এই গল্প আজকের নয়। গল্পটি শুরু হয়েছিল ঠিক এক বছর আগে—১৯ মার্চ ২০২৪ সালে। এটি ছিল যুদ্ধ, ভয়, ক্ষুধা, মৃত্যু, বাস্তুচ্যুতি আর ধ্বংসের এক বছর। এটি ছিল এমন একটি বছর, যেখানে প্রতিটি কোণে মৃত্যু ওত পেতে ছিল।  আমি নিজ চোখে মৃত্যু দেখেছি। আমি যে বেঁচে আছি, তা তখনই বুঝতে পেরেছিলাম, যখন চরম আতঙ্কের মধ্যে আমার প্রসববেদনা শুরু হলো। একটি ক্ষেপণাস্ত্র আমাদের বাড়ির একদম পাশেই আঘাত হেনেছিল। বিস্ফোরণের তীব্রতা এত বেশি ছিল যে দরজা নিজে থেকেই খুলে গেল, আর ধাতব টুকরাগুলো উড়ে আসতে লাগল। বাতাস ধোঁয়া আর রক্তের গন্ধে ভরে গিয়েছিল। 

আমি নিশ্চিত ছিলাম, সব শেষ। কিন্তু নিজের জন্য ভয় পাইনি। ভয় পেয়েছিলাম আমার সেই অনাগত শিশুর জন্য, যে এখনো সূর্যের আলোও দেখেনি। আমরা কি ছিন্নভিন্ন হয়ে যাব—আমি, আমার অনাগত সন্তান আর আমার স্বামী?

আমি আর নিজেকে সামলাতে পারিনি, চিৎকার করে উঠেছিলাম, ‘আমরা পুড়ে যাচ্ছি! আমরা পুড়ে যাচ্ছি!’ আমি স্বপ্ন দেখেছিলাম আনন্দ, উষ্ণতা আর উদ্‌যাপনের মধ্য দিয়ে আমার সন্তানকে পৃথিবীতে স্বাগত জানাব। কিন্তু তার বদলে সে জন্ম নিল গুলি আর আগুনে ঝলসানো আকাশের নিচে। যতই প্রসবের দিন ঘনিয়ে আসছিল, আমি প্রার্থনা করছিলাম যেন সে শান্তিতে জন্ম নেয়। আমি মরিয়া হয়ে একটা যুদ্ধবিরতির আশায় ছিলাম। কিন্তু ভাগ্য ছিল নিষ্ঠুর। 

আমার সন্তান হয়ে গেল আরেকটি যুদ্ধশিশু—যে শিশু জন্মের পরপরই বিস্ফোরণের শব্দে ঢাকা পড়ে গেল, যার ঘর আর দোলনা ধ্বংসস্তূপে পরিণত হলো, আর যার জীবন শুরু হওয়ার আগেই কেড়ে নেওয়া হলো। আমরা ছিলাম একা—এক জ্বলন্ত পৃথিবীর মাঝে নিঃসঙ্গ। 

ইসরায়েলের যুদ্ধ যখন ফিলিস্তিনের এই ছোট্ট ভূখণ্ডকে তছনছ করে চলেছিল, তখন আমার ছিল না কোনো আশ্রয়, ছিল না কোনো স্বস্তি, ছিল না কোনো সহায়তার হাত। আমার একমাত্র শক্তি ছিল আমার গর্ভের সন্তানের ছোট ছোট নড়াচড়া। আমার ভেতরে তার প্রতিটি স্পন্দন যেন একটা ফিসফিসানি ছিল। ছিল একটা প্রতিশ্রুতি—আমরা টিকে থাকব। মৃত্যু আমাদের দরজায় কড়া নাড়ছিল। কিন্তু কোনোভাবে আমরা টিকে গিয়েছিলাম। আমরা বেঁচে ছিলাম ঘর ছাড়ার পর। ফাঁকা রাস্তাগুলো পেরিয়ে যেখানে বাতাসও যেন শোক বয়ে আনছিল, সে পথে আমরা গুটি গুটি পায়ে হাঁটছিলাম।

 আমরা বেঁচে ছিলাম যুদ্ধের নিষ্ঠুর হাত যখন আমাকে আমার পরিবার থেকে ছিঁড়ে নিয়ে গিয়েছিল। আমরা বেঁচে ছিলাম প্রিয়জনদের হারানোর পরও বুকের ভেতর সেই ভারী শোক বয়ে নিয়ে। যখন শত্রুরা আমার ঘরটাকে উড়িয়ে দিল, তখন আমি সাত মাসের গর্ভবতী। আমি তখন নিজেকে সেই কথাগুলোই বললাম, যা আল্লাহ মরিয়ম (আ.

