ঈদের ছুটিতে সিলেটে ১০ লক্ষাধিক পর্যটক সমাগমের সম্ভাবনা
Published: 31st, March 2025 GMT
ঈদে টানা ৯দিন ছুটি থাকায় সিলেটের পর্যটন স্পটগুলোতে অন্তত ১০ লাখ পর্যটকের সমাগম ঘটবে বলে মনে করছেন পর্যটন শিল্প সংশ্লিষ্টরা। তারা মনে করছেন দেশের পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে এটাই প্রথম ঈদ। আইনশৃংখলাও পরিস্থিতি ভালো। ফলে পর্যটকদের সাড়া মিলেছে ব্যাপক।
এতে শত কোটি টাকার ব্যবসা হবে দীর্ঘ দিন থেকে ঝিমিয়ে পড়া এই শিল্পে। অন্যদিকে পর্যটকবরণে প্রস্তুত করা হয়েছে সিলেটের সবকয়টি পর্যটনকেন্দ্র। ঈদুল ফিতরের ছুটিতে আসা পর্যটক দর্শনার্থীদের ভ্রমণ শান্তিপূর্ণ ও নির্বিঘ্নে করতে সব ধরনের প্রস্ততি নিয়েছ ট্যুরিস্ট পুলিশসহ সংশ্লিষ্ট প্রশাসন।
পর্যটন সংশ্লিষ্টদের সাথে কথা বলে জানাগেছে, সিলেটের হযরত শাহজালাল (রহ:) এর মাজার, শাহপরান (রহ:) এর মাজার, জাফলং, পাংতুমাই ঝর্ণা, সংগ্রামপুঞ্জি ঝর্ণা, রাতারগুল সোয়াম ফরেস্ট, কুলুম ছড়া, মালনীছড়া চা বাগান, খাদিম জাতীয় উদ্যান, ডিবির হাওর, উৎমাছড়া ঝর্ণা, লোভাছড়া, লালাখাল, বিছানাকান্দিও ভোলাগঞ্জ সাদা পাথরসহ সুনমাগঞ্জ ও মৌলভীবাবাজারের বিভিন্ন পর্যটন স্পটে বেড়াতে আসেন দর্শনার্থীরা।
ঈদ বা অন্য যেকোন ছুটিতে প্রথমেই সিলেটকে বেছে নেন ভ্রমণ পিপাসু লোকজন। এজন্য ঈদুল ফিতরকে সামনে রেখে জাফলং, বিছনাকান্দি, রাতারগুল, পান্তুমাই, সাদাপাথর, লোভাছড়াসহ সবকটি পর্যটন স্পটে এখন অন্যরকম আমেজ। বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান ও দোকানপাটসমূহেও প্রস্তুতি চলেছ। বিভিন্ন রিসোর্টসহ হোটেল মোটেলগুলোতেও সাজ সাজ রব।
ব্যবসায়ীরা বলেছেন, বিগত বছরগুলোতে দফায় দফায় বন্যা, রাজনৈতিক উত্তাল পরিস্থিতিসহ বিভিন্ন কারণে তেমন ব্যবসা হয়নি। এবার ভালো ব্যবসা হওয়ার প্রত্যাশা তাদের।
অ্যাসোসিয়েশন অব ট্রাভেল এজেন্টস অব বাংলাদেশ (আটাব)-এর সাবেক সভাপতি ও সিলেট চেম্বারের সাবেক সভাপতি খন্দকার সিপার আহমদ বলেন, “সিলেটের পর্যটন খাত ছিল লোকসানের মুখে। এবার সেই ক্ষতি পুষিয়ে নেয়ার চেষ্টা চলছে। এবার দীর্ঘ ছুটি হওয়ার কারণে পর্যটক উপস্থিতিও বাড়বে কয়েকগুণ। এই সময়টাতে ডাকাতি-ছিনতাই প্রতিরোধে পুলিশকে সতর্ক থাকতে হবে। অন্তত ১০ লাখ পর্যটক উপস্থিতির সম্ভাবনা রয়েছে এবার।”
সিলেটের পর্যটন কেন্দ্রগুলোর মধ্যে জাফলং অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। সেখানকার গ্রিন রিসোর্টের স্বত্বাধিকারী বাবলু বখত বলেন, “ঈদুল ফিতরে সাধারণত ঢল নামে পর্যটক দর্শনার্থীদের। এবারো পর্যটকদের আনাগোনা আগেকার মতো অথবা বেশি হতে পারে। এরই লক্ষ্যে আমাদের কাস্টমারদের কথা বিবেচনা করে আমরা বাড়তি ব্যবস্থা নিয়েছি।”
হোটেল ব্যবসায়ী আবুল কালাম জানান, ভ্রমণে আসা পর্যটক দর্শনার্থীদের নির্ভেজাল খাবার পরিবেশন করে থাকি। আমরা বহু লোকসান গুনেছি, এবার অন্তত লাভ দেখব বলে আশা করি।
