আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধে দুই সপ্তাহের কর্মসূচি ঘোষণা
Published: 23rd, March 2025 GMT
আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ ও গণহত্যার বিচারের দাবিতে আগামী দু’সপ্তাহের জন্য ‘জুলাই রিভাইভস’ কর্মসূচির ঘোষণা দিয়েছে ‘গণহত্যাকারী আওয়ামী লীগের নিষিদ্ধকরণ মঞ্চ’ নামের একটি প্ল্যাটফর্ম।
আজ রোববার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মধুর ক্যান্টিনের সামনে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ কর্মসূচি ঘোষণা করেন প্ল্যাটফর্মটির সংগঠক মোসাদ্দেক আলী ইবনে মোহাম্মদ।
ঘোষিত এ কর্মসূচির আওতায় আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধ ও গণহত্যার বিচারের দাবিতে ‘শহিদ ও আহত পরিবারের সঙ্গে সাক্ষাৎ, গণসংযোগ এবং বিভিন্ন রাজনৈতিক ও সামাজিক সংগঠনের নেতাদের সঙ্গে সাক্ষাৎ, নাগরিক সমাজের ব্যক্তিদের সঙ্গে সাক্ষাৎ, অনলাইন-অফলাইন প্রচার-প্রচারণা, দেয়াল লিখন’ শীর্ষক প্রচারণামূলক কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হবে বলে জানিয়েছেন প্ল্যাটফর্মটির নেতারা।
সংবাদ সম্মেলনে মোসাদ্দেক আলী ইবনে মোহাম্মদ বলেন, জুলাই গণহত্যার সাত মাস অতিবাহিত হলেও খুনিদের বিচারের ব্যাপারে কোনো কার্যকরী পদক্ষেপ গ্রহণ করা হচ্ছে না। খুনিরা বিভিন্ন স্থানে প্রকাশ্যে ঘুরে বেড়াচ্ছে, দেশে অরাজকতা সৃষ্টির উদ্দেশ্যে গোপনে সংগঠিত হচ্ছে, এমনকি ঝটিকা মিছিল করার মতো দুঃসাহসও দেখাচ্ছে।
তিনি বলেন, জুলাই গণঅভ্যুত্থানের পর গঠিত অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধানের কর্তব্য ছিল- আহতদের চিকিৎসা নিশ্চিত করা এবং শহিদ পরিবার ও আহতদের পুনর্বাসন নিশ্চিত করা। দ্বিতীয় কর্তব্য ছিল- জুলাই গণহত্যার দৃষ্টান্তমূলক বিচার নিশ্চিত করা এবং গণহত্যাকারী আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করা। কিন্তু অন্তর্বর্তী সরকার কোনো ক্ষেত্রেই আশানুরূপ পদক্ষেপ গ্রহণ করতে পারেনি। আহতদের এখনও নিজেদের চিকিৎসার জন্য আন্দোলন করতে হচ্ছে, যা আমাদের জন্য অত্যন্ত বেদনাদায়ক।
আওয়ামী লীগকে ‘জঙ্গি’ সংগঠন হিসেবে আখ্যায়িত করে মোসাদ্দেক বলেন, সরকারের উপদেষ্টাসহ বিভিন্ন মহল থেকে আওয়ামী লীগকে পুনর্বাসনের হীন চেষ্টা চলছে, যা জুলাইয়ের শহিদ ও আহতদের রক্তের সঙ্গে সুস্পষ্ট বেঈমানী। আওয়ামী লীগ কর্তৃক সংগঠিত জুলাই গণহত্যা শুধু দেশীয় নয় বরং আন্তর্জাতিক বিভিন্ন মানবাধিকার সংগঠনের পাশাপাশি জাতিসংঘ কর্তৃকও স্বীকৃত। আওয়ামী লীগ একটি সশস্ত্র জঙ্গি সংগঠন, যারা শুধু জুলাইয়ে নয় বরং গত ১৫-১৬ বছর নারী-পুরুষ এমনকি শিশুদেরকে খুন করে উল্লাস করেছে। শুধু জুলাই গণহত্যাই নয়, শাপলা গণহত্যা, পিলখানা হত্যাকাণ্ড, গুম-খুনসহ আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করার সহস্রাধিক কারণ রয়েছে।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: আওয় ম ল গ জ ল ই গণহত য গণহত য র আহতদ র আওয় ম স গঠন
