সেবার বুয়েন্স আয়ার্সে এসে একঘর মানুষের সামনে বিশ্বচ্যাম্পিয়ন আর্জেন্টিনাকে হারিয়ে গিয়েছিল উরগুয়ে। এবার তাদের মাঠে গিয়ে বদলা নেওয়ার পালা আলভারেজদের । মন্টিভিডিওতে বিশ্বকাপ বাছাইয়ের ম্যাচে (বাংলাদেশ সময় শনিবার সকাল ৫টা ৩০ মিনিট) মুখোমুখি হবে উরুগুয়ে-আর্জেন্টিনা। তবে গুরুত্বপূর্ণ এই ম্যাচে মেসি, দিবালা, লাওতারোদের পাচ্ছে না আর্জেন্টিনা। কোচ স্কালোনির চিন্তাটা তাই আক্রমণভাগ নিয়েই। 

সেই হিসেবে একেবারে নির্ভার উরুগুয়ের আর্জেন্টাইন কোচ মার্সেলো বিয়েলসা। গেমিনেজ, ভালবার্দে, নুনেজরা রয়েছেন দারুণ ফর্মে। গেল নভেম্বরেই তারা ঘরের মাঠে কলম্বিয়াকে হারিয়েছে, ড্র করেছে ব্রাজিলের সঙ্গে। তবে মেসিশূন্য এই ম্যাচে নতুনদের নিয়ে কিছু পরীক্ষা-নিরীক্ষারও সুযোগ থাকছে। মেসির জায়গায় কে গায়ে জড়াবেন ১০ নম্বর জার্সি? তার উত্তর জানার অপেক্ষায় আছেন সমর্থকরা।

২০০৫ সালে অভিষেক হওয়ার পর ১০ নম্বর জার্সিটি পেতে তাঁর অপেক্ষা করতে হয় আরও চার বছর। ২০০৯ সালের ২৮ মার্চ ভেনেজুয়েলার বিপক্ষে প্রথম সেই নম্বরটি পান মেসি। তার পর থেকে আর্জেন্টিনা দলের এই নম্বরটিই তাঁর নামের সঙ্গে মিশে আছে। সেদিন থেকে এ পর্যন্ত আর্জেন্টিনা মোট ২১৫টি ম্যাচ খেলেছে, চোট আঘাত কাটিয়ে তার মধ্যে মেসি খেলেছেন ১৫৫টি ম্যাচ। এর মধ্যে ১৪ জনের সৌভাগ্য হয়েছে সেই ১০ নম্বর জার্সিটি গায়ে জড়িয়ে মাঠে নামার। ওর্তেগা, পেরেজ, গাইতানদের অনেকেই ১০ নম্বর নিয়ে মাঠে নেমেছিলেন। তবে তাদের মধ্যে সবচেয়ে বেশি সাতবার মেসির অনুপস্থিতিতে তাঁর বন্ধু সার্জিও আগুয়েরা ১০ নম্বর পরে খেলেছেন। ডি মারিয়াও দু’বার নেমেছেন। 

সম্প্রতি দিবালাকেও দেখা গেছে আর্জেন্টিনার ১০ নম্বর গায়ে খেলতেন। কিন্তু এবার যে দিবালাও নেই। বাঁ পায়ের থাই পেশিতে অস্ত্রোপচার করাতে হবে তাঁর। তাই আর্জেন্টাইন মিডিয়ার কৌতূহল আজ উরুগুয়ের বিপক্ষে কার গায়ে চড়বে সেই জার্সি। টিওয়াইসি স্পোর্টসের ইঙ্গিত, অ্যাঞ্জেল কোরেরা হতে পারেন সেই ভাগ্যবান। অবশ্য কিছু ম্যাচ এমনও হয়েছে, মেসি না থাকায় কেউই সেই ১০ নম্বরটি পরে খেলতে নামেননি। আজও কি তেমন কিছু হবে।

কিছু ম্যাচে এই ১০ নম্বর ছাড়াই খেলেছে আর্জেন্টিনা। সাধারণত মেসি যদি না খেলতে না পারেন, তাহলে কোচ স্কালোনি ৪-৪-২ ফরমেশনে দল সাজিয়ে থাকেন। সেখানে বাঁয়ে নিকোলাস গঞ্জালেস আর ডানে রদ্রিগো ডি পলকে রাখেন। মিডফিল্ডে অ্যাঞ্জেল ফার্নান্দেজ, ম্যাক অ্যালিস্টার কিংবা লিওনার্দো পারদেজকে রাখা হয়। আক্রমণে লাওতারো মার্টিনেজ ও জুলিয়ান আলভারেজ থাকেন। কিন্তু সমস্যা হচ্ছে এবার লাওতারো মার্টিনেজ নেই, শেষ মুহূর্তে মাসল ইনজুরির কারণে ক্যাম্প ছেড়েছেন তিনি। আর এই জায়গাতেই সুযোগ তৈরি হয়েছে দলের পাঁচ তরুণ তারকার।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: আর জ ন ট ন আর জ ন ট ন

এছাড়াও পড়ুন:

৫ আগস্টের মধ্যে জুলাই সনদ না হলে অবরোধের হুঁশিয়ারি আপ বাংলাদেশের

জুলাই সনদ ও ঘোষণাপত্র জারির দাবিতে অন্তর্বর্তী সরকারকে ৫ আগস্ট পর্যন্ত সময় বেঁধে দিয়েছে ইউনাইটেড পিপলস (আপ) বাংলাদেশ। আজ শুক্রবার রাজধানীর শাহবাগে গণজমায়েত থেকে এ ঘোষণা দেওয়া হয়। দাবি পূরণ না হলে ৬ আগস্ট থেকে দেশজুড়ে অবরোধ কর্মসূচি পালনের হুঁশিয়ারি দিয়েছে সংগঠনটি।

‘৩৬ জুলাইয়ের মধ্যে জুলাই ঘোষণাপত্র ও সনদের দাবি’ শীর্ষক গণজমায়েতে অংশ নেন দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে আসা আপ বাংলাদেশের নেতা–কর্মীরা। জুলাই গণ–অভ্যুত্থানের এক বছর পার হলেও জুলাই সনদ ও ঘোষণাপত্র জারি না হওয়াকে অন্তর্বর্তী সরকারের ব্যর্থতা হিসেবে দেখছেন তাঁরা।

আপ বাংলাদেশের আহ্বায়ক আলী আহসান জুনায়েদ বলেন, ‘আমরা একটি বৈষম্যহীন বাংলাদেশ চেয়েছিলাম। কিন্তু আহতদের ভাগ্যের পরিবর্তন হয়নি। আমরা দেখেছি, যারা জুলাইয়ের নেতৃত্বে ছিল, জুলাইয়ের পরে তাদের পকেট ভারী হয়েছে। আমি বলতে চাই, আপনাদের এই পকেটের হিসাব দিতে হবে।’

অন্তর্বর্তী সরকারকে উদ্দেশ করে আলী আহসান বলেন, ‘আপনারা জুলাই ঘোষণাপত্র দিতে পারবেন কি পারবেন না, তা জানান; না পারলে আমরা আছি। যারা জীবন দিতে প্রস্তুত ছিলাম, বাংলাদেশের (সেই) ২০ কোটি জনগণ জুলাই ঘোষণাপত্র জারি করবে।’

আপ বাংলাদেশের আহ্বায়ক বলেন, ‘৩৬ জুলাইয়ের মধ্যে যদি জুলাই ঘোষণাপত্র না হয়, তাহলে ৬ আগস্ট থেকে দেশজুড়ে অবরোধ শুরু হবে। এ সরকারের কোনো হুমকি আমাদের দমিয়ে রাখতে পারবে না।’

গণজমায়েতে অংশ নিয়ে ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরীফ ওসমান বলেন, আপ বাংলাদেশের নেতারা এখনো কোনো প্রটোকল ছাড়া রাস্তাঘাটে হাঁটেন। কিন্তু তাঁরা যেদিন প্রটোকল নিতে শুরু করবেন, সেদিন থেকে তাঁদের বিরুদ্ধেও তিনি কথা বলা শুরু করবেন।

জুলাই সনদ ও ঘোষণাপত্র জারির আহ্বান জানিয়ে শরীফ ওসমান বলেন, এখন পর্যন্ত বিদ্যমান আইনি কাঠামোয় জুলাই শহীদেরা রাষ্ট্রদ্রোহী। তাঁদেরকে আইনি স্বীকৃতি দেওয়া হয়নি। আজকের মধ্যে সরকার দিনক্ষণ না জানালে আগামী ৩ তারিখ (আগস্ট) ইনকিলাব মঞ্চের উদ্যোগে কফিন মিছিল নিয়ে সচিবালয় অবরোধ করা হবে।

বিগত এক বছর থেকে একটি দুর্বল সরকার দেশ চালাচ্ছে উল্লেখ করে আপ বাংলাদেশের সদস্যসচিব আরেফিন মোহাম্মদ বলেন, ‘জুলাই গণ–অভ্যুত্থানের এক বছর পূর্তিতে ঘোষণাপত্রের জন্য আমাদের আবারও গণজমায়েত করতে হচ্ছে। এর চেয়ে লজ্জাজনক আর কী হতে পারে?’

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী এ বি জুবায়ের বলেন, ‘আমরা যে মৌলিক সংস্কার চেয়েছিলাম, এখনো তার কিছুই হয়নি। এখনো শহীদ পরিবারের পুনর্বাসন ও আহতদের চিকিৎসা নিশ্চিত হয়নি। আমি উপদেষ্টাদের উদ্দেশে বলতে চাই, অবিলম্বে জুলাই সনদ ঘোষণা করুন। আপনাদের কাছে আমাদের চাওয়া–পাওয়া খুব বেশি নেই।’

গণজমায়েতে র‌্যাপ গান পরিবেশন করেন আপ বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় সদস্য আহনাফ তাহমিদ। স্বাগত বক্তব্য দেন জুলাই শহীদ ওসমান পাটোয়ারীর বাবা আবদুর রহমান। গণজমায়েতে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন আপ বাংলাদেশের প্রধান সমন্বয়কারী রাফে সালমান রিফাত, প্রধান সংগঠক নাঈম আহমেদ, মুখপাত্র শাহরিন সুলতানা প্রমুখ।

সম্পর্কিত নিবন্ধ