পাহাড়ে মুবাছড়ির ঝুঁকিপূর্ণ সেতু, বর্ষার আগেই মেরামতের দাবি
Published: 21st, March 2025 GMT
ঝুঁকিপূর্ণ সেতু দিয়ে ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করছে মহালছড়ি উপজেলার মুবাছড়ি ইউনিয়নবাসী। বর্ষার আগে ঝুঁকিপূর্ণ সেতুটি দ্রুত মেরামত বা পুনঃ নির্মাণের দাবি তাদের।
সেতুটি ছোট কিন্তু জনগুরুত্বপূর্ণ। যেটি সংযোগ করেছে উপজেলা সদরের সাথে একটি পুরো ইউনিয়নের। সেতুটির দুইপাশের সংযোগ সড়কের ধারক দেয়াল ধসে মাটি সরে গিয়ে মহালছড়ি উপজেলার সাথে মুবাছড়ি ইউনিয়নের সড়ক যোগাযোগ ব্যবস্থা বন্ধ হয়েছে বিগত বন্যায়। এখন সেতুটি কোনমতে দাঁড়িয়ে আছে। যে কোন মুহূর্তে ধসে যেতে পারে। এটি দিয়ে এখনই চলাচল বন্ধ করে দেওয়া উচিত।
সেতুটির অবস্থান মহালছড়ি উপজেলার মহালছড়ি থেকে সিঙ্গিনালা সড়কের কাপ্তাই পাড়া এলাকায়। সেতুটি দুর্দশায় পড়েছে প্রায় ১০/১২ বছর আগে। জোড়াতালি দিয়ে মানুষজন ও পরিবহন চলাচল করছিল। এ অবস্থায় বিগত বন্যায় সেতুটির দুই পাশের সংযোগ সড়কের দেয়াল ও মাটি সরে যাওয়ার পর এলাকাবাসীরা নিজেদের উত্তোলিত টাকায় বাঁশ আর কাঠ দিয়ে মেরামত করে কোনমতে চলাচল করছে। যা অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ, যে কোন সময় ঘটতে পারে বড় ধরনের দুঘর্টনা।
অবশ্য বড় ধরনের বা পণ্যবাহী যানবাহন চলাচলে খাগড়াছড়ি এলজিইডি বিকল্প সড়ক তৈরি করলেও মানুষ চলাচল করছে পুরাতন সেতু দিয়েই।
মহালছড়ি উপজেলার মুবাছড়ির ঝুঁকিপূর্ণ সেতু
এই সেতু দিয়ে চলাচলকারী মেশিন পাড়ার সুগত চাকমা, করল্যালচি গ্রামে কুন্ডল চাকমা, সিঙ্গিনালা গ্রামে হ্লাথোয়াই কারবারি ও মনাটেক গ্রামের সূর্য চাকমা- এরা জানান, সেতুটি আগামী বর্ষা বা কাপ্তাই বাঁধে পানি আসার আগে মেরামত বা নতুনভাবে না করলে একেবারে বন্ধ হবে সড়ক যোগাযোগ ব্যবস্থা। কারণ, কাপ্তাই বাঁধে পানি চলে এলে বিকল্প সড়কটিও ডুবে যাবে।
মুবাছড়ি ইউনিয়নের সাথে যোগাযোগের এটি একমাত্র সড়ক। এই সড়ক দিয়ে সকল বাজার, অফিস-আদালত, স্কুল-কলেজের শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের আসা-যাওয়াসহ উৎপাদিত সকল কৃষিপণ্য বাজারজাত ও আনা-নেওয়া করা হয়।
দীর্ঘ প্রায় ৪০ বছর বা তারও আগে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি)র অর্থায়নে এই সড়কটি নির্মাণের সময় করা হয়েছিল এই ছোট সেতুটিও। এই সড়ক দিয়ে শুধু মুবাছড়ি ইউনিয়নের লোকজন নয়, রাঙ্গামাটি জেলার নানিয়ারচর উপজেলা করল্যাছড়ি, সেলোন্যা, সাবেক্ষংসহ প্রায় ৩০টি গ্রামের প্রায় ৩০ হাজারের মতো লোকজন চলাচল ও পণ্য আনা-নেওয়া করে।
খাগড়াছড়ির স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের নির্বাহী প্রকৌশলী তৃপ্তি শংকর চাকমা বলেন, “বিগত বন্যায় ব্রিজটির দুই পাশের সংযোগ সড়ক ভেঙে গিয়ে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে গিয়েছিলো। এটি আগে থেকে সার্ভে ছিল। এরপর ব্রিজটি অনুমোদন হয়ে আসছে তবে কিছু ত্রুটি ছিলো। মূলত হাইসপাড় লেভেলটা কম থাকায় আবার সংশোধনের জন্য পাঠিয়েছেন। এটি সংশোধন হয়ে গেছে, কয়েক দিনের মধ্যে এটি পেয়ে যাবেন। পেয়ে গেলে বর্ষা মৌসুমের আগে কাজ শুরু করতে পারবেন। আর তারা চেষ্টা করবেন যাতে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন না হয়।”
ঢাকা/রূপায়ন/টিপু
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর উপজ ল র ম র মত
এছাড়াও পড়ুন:
চলন্ত অবস্থায় বৈদ্যুতিক গাড়ি চার্জ করতে সক্ষম সড়ক চালু ফ্রান্সে
জ্বালানিসাশ্রয়ী ও পরিবেশবান্ধব হওয়ায় বর্তমানে বিশ্বব্যাপী বৈদ্যুতিক গাড়ির উৎপাদন ও ব্যবহার বাড়ছে। তবে এসব গাড়ি বাসা বা নির্দিষ্ট স্থানেই শুধু চার্জ করা যায়। ফলে দূরে ভ্রমণের সময় গাড়ির চার্জ শেষ হয়ে গেলে বিপদে পড়েন অনেকেই। এ সমস্যা সমাধানে তারের সংযোগ ছাড়াই বৈদ্যুতিক গাড়ি চার্জ করতে সক্ষম ১ দশমিক ৫ কিলোমিটার দীর্ঘ ‘ওয়্যারলেস চার্জিং সড়ক’ চালু করেছে ফ্রান্স। প্যারিসের উপকণ্ঠে চালু হওয়া সড়কটিতে চলাচলের সময় বিভিন্ন ধরনের বৈদ্যুতিক গাড়ি, বাস ও ভারী ট্রাকের ব্যাটারি স্বয়ংক্রিয়ভাবে চার্জ হয়ে যাবে।
বৈদ্যুতিক গাড়ি চার্জ করার জন্য সড়কটিতে নিরবচ্ছিন্নভাবে ২০০ কিলোওয়াট পর্যন্ত বিদ্যুৎ সরবরাহ করা হবে। প্রয়োজনে সেটি ৩০০ কিলোওয়াট পর্যন্ত পৌঁছাতে পারে, যা টেসলার ভি থ্রি সুপারচার্জারের মতো বিশ্বের দ্রুততম চার্জারগুলোর সমান শক্তি সরবরাহ করতে সক্ষম। এই সড়কের নিচে স্থাপন করা হয়েছে অসংখ্য তামার কুণ্ডলী। এসব কুণ্ডলী চৌম্বক ক্ষেত্র তৈরি করে, যা বিশেষ রিসিভারযুক্ত বৈদ্যুতিক গাড়িতে শক্তি স্থানান্তর করে। পদ্ধতিটি অনেকটা ওয়্যারলেস চার্জিং প্রযুক্তির মতো, যেখানে পাওয়ার ব্যাংক বা চার্জিং প্যাডে মোবাইল ফোন রেখে চার্জ নেওয়া হয়। চৌম্বক ক্ষেত্রের মাধ্যমে বিদ্যুৎ স্থানান্তর হওয়ায় ভারী বৃষ্টি, বরফ বা তুষারপাতেও চার্জিং প্রক্রিয়ায় কোনো ব্যাঘাত ঘটে না। দ্রুত চার্জিং সুবিধার ফলে গাড়ি ও ট্রাক এখন দীর্ঘ পথ পাড়ি দিতে পারবে, মাঝপথে চার্জ নিতে থামার প্রয়োজন হবে না। ফলে গাড়িতে বড় ও ভারী ব্যাটারি বহনের প্রয়োজনীয়তা অনেক কমে যাবে।
এরেনা ইভির প্রতিবেদন অনুযায়ী, এই স্বয়ংক্রিয় চার্জিং সড়কে মাত্র কয়েক মিনিট চললেই বৈদ্যুতিক গাড়ির রেঞ্জ বা চলার সক্ষমতা উল্লেখযোগ্যভাবে বাড়ে। ফলে বৈদ্যুতিক গাড়ির দীর্ঘ যাত্রায় চার্জ ফুরিয়ে যাওয়ার আশঙ্কা সমাধানে প্রযুক্তিটি নতুন সম্ভাবনা দেখাচ্ছে। প্রযুক্তিটি যদি ব্যাপকভাবে চালু করা যায়, তবে তুলনামূলকভাবে হালকা, সাশ্রয়ী এবং কম ব্যাটারিসমৃদ্ধ বৈদ্যুতিক গাড়ি তৈরি করা সম্ভব হবে। এতে গাড়ির উৎপাদন খরচও কমবে বলে আশা করা হচ্ছে।
প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান ইলেকট্রিওনের তৈরি সড়কটির নকশাতেও রয়েছে বাড়তি সুবিধা। বৈদ্যুতিক গাড়ি চার্জ করার প্রযুক্তি রাস্তার ভেতরের অংশে থাকায় ক্ষয়ক্ষতির ঝুঁকি কম। ফ্রান্সের পরিবহন মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, ২০৩৫ সালের মধ্যে দেশজুড়ে প্রায় ৯ হাজার কিলোমিটার ওয়্যারলেস চার্জিং সড়ক নির্মাণের পরিকল্পনা করা হয়েছে, যাতে বৈদ্যুতিক যানবাহন চলাচল আরও সহজ, কার্যকর ও পরিবেশবান্ধব হয়ে ওঠে।
সূত্র: ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস