শিক্ষা খাতে সংস্কার কমিশন গঠন করার দাবি জানিয়েছে অভিভাবক ঐক্য ফোরাম। সারাদেশে শিক্ষকদের কোচিং বাণিজ্য মহামারি আকার ধারণ করেছে জানিয়ে কোচিং বাণিজ্য নিষিদ্ধের দাবি ও একই সঙ্গে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে রাজনীতিমুক্ত পরিচালনা পর্ষদ চান তারা। গতকাল বুধবার রাজধানীর সেগুনবাগিচায় বাংলাদেশ ক্রাইম রিপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের (ক্র্যাব) এক সংবাদ সম্মেলনে এমন দাবি জানান সংগঠনের সভাপতি জিয়াউল কবির দুলু।

সংগঠন সভাপতি শিক্ষার অনুকূল পরিবেশ ফিরিয়ে আনা ও অনিয়ম, দুর্নীতি রোধকল্পে মতিঝিল আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজ, ভিকারুননিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজ, মনিপুর স্কুল অ্যান্ড কলেজ– এই তিন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে সেনাবাহিনীর ব্রিগেডিয়ার জেনারেল পদমর্যাদার কর্মকর্তাদের প্রেষণে অধ্যক্ষ পদে নিয়োগের দাবি জানান। সিভিল প্রশাসকের চেয়ে সেনাবাহিনীর কর্মকর্তাকে অধ্যক্ষ হিসেবে পদায়ন করলে দুর্নীতি, ভর্তি বাণিজ্য কমবে বলে মনে করেন তিনি।

গত ৫ আগস্ট ক্ষমতার পট পরিবর্তনের পর দেশের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ম্যানেজিং কমিটি স্থগিত করে অ্যাডহক কমিটি করা হয়েছে। এসব কমিটিতে আগের মতোই রাজনৈতিক দলের নেতারা প্রভাব বিস্তার করছেন। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানকে রাজনৈতিক প্রভাবমুক্ত রাখতে পরিচালনা পর্ষদ থেকে রাজনৈতিক ব্যক্তিদের অপসারণের দাবি জানিয়েছে অভিভাবক ঐক্য ফোরাম।

জিয়াউল কবির দুলু বলেন, অন্তর্বর্তী সরকার রাষ্ট্র সংস্কারের কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে কমিশন গঠন করছে। কিন্তু শিক্ষার ভয়াবহ অবনতি হওয়া সত্ত্বেও শিক্ষা সংস্কার কমিশন গঠিত হয়নি। দেশের জ্ঞানী-গুণী ব্যক্তি, শিক্ষার্থী, শিক্ষক ও অভিভাবকের সমন্বয়ে পরামর্শক কমিটি গঠন করে কিছু সুপারিশ নিয়ে একটি স্থায়ী শিক্ষা কমিশন গঠন করার দাবি জানান তিনি। একই সঙ্গে শিক্ষার বিভিন্ন অধিদপ্তর, বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন থেকে তাদের আওতাধীন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শক্তিশালী জবাবদিহিমূলক মনিটরিং সেল গঠন করে প্রতিটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সার্বিক কর্মকাণ্ড ও অনিয়ম-দুর্নীতি রোধে তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা গ্রহণেরও  দাবি জানান তিনি। শিক্ষাকে জাতীয়করণের দাবি জানিয়ে তিনি বলেন, শিক্ষা জাতীয়করণ হলে শিক্ষকদের বিদ্যমান সমস্যা ৯৫ শতাংশ থাকবে না। ম্যানেজিং কমিটি/গভর্নিং বডিতে গ্র্যাজুয়েটের নিচে কোনো সদস্য থাকতে পারবেন না– এমন প্রজ্ঞাপন জারি এবং কমিটির নির্বাচনে জাতীয় নির্বাচনের মতো প্রচার করতে না পারার বিধান করারও দাবি জানান অভিভাবক ঐক্য ফোরামের সভাপতি।

এসব দাবি আদায়ে তিন দফা কর্মসূচি ঘোষণা করেন তিনি। এর মধ্যে রয়েছে– শিক্ষা উপদেষ্টার কাছে স্মারকলিপি প্রদান, জনমত গঠনে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে দাবি-দাওয়া সংবলিত লিফলেট বিতরণ ও আগামী ৩ মে জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে মানববন্ধন করা।

লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন সাধারণ সম্পাদক সেলিম মিয়া। এ সময় উপস্থিত ছিলেন ফোরামের সহসভাপতি ইঞ্জিনিয়ার ফাহিম উদ্দিন আহমেদ, আহছান উল্লাহ মানিক, দিলারা আক্তার প্রমুখ।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: র জন ত

এছাড়াও পড়ুন:

লং মার্চে বাধা, সড়কে বসে পড়লেন ইবতেদায়ি শিক্ষকরা

জাতীয়করণের দাবিতে পূর্ব ঘোষিত ‘যমুনা অভিমুখে লং মার্চ’ কর্মসূচি শুরু করতে গিয়ে পুলিশি বাধার মুখে পড়েছেন স্বতন্ত্র ইবতেদায়ি মাদ্রাসার শিক্ষকরা।

রবিবার (২ নভেম্বর) দুপুরে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে লং মার্চের প্রস্তুতিকালে বাