জুলাই আন্দোলনের সময় সৌদি আরবে গ্রেপ্তার ১০ প্রবাসী দেশে ফিরেছেন। গত বৃহস্পতিবার রাত দেড়টার দিকে সৌদি এয়ারলাইন্সের একটি ফ্লাইটে রাজধানীর হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পৌঁছান তারা। সেখানে তাদের বরণ করেন পরিবারের সদস্যরা। এ ছাড়া প্রবাসীদের হাতে ফুল দিয়ে ও মিষ্টিমুখ করিয়ে সরকার পক্ষ থেকে শুভেচ্ছা জানানো হয়।

গত বছর ছাত্র-জনতার আন্দোলনে শেখ হাসিনা ক্ষমতাচ্যুত হলে সৌদি আরবে অবস্থানরত বাংলাদেশিরা আনন্দ ও প্রীতিভোজের আয়োজন করেন। সেখান থেকে ১২ জনকে গ্রেপ্তার করে সৌদি কর্তৃপক্ষ। এর পর আট মাস বন্দিজীবন শেষে ১০ জনকে দেশে ফেরত পাঠিয়েছে সৌদি সরকার। পাসপোর্টের মেয়াদ শেষ হওয়াসহ প্রয়োজনীয় কাগজপত্রে জটিলতা থাকায় দু’জন পরে ফিরবেন বলে জানা গেছে।

ইয়াকুব নামে এক প্রবাসী ব্যবসায়ী বলেন, ‘বাংলাদেশ সরকারকে আমরা অসংখ্য ধন্যবাদ জানাই। সরকারের সহযোগিতায় আমরা প্রায় আট মাস পর বন্দিখানা থেকে মুক্ত হতে পেরেছি।’

তিনি আরও বলেন, ‘জুলাই আন্দোলনে শহীদদের আত্মার শান্তি কামনা এবং দেশের শান্তি রক্ষায় প্রবাসীদের নিয়ে গত বছরের ৯ আগস্ট ঘরোয়া আয়োজন করেছিলাম। আন্দোলন চলার সময় কোনো বাংলাদেশি মিছিল, ব্যানার, পোস্টার করলে তাদের ধরে দেশে ফেরত পাঠিয়ে দেওয়ার ঘোষণা দেয় সৌদি সরকার। আমরা সৌদির আইনকে শ্রদ্ধা জানিয়ে ২০ বছর সেখানে অবস্থান করেছি। কিন্তু আমাদের ভুল ছিল এতটুকুই– আমরা জানতাম না, ঘরোয়াভাবে আয়োজন করাও অন্যায়।’

দেশে ফেরা অন্য প্রবাসীরা বলেন, সরকারসহ সবার সহযোগিতায় অনিশ্চিত পরিস্থিতি থেকে মুক্ত হয়েছেন তারা। তবে সৌদিতে অবস্থিত বাংলাদেশ দূতাবাসের কাছ থেকে যোগাযোগে ঘাটতি ছিল অভিযোগ করে সরকারের কাছে আর্থিক সহযোগিতা চান তারা।

প্রবাসী জামিল হোসেন বলেন, ‘সৌদি সরকার আমাদের বন্দি করেছে ঠিকই, কিন্তু সেটা আওয়ামী লীগের লোকজনের ইন্ধনে। যারা ফিরে এসেছি, সবাই ঠিকাদারি ব্যবসায়ী। বিএনপির সমর্থক। অন্তর্বর্তী সরকারের কাছে আবেদন, আমাদের সৌদি নিষেধাজ্ঞা উঠিয়ে যেন সে দেশে আবার ফেরার ব্যবস্থা করে দেয়। আমাদের লাখ লাখ টাকার জিনিসপত্র সেখানে রয়ে গেছে।’

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একটি সূত্র জানায়, প্রবাসীদের নিরাপত্তা এবং তাদের অধিকার সুরক্ষিত রাখার জন্য বর্তমান সরকার সব সময় প্রাধান্য দিয়ে কাজ করে। তাদের ফেরানোর বিষয়টি দীর্ঘদিনের আলোচনার ফল স্বরূপ সম্ভব হয়েছে। সৌদি সরকারের পক্ষ থেকেও বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ আইন ও মানবাধিকারবিষয়ক আশ্বাস পাওয়া গেছে।

