‘বরবাদ’ সিনেমা নিয়ে ভারতীয় সিনেমাটোগ্রাফারের চাঞ্চল্যকর তথ্য
Published: 6th, April 2025 GMT
শাকিব খান অভিনীত ‘বরবাদ’ সিনেমা সগৌরবে প্রেক্ষাগৃহে প্রদর্শিত হচ্ছে। সিনেমাটির নির্মাণশৈলীর প্রশংসা কুড়াচ্ছেন পরিচালক মেহেদী হাসান হৃদয়। এরই মাঝে নির্মাণ নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন ভারতীয় সিনেমাটোগ্রাফার শৈলেশ আওয়াস্থি।
শনিবার (৫ এপ্রিল) মেহেদী হাসান হৃদয়ের দেওয়া এক ফেসবুক পোস্টে মন্তব্য কেরেন শৈলেশ আওয়াস্থি। তার দাবি, ‘বরবাদ’ সিনেমার প্রকৃত সিনেমাটোগ্রাফার তিনি। সিনেমাটির সৃজনশীল ও ভিজ্যুয়াল নির্মাণে তারই প্রধান ভূমিকা। অথচ চূড়ান্ত ক্রেডিট থেকে তাকে বাদ দিয়ে সিনেমাটোগ্রাফির স্বীকৃতি দেওয়া হয়েছে রাজু রাজকে।
পরিচালক মেহেদী হাসান হৃদয়কে উদ্দেশ্য করে শৈলেশ আওয়াস্থি লেখেন, “যখন তোমার কঠোর পরিশ্রমকে উপেক্ষা করা হয় এবং অন্যরা তোমার কাজের কৃতিত্ব নেয়, তখন সেটা হতাশাজনক। ‘বরবাদ’-এর সিনেমাটোগ্রাফার হিসেবে আমার শতভাগ দিয়েছি। তা ছাড়া আমি সৃজনশীল বিভিন্ন সিদ্ধান্তের মাধ্যমে সিনেমাটিকে বানাতে সাহায্য করেছি। অথচ সেগুলো আমার দায়িত্ব ছিল না। কিন্তু আমাকে সেই কৃতিত্ব দেওয়া হয়নি, যা দেওয়া হয়েছে অন্যকে।”
আরো পড়ুন:
‘চাঁদ মামা’ গানে শেহতাজের নানির নাচ (ভিডিও)
শাশুড়ি মায়ের হাতের রান্না যেন মধু: শবনম বুবলী
বিস্তারিত ব্যাখ্যা করে শৈলেশ লেখেন, “রাজু রাজ, যাকে ডিওপি হিসেবে কৃতিত্ব দেওয়া হয়েছে, তিনি সিনেমার সঙ্গে খুব কমই যুক্ত ছিলেন। সত্যি বলতে, এই শিরোনাম (ডিওপি) দাবি করার আগে প্রথমে সিনেমাটোগ্রাফির মৌলিক বিষয়গুলো বুঝতে হবে। আমি মাঠে ছিলাম, শটগুলো আমি সাজিয়েছিলাম, ভিজ্যুয়াল ডিজাইন আমি করেছিলাম। আমার দায়িত্বের বাইরে গিয়েও কাজ করেছিলাম। এটা অহংকার নয়, এটা ন্যায্যতার প্রশ্ন। আমি কেবল আমার দক্ষতা দিয়ে নয়, সততার সাথে এই সিনেমাটিতে কাজ করেছি। পোস্টার, উইকিপিডিয়া এবং আইএমডিবিতে নাম পরিবর্তন করা যেতে পারে, কিন্তু সত্য সর্বদা তার পথ খুঁজে নেয়।”
রবিবার (৬ এপ্রিল) শৈলেশ আওয়াস্তি নিজের ওয়ালে একটি পোস্ট দেন। সেখানে তিনি লেখেন, “আজিম ভাই এবং শারমিন অভিনন্দন, বাংলাদেশের চলচ্চিত্র জগতে ১৬ কোটি বাজেটের একটি চলচ্চিত্র নির্মাণ নিঃসন্দেহে একটি সাহসী পদক্ষেপ। যখন বেশিরভাগ প্রযোজনা সংস্থা বড় বাজেটের প্রকল্প নিয়ে ঝুঁকি নিতে দ্বিধা করে, তখন রিয়েল এনার্জি প্রোডাকশন তাদের প্রথম প্রযোজনা, ‘বারবাদ’র মাধ্যমে আন্তর্জাতিক মানের একটি চলচ্চিত্র উপহার দেওয়ার জন্য এগিয়ে এসেছে। সাহস এবং দূরদৃষ্টির জন্য তারা সত্যিই প্রশংসার দাবিদার। কোনো সন্দেহ নেই যে, ‘বরবাদ’ দেশের সেরা বাণিজ্যিক চলচ্চিত্রগুলির মধ্যে শীর্ষে রয়েছে। যদি এই প্রযোজনা সংস্থা তার গতি বজায় রাখতে পারে এবং এই ধরণের মানের চলচ্চিত্র উপহার দিতে পারে, তাহলে আমরা হয়তো ঢালিউড শিল্পে একটি নতুন যুগের সূচনা দেখতে পাচ্ছি, যা আমাদের চলচ্চিত্রকে আরো উচ্চতায় নিয়ে যাবে।”
‘বরবাদ’ সিনেমার প্রযোজক শারমিন আখতার সুমির প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে শৈলেশ লেখেন, “বাংলাদেশি চলচ্চিত্রের ইতিহাসে একজন নির্ভীক নারী এবং পথিকৃৎ প্রযোজক শারমিন আখতার সুমির প্রতি শ্রদ্ধা এবং কৃতজ্ঞতা। অসংখ্য চ্যালেঞ্জ সত্ত্বেও তিনি সাহস করে দর্শকদের সামনে ‘বরবাদ’র মতো একটি বড় বাজেটের প্রকল্প উপস্থাপন করেছেন। আমি নিশ্চিত যাত্রাটি সহজ ছিল না। তবে আমি আপনাদের আন্তরিকভাবে অনুরোধ করছি, দয়া করে সিনেমার পথ থেকে সরে আসবেন না। আপনাদের মতো প্রতিশ্রুতিবদ্ধ প্রযোজকদেরই আমাদের শিল্পকে নতুন করে রূপ দেওয়ার এবং এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার ক্ষমতা রয়েছে। বাংলা সিনেমা দীর্ঘজীবী হোক। সকল সিন্ডিকেটের পতন হোক!”
জানা গেছে, আজ দুপুর নাগাদ প্রযোজকের হস্তক্ষেপে বিষয়টির সমাধান হয়েছে। এরপরই সিনেমাটোগ্রাফার এই পোস্ট দেন তার ওয়ালে। যদিও সেখানে শুধুই প্রযোজকের প্রশংসা করা হয়েছে। কিছুই উল্লেখ ছিল না নির্মাতা বা নায়কের। যা থেকে স্পষ্ট, সিনেমাটোগ্রাফার প্রযোজকের মন রক্ষার জন্যই বিষয়টি নিয়ে আর সামনে আগাননি।
তবে এসব বিষয়ে জানতে যোগাযোগ করেও মুঠোফোনে পাওয়া যায়নি নির্মাতা হৃদয়কে। বাংলাদেশের রিয়েল এনার্জি প্রোডাকশন এবং ভারতের রিধি সিধি এন্টারটেইনমেন্টের ব্যানারে আজিম হারুন ও শারমিন আক্তার সুমি ‘বরবাদ’ সিনেমা প্রযোজনা করেছেন। সিনেমাটির প্রধান চরিত্রে অভিনয় করেছেন শাকিব খান, কলকাতার ইধিকা পাল, যীশু সেনগুপ্ত।
ঢাকা/রাহাত/শান্ত
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর চলচ চ ত র বরব দ
এছাড়াও পড়ুন:
৫ আগস্টের মধ্যে জুলাই সনদ না হলে অবরোধের হুঁশিয়ারি আপ বাংলাদেশের
জুলাই সনদ ও ঘোষণাপত্র জারির দাবিতে অন্তর্বর্তী সরকারকে ৫ আগস্ট পর্যন্ত সময় বেঁধে দিয়েছে ইউনাইটেড পিপলস (আপ) বাংলাদেশ। আজ শুক্রবার রাজধানীর শাহবাগে গণজমায়েত থেকে এ ঘোষণা দেওয়া হয়। দাবি পূরণ না হলে ৬ আগস্ট থেকে দেশজুড়ে অবরোধ কর্মসূচি পালনের হুঁশিয়ারি দিয়েছে সংগঠনটি।
‘৩৬ জুলাইয়ের মধ্যে জুলাই ঘোষণাপত্র ও সনদের দাবি’ শীর্ষক গণজমায়েতে অংশ নেন দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে আসা আপ বাংলাদেশের নেতা–কর্মীরা। জুলাই গণ–অভ্যুত্থানের এক বছর পার হলেও জুলাই সনদ ও ঘোষণাপত্র জারি না হওয়াকে অন্তর্বর্তী সরকারের ব্যর্থতা হিসেবে দেখছেন তাঁরা।
আপ বাংলাদেশের আহ্বায়ক আলী আহসান জুনায়েদ বলেন, ‘আমরা একটি বৈষম্যহীন বাংলাদেশ চেয়েছিলাম। কিন্তু আহতদের ভাগ্যের পরিবর্তন হয়নি। আমরা দেখেছি, যারা জুলাইয়ের নেতৃত্বে ছিল, জুলাইয়ের পরে তাদের পকেট ভারী হয়েছে। আমি বলতে চাই, আপনাদের এই পকেটের হিসাব দিতে হবে।’
অন্তর্বর্তী সরকারকে উদ্দেশ করে আলী আহসান বলেন, ‘আপনারা জুলাই ঘোষণাপত্র দিতে পারবেন কি পারবেন না, তা জানান; না পারলে আমরা আছি। যারা জীবন দিতে প্রস্তুত ছিলাম, বাংলাদেশের (সেই) ২০ কোটি জনগণ জুলাই ঘোষণাপত্র জারি করবে।’
আপ বাংলাদেশের আহ্বায়ক বলেন, ‘৩৬ জুলাইয়ের মধ্যে যদি জুলাই ঘোষণাপত্র না হয়, তাহলে ৬ আগস্ট থেকে দেশজুড়ে অবরোধ শুরু হবে। এ সরকারের কোনো হুমকি আমাদের দমিয়ে রাখতে পারবে না।’
গণজমায়েতে অংশ নিয়ে ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরীফ ওসমান বলেন, আপ বাংলাদেশের নেতারা এখনো কোনো প্রটোকল ছাড়া রাস্তাঘাটে হাঁটেন। কিন্তু তাঁরা যেদিন প্রটোকল নিতে শুরু করবেন, সেদিন থেকে তাঁদের বিরুদ্ধেও তিনি কথা বলা শুরু করবেন।
জুলাই সনদ ও ঘোষণাপত্র জারির আহ্বান জানিয়ে শরীফ ওসমান বলেন, এখন পর্যন্ত বিদ্যমান আইনি কাঠামোয় জুলাই শহীদেরা রাষ্ট্রদ্রোহী। তাঁদেরকে আইনি স্বীকৃতি দেওয়া হয়নি। আজকের মধ্যে সরকার দিনক্ষণ না জানালে আগামী ৩ তারিখ (আগস্ট) ইনকিলাব মঞ্চের উদ্যোগে কফিন মিছিল নিয়ে সচিবালয় অবরোধ করা হবে।
বিগত এক বছর থেকে একটি দুর্বল সরকার দেশ চালাচ্ছে উল্লেখ করে আপ বাংলাদেশের সদস্যসচিব আরেফিন মোহাম্মদ বলেন, ‘জুলাই গণ–অভ্যুত্থানের এক বছর পূর্তিতে ঘোষণাপত্রের জন্য আমাদের আবারও গণজমায়েত করতে হচ্ছে। এর চেয়ে লজ্জাজনক আর কী হতে পারে?’
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী এ বি জুবায়ের বলেন, ‘আমরা যে মৌলিক সংস্কার চেয়েছিলাম, এখনো তার কিছুই হয়নি। এখনো শহীদ পরিবারের পুনর্বাসন ও আহতদের চিকিৎসা নিশ্চিত হয়নি। আমি উপদেষ্টাদের উদ্দেশে বলতে চাই, অবিলম্বে জুলাই সনদ ঘোষণা করুন। আপনাদের কাছে আমাদের চাওয়া–পাওয়া খুব বেশি নেই।’
গণজমায়েতে র্যাপ গান পরিবেশন করেন আপ বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় সদস্য আহনাফ তাহমিদ। স্বাগত বক্তব্য দেন জুলাই শহীদ ওসমান পাটোয়ারীর বাবা আবদুর রহমান। গণজমায়েতে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন আপ বাংলাদেশের প্রধান সমন্বয়কারী রাফে সালমান রিফাত, প্রধান সংগঠক নাঈম আহমেদ, মুখপাত্র শাহরিন সুলতানা প্রমুখ।