একসময় ঢাকাই সিনেমার রমরমা অবস্থা ছিল। নায়ক রাজরাজ্জাক, আলমগীর, জসীম ইন্ডাস্ট্রি দাপিয়ে বেড়িয়েছেন। পরবর্তীতে মান্না, সালমান শাহের নাম অবধারিতভাবে উঠে আসে। একসঙ্গে একাধিক মেগাস্টার ঢাকাই চলচ্চিত্রে পাওয়া গেছে। সবই এখন অতীত। দীর্ঘদিন ধরে একা ইন্ডাস্ট্রিকে টেনে নিয়ে যাচ্ছেন ঢালিউড কিং শাকিব খান। তার ভক্ত-অনুরাগীরা তাকে ‘নাম্বার ওয়ান শাকিব খান’, ‘মেগাস্টার’ নানা নামে ডেকে থাকেন।

শাকিবের পর নতুন করে অন্তত তার সমপর্যায়েও কেউ আসতে পারেননি। ঢাকাই ইন্ডাস্ট্রিতে মেগাস্টার বলতে তাকেই বোঝায়। একসময় একাধিক মেগাস্টার নিয়ে এই ইন্ডাস্ট্রি চলেছে। তাহলে এখন সমস্যাটা কোথায়? এই প্রশ্ন রাখা হয় চিত্রনায়ক সিয়াম আহমেদের কাছে।

সিয়াম আহমেদ বলেন, “এখন হবে না। মেগাস্টার বানানোর জন্য যেকোনো ইন্ডাস্ট্রির সিঙ্গেল স্ক্রিন থাকতে হয়। আমি মেগাস্টার নিয়ে বলছি। আমরা ভালোবেসে অনেককে ‘মেগাস্টার’ বানিয়ে ফেলি, সুপারস্টার বলে ফেলি। কিন্তু মেগাস্টারের সত্যিকারের সংজ্ঞা কী? রজনীকান্ত সাউথ ইন্ডিয়ার মেগাস্টার। বলিউডে শাহরুখ খান মেগাস্টার। অর্থাৎ যে আইকনিক ফিগার। হলিউডে মেগাস্টারের ব্যাপারটা বিভিন্ন ঘরানার উপরে নির্ভর করে। আমার ক্ষুদ্র জ্ঞানে মনে হয়, দক্ষিণ এশিয়ায় সিঙ্গেল স্ক্রিন হলো মেগাস্টার তৈরির কারখানা। যে ইন্ডাস্ট্রির সিঙ্গেল স্ক্রিন বন্ধ হয়ে যায়, সে ইন্ডাস্ট্রিতে মেগাস্টার তৈরি বন্ধ হয়ে যায়।”

খানিকটা ব্যাখ্যা করে সিয়াম আহমেদ বলেন, “আপনাকে ওই মানুষের ভেতরে ঢুকতে হবে, তাদের ভালোবাসা নিয়ে আসতে হবে, যারা কষ্টের টাকায় টিকিট কিনে বিনোদনের জন্য সিনেমা দেখেন। এই বিষয়টাই আমাদের এখানে একেবারে কমে গেছে। এখন মাল্টিপ্লেক্স প্রধান হয়ে উঠছে। এটার হিসাব-নিকাশ আলাদা। মাল্টিপ্লেক্স কনটেন্ট নির্ভর। কিন্তু ওই উন্মাদনা অন্য ব্যাপার।”
 
শাকিব খান এই সময়ে অভিনয়ের জার্নি শুরু করলে হিসাবটা আলাদা হতো। তা উল্লেখ করে সিয়াম আহমেদ বলেন, “আমি শাকিব ভাইয়াকে অনেক অ্যাপ্রিসিয়েট করি। সামনাসামনি তাকে অনেকবার বলেছি। কারণ শাকিব ভাই সিঙ্গেল স্ক্রিনে ২০ বছর পার করে এসেছেন। শাকিব ভাই যদি এখন জার্নি শুরু করতেন তবে তার হিসাব আলাদা হতো। শাকিব ভাই সবসময়ই স্টার। কিন্তু তার হিসাবটা আলাদা হতো। শাকিব ভাই যেখান থেকে তার ভক্ত-অনুরাগী পেয়েছেন, সেটা যেকোনো শিল্পীর জন্য আশীর্বাদ।”
 
