একশ্রেণির মানুষের কাছে ঈদের সময়টা বড় নিষ্ঠুর
Published: 5th, April 2025 GMT
বাংলাদেশের মতো মালয়েশিয়াতেও আজ ঈদ। আমি আছি কুয়ালালামপুরের শ্রীরামপাই এলাকায়। পরিবার ছাড়া এবং দেশের বাইরে এটি আমার তৃতীয় ঈদ।
আমার হেঁটে বিশ্বভ্রমণের এক বছর পূর্ণ হয়েছে গত ২২ মার্চ। এই সময়ে ৩ হাজার ৫০০ কিলোমিটারের বেশি পথ হেঁটেছি।
গত রমজানের ঈদে ছিলাম হুগলির কামারকুণ্ডু গ্রামে। ভারতের পশ্চিম বাংলায় হেঁটে ভ্রমণের সময় এই গ্রামের অনেকের সঙ্গে পরিচয়। সেই সূত্রে ঈদে কামারকুণ্ডু গ্রামের সবাই যেন আমাকে নিয়ে আনন্দে মেতে ছিল। ঈদ উপলক্ষে তাঁদের বাসায় দাওয়াত ছিল। পরিবারকে মিস করার সময়ই পাইনি।
এরপর কোরবানির ঈদ করি তাজিকিস্তানে। খুজান্দ শহরে এক অপরিচিত বন্ধুর বাসায়। তাজিকিস্তানে আমার ট্রলি ঠিক করার সময় তার সঙ্গে পরিচয়। আগ্রহভরে বাসায় নিয়ে গেল। তাজিকিস্তানে ভেবেছিলাম খুব আনন্দ হবে ঈদে; কিন্তু হলো উল্টো। আগের রাতে ঈদের কোনো আমেজই পেলাম না। পথে কোনো পশুও দেখতে পাইনি। আসলে তাজিকিস্তানের ঈদের সংস্কৃতি একেবারেই আলাদা। ভিন্ন সংস্কৃতির মধ্যে থেকেও সেদিন পরিবারের মতো ভালোবাসা অনুভব করেছিলাম। সেদিনও পরিবারকে খুব একটা মিস করা হয়নি।
ভ্রমণের এক বছর পূর্ণ হওয়ার পর প্রথমবারের মতো মালয়েশিয়ায় ঈদ করব। এবারের ঈদে আমার প্রধান আকর্ষণ মালয়েশিয়ার ঐতিহ্যবাহী পুরুষদের পোশাক বাজু মেলায়ু। এই পোশাকের মূল আকর্ষণ হচ্ছে কোমরের অংশের কাপড়, যেটাকে ওরা বলে সাম্পিং।
মালয়েশিয়ার ঐতিহ্যবাহী পোশাকে.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: পর ব র
এছাড়াও পড়ুন:
৫ আগস্টের মধ্যে জুলাই সনদ না হলে অবরোধের হুঁশিয়ারি আপ বাংলাদেশের
জুলাই সনদ ও ঘোষণাপত্র জারির দাবিতে অন্তর্বর্তী সরকারকে ৫ আগস্ট পর্যন্ত সময় বেঁধে দিয়েছে ইউনাইটেড পিপলস (আপ) বাংলাদেশ। আজ শুক্রবার রাজধানীর শাহবাগে গণজমায়েত থেকে এ ঘোষণা দেওয়া হয়। দাবি পূরণ না হলে ৬ আগস্ট থেকে দেশজুড়ে অবরোধ কর্মসূচি পালনের হুঁশিয়ারি দিয়েছে সংগঠনটি।
‘৩৬ জুলাইয়ের মধ্যে জুলাই ঘোষণাপত্র ও সনদের দাবি’ শীর্ষক গণজমায়েতে অংশ নেন দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে আসা আপ বাংলাদেশের নেতা–কর্মীরা। জুলাই গণ–অভ্যুত্থানের এক বছর পার হলেও জুলাই সনদ ও ঘোষণাপত্র জারি না হওয়াকে অন্তর্বর্তী সরকারের ব্যর্থতা হিসেবে দেখছেন তাঁরা।
আপ বাংলাদেশের আহ্বায়ক আলী আহসান জুনায়েদ বলেন, ‘আমরা একটি বৈষম্যহীন বাংলাদেশ চেয়েছিলাম। কিন্তু আহতদের ভাগ্যের পরিবর্তন হয়নি। আমরা দেখেছি, যারা জুলাইয়ের নেতৃত্বে ছিল, জুলাইয়ের পরে তাদের পকেট ভারী হয়েছে। আমি বলতে চাই, আপনাদের এই পকেটের হিসাব দিতে হবে।’
অন্তর্বর্তী সরকারকে উদ্দেশ করে আলী আহসান বলেন, ‘আপনারা জুলাই ঘোষণাপত্র দিতে পারবেন কি পারবেন না, তা জানান; না পারলে আমরা আছি। যারা জীবন দিতে প্রস্তুত ছিলাম, বাংলাদেশের (সেই) ২০ কোটি জনগণ জুলাই ঘোষণাপত্র জারি করবে।’
আপ বাংলাদেশের আহ্বায়ক বলেন, ‘৩৬ জুলাইয়ের মধ্যে যদি জুলাই ঘোষণাপত্র না হয়, তাহলে ৬ আগস্ট থেকে দেশজুড়ে অবরোধ শুরু হবে। এ সরকারের কোনো হুমকি আমাদের দমিয়ে রাখতে পারবে না।’
গণজমায়েতে অংশ নিয়ে ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরীফ ওসমান বলেন, আপ বাংলাদেশের নেতারা এখনো কোনো প্রটোকল ছাড়া রাস্তাঘাটে হাঁটেন। কিন্তু তাঁরা যেদিন প্রটোকল নিতে শুরু করবেন, সেদিন থেকে তাঁদের বিরুদ্ধেও তিনি কথা বলা শুরু করবেন।
জুলাই সনদ ও ঘোষণাপত্র জারির আহ্বান জানিয়ে শরীফ ওসমান বলেন, এখন পর্যন্ত বিদ্যমান আইনি কাঠামোয় জুলাই শহীদেরা রাষ্ট্রদ্রোহী। তাঁদেরকে আইনি স্বীকৃতি দেওয়া হয়নি। আজকের মধ্যে সরকার দিনক্ষণ না জানালে আগামী ৩ তারিখ (আগস্ট) ইনকিলাব মঞ্চের উদ্যোগে কফিন মিছিল নিয়ে সচিবালয় অবরোধ করা হবে।
বিগত এক বছর থেকে একটি দুর্বল সরকার দেশ চালাচ্ছে উল্লেখ করে আপ বাংলাদেশের সদস্যসচিব আরেফিন মোহাম্মদ বলেন, ‘জুলাই গণ–অভ্যুত্থানের এক বছর পূর্তিতে ঘোষণাপত্রের জন্য আমাদের আবারও গণজমায়েত করতে হচ্ছে। এর চেয়ে লজ্জাজনক আর কী হতে পারে?’
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী এ বি জুবায়ের বলেন, ‘আমরা যে মৌলিক সংস্কার চেয়েছিলাম, এখনো তার কিছুই হয়নি। এখনো শহীদ পরিবারের পুনর্বাসন ও আহতদের চিকিৎসা নিশ্চিত হয়নি। আমি উপদেষ্টাদের উদ্দেশে বলতে চাই, অবিলম্বে জুলাই সনদ ঘোষণা করুন। আপনাদের কাছে আমাদের চাওয়া–পাওয়া খুব বেশি নেই।’
গণজমায়েতে র্যাপ গান পরিবেশন করেন আপ বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় সদস্য আহনাফ তাহমিদ। স্বাগত বক্তব্য দেন জুলাই শহীদ ওসমান পাটোয়ারীর বাবা আবদুর রহমান। গণজমায়েতে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন আপ বাংলাদেশের প্রধান সমন্বয়কারী রাফে সালমান রিফাত, প্রধান সংগঠক নাঈম আহমেদ, মুখপাত্র শাহরিন সুলতানা প্রমুখ।