যোগাযোগ ব্যবস্থা উন্নত হওয়ার কারণে সবচেয়ে বেশি পর্যটক সমাগম ঘটে সাদাপাথরে। কোম্পানীগঞ্জ ট্যুরিস্ট ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক আবিদুর রহমান জানান, এবারো তাই হবে বলে আশা করা হচ্ছে। তিনি সাদাপাথর পর্যটক বরণে প্রস্তুত বলে জানান।
সিলেট হোটেল অ্যান্ড গেস্ট হাউস ওনার্স গ্রুপের সাবেক সভাপতি সুমাত নূরী চৌধুরী জুয়েল জানান, এবার বিভিন্ন হোটেলে ব্যাপক হারে বুকিং হয়েছে। এরজন্য তারা ব্যবসা নিয়ে আশাবাদী। তিনি বলেন, “একসময় পদ্মা সেতু উদ্বোধনের প্রভাব পড়েছিল সিলেটে। আমরা মনে করি, মানুষ আবার সিলেটমুখী হয়েছে। এর সুফল পাবেন সিলেটের ব্যবসায়ীরা।”
দি সিলেট চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাস্ট্রির সভাপতি (ভারপ্রাপ্ত) ফয়েজ হাসান ফেরদৌস জানান, এই ঈদে পর্যটন খাত থেকে শত কোটি টাকার ব্যবসার আশা করা হচ্ছে।
তিনি বলেন, “আমরা মনে করি প্রবাসী অধ্যুসিত সিলেটে পর্যটন শিল্পের বিকাশ ঘটলে আমাদের প্রবাসী বর্তমান প্রজন্মকে সিলেটমুখি করা যাবে। এরজন্য রাস্তাঘাটের উন্নয়ন জরুরি।”
সিলেট জেলা পুলিশের মিডিয়া ফোকাল পয়েন্ট কর্মকর্তা মো.
সিলেটের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ শের মাহবুব মুরাদ বলেন, “সিলেটের পর্যটন স্পটসমূহে পর্যটকদের সার্বিক নিরাপত্তা বিধানে এবং তাদের ভ্রমণ নির্বিঘ্নকরণে সংশ্লিষ্ট উপজেলা প্রশাসন পদক্ষেপ নিয়েছে। আইনশৃংখলা রক্ষাকারী বাহিনীও কাজ করছে। সকল মৌসুমে সিলেটের পর্যটন কেন্দ্রগুলো সজাগ থাকে। এবারো পর্যটকরা সৌন্দর্য্য উপভোগ করতে পারবেন।”
ঢাকা/নূর/এস
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর প রস ত ব যবস ভ রমণ
এছাড়াও পড়ুন:
কাপ্তাই হ্রদে পানি বেড়ে ডুবে গেছে রাঙামাটির ঝুলন্ত সেতু
টানা বৃষ্টি ও উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে কাপ্তাই হ্রদে পানি বেড়ে যাওয়ায় ডুবে গেছে রাঙামাটির ঝুলন্ত সেতু। দুর্ঘটনা এড়াতে পর্যটকদের সেতুটিতে উঠতে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে রাঙামাটি পর্যটক কমপ্লেক্স।
পর্যটক কমপ্লেক্স সূত্রে জানা গেছে, বৃষ্টি ও পাহাড়ি ঢলের কারণে গত সোমবার সেতুর কিছু অংশে পাটাতনের ওপর পানি ওঠে। তবে আজ বুধবার সকাল ছয়টার দিকে পানি বেড়ে সেতুটি তলিয়ে যায়। এ পরিস্থিতিতে সকাল ১০টার দিকে সেতুতে উঠতে পর্যটকদের জন্য নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়।
রাঙামাটি পর্যটন কমপ্লেক্সের ব্যবস্থাপক আলোক বিকাশ চাকমা সকালে প্রথম আলোকে বলেন, ‘সেতুর পাটাতনের ওপর এখন চার ইঞ্চির মতো পানি রয়েছে। পর্যটকদের জন্য সেতুতে উঠতে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হলেও নিকটবর্তী এলাকার স্থানীয় বাসিন্দারা সেতু দিয়ে পারাপার করতে পারবেন।’