১৫-২০ বছর ইন্ডাস্ট্রিতে টিকতে পারলে মেগাস্টার হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে— সঞ্চালকের এ মতের সঙ্গে দ্বিমত পোষণ করে সিয়াম আহমেদ বলেন, “টিকে থাকলেই মেগাস্টার হওয়া যাবে তা নয়। বরং পূর্বের সব কাজকে টেক্কা দিয়ে নতুনভাবে আসতে পারলে মেগাস্টার হওয়া সম্ভব। শাকিব ভাই সময়ের সঙ্গে নিজেকে পরিবর্তন করেছেন, প্রমাণ করেছেন।”

ঈদুল ফিতরে বেশ কটি সিনেমা প্রেক্ষাগৃহে মুক্তি পেয়েছে। এর মধ্যে অন্যতম হলো— ‘বরবাদ’ ও ‘জংলি’। ‘বরবাদ’ সিনেমায় শাকিবের বিপরীতে অভিনয় করেছেন কলকাতার ইধিকা পাল। ‘জংলি’ সিনেমায় সিয়ামের বিপরীতে রয়েছেন শবনম বুবলী। দুটো সিনেমাই দর্শকদের মাঝে সাড়া ফেলেছে।   

 

ঢাকা/শান্ত

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ইন ড স ট র ত

এছাড়াও পড়ুন:

প্রযুক্তি কি ডিমেনশিয়া বাড়িয়ে দিচ্ছে? ৫৭টি ভিন্ন গবেষণায় উঠে এসেছে বিস্ময়কর তথ্য

প্রযুক্তির কল্যাণে হুটহাট বড় পরিবর্তন আসা নতুন কিছু নয়। করোনা মহামারির আগে বাসা থেকেও যে অফিস করা সম্ভব, সেটা মানতে চাইতেন না অনেকে। কিন্তু সময়ের সঙ্গে সঙ্গে হোম অফিস হয়েছে স্বাভাবিক। একই ঘটনা ঘটেছে ডিজিটাল দুনিয়ায়। একসময় যেকোনো তথ্য খুঁজে বের করার জন্য শরণাপন্ন হতে হতো সার্চ ইঞ্জিনের; এআই সেই উত্তর সবিস্তারে দিয়ে দিচ্ছে মুহূর্তেই। ফলে প্রযুক্তিগত উন্নয়ন শুধু জীবনকে সহজতর করছে না, বাঁচিয়ে দিচ্ছে সময় ও পরিশ্রমও। কিন্তু এই বেঁচে যাওয়া সময় ও পরিশ্রম মস্তিষ্কের ওপর ঠিক কীভাবে প্রভাব ফেলছে?

যুক্তরাষ্ট্রের ইউনিভার্সিটি অব টেক্সাস ও বেলোর ইউনিভার্সিটির এক যৌথ গবেষণায় দেখা গেছে, এত দিন প্রযুক্তি ব্যবহারের ফলে মানব মস্তিষ্কের কর্মক্ষমতা কমার যে গুঞ্জন ভেসে বেড়িয়েছে, তার কোনো সত্যতা নেই। ‘নেচার হিউম্যান বিহেভিয়ার’ জার্নালে প্রকাশিত এই গবেষণায় দেখা গেছে, ‘ডিজিটাল ডিমেনশিয়া’ নামে যে হাইপোথিসিস আছে, তার কোনো প্রমাণ নেই গবেষকদের কাছে। বরং পঞ্চাশোর্ধ্ব মানুষদের স্মার্টফোন, কম্পিউটার কিংবা ইন্টারনেট ব্যবহার তাঁদের স্বাভাবিক স্মৃতিভ্রম অনেকটা স্তিমিত করে।