প্রবাসীকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, দেশে ফেরা প্রবাসীদের সঙ্গে আলোচনা করা হবে, যাতে তাদের পুনর্বাসন এবং উন্নত জীবনযাপনের জন্য সহায়তা করা যায়। সরকার তাদের পুনর্বাসন এবং সহায়তার জন্য বিভিন্ন পদক্ষেপ নেবে। এ ছাড়া সৌদিতে কাজ করতে যাওয়া বাংলাদেশিরা যাতে ভবিষ্যতে এমন পরিস্থিতিতে না পড়েন, সেজন্য আরও সতর্কতামূলক ব্যবস্থা নেওয়ার কথা ভাবছে সরকার।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: গণঅভ য ত থ ন প রব স দ র সরক র র আম দ র ব যবস

এছাড়াও পড়ুন:

লামিনে ‘মেসি’ ইয়ামাল

১৭ বছর বয়সী ক্রিস্টিয়ানো রোনালদো: ১৯ ম্যাচ, ৫ গোল, ৪ গোলে সহায়তা।

১৭ বছর বয়সী লিওনেল মেসি: ৯ ম্যাচ, ১ গোল, গোলে সহায়তা নেই।

১৭ বছর বয়সী লামিনে ইয়ামাল: ১০০ ম্যাচ, ২২ গোল, ৩৩ গোলে সহায়তা।

মেসি–রোনালদোর সঙ্গে তুলনা নয়, লামিনে ইয়ামালের শুরুটা বোঝাতে এই পরিসংখ্যান হাজির করেছে টিএনটি স্পোর্টস। ধূমকেতুর মতো শুরু হলেও ধূমকেতুর মতোই মিলিয়ে যাওয়ার পাত্র তিনি নন।

বার্সেলোনার এস্তাদি অলিম্পিক লুইস কোম্পানিসে  গত রাতের ম্যাচটি স্মরণ করতে পারেন। ৬ গোলের থ্রিলার, যেখানে বার্সেলোনা–ইন্টার মিলান সেমিফাইনাল প্রথম লেগের ‘ক্লাসিক’ লড়াই ৩–৩ গোলে অমীমাংসীত। দুই দলের হয়েই ‘সুপার হিরো’ ছিলেন বেশ কজন। ইন্টারের যেমন ডেনজেল ডামফ্রিস ও মার্কাস থুরাম, বার্সার তেমনি রাফিনিয়া, ফেরান তোরেসরা। কিন্তু সবাইকে ছাপিয়ে ঠিকই রবির কিরণের মতো আলো দিয়েছেন এক কিশোর—লামিনে ইয়ামাল নাসরাউয়ি এবানা। সংক্ষেপে লামিনে ইয়ামাল।

আরও পড়ুন৬ গোলের থ্রিলারে বার্সেলোনা–ইন্টার সেয়ানে সেয়ানে টক্কর৮ ঘণ্টা আগে

২৪ মিনিটে ইয়ামালের করা গোলটির প্রসঙ্গে পরে আসা যাবে। যেভাবে খেলেছেন তাতে গোলটি না করলেও লোকে কাল রাতে তাঁর পারফরম্যান্স মনে রাখতেন। পরিসংখ্যান বলছে ১০২টি টাচ, একটি গোল, ২টি গোল হওয়ার মতো পাস, ৬টি শট (পোস্টে মেরেছেন দুবার) এবং ১০টির মধ্যে ৬টি সফল ড্রিবলিং।

কিন্তু পরিসংখ্যানে এ তথ্য নেই—মাঠে ডান প্রান্তকে ইয়ামাল ফাইনালে ওঠার হাইওয়ে বানিয়ে যতবার কাট–ইন করে ইন্টারের বক্সে ঢুকেছেন, সেটা আসলে ইতালিয়ান ক্লাবটির রক্ষণের জন্য দুঃস্বপ্নের। প্রতিবারই মৌমাছির মতো ছেঁকে ধরা হয়েছে ইয়ামালকে। কিন্তু আটকানো কি সম্ভব হয়েছে? রাত থেকেই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভিডিওগুলো ভাসছে। সেসব আসলে ইয়ামালের পায়ের কারুকাজে ইন্টারের রক্ষণকে স্রেফ খোলামকুচির মতো উড়িয়ে দেওয়ার ভিডিও।

ইয়ামাল কত ভয়ংকর সেটা এই এক ছবিতেই পরিস্কার। সবাই ছেঁকে ধরেও তাঁকে আটকাতে পারেননি

সম্পর্কিত নিবন্ধ