প্রসিকিউশনের তথ্য : প্রাণঘাতী অস্ত্র ব্যবহারের নির্দেশদাতা শেখ হাসিনা
Published: 20th, March 2025 GMT
জুলাই অভ্যুত্থানের সময় ছাত্র–জনতার ওপর প্রাণঘাতী অস্ত্র ব্যবহার করতে নির্দেশ দিয়েছিলেন সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তাঁর সেই নির্দেশের দালিলিক প্রমাণ পেয়েছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের চিফ প্রসিকিউটরের কার্যালয়।
এই দালিলিক প্রমাণের ভিত্তিতে আগামী এপ্রিল মাসের মধ্যে শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে ট্রাইব্যুনালে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করতে চায় চিফ প্রসিকিউটরের কার্যালয়। এ বিষয়ে ট্রাইব্যুনালের প্রসিকিউটর গাজী মনোয়ার হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, ‘তাঁর (শেখ হাসিনা) সরাসরি সম্পৃক্ততা পেয়েছি। তাঁর আদেশ-নির্দেশের সরাসরি ডকুমেন্টারি এভিডেন্স (দালিলিক প্রমাণ) পেয়েছি। মারণাস্ত্র ব্যবহারের নির্দেশের ডকুমেন্টারি এভিডেন্স পেয়েছি।’
এখন পর্যন্ত ট্রাইব্যুনালে মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে মামলা (মিস কেস) হয়েছে ২৩টি। এর মধ্যে তিনটিতে শেখ হাসিনাকে আসামি করা হয়েছে।আগামী এপ্রিল মাসের মধ্যে অন্তত চারটি মামলার তদন্ত প্রতিবেদন (চার্জশিট) ট্রাইব্যুনালে দেওয়া সম্ভব হবে বলেও জানান প্রসিকিউটর গাজী মনোয়ার। তিনি বলেন, চারটি মামলার মধ্যে গণ-অভ্যুত্থানের সময় মানবতাবিরোধী অপরাধে শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে হওয়া মামলাটিও রয়েছে।
ছাত্র-জনতার আন্দোলনে গত বছরের ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতন হয়। এরপর ওই বছরের ১৪ অক্টোবর আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল পুনর্গঠন করা হয়। এখন পর্যন্ত ট্রাইব্যুনালে মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে মামলা (মিস কেস) হয়েছে ২৩টি। এর মধ্যে তিনটিতে শেখ হাসিনাকে আসামি করা হয়েছে। এই তিন মামলার মধ্যে একটিতে শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে গণ–অভ্যুত্থানের সময় সংঘটিত গণহত্যা, নির্যাতনসহ মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগ আনা হয়েছে। আরেকটি মামলায় তাঁর বিরুদ্ধে বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের সাড়ে ১৫ বছরের শাসনামলে গুম-খুনের অভিযোগ আনা হয়েছে। আর তৃতীয় মামলায় ২০১৩ সালের ৫ ও ৬ মে রাজধানীর মতিঝিলের শাপলা চত্বরে হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে হত্যা–নির্যাতনের অভিযোগ আনা হয়েছে।
ছাত্র-জনতার আন্দোলনের মুখে গত বছরের ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা ভারতে পালিয়ে যান। তাঁর বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে করা তিনটি মামলাতেই গ্রেপ্তারি পরোয়ানা রয়েছে। তাঁকে দেশে ফেরাতে ভারতের কাছে ইতিমধ্যে আবেদন করেছে বাংলাদেশ। এ ছাড়া শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করতে আন্তর্জাতিক পুলিশ সংস্থা ইন্টারপোলের কাছেও আবেদন করেছে সরকার।
‘সুপিরিয়র রেসপনসিবিলিটি’
গণ–অভ্যুত্থানের সময় সংঘটিত হত্যাকাণ্ড, বিগত আওয়ামী লীগের সাড়ে ১৫ বছরের শাসনামলে গুম–খুন এবং ২০১৩ সালে মতিঝিলের শাপলা চত্বরে নির্যাতন ও হত্যাযজ্ঞের মতো মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচার এখন গুরুত্ব পাচ্ছে ট্রাইব্যুনালে। এই তিন ধরনের অপরাধেই শেখ হাসিনা অভিযুক্ত।
ট্রাইব্যুনালের তদন্ত সংস্থার একাধিক কর্মকর্তা প্রথম আলোকে বলেছেন, কোনো একটি অপরাধ তদন্ত করার সময় তাঁরা দেখছেন সেটি মানবতাবিরোধী অপরাধ কি না। মানবতাবিরোধী অপরাধ হতে হলে তা ব্যাপক পরিসরে ও পদ্ধতিগতভাবে সংঘটিত হতে হয়। সেখানে একজন ‘সুপিরিয়র রেসপনসিবিলিটি’ থাকে, যার সরাসরি নির্দেশে ব্যাপক পরিসরে ও পদ্ধতিগতভাবে অপরাধ সংঘটিত হয়। অথবা কেউ ব্যাপক পরিসরে ও পদ্ধতিগত অপরাধ হতে দিয়েছেন বা থামানোর চেষ্টা করেননি। ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এ ক্ষেত্রে ‘সুপিরিয়র রেসপনসিবিলিটি’র দায়ে অভিযুক্ত।
তদন্ত সংস্থার কর্মকর্তারা বলেন, গণ–অভ্যুত্থানের সময় গত বছরের ১৫ জুলাই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে ছাত্রলীগের আক্রমণের মধ্য দিয়ে অপরাধ শুরু হয়। এরপর গত বছরের ১৬ জুলাই রংপুরে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী আবু সাঈদ এবং চট্টগ্রামে আরও একজনকে হত্যা করা হয়। এর পর থেকে আন্দোলন সারা দেশে ছড়িয়ে পড়ে এবং দেশব্যাপী অপরাধ সংঘটিত হয়। একপর্যায়ে তা মানবতাবিরোধী অপরাধে রূপ নেয়। যেসব ঘটনায় মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলা হচ্ছে, সব কটিতেই ‘সুপিরিয়র রেসপনসিবিলিটির’ অভিযোগ রয়েছে শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে। ‘সুপিরিয়র রেসপনসিবিলিটি’ না থাকলে সাধারণত মানবতাবিরোধী অপরাধ হয় না।
মামলার অগ্রগতি কত দূর
গণ–অভ্যুত্থানের সাত মাস পর ট্রাইব্যুনালে এখনো কোনো মামলার তদন্ত প্রতিবেদন জমা হয়নি। তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের দায়িত্ব ট্রাইব্যুনালের প্রসিকিউশন ও তদন্ত সংস্থার। তদন্ত সংস্থা প্রথমে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করবে ট্রাইব্যুনালের চিফ প্রসিকিউটরের কার্যালয়ে। এরপর যাচাই–বাছাই করে তা ট্রাইব্যুনালে জমা দেবে চিফ প্রসিকিউটরের কার্যালয়। তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের পরই মূলত আনুষ্ঠানিক বিচারকাজ শুরু হয়।
প্রসিকিউশনের (রাষ্ট্রপক্ষ) দায়িত্বশীল একাধিক সূত্র জানায়, আগামী এপ্রিলের মধ্যে যে চারটি মামলার তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করতে চায় তারা, এর একটি হলো গণ–অভ্যুত্থানের সময় হাসিনার মানবতাবিরোধী অপরাধ। এই মামলায় ১৬ মার্চ সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল–মামুনকেও আসামি করা হয়েছে। গত অক্টোবরে এ মামলা করার সময় শুধু শেখ হাসিনাই আসামি ছিলেন।
প্রসিকিউশন সূত্র বলছে, আগামী এপ্রিলের মধ্যে শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে করা ওই মামলার পাশাপাশি আরও তিনটি মামলায় তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেওয়ার কাজ চলছে। এই তিন মামলা হলো রংপুরের বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী আবু সাঈদ হত্যা, রাজধানীর চানখাঁরপুলে সাতজনকে হত্যা এবং সাভারের আশুলিয়ায় লাশ পোড়ানোর ঘটনায় করা মামলা।
প্রসিকিউশন সূত্র বলছে, ট্রাইব্যুনালের ২৩টি মামলায় এখন পর্যন্ত ১৪২ জন ব্যক্তির বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করা হয়েছে। তাঁদের মধ্যে ৫০ জনের মতো আসামিকে গ্রেপ্তার করতে পেরেছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। এর মধ্যে আনিসুল হক, সালমান এফ রহমান, আমির হোসেন আমু, রাশেদ খান মেনন, হাসানুল হক ইনু, তৌফিক-ই-ইলাহী চৌধুরী, ফারুক খান, শাজাহান খান, আব্দুর রাজ্জাক, দীপু মনি, গোলাম দস্তগীর গাজী, কামরুল ইসলাম, জুনাইদ আহ্মেদ, কামাল আহমেদ মজুমদারের মতো সাবেক মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রী ও সাবেক প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টারা রয়েছেন।
আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সাবেক কর্মকর্তাদের মধ্যে এখন পর্যন্ত ট্রাইব্যুনালের মামলায় যাঁদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে, তাঁদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলেন সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল–মামুন ও মেজর জেনারেল (অব.
ওবায়দুল কাদের, হাছান মাহমুদ, আসাদুজ্জামান খান ও মোহাম্মদ এ আরাফাতের মতো বিগত সরকারের প্রভাবশালী অনেক মন্ত্রী ট্রাইব্যুনালে হওয়া বিভিন্ন মামলার আসামি। এই আসামিরা গ্রেপ্তার না হওয়া হওয়ায় এবং অনেকে দেশ ছেড় পালিয়ে যাওয়ায় ক্ষোভ ও হতাশা প্রকাশ করেছেন জুলাই অভ্যুত্থানে শহীদ পরিবারের সদস্যরা।
শহীদ পরিবারের সদস্যদের নিয়ে গঠিত সংগঠন ‘জুলাই ২৪ শহীদ পরিবার সোসাইটি’-এর সাধারণ সম্পাদক ও শহীদ ইমাম হাসান তাইমের ভাই রবিউল আউয়াল প্রথম আলোকে বলেন, বিচার দৃশ্যমান করতে যথেষ্ট উদ্যোগ দেখা যাচ্ছে না। একটি হত্যাকাণ্ডে একজন লোক জড়িত থাকলে দুই হাজার হত্যাকাণ্ডের জন্য দুই হাজার গ্রেপ্তার করার কথা। এ পর্যন্ত কয়জন লোক গ্রেপ্তার হয়েছে? আসামি না ধরলে বিচার করবে কার?
উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: তদন ত স স থ ম নবত ব র ধ ল র তদন ত কর মকর ত গত বছর র অপর ধ র মন ত র প রথম সরক র
এছাড়াও পড়ুন:
৬ নভেম্বর প্রধান উপদেষ্টাকে স্মারকলিপি দেবে ৮ দল
জুলাই সনদ বাস্তবায়ন আদেশ জারি, সংশোধিত গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ (আরপিও) বহাল এবং নির্বাচনের আগে গণভোটসহ পাঁচ দফা দাবিতে নতুন কর্মসূচি ঘোষণা করেছে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী, ইসলামী আন্দোলন, খেলাফত মজলিসসহ আন্দোলনরত আট দল।
সোমবার (৩ নভেম্বর) দুপুরে রাজধানীর পুরনো পল্টনে খেলাফত মজলিসের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত যৌথ প্রেস ব্রিফিংয়ে এ কর্মসূচি ঘোষণা করেন বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের আমির মাওলানা মামুনুল হক।
