চট্টগ্রামে গ্রাহকদের পানির বিলের ২৪ লাখ ৬৬ হাজার টাকা আত্মসাতের অভিযোগে ওয়াসার দুই ডাটা এন্ট্রি অপারেটরের বিরুদ্ধে মামলা করেছে দুদক। বৃহস্পতিবার দুদক চট্টগ্রাম সমন্বিত জেলা কার্যালয়-১ এ মামলাটি করেন সংস্থার উপ-সহকারী পরিচালক মেরিন আক্তার। আসামিরা হলেন- ডাটা এন্ট্রি অপারেটর আজমির হোসেন অভি ও মিঠুন  ঘোষ। অভি ঢাকা জেলার দোহার থানাধীন শাহ হাফিজ মাস্টার বাড়ির আতিয়ার রহমানের ছেলে। মিঠুন ঘোষ চট্টগ্রামের পটিয়া উপজেলার ধলঘাট খান মোহনা গ্রামের আলমপুর সেনের বাড়ির অরুণ কান্তি ঘোষের ছেলে। 

দুদক চট্টগ্রাম সমন্বিত জেলা কার্যালয়-১ এর উপ-পরিচালক সুবেল আহমেদ বলেন, গ্রাহকের পানির বিল জমা দিলেও দুই আসামি পরস্পর যোগসাজশ করে ব্যাংকে জমা না দিয়ে ২৪ লাল ৬৬ হাজার টাকা আত্মসাত করেন। তাদের বিরুদ্ধে দুর্নীতির মামলা করেছে দুদক। এখন আইন অনুযায়ী পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়া হবে। এর আগে ২২ জানুয়ারি ওয়াসা তাদের আটক করে থানায় সোর্পদ করে। তাদের থানা পুলিশ ৫৪ ধারায় আটক করে আদালতে পাঠায়। 

এজাহারে উল্লেখ করা হয়, গ্রাহকদের কাছ থেকে পানির বিলের টাকা আদায় করে ওয়াসার কম্পিউটার সিস্টেমে জমা দেখানো হয়। আদতে সে টাকা ওয়াসার ব্যাংক অ্যাকাউন্টে জমা করতেন তা দুই আসামি। প্রাথমিক তদন্তে ২৪ লাখ ৬৬ টাকার অনিয়ম শনাক্ত করেছে কর্তৃপক্ষ। এর মধ্যে চারটি ব্যাংকের জনতা ব্যাংকের কর্নেলহাট শাখার মাধ্যমে ৭৯ হাজার ৭৬৮ টাকা, মিডল্যান্ড ব্যাংক চৌধুরী হাট শাখার মাধ্যমে ২ লাখ ১৫ হাজার ৪৬৪ টাকা, সাউথইস্ট ব্যাংক হালিশহর শাখার মাধ্যমে ৬২ হাজার ৯৮৫ টাকা, ওয়ান ব্যাংক চান্দগাও শাখার মাধ্যমে ২১ লাখ ৭ হাজার ৮৬২ টাকাসহ মোট ২৪ লাখ ৬৬ হাজার ৭৯ টাকা সংগ্রহ করে জিম্মায় নেয় দুই আসামি। কিন্তু ব্যাংকের শাখায় পোস্টিং দেখিয়ে প্রকৃতপক্ষে ব্যাংকে টাকা জমা না দিয়ে আত্মসাত করেন তারা।  

.

উৎস: Samakal

এছাড়াও পড়ুন:

সাকিবের পথে হাঁটছেন মিরাজ

সাকিব আল হাসানের সঙ্গে নিজের তুলনাকে মেহেদী হাসান মিরাজ হয়তো উপভোগই করেন। কারণ, তাঁর স্বপ্ন সাকিবের মতো বিশ্বনন্দিত অলরাউন্ডার হয়ে ওঠা। সেই পথে বোধ হয় গুটি গুটি পায়ে এগিয়ে যাচ্ছেন। বিশেষ করে টেস্টে দেশে-বিদেশে সম্প্রতি ভালো করছেন। পাকিস্তানে দারুণ প্রশংসিত ছিলেন অলরাউন্ড পারফরম্যান্স করে। জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে দুই টেস্টের হোম সিরিজে উভয় টেস্টে নিজেকে ছাপিয়ে গেলেন। সিলেটের হারের ম্যাচেও ১০ উইকেট ছিল তাঁর। চট্টগ্রামে সেঞ্চুরি ও পাঁচ উইকেট নিয়ে সাকিব ও সোহাগ গাজীর কাতারে নাম লেখালেন। মূলত মিরাজের অলরাউন্ড নৈপুণ্যে ইনিংস ব্যবধানে টেস্ট জেতা সম্ভব হয়। 

