আমরা বিদায় জানাতে যাচ্ছি মাহে রমজানকে। কোরআন, তাকওয়া, ধৈর্য ও জিহাদে বরকতময় মাসটি চলে যাচ্ছে। কিন্তু আমরা কি প্রকৃত তাকওয়া অর্জন করতে পেরেছি? আমরা কি সর্ব-প্রকার জিহাদে নিজেদের অভ্যস্ত করতে সক্ষম হয়েছি? পূর্ণরূপে রহমত, মাগফিরাত ও মুক্তি লাভের উপযোগী আমল করার চেষ্টা করেছি?
রমজানের শিক্ষা কতটুকু নিয়েছি
মাহে রমজান একটি ইমানি পাঠশালা, সারা বছরের পাথেয় উপার্জন, পরকালে আল্লাহর সামনে হাজিরা দিতে নিজেকে প্রস্তুত করার রুহানি প্রতিষ্ঠান। যে ব্যক্তি মাহে রমজানে নিজেকে সংশোধন করতে পারেনি—সে কখন জীবন গঠন করবে? আল্লাহ বলেন, নিশ্চয়ই আল্লাহ ওই পর্যন্ত কোন জাতির পরিবর্তন করেন না, যতক্ষণ না তারা নিজেরা নিজেদের পরিবর্তন করে নেয়। (সুরা রাদ, আয়াত: ১১)
দুঃখের বিষয় হলো, আমরা রমজানে আল্লাহর সঙ্গে যে ওয়াদা করেছি তা ভঙ্গ করার অনেক চিত্র সমাজে ফুটে উঠছে। ইদের আগেই জামাতে লোকসংখ্যা কমে যাচ্ছে। তারাবির সুন্নত নামাজের সমান মুসল্লিও এখন ফরজ নামাজে নেই।
আরও পড়ুন যেমন ছিল মহানবীর (সা.) সাহরি১১ মার্চ ২০২৫
কীভাবে বিদায় জানাব রমজানকে
ইবাদত কবুল হওয়ার আলামত হলো, পূর্ববর্তী অবস্থার চেয়ে বর্তমান অবস্থা আরও উন্নত হওয়া। প্রকৃত রোজাদার রোজার শেষে যেমন আনন্দিত হবে এবং রোজা পূর্ণ করার তৌফিক পাওয়ার দরুন প্রতিপালকের কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করবে; সঙ্গে সঙ্গে এই ভয়েও কাঁদবে যে, না জানি আমার রোজা কবুল হয়নি। আমাদের পূর্বসূরিগণ মাহে রমজানের পর ছয় মাস পর্যন্ত আল্লাহর দরবারে কেঁদে কেঁদে রোজা কবুল হওয়ার দোয়া করতেন। হাদিসে আছে, ‘মুমিনগণ এ-মাসকে বিদায় জানায় তওবা ও ক্ষমা প্রার্থনার মাধ্যমে। আর মোনাফেকরা বিদায় জানায় বিভিন্ন জঘন্য অপরাধের মাধ্যমে।’ (মুসনাদে আহমাদ, ২/৫২৪; বাইহাকি, সুনানুল কুবরা, ৪/৩০৪ ও শুয়াবুল ইমান, হাদিস: ৩,৩৩৫)
আরও পড়ুন যেমন ছিল মহানবীর (সা.) সাহরি১১ মার্চ ২০২৫রমজান কোনো বন্দিত্ব নয়
যারা শুধু রমজান মাসে আল্লাহর ইবাদত করে, রমজান শেষে হওয়ামাত্র অপরাধে ঝাঁপিয়ে পড়ে, তারা নিতান্ত মন্দ লোক। যারা সত্যিকার অর্থে আল্লাহকে চেনে তারা সব সময় তাকে ভয় করে। মোনাফেকরাই লোকদেখানো ইবাদত করে। তাই রমজান তাদের জন্য বন্দী-জীবনের মতো অসহ্য। তাই রাসুল (সা.) শপথ করে বলেছেন, মুসলমানদের জন্য উৎকৃষ্টতম মাস রমজান। আর প্রতারকদের জন্য নিকৃষ্টতম মাস রমজান। (সহিহ ইবনে খুজাইমা, হাদিস: ১,৮৮৪)
আরও পড়ুনমহানবীর (সা.) ইতিকাফ২০ মার্চ ২০২৫উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
নারায়ণগঞ্জে ৪টি আসনে বিএনপির মনোনয়ন পেলেন যারা
আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নারায়ণগঞ্জের ৫টি আসনের মধ্যে চারটি আসনে বিএনপির দলীয় মনোনীত প্রার্থীদের তালিকা প্রকাশ করেছে বিএনপির হাইকমান্ড। শুধু নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনে প্রার্থী ঘোষণা করা হয়নি।
সোমবার (৩ নভেম্বর) সন্ধ্যায় গুলশানে বিএনপির চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত এক সংবাদ সম্মেলনে প্রার্থীদের নাম ঘোষণা করেন দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। এসময় বিএনপির জাতীয় স্থানীয় কমিটির একাধিক সদস্য উপস্থিত ছিলেন।
বিএনপির ঘোষিত প্রার্থী তালিকায়, নারায়ণগঞ্জ-১ আসনে মোস্তাফিজুর রহমান দিপু ভূঁইয়া, নারায়ণগঞ্জ-২ আসনে নজরুল ইসলাম আজাদ, নারায়ণগঞ্জ-৩ আজহরুল ইসলাম মান্নান এবং নারায়ণগঞ্জ-৫ মাসুদুজ্জামান মাসুদ ধানের শীষ প্রতীকের সম্ভাব্য প্রার্থী।
এদিকে নারায়ণগঞ্জ-৫ আসনে (সদর-বন্দর) মনোনয়ন প্রত্যাশীদের মধ্যে ছিলেন তিনবারের সংসদ সদস্য আবুল কালাম, মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক সাখাওয়াত হোসেন খান, সাবেক সহসভাপতি আতাউর রহমান মুকুল, সাবেক যুগ্ম সম্পাদক আব্দুস সবুর খান সেন্টু, বর্তমান সদস্যসচিব আবু আল ইউসুফ খান টিপু এবং বিএনপিপন্থী ব্যবসায়ী আবু জাফর আহমেদ বাবুল।
নারায়ণগঞ্জ-৪ (ফতুল্লা) আসনটি এখনো ফাঁকা রেখেছে দলটি। ধারণা করা হচ্ছে এ আসনটিতে গতবারের মতো জোটের প্রার্থী ছাড় পাবেন। তবে এ আসনে মনোনয়ন প্রত্যাশীদের মধ্যে রয়েছে সাবেক সংসদ সদস্য মুহাম্মদ গিয়াসউদ্দিন, ফতুল্লা থানা বিএনপির সাবেক সভাপতি ও ব্যবসায়ী শাহ্ আলম, জেলা কমিটির যুগ্ম আহ্বায়ক মাশুকুল ইসলাম রাজিব, ফতুল্লা থানা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আব্দুল বারী ভূঁইয়া, সদ্য সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক রিয়াদ মোহাম্মদ চৌধুরীও রয়েছেন।
নারায়ণগঞ্জ-৩ (সিদ্ধিরগঞ্জ-সোনারগাঁ) আসনে মনোনয়ন প্রত্যাশীদের মধ্যে ছিলেন জেলা বিএনপির আহ্বায়ক অধ্যাপক মামুন মাহমুদ, সদস্য মুহাম্মদ গিয়াসউদ্দিন, সাবেক প্রতিমন্ত্রী রেজাউল করিম ও যুব উন্নয়নের সাবেক মহাপরিচালক এসএম ওলিউর রহমান আপেল।
নারায়ণগঞ্জ-২ (আড়াইহাজার) আসনে মনোনয়ন প্রত্যাশীদের মধ্যে ছিলেন সাবেক সংসদ সদস্য আতাউর রহমান খাঁন আঙ্গুর ও তার ভাতিজা বিএনপির সহঅর্থনৈতিক বিষয়ক সম্পাদক মাহমুদুর রহমান সুমন।
নারায়ণগঞ্জ-১ (রূপগঞ্জে) আসনে মনোনয়ন প্রত্যাশীদের মধ্যে ছিলেন দলটির নির্বাহী কমিটির সদস্য কাজী মনিরুজ্জামান মনির, মোস্তাফিজুর রহমান ভূঁইয়া দিপু ও জেলা বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক গোলাম ফারুক খোকন।
এদিকে মির্জা ফখরুল ইসলাম বলেন, “দীর্ঘ ১৬ বছর পর ২৩৮ আসনে আমাদের সম্ভাব্য প্রার্থীদের নাম ঘোষণা করছি। আমাদের সঙ্গে যারা আন্দোলন করেছেন, তারা যে সমস্ত আসনে আগ্রহী সে সমস্ত আসনে প্রার্থী দেই। আমরা আলোচনার মাধ্যমে প্রার্থী ঘোষণা করবো। এটা আমাদের সম্ভাব্য প্রার্থী তালিকা, এর মধ্যেই পরিবর্তন হতে পারে।
বিশেষ করে, আমাদের শরিক দলগুলোর সাথে আলোচনা এবং স্থায়ী কমিটি যদি মনে করে কোনো আসনে পরিবর্তন আনবে, সেক্ষেত্রে নিয়ম মেনে পরিবর্তন আনবেন।”