আরো পড়ুন:
৩০০ আসনে প্রার্থী বাছাই প্রায় চূড়ান্ত: তারেক রহমান
বরগুনায় জামায়াতে যোগ দিলেন বিএনপির বহিষ্কৃত নেতা মামুন
কর্মসূচির মধ্যে রয়েছে, আগামী বৃহস্পতিবার (৬ নভেম্বর) বেলা ১১টায় প্রধান উপদেষ্টা বরাবর গণমিছিল সহকারে স্মারকলিপি প্রদান। এতে সন্তোষজনক অগ্রগতি না হলে আগামী ১১ নভেম্বর (বুধবার) ঢাকায় গণসমাবেশ কর্মসূচি পালন করা হবে। তবে জুলাই সনদ বাস্তবায়ন আদেশ জারি, গণভোটসহ বিষয়গুলোর সুন্দর সমাধানে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে সংলাপের আয়োজন করতে সরকারের প্রতি আহ্বান জানানো হয়েছে।
এ সময় সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাব দেন ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের আমির মুফতি সৈয়দ মুহাম্মাদ রেজাউল করীম, পীর সাহেব চরমোনাই ও বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমির ডা. আব্দুল্লাহ মুহাম্মাদ তাহের।
এর আগে খেলাফত মজলিসের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে বৈঠকে বসেন আট দলের শীর্ষ নেতারা। দলগুলো হলো বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ, বাংলাদেশ খেলাফত মজলিস, খেলাফত মজলিস, খেলাফত আন্দোলন, নেজামে ইসলাম পার্টি, জাতীয় গণতান্ত্রিক পার্টি (জাগপা) ও ডেভেলপমেন্ট পার্টি।
নতুন কর্মসূচি ঘোষণা করে মামুনুল হক বলেন, “বাংলাদেশ ত্রয়োদশ সংসদ নির্বাচনের দ্বারপ্রান্তে উপনীত। তবে জুলাই সনদ নিয়ে দেশের মানুষ যে স্বপ্ন দেখেছিল এবং নতুন বন্দোবস্তের স্বপ্ন এখনো অধরা।’’
পূর্ব ঘোষিত ৫ দফা দাবি আদায়ে নতুন কর্মসূচি ঘোষণা করে তিনি বলেন, “আমাদের আটটি দলের পাঁচ দফা দাবিতে সংগ্রাম অব্যাহত থাকবে। আমরা জুলাই সনদের আইনিভিত্তি দেওয়ার দাবি জানিয়ে আসছি। অবিলম্বে জুলাই সনদ বাস্তবায়নের আদেশ জারি করতে হবে। জাতীয় নির্বাচনের আগেই পৃথকভাবে জুলাই সনদ বাস্তবায়নে গণভোট করতে হবে। আরপিও সংশোধন করা হলে আমরা সেটা মানব না। অর্থাৎ আরপিও আগের মতোই রাখতে হবে। এগুলোই এখন আমাদের মূল দাবি।
“আশা করি আলোচনার ভিত্তিতে সকল রাজনৈতিক দল সমাধান করতে পারব এবং জুলাই সনদের আইনি ভিত্তির মাধ্যমে আগামী নির্বাচন হবে’’ বলেন তিনি।
জুলাই সনদ বাস্তবায়ন প্রক্রিয়া ও গণভোট আয়োজন নিয়ে মতপার্থক্য নিরসনে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে সংলাপ আয়োজন করে সেই আলোচনায় প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূসকে ‘রেফারির’ ভূমিকায় থাকার আহ্বান জানিয়েছেন জামায়াতে ইসলামের নায়েবে আমির সৈয়দ আব্দুল্লাহ মো. তাহের।
সৈয়দ আব্দুল্লাহ মো. তাহের বলেন, ‘‘আমরা যে ঐকমত্যে পৌঁছেছিলাম, তাতে হঠাৎ করে একটি দল বিরোধিতা করছে। আমরা আশা করি, তারা তাদের দলীয় অবস্থান স্পষ্ট করবে। জুলাই সনদ বাস্তবায়ন না হলে গণভোট আগে আর পরে করে লাভ নেই। বরং গণভোটের মাধ্যমে জুলাই সনদ বাস্তবায়ন করতে হবে। কারণ নির্বাচনের দিন ‘হ্যাঁ’ বা ‘না’ ভোটে কারও মনযোগ থাকবে না।’’