গতকাল শতকের ঘরে যেতে কম কসরত করতে হয়নি তাঁর। নব্বইয়ের ঘরে গিয়ে তো অনিশ্চয়তায় পড়ে গিয়েছিলেন হাসানের আউটের শঙ্কায়। ভাগ্য সুপ্রসন্ন হওয়ায় দ্বিতীয় শতকের দেখা পান তিনি। ২০২১ সালে এই চট্টগ্রামেই ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে প্রথম টেস্ট সেঞ্চুরি ছিল মিরাজের। গতকালের পারফরম্যান্স নিয়ে টাইগার এ অলরাউন্ডার বলেন, ‘ব্যাটিংয়ের সময় চেষ্টা করেছিলাম ২ রান নিয়ে ১০০ রানে যেতে। সেভাবে দৌড় দিয়েছিলাম। কিন্তু ফিল্ডারের হাতে বল চলে গিয়েছিল (হাসি)। তার পর তো আল্লাহর ওপর ছেড়ে দিয়েছিলাম। হাসান অনেক ভালো সাপোর্ট দিয়েছে। তানজিমও ভালো সাপোর্ট দিয়েছে। তাইজুল ভাইও। এই তিনজনকেই অনেক অনেক ধন্যবাদ। কারণ, ওদের জন্যই আমি ১০০ রান করতে পেরেছি।’ 

জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে করা সেঞ্চুরি ও পাঁচ উইকেট প্রাপ্তিকে নিজের সেরা পারফরম্যান্স দাবি মিরাজের, ‘ওয়েস্ট ইন্ডিজের সাথে ১০০ করেছিলাম, ৩ উইকেট নিয়েছিলাম। অল্পের জন্য ৫ উইকেট হয়নি। হলে ভালো লাগত। ওই ম্যাচ হেরেছিলাম এই মাঠে। সে জিনিসটা মাথায় ছিল। ভালো লাগছে ম্যাচটি জিতেছি।’ মিরাজ ১৬২ বলে ১১টি চার ও একটি ছয় মেরে ১০৪ রান করেন। ২১ ওভারে ৩২ রান দিয়ে নেন পাঁচ উইকেট।

টেস্টে এ রকম অলরাউন্ড পারফরম্যান্স বাংলাদেশে আর দু’জনের আছে। সাকিব আল হাসান দু’বার ম্যাচে সেঞ্চুরি ও পাঁচ উইকেট পেয়েছেন ২০১১ সালে পাকিস্তানের বিপক্ষে মিরপুরে আর ২০১৪ সালে খুলনায়। সোহাগ গাজী নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে সেঞ্চুরি ও পাঁচ উইকেট শিকার করেন চট্টগ্রামে। সেই মাইলফলক ছোঁয়া মিরাজকে সম্প্রতি অলরাউন্ডার ক্যাটেগরিতে ফেলা হয়। সাকিবের বিকল্প ভাবা হয় তাঁকে এখন। 

এ ব্যাপারে মিরাজের অভিমত, ‘দেখেন একটা জিনিস, যখন সাকিব ভাই ছিলেন, ভিন্ন রোল ছিল। এখন ভিন্ন রোল। যেহেতু টিম ম্যানেজমেন্ট, সবাই ব্যাটিংয়ে আস্থা রাখে। আমিও ভেবেছি আমার ব্যাটিংটা গুরুত্বপূর্ণ। এখন হয়তো আমি লিডিং রোল প্লে করছি, আগে সাকিব ভাই করত। এখন আমাদের দায়িত্ব আরও বেশি।’ 

সিলেটে দুই ইনিংসে পাঁচ উইকেট করে নিয়েও দলকে জেতাতে পারেননি মিরাজ। চট্টগ্রামে সাদমান, তাইজুলের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে ম্যাচ জয়ের নায়ক হন। এই সাফল্য নিয়ে বলেন, ‘সত্যি কথা বলতে, প্রথম ম্যাচ হারার পর যেভাবে কামব্যাক করেছি, এটা খুবই দরকার ছিল। আমাদের সবাই ভেবেছিল, আমরা ভালো করব।’ মিরাজ কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন কোচিং স্টাফ ও সতীর্থের কাছে। আর তাঁর কাছে কৃতজ্ঞতা পুরো দলের।

সম্পর্কিত নিবন্ধ