ডিজিটাল ডিমেনশিয়া কী

২০১২ সালে প্রথম ‘ডিজিটাল ডিমেনশিয়া’ তত্ত্ব নিয়ে হাজির হন জার্মান স্নায়ুবিজ্ঞানী ও মনোবিদ ম্যানফ্রেড স্পিৎজার। মূলত যে হারে প্রযুক্তির ব্যবহার বাড়ছে এবং মানুষ যান্ত্রিক পর্দার সামনে প্রতিদিনের বেশির ভাগ সময় কাটাচ্ছে, তাতে প্রযুক্তির ওপর নির্ভরশীলতা বাড়ছে অনেকটাই। এতে নিত্যপ্রয়োজনীয় তথ্যগুলোও মনে রাখতে ব্যর্থ হচ্ছে অনেকে। যেমন ফোন নম্বর। একসময় প্রিয়জনের ফোন নম্বর আমাদের মুখস্থ থাকত। এখন ফোন নম্বর ঠাঁই পায় মুঠোফোনের কনটাক্ট লিস্টে। ফোন নম্বর মনে রাখার চেষ্টাই করে না কেউ। আবার অনেকক্ষণ যান্ত্রিক পর্দার সামনে থাকলেও সেখান থেকে শেখার ইচ্ছা থাকে না অনেকের। চোখের সামনে যা আসছে, স্ক্রল করে চলে যাচ্ছে পরের কোনো কনটেন্টে। এতে মনোযোগ হারিয়ে যায় দ্রুত। আর প্রযুক্তির এমন অতিব্যবহার যে স্মৃতিশক্তি কমিয়ে দিচ্ছে, একেই ধরা হয় ‘ডিজিটাল ডিমেনশিয়া’ হিসেবে।

আরও পড়ুনডিজিটাল স্ক্রিন ব্যবহারের সময় ২০-২০-২০ নিয়ম মানাটা কেন জরুরি২৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৩গবেষণা যা বলছে

প্রায় ৪ লাখ ১১ হাজার পঞ্চাশোর্ধ্ব মানুষের ওপর চালানো ৫৭টি ভিন্ন গবেষণায় দেখা গেছে সম্পূর্ণ ভিন্ন চিত্র। বয়সের সঙ্গে সঙ্গে যে স্মৃতিভ্রম দেখা দেয়, তার অনেকটাই হ্রাস করে প্রযুক্তির ব্যবহার। প্রযুক্তির যথাযথ ব্যবহারের ফলে স্মৃতিশক্তি কমে আসার আশঙ্কা প্রায় ৫৮ শতাংশে নেমে আসে।

স্মৃতিশক্তি কমে যাওয়া বরং আরও কিছু সূচকের (যেমন সামাজিক, অর্থনৈতিক ও পারিবারিক অবস্থা) ওপর নির্ভর করে। মজার ব্যাপার হলো, নিয়মিত শারীরিক ব্যায়াম ও রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখার থেকেও বেশি কার্যকর প্রযুক্তির ব্যবহার।

তবে এর সবকিছুই নির্ভর করছে প্রযুক্তির সঠিক ব্যবহারের ওপর। পঞ্চাশোর্ধ্ব ব্যক্তিরা বেশির ভাগ সময়ই অনলাইনে কাটান ইউটিউব ভিডিও অথবা ফেসবুক স্ক্রল করে। এতে তাঁদের মস্তিষ্কের ব্যবহার হয় না বললেই চলে। মস্তিষ্ক সচল রাখতে পারে এমন কনটেন্টে তাঁদের মনোযোগ সরিয়ে নিতে পারলে আনন্দ যেমন পাবেন, তেমনই ডিজিটাল দুনিয়া সম্পর্কে তাঁদের দৃষ্টিভঙ্গিও পালটে যাবে। এ ছাড়া অনলাইনের হাজারো গুজব ও উসকানি থেকে মুক্ত থাকবেন তাঁরা।

সূত্র: রিডার্স ডাইজেস্ট

আরও পড়ুনমাত্রাতিরিক্ত স্ক্রিনটাইম যেভাবে নিয়ন্ত্রণ করবেন০১ সেপ্টেম্বর ২০২৩

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • প্রযুক্তি কি ডিমেনশিয়া বাড়িয়ে দিচ্ছে? ৫৭টি ভিন্ন গবেষণায় উঠে এসেছে বিস্ময়কর তথ্য
  • আমির বাঁশ দিয়ে বানান খাট–আলনা–সোফা, বিক্রি হয় দেশ–বিদেশে