তাহের বলেন, “আমি গতকালকে (২ নভেম্বর) দলগুলোর মধ্যে একটি আলোচনার আহ্বান করেছিলাম। আজকে উপদেষ্টা পরিষদও সেই রকম একটি আহ্বান দলগুলোর কাছে জানিয়েছে। আমরাও দেখতে চাই, মেইন স্টেক হোল্ডার দলগুলো এই আহ্বানে যেন সাড়া দেয়। তারাও যদি আমাদের মতো একইভাবে সাড়া দেয়, তাহলে একটা রাস্তা বেরিয়ে আসবে।’’
জামায়াতের এই সিনিয়র নেতা বলেন, “উপদেষ্টা পরিষদ যে মনে করেছে, তাদের আর কোনো দায়িত্ব নেই, তারা আর কিছুই করবে না, দলগুলো মিলে করবে… তাহলে এখানে একটা রেফারির অভাব হতে পারে। উপদেষ্টা পরিষদের পক্ষ থেকে, বিশেষ করে প্রধান উপদেষ্টা এখানে একটা রেফারির ভূমিকা পালন করবেন আগের মতো, এটা আমরা আশা করি।’’
মুফতি রেজাউল করীম বলেন, ‘‘জুলাই সনদের আইনিভিত্তি হলো প্রধান বিষয়। এটা না হলে এই সরকার, জুলাই গণঅভ্যুত্থান সবকিছু আইনি প্রশ্নের মুখে পড়বে। ৫ আগস্টের পরে সংস্কার, বিচার ও নির্বাচনের দায়িত্ব নিয়ে সরকার গঠিত হয়েছিল। সেই লক্ষ্যে সংস্কার কমিশন হয়েছে, ঐকমত্য কমিশন হয়েছে। গণভোটের বিষয়ে সবাই একমতও হয়েছে। এখন গণভোটের দিনক্ষণ নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে যে বিভেদ তৈরি হয়েছে, তা দুঃখজনক। এই ক্ষেত্রে বিএনপির আচরণের কোনো অর্থ আমি বুঝি না।’’
উপদেষ্টা পরিষদের আজকের বক্তব্যের প্রেক্ষিতে সকল রাজনৈতিক দলের একত্রে বসে চলমান বিভেদ দূর করে শান্তিপূর্ণ অবস্থা তৈরির আহ্বান জানান পীর সাহেব চরমোনাই।
বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ-এর আমীর মাওলানা সৈয়দ মুহাম্মাদ রেজাউল করীম (পীর সাহেব চরমোনাই), বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসে আমীর মাওলানা মুহাম্মাদ মামুনুল হক, বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমীর ডা. আব্দুল্লাহ আবু তাহের, খেলাফত মজলিসের আমীর মাওলানা আব্দুল বাসিত আজাদ, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ-এর প্রেসিডিয়াম সদস্য অধ্যাপক আশরাফ আলী আকন, বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের নায়েবে আমির মাওলানা মাহবুবুল হক ও মাওলানা কুরবান আলী কাসেমী, খেলাফত মজলিসের নায়েবে আমীর মাওলানা সাখাওয়াত হুসাইন, জাগপার সহ-সভাপতি ও মুখপাত্র রাশেদ প্রধান, খেলাফত মজলিসের মহাসচিব ড. আহমদ আবদুল কাদের, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ-এর মহাসচিব অধ্যক্ষ মাওলানা ইউনুছ আহমাদ, বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের মহাসচিব মাওলানা জালালুদ্দিন আহমাদ, বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল ড. হামিদুর রহমান আজাদ, বাংলাদেশ নেজামে ইসলাম পার্টির মহাসচিব মাওলানা মুসা বিন ইজহার, বাংলাদেশ খেলাফত আন্দোলনের মহাসচিব মাওলানা ইউসুফ সাদিক হক্কানী, খেলাফত মজলিসের যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট জাহাঙ্গীর আলম, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ-এর যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা গাজী আতাউর রহমান, বাংলাদেশ ডেভেলপমেন্ট পার্টির মহাসচিব মো. কাজী নিজামুল হক নাঈম।
ঢাকা/নঈমুদ্দীন/বকুল