ইস্তাম্বুলের কারাবন্দী মেয়র একরেম ইমামোগলুকে দুর্নীতির অভিযোগে গ্রেপ্তারের প্রতিবাদে তুরস্কে লাখো মানুষ বিক্ষোভ করেছেন বলে জানিয়েছেন তাঁর সমর্থকেরা। বিক্ষোভে কতজন অংশ নিয়েছেন সেটির আনুষ্ঠানিক কোনো হিসাব নেই। কিন্তু পর্যবেক্ষকেরা বলছেন, এটি গত এক দশকে সবচেয়ে বড় সরকারবিরোধী বিক্ষোভ।

ইমামোগলুর বিরুদ্ধে একাধিক অভিযোগ আনা হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে ‘একটি অপরাধী সংগঠন প্রতিষ্ঠা ও পরিচালনা, ঘুষ নেওয়া, চাঁদাবাজি, বেআইনিভাবে ব্যক্তিগত তথ্য রেকর্ড করা ও টেন্ডার জালিয়াতি।’ এসব অভিযোগ অস্বীকার করেছেন তিনি।

তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোয়ান বলেছেন, অবশ্যই আদালতে অপরাধের দায়ে অভিযুক্ত যে কারও বিচার করতে হবে। আর এ ক্ষেত্রে রাস্তায় ‘সহিংসতার আন্দোলন’ কোনো কাজে আসবে না।

তুরস্কের প্রধান বিরোধী দল রিপাবলিকান পিপলস পার্টির (সিএইচপি) নেতা ওজগুর ওজেল এ বিক্ষোভকে উৎসাহিত করছেন। ইমামোগলুর মুক্তি ও আগাম প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের দাবিতে একটি পিটিশনের প্রক্রিয়াও শুরু করেছেন তিনি।

ইমামোগলু কেন জনপ্রিয়

ইমামোগলু ২০২৮ সালের নির্বাচনে তুরস্কের প্রেসিডেন্ট পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন বলে ব্যাপকভাবে ধারণা করা হচ্ছিল। কিন্তু দুর্নীতির অভিযোগে কারাগারে পাঠানো এবং কয়েক দিন আগে বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিগ্রি বাতিল হওয়ার কারণে কৌশলগতভাবে তিনি নির্বাচনে অংশ নিতে পারবেন না।

যদিও এ সবকিছু পাশ কাটিয়ে সিএইচপি গত ২৩ মার্চ ইমামোগলুকে প্রেসিডেন্ট প্রার্থী মনোনীত করেছে।

ইস্তাম্বুলের মেয়র হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণের পর থেকে সেখানকার অবকাঠামো, সামাজিক পরিষেবা ও সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের উন্নয়নের জন্য তিনি প্রশংসিত হয়েছেন।

২০১৯ সালে ইস্তাম্বুলের মেয়র পদে নির্বাচন করেন ইমামোগলু। সে সময় তিনি খুবই সাদামাটা প্রচারণা চালিয়েছিলেন। নির্বাচনে তিনি ক্ষমতাসীন জাস্টিস অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট পার্টি বা একে পার্টির প্রার্থীকে হারিয়ে বিজয়ী হন। একে পার্টির প্রার্থী ওই নির্বাচনের স্বচ্ছতা নিয়ে প্রশ্ন তোলার পর ব্যাপক বিতর্কের মুখে নতুন করে আবার নির্বাচন হয়। ওই নির্বাচনেও ইমামোগলু জয়ী হন। দ্বিতীয়বারও তিনি জাঁকজমক ছাড়া প্রচারণা চালিয়েছেন।  

ইস্তাম্বুলের মেয়র হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণের পর থেকে সেখানকার অবকাঠামো, সামাজিক পরিষেবা ও সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের উন্নয়ন করায় তিনি প্রশংসিত হয়েছেন।

লন্ডন বিশ্ববিদ্যালয়ের এসওএএসের আন্তর্জাতিক অধ্যয়নের প্রভাষক জিয়া মেরাল বলেন, ইমামোগলু যেসব কারণে জনপ্রিয় তার একটি হলো তাঁর ব্যক্তিত্ব। তিনি একজন সদয়, বন্ধুত্বপূর্ণ, স্পষ্টবাদী ও খোলামনের মানুষ। তিনি বিভেদের রাজনীতি করেন না, যা এই সময়ে তুরস্কের রাজনীতিতে বিরল।

তুরস্কের ইস্তাম্বুলে একরেম ইমামোগলুর গ্রেপ্তারের প্রতিবাদে বিক্ষোভ.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ত রস ক র

এছাড়াও পড়ুন:

সরকারের ভেতরে একটা অংশ নির্বাচন বানচালের পাঁয়তারা করছে: এনসিপি

সরকারের ভেতরের একটি পক্ষ ঐকমত্য কমিশনের সুপারিশের বাইরে গিয়ে নিজেরাই ঐকমত্য কমিশন হওয়ার চেষ্টা করছে বলে মন্তব্য করেছেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) সদস্যসচিব আখতার হোসেন। তিনি বলেন, এই চেষ্টার কারণে নির্বাচন ঝুঁকিতে পড়বে।

আজ সোমবার সন্ধ্যায় রাজধানীর বাংলামোটরে এনসিপির অস্থায়ী কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে আখতার হোসেন এ কথা বলেন।

আখতার হোসেন বলেন, তাঁদের কাছে স্পষ্টতই প্রতীয়মান যে সরকারের ভেতরের কোনো একটা অংশ সংস্কারকে ভন্ডুল করে নির্বাচন বানচালের পাঁয়তারা করছে।

রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলাপ–আলোচনার ভিত্তিতেই কমিশন সুপারিশ উপস্থাপন করেছে উল্লেখ করে সংবাদ সম্মেলনে এনসিপির সদস্যসচিব বলেন, সেই সুপারিশের ভিত্তিতেই সরকার আদেশ জারি করবে, সেটাই হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু যখন সরকারের তরফ থেকে সংবাদ সম্মেলন করে আরও এক সপ্তাহ রাজনৈতিক দলগুলোকে আলাপ–আলোচনার কথা বলা হয়, তখন মনে হয় যে সরকার আসলে এই সংস্কারের বিষয়গুলো নিয়ে সাপ-লুডো খেলছে। তিনি বলেন, ‘আমরা ৯৬-তে পৌঁছে গিয়েছিলাম, সেটাকে আবার তিনে নিয়ে আসা হয়েছে সাপ কেটে। এ অবস্থায় বাংলাদেশের বর্তমান যে রাজনৈতিক পরিস্থিতি, তাতে সংকট আরও ঘনীভূত হচ্ছে।’

অতি দ্রুত সরকারকে দায়িত্বশীল আচরণ করার আহ্বান জানিয়ে এনসিপির সদস্যসচিব বলেন, সরকারকে নিজেকেই দায়িত্ব নিয়ে জুলাই সনদ বাস্তবায়ন আদেশ জারি করতে হবে। সামনের সংসদকে গাঠনিক ক্ষমতা প্রদান করার মধ্য দিয়ে সংবিধান সংস্কার পরিষদ হিসেবে ঘোষণা করতে হবে। গণভোটের মাধ্যমে অর্জিত জনগণের অভিপ্রায় স্বয়ংক্রিয়ভাবে যেন বাস্তবায়িত হয়, সেই সুপারিশ বাস্তবায়ন করতে হবে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