সুন্দরবনের আগুন নেভাতে জোয়ারের অপেক্ষা
Published: 24th, March 2025 GMT
সুন্দরবনের পূর্ব বনবিভাগের চাঁদপাই রেঞ্জের ধানসাগর স্টেশন সংলগ্ন তেইশের ছিলা এলাকায় লাগা আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে হিমশিম খাচ্ছেন ফায়ার সার্ভিস ও বনবিভাগ। পানির অভাবে আগুন নিয়ন্ত্রণের কাজ কার্যত থমকে গেছে।
সোমবার (২৪ মার্চ) দুপুর পর্যন্ত ঘটনাস্থলের নিকটবর্তী ভোলা নদীতে ভাটা চলছিল। নদীতে পানি না থাকায় পানির পাম্প বন্ধ রাখতে হয়েছে কর্তৃপক্ষকে।
স্থানীয়রা বলছেন, ভোলা নদীতে জোয়ারের পানি আসতে বিকেল গড়িয়ে সন্ধ্যা হয়ে যেতে পারে।
আরো পড়ুন:
সুন্দরবনে আগুনের তীব্রতা কমলেও নিয়ন্ত্রণে চ্যালেঞ্জ
সুন্দরবনের আগুন নিয়ন্ত্রণে বেগ পেতে হচ্ছে
স্থানীয় বাসিন্দা আনসার হাওলাদার বলেন, “ভোলা নদীতে নাব্য না থাকায় ভাটার সময় একেবারে পানি থাকে না। বর্তমানে নদীতে জোয়ার ভাটার নিয়ম অনুযায়ী জোয়ারের পানি আসতে বিকেল হতে পারে। নদীতে পর্যাপ্ত পরিমাণ পানি আসতে আসতে সন্ধ্যা হবে।”
সুন্দরবন পূর্ব বনবিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা (ডিএফও) কাজী মুহাম্মদ নূরুল করিম বলেন, “আমরা রাত থেকেই চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি, কিন্তু নদীতে পানি না থাকায় আগুনে পানি ছিটানো যাচ্ছে না। আগুন যাতে বিস্তৃত এলাকা ছড়িয়ে না পড়ে, সেজন্য বনকর্মীরা চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। জোয়ার এলেই পাম্প চালিয়ে পানি দেওয়া হবে আগুনে।”
ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের খুলনা বিভাগীয় কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক মো.
ঢাকা/শহিদুল/মাসুদ
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর স ন দরবন আগ ন স ন দরবন
এছাড়াও পড়ুন:
সুন্দরবনের নতুন পর্যটন স্পট ‘আলী বান্দা’
পূর্ব সুন্দরবনের নিসর্গঘেরা অভয়ারণ্যে গড়ে তোলা হয়েছে নতুন পর্যটন কেন্দ্র ‘আলীবান্দা ইকো-ট্যুরিজম সেন্টার’। সবুজ ম্যানগ্রোভ বনের বুক চিরে, নদীর নোনাজলে ভেসে, প্রকৃতির নীরব সৌন্দর্যে ঘেরা এই কেন্দ্রটি চলতি নভেম্বর মাস থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে ভ্রমণ করতে পারবেন পর্যটকরা।
পূর্ব সুন্দরবনের শরণখোলা রেঞ্জের আওতাধীন আলী বান্দা এরইমধ্যে ভ্রমণপিপাসুদের দৃষ্টি কেড়েছে। শরণখোলা রেঞ্জ অফিস থেকে ট্রলারযোগে মাত্র ৪০ মিনিটের নৌপথ পেরিয়ে পৌঁছানো যায় সেখানে।
যাত্রাপথে চোখে পড়ে বনের গভীর সবুজ গাছগাছালি, ঝাঁকে ঝাঁকে উড়ে যাওয়া পাখি, কচুরিপানায় ঢাকা জলাশয় এবং সুন্দরী-গেওয়া গাছের সারি যা পর্যটকদের মোহিত করে।
বন বিভাগ জানিয়েছে, ২০২২-২৩ অর্থবছরে আলীবান্দা ইকো-ট্যুরিজম সেন্টারের অবকাঠামো নির্মাণকাজ শুরু হয়। এখানে তৈরি হয়েছে ছয়তলা ভবনের সমান উচ্চতার একটি ওয়াচ টাওয়ার, যেখান থেকে সুন্দরবনের বিস্তৃত সবুজাভ দৃশ্য চোখে ধরা পড়ে।
রয়েছে দেড় কিলোমিটার দীর্ঘ ফুট ট্রেইল (ওয়াকওয়ে)। পথের দুই পাশে ঘন বনের মাঝে হাঁটলে দেখা যায় প্রকৃতির আসল রূপ। এছাড়া রয়েছে মিষ্টি পানির পুকুর, হরিণ রাখার সেড, জেটি, বিশ্রামাগার, সুভেনিয়ার শপ এবং পর্যটকদের নিরাপত্তায় বনরক্ষী ও স্থানীয় গাইডের সার্বক্ষণিক তত্ত্বাবধান।
ভৌগোলিক অবস্থানের কারণে আলীবান্দা বরিশাল বিভাগের জেলাগুলোর মানুষের জন্য সবচেয়ে সহজগম্য স্পট হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে। কম সময় ও কম ঝুঁকিতে সুন্দরবনের সৌন্দর্য উপভোগ করা যাবে এখানে। স্থানীয় পর্যটকরা এরইমধ্যে আগ্রহ দেখাতে শুরু করেছে।
স্থানীয় বাসিন্দা শাহিন বলেন, “আলীবান্দা ইকো-ট্যুরিজম সেন্টার চালু হলে স্থানীয় অর্থনীতিতে ইতিবাচক প্রভাব পড়বে। এতে স্থানীয় গাইড, নৌযানচালক, হোটেল ব্যবসায়ী ও ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের কর্মসংস্থান বাড়বে। পাশাপাশি পরিবেশবান্ধব পর্যটনের মাধ্যমে সুন্দরবনের জীববৈচিত্র্য রক্ষায় সচেতনতা বাড়বে।”
তবে পর্যটনকেন্দ্রে প্রবেশ ফি নিয়ে অসন্তোষ রয়েছে। আলীবান্দায় প্রবেশের ফি নির্ধারণ করা হয়েছে ৩৪৫ টাকা।
শরণখোলা ট্যুরিজম অ্যাসোসিয়েশনের সাংগঠনিক সম্পাদক রাসেল বয়াতী বলেন, ‘‘আলীবান্দায় প্রবেশ ফি ৩৪৫ টাকা, অথচ একই বনের করমজল পর্যটন পয়েন্টে ফি মাত্র ৪৬ টাকা। অনেকেই আলীবান্দায় যেতে আগ্রহী, কিন্তু ফি বেশি হওয়ায় নিরুৎসাহিত হচ্ছেন।’’
পূর্ব সুন্দরবন বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা (ডিএফও) রেজাউল করিম চৌধুরী বলেন, “আলীবান্দা এখন প্রায় প্রস্তুত। চলতি মাসেই এখানে হরিণ আনা হবে। বর্তমানে পর্যটকদের জন্য খুলে দেওয়া হয়েছে স্পটটি। যেহেতু এটি ২০১৭ সালে ঘোষণা করা অভয়ারণ্য এলাকার অন্তর্ভুক্ত, তাই সাধারণ বনাঞ্চলের তুলনায় কিছু বিধিনিষেধ ও প্রবেশ ফি বেশি রাখা হয়েছে। তবে পর্যটকদের দাবির বিষয়টি আমরা সরকারের কাছে জানাব।’’
ঢাকা/শহিদুল/এস