এছাড়াও পড়ুন:
সুদানে ‘গণহত্যা’ হয়েছে
সুদানের এল-ফাশের শহর ও এর আশপাশের বিভিন্ন স্থানে গণহত্যা চলছে। কৃত্রিম ভূ–উপগ্রহের ছবি বিশ্লেষণ করে ইয়েল বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকেরা এমন দাবি করেছেন। জার্মানির পররাষ্ট্রমন্ত্রী সেখানকার পরিস্থিতিকে ‘ভয়াবহ’ বলে উল্লেখ করেছেন।
২০২৩ সালের এপ্রিল থেকে সুদানের সেনাবাহিনীর সঙ্গে দেশটির আধা সামরিক বাহিনী র্যাপিড সাপোর্ট ফোর্সসের (আরএসএফ) লড়াই চলছে। গত রোববার তারা এল-ফাশের দখল করে। এর মাধ্যমে প্রায় দেড় বছরের দীর্ঘ অবরোধের পর পশ্চিম দারফুর অঞ্চলে সেনাবাহিনীর সর্বশেষ শক্ত ঘাঁটিটিও ছিনিয়ে নেয় তারা।
শহরটি পতনের পর থেকে সেখানে বিচারবহির্ভূত হত্যা, যৌন সহিংসতা, ত্রাণকর্মীদের ওপর হামলা, লুটপাট এবং অপহরণের খবর পাওয়া যাচ্ছে। সেখানকার যোগাযোগব্যবস্থা প্রায় সম্পূর্ণ বিচ্ছিন্ন।
এল-ফাশের থেকে পালিয়ে পার্শ্ববর্তী তাওইলা শহরে জীবিত বেঁচে ফেরা কয়েকজন ব্যক্তির সঙ্গে এএফপির সাংবাদিক কথা বলেছেন। সেখানে গণহত্যা হয়েছে জানিয়ে তাঁরা বলেন, শহরটিতে মা-বাবার সামনেই শিশুদের গুলি করা হয়েছে। প্রাণ বাঁচাতে পালানোর সময় সাধারণ মানুষকে মারধর করে তাঁদের মূল্যবান সামগ্রী লুট করা হয়েছে।
পাঁচ সন্তানের মা হায়াত শহর থেকে পালিয়ে আসা ব্যক্তিদের একজন। তিনি বলেন, ‘আমাদের সঙ্গে থাকা তরুণদের আসার পথেই আধা সামরিক বাহিনী থামিয়ে দেয়। আমরা জানি না, তাদের কী হয়েছে।’
ইয়েল বিশ্ববিদ্যালয়ের হিউম্যানিটারিয়ান রিসার্চ ল্যাব বলেছে, গত শুক্রবার পাওয়া কৃত্রিম উপগ্রহের ছবিতে ‘বড় ধরনের কোনো জমায়েত চোখে পড়েনি।’ এ কারণে মনে করা হচ্ছে, সেখানকার জনগণের বড় একটি অংশ হয় ‘মারা গেছে, বন্দী হয়েছে কিংবা লুকিয়ে আছে।’ সেখানে গণহত্যা অব্যাহত থাকার বিভিন্ন ইঙ্গিত স্পষ্টভাবে দেখা গেছে।
জাতিসংঘের তথ্য অনুযায়ী, আল-ফাশের থেকে এখন পর্যন্ত ৬৫ হাজারের বেশি মানুষ পালিয়েছে। এখনো কয়েক হাজার মানুষ শহরটিতে আটকা পড়েছে। আরএসএফের সর্বশেষ হামলার আগে সেখানে প্রায় আড়াই লাখ মানুষ বসবাস করত।
শনিবার বাহরাইনে এক সম্মেলনে জার্মানির পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইয়োহান ভাডেফুল বলেন, সুদান একটি ভয়াবহ পরিস্থিতির মধ্যে রয়েছে। সেখানে বিশ্বের সবচেয়ে বড় মানবিক সংকট দেখা দিয়েছে। আরএসএফ নাগরিকদের সুরক্ষার অঙ্গীকার করেছিল। কিন্তু তাদের এই কর্মকাণ্ডের জন্য জবাবদিহির মুখোমুখি হতে হবে।