)–কে বলেছিলেন: তুমি খাও, পান করো আর শান্ত হও। সেই মুহূর্তে, চারপাশের ভয়াবহতার মধ্যে সামান্য শান্তি পেয়েছিলাম। আমি শক্ত করে ধরে রেখেছিলাম এই বিশ্বাস যে আমার সন্তান আমার জন্য এক আশীর্বাদ, যে আমাকে বাঁচিয়ে রাখবে, সামনে এগিয়ে যাওয়ার শক্তি দেবে। 

আমাদের কিছুই ছিল না। শীত থেকে বাঁচতে একই কাপড় ভাগ করে নিতে হতো। আমি এখনো মনে করি, আমাদের বাস্তুচ্যুতির প্রথম সপ্তাহে কয়েকটা প্রয়োজনীয় জিনিস গুছিয়ে নিয়ে ভেবেছিলাম, আমরা খুব তাড়াতাড়ি ফিরে যাব। তখনো জানতাম না, আমাদের জীবন চিরতরে বদলে গেছে।

তারপর, প্রসবব্যথা শুরু হলো। 

প্রতি তরঙ্গে যখন ব্যথা ছড়িয়ে পড়ছিল, আমি কেবল দয়া আর শক্তির জন্য দোয়া করছিলাম। মুহূর্তটি আনন্দ আর ভালোবাসার হওয়ার কথা ছিল। সে মুহূর্তে কোনো একজনের আমার হাত ধরে সাহস দেওয়ার কথা ছিল। কিন্তু তার বদলে আমি ছিলাম ঘোর অন্ধকারের মধ্যে, মৃত্যুর ছায়ায় ঘেরা এক ভয়াবহ পথে। বিস্ফোরণের শব্দ যেন আমার প্রতিটি প্রসববেদনার সঙ্গী হয়ে উঠেছিল। আমি আল্লাহর কাছে কাতর হয়ে দোয়া করছিলাম, যেন আমি নিরাপদে আমার সন্তানকে পৃথিবীতে আনতে পারি, আর তাকে নিজের হাতে একবার হলেও ধরতে পারি। এই ধ্বংসস্তূপের মধ্যেই আমার সন্তানের প্রথম কান্না আমাদের অবিনশ্বর শক্তির প্রমাণ হয়ে উঠল। 

সেই রাত ছিল প্রচণ্ড ঠান্ডা। বৃষ্টিতে ভিজে থাকা এক রাত। কিন্তু আকাশ ছিল আগুনের মতো জ্বলন্ত। যুদ্ধবিমানগুলো গর্জন করছিল। আর মিসাইলের আলো অন্ধকার চিরে শহরটাকে এক বিভীষিকাময় দুঃস্বপ্নের রূপ দিচ্ছিল। ধ্বংসস্তূপের মধ্যে নিথর সন্তানের দেহ আঁকড়ে ধরে রাখা মায়েদের পাশে আমার মতো নারীরা সন্তান জন্ম দিচ্ছিল। আমি তখনো আমার বাচ্চাটির মুখে চুমু খেতে পারিনি।

অবশেষে সকাল এল। আমার পরিবারও এসে পৌঁছাল। এত দিন পর প্রথমবার মনে হলো, আমার দোয়া আল্লাহ কবুল করেছেন। কিন্তু শান্তি ছিল তেমনই এক স্বপ্ন, যা আমরা বাস্তবে আর দেখিনি। বোমার শব্দ আমার আনন্দের চেয়ে বেশি জোরে বাজছিল। তবু সেদিন আমি এক সিদ্ধান্ত নিলাম: আমার সন্তান ও আমি বেঁচে থাকব। যা কিছু আসবে, তার সঙ্গে লড়াই করব। 

কিন্তু লড়াই তো সবে শুরু হয়েছিল। আমি ওকে কী খাওয়াব? একসময় ফাঁকা হয়ে যাওয়া বাজার আবার হঠাৎ করেই ভরে উঠল। কিন্তু সবকিছুর দাম এমন ছিল যে তা কেনা অসম্ভব হয়ে উঠল। মাংস, মাছ, ফল—সবই এক অজানা বিলাসিতা হয়ে গেল। আর কাপড়? বাচ্চাটির কোনো নতুন পোশাক ছিল না। কেবল যুদ্ধের মধ্যে জন্ম নেওয়া অন্য শিশুদের পুরোনো কাপড়েই তাকে ঢেকে রাখছিলাম। 

আমার সন্তান জন্ম নিয়েছে এক শরণার্থী হয়ে, এক গৃহহীন শিশু হিসেবে—আমাদের মতোই। আমরা এক জায়গা থেকে আরেক জায়গায় ছুটে বেড়াচ্ছিলাম আর আমাদের পেছনে ছিল কেবল মৃত্যু।

যুদ্ধ লম্বা হতে থাকল। সে তখনো এতটাই ছোট যে গ্রীষ্ম আর শীতের পার্থক্য বোঝার বয়সও তার হয়নি। কিন্তু কষ্ট? সেটা সে খুব ভালো করেই বুঝতে শিখেছিল। গরম এমন ছিল যে সহ্য করাই কঠিন হয়ে পড়েছিল। সে সব সময় ঘেমে থাকত আর কাঁদতে কাঁদতে একসময় ক্লান্ত হয়ে ঘুমিয়ে পড়ত।

ইসরায়েল গজাকে ধ্বংসস্তূপে পরিণত করেছে

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: জন ম ন আম দ র আম র প আম র স র জন য করছ ল

এছাড়াও পড়ুন:

নীতি সুদহার কমাল ফেডারেল রিজার্ভ, কী প্রভাব পড়তে পারে বিশ্ব অর্থনীতিতে

অবশেষে সুদের হার কমিয়েছে ফেডারেল রিজার্ভ। গত বছরের ডিসেম্বর মাসের পর এই প্রথম সুদহার কমাল ফেডারেল রিজার্ভ। যুক্তরাষ্ট্রের শ্রমবাজারে দুর্বলতার লক্ষণ, আফ্রো-আমেরিকানদের মধ্যে উচ্চ বেকারত্ব, কর্মঘণ্টা কমে যাওয়া ও নতুন চাকরি সৃষ্টির গতি কমে যাওয়ায় ফেড এ সিদ্ধান্ত নিয়েছে।

মার্কিন কেন্দ্রীয় ব্যাংক নীতি সুদহার ২৫ ভিত্তি পয়েন্ট কমিয়ে ৪ থেকে ৪ দশমিক ২৫ শতাংশে নামিয়ে এনেছে। সংবাদ সম্মেলনে এ ঘোষণা দেওয়ার পর ফেড চেয়ারম্যান জেরোম পাওয়েল বলেন, অক্টোবর ও ডিসেম্বর মাসে সুদহার আরও কমতে পারে। তিনি বলেন, শ্রমবাজারের ক্রমবর্ধমান দুর্বলতা এখন তাঁর ও সহকর্মী নীতিনির্ধারকদের প্রধান উদ্বেগ। খবর রয়টার্স

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প অনেক দিন ধরেই ব্যাপক হারে সুদ কমানোর দাবি তুলছিলেন। তাঁর বক্তব্য, এতে অর্থনীতি চাঙা হবে। তবে ফেডের এ সিদ্ধান্ত তাঁর প্রত্যাশার চেয়ে অনেক কম। ফেডের পর্ষদে নতুন গভর্নর স্টিফেন মিরান ছিলেন একমাত্র ভিন্নমতাবলম্বী। তিনি ৫০ ভিত্তি পয়েন্ট হারে সুদহার কমানোর পক্ষে ছিলেন। সেই সঙ্গে ভবিষ্যতে আরও বড় কাটছাঁটের ইঙ্গিত দিয়েছেন।

সুদের হার নির্ধারণে রাজনৈতিক প্রভাবের প্রশ্ন সব সময়ই তোলা হয়। ট্রাম্প সম্প্রতি ফেডের এক গভর্নর লিসা কুককে সরানোর চেষ্টা করেছিলেন। যদিও কুক আদালতের লড়াইয়ে আপাতত নিজের অবস্থান ধরে রেখেছেন এবং বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন। পাশাপাশি হোয়াইট হাউসের অর্থনৈতিক উপদেষ্টা পরিষদের প্রধান মিরানকে ফেডের পর্ষদে বসান।

শ্রমবাজারে দুর্বলতা

পাওয়েল বলেন, বিভিন্ন জাতিগোষ্ঠীর মধ্যে বেকারত্ব বাড়ছে, তরুণেরা আরও ভঙ্গুর হয়ে পড়ছেন। সামগ্রিকভাবে চাকরি সৃষ্টির গতি খুবই কম। শ্রমবাজারকে আর দুর্বল হতে দেওয়া যাবে না।

পাওয়েল আরও সতর্ক করেন, নতুন চাকরির সংখ্যা এখন বেকারত্বের হার স্থিতিশীল রাখার জন্য যথেষ্ট নয়। ফলে সামান্য ছাঁটাইও বেকারত্ব বাড়িয়ে দিতে পারে।

মূল্যস্ফীতি বনাম কর্মসংস্থান

মূল্যস্ফীতি এখনো লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে বেশি। আশঙ্কা করা হচ্ছে বছরের শেষ নাগাদ মূল্যস্ফীতির হার ৩ শতাংশে উঠবে, যেখানে ফেডের লক্ষ্যমাত্রা হলো ২ শতাংশ। কিন্তু ফেড মনে করছে, কর্মসংস্থানের ঝুঁকি এখন বেশি গুরুত্ব পাওয়ার মতো বিষয়।

ফেডের নতুন পূর্বাভাসে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির হার কিছুটা বাড়িয়ে ১ দশমিক ৬ শতাংশ করা হতে পারে বলা হয়েছে। বেকারত্বের হার ৪ দশমিক ৫ শতাংশেই স্থির থাকবে বলে তারা অনুমান করছে।

রাজনৈতিক টানাপোড়েন

এ সিদ্ধান্তে রাজনৈতিক নাটকও কম ছিল না। ট্রাম্পের হস্তক্ষেপ নিয়ে সমালোচনা থাকলেও ফেডের পর্ষদের অন্য দুই ট্রাম্প-মনোনীত গভর্নর মিশেল বোম্যান ও ক্রিস্টোফার ওয়ালার শেষ পর্যন্ত মূল সিদ্ধান্তের সঙ্গে একমত হয়েছেন। ওয়ালার বরাবরই শ্রমবাজারকে অগ্রাধিকার দেওয়ার কথা বলে আসছেন।

পাওয়েল অবশ্য পরিষ্কার ভাষায় বলেছেন, ‘আমাদের সংস্কৃতির মূল বিষয় হলো তথ্যভিত্তিক সিদ্ধান্ত। আজকের বৈঠকে সুদহার ব্যাপক হারে কমানোর বিষয়ে বিপুল সমর্থন ছিল না।’

বাজারের প্রতিক্রিয়া

সুদহার কমানোর ঘোষণার পর ওয়াল স্ট্রিটে প্রথমে শেয়ারের দাম বাড়লেও পরে ওঠানামা করে। শেষমেশ মিশ্র পরিস্থিতির মধ্য দিয়ে দিন শেষ হয়। ডলার কিছুটা শক্তিশালী হয়েছে ঠিক, কিন্তু ট্রেজারি বন্ডের সুদ প্রায় অপরিবর্তিত। বাজার এখন প্রায় নিশ্চিত, অক্টোবরের বৈঠকেও সুদ কমানো হবে।

বিশ্লেষকদের মতে, ফেডের সাম্প্রতিক নীতি পরিবর্তনের মানে হলো তারা এখন ধীরে ধীরে ‘নিরপক্ষে’ অবস্থানের দিকে যাচ্ছে। মূল্যস্ফীতি সাময়িকভাবে কিছুটা বাড়লেও ২০২৬ সালের মধ্যে স্থিতিশীল হবে বলে আশা করা হচ্ছে।

নীতিসুদ কী

কেন্দ্রীয় ব্যাংক যে সুদহারে তফসিলি ব্যাংকগুলোকে স্বল্প সময়ের জন্য ঋণ দেয়, সেটাই নীতি সুদহার। ইংরেজিতে একে বলে রেপো রেট। রেপোর বাংলা হচ্ছে পুনঃক্রয় চুক্তি। মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে মুদ্রানীতির অন্যতম হাতিয়ার হিসেবে এটি পরিচিত। অর্থনীতিতে নগদ তারল্যের জোগান দিতে বা অন্যভাবে বলতে গেলে ব্যাংকগুলোর জরুরি প্রয়োজনে অর্থ সরবরাহ করতে মুদ্রানীতির এ হাতিয়ার ব্যবহার করা হয়। বিশ্বের সব দেশের কেন্দ্রীয় ব্যাংক এ হাতিয়ার ব্যবহার করে।

কোভিডের পর রাশিয়া–ইউক্রেন যুদ্ধ শুরু হলে বিশ্বজুড়ে মূল্যস্ফীতি বেড়ে যায়। তখন ফেডারেল রিজার্ভ বাজারে মুদ্রার চাহিদা নিয়ন্ত্রণ করতে দফায় দফায় নীতি সুদহার বৃদ্ধি করে। ফলে নীতি সুদহার গত দুই দশকের বেশি সময়ের মধ্যে সর্বোচ্চ ৫ দশমিক ২৫ থেকে ৫ দশমিক ৫০ শতাংশে উঠে যায়।

যুক্তরাষ্ট্রের নীতি সুদহারের প্রভাব

বিশ্ব অর্থনীতি যুক্তরাষ্ট্রের নীতিসুদের ওপর অনেকাংশে নির্ভর করে। ফেডের নীতিসুদের হার বাড়লে ট্রেজারি বন্ডের দাম কমে এবং সুদহার কমলে ট্রেজারি বন্ডের দাম বাড়ে। এর কারণ হলো বাজারে নতুন ও অধিক সুদের বন্ড আসার পর পুরোনো বন্ডের কুপন (সুদ) কম মনে হয়, ফলে পুরোনো বন্ডের দাম কমে যায়। আবার যখন সুদের হার কমে, তখন নতুন বন্ডের কুপন কম হওয়ায় পুরোনো বন্ডের উচ্চ কুপনযুক্ত সুদ বেশি আকর্ষণীয় হয়ে ওঠে, ফলে পুরোনো বন্ডের দাম বেড়ে যায়।

নীতিসুদ কমলেও একই প্রক্রিয়া ঘটে, তবে বিপরীতভাবে। সুদের হার কমলে নতুন বন্ডের কুপনও কমে যায়। এতে আগের উচ্চ সুদের কুপনযুক্ত বন্ডগুলো বেশি আকর্ষণীয় হয়ে ওঠে। বিনিয়োগকারীরা এই পুরোনো বন্ডগুলো কিনতে আগ্রহী হন, ফলে সেগুলোর দাম বেড়ে যায়। বিনিয়োগকারীরা তখন তুলনামূলক ঝুঁকিপূর্ণ বাজারেও বিনিয়োগ আগ্রহী হন। এতে উন্নয়নশীল দেশে বিনিয়োগপ্রবাহ বাড়ে এবং ডলারের চাপ কিছুটা কমে।

সে কারণে বাজার নীতি সুদহারের দিকে তাকিয়ে থাকে, সুদ কমলে উন্নয়নশীল দেশে বিনিয়োগ বৃদ্ধি পায়।

সম্পর্কিত নিবন্ধ