মার্কো রুবিও বলেন, তিনি পেহেলগাম হামলায় নিহতদের জন্য দুঃখ প্রকাশ করছেন এবং যুক্তরাষ্ট্র সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে ভারতের সঙ্গে কাজ করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।
তবে তিনি আরও বলেন, ভারত যেন পাকিস্তানকে অভিযুক্ত করার আগে সতর্ক থাকে, কারণ এখনও পর্যন্ত ভারত এই হামলায় পাকিস্তানের সম্পৃক্ততার কোনও প্রমাণ প্রকাশ করেনি।
মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র ট্যামি ব্রুস এক বিবৃতিতে বলেছেন, পররাষ্ট্রমন্ত্রী পেহেলগামে ভয়াবহ সন্ত্রাসী হামলায় প্রাণহানির জন্য দুঃখ প্রকাশ করেছেন এবং সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে ভারতের সঙ্গে সহযোগিতার জন্য যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করেছেন। তিনি দক্ষিণ এশিয়ায় উত্তেজনা কমাতে এবং শান্তি ও নিরাপত্তা বজায় রাখতে ভারতকে পাকিস্তানের সঙ্গে কাজ করার জন্য বলেছেন।
পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র ট্যামি ব্রুস বলেন, পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরিফের সঙ্গে ফোনালাপে রুবিও- ২২ এপ্রিল ভারত-শাসিত কাশ্মীরের পর্যটন কেন্দ্র পেহেলগামে সন্ত্রাসী হামলার নিন্দা করার প্রয়োজনীয়তার কথা বলেছেন।
তিনি এক বিবৃতিতে বলেছেন, রুবিও এই অযৌক্তিক হামলার তদন্তে পাকিস্তানি কর্মকর্তাদের সহযোগিতার আহ্বান জানিয়েছেন।
জবাবে প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ বলেন, ভারতের উস্কানিমূলক আচরণ শুধু উত্তেজনাই বাড়াচ্ছে এবং পাকিস্তানের সন্ত্রাসবিরোধী প্রচেষ্টাকে বিভ্রান্ত করছে। তিনি যুক্তরাষ্ট্রের প্রতি আহ্বান জানান, যেন তারা ভারতের ওপর দায়িত্বশীল আচরণ ও ভাষার ব্যবহার নিশ্চিত করতে চাপ প্রয়োগ করে।
এর আগে গত ২২ এপ্রিল মঙ্গলবার বিকেলে কাশ্মীরের পেহেলগাম জেলার বৈসরণ তৃণভূমিতে বন্দুকধারীদের হামলায় অন্তত ২৬ জন নিহত হন, যাদের প্রায় সবাই পর্যটক। হামলার দায় স্বীকার করে রেজিস্ট্যান্স ফ্রন্ট নামে একটি সংগঠন। এটিকে পাকিস্তানভিত্তিক লস্কর-ই-তৈয়্যেবার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট বলে মনে করা হয়।
এ ঘটনায় আরও বেশ কয়েকজনকে আহত হন। যাদের গুলি করে হত্যা করা হয়েছে, তারা সবাই পুরুষ। বস্তুত, ২২ এপ্রিলের হামলা ছিল ২০১৯ সালের পুলোয়ামা হামলার পর জম্মু ও কাশ্মীরে সবচেয়ে বড় প্রাণঘাতী হামলা। বর্তমানে এ ঘটনায় দুই দেশের মধ্যে চরম উত্তেজনা বিরাজ করছে।
পেহেলগামের ভয়াবহ ওই হামলার জেরে ভারত-পাকিস্তানের মধ্যে কূটনৈতিক সম্পর্ক তলানিতে ঠেকেছে। দুই দেশের মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ সিন্ধু পানিবণ্টন চুক্তি স্থগিত করেছে ভারত। জবাবে সিমলা চুক্তি স্থগিত ও ভারতীয় বিমানের জন্য নিজেদের আকাশসীমা বন্ধের ঘোষণা দেয় পাকিস্তান।
তাছাড়া, হামলার পরে দুই দেশই ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে প্রতিবেশী দেশের নাগরিকদের ভিসা বাতিল করে ফিরে যাওয়ার নির্দেশ দেয়। সূত্র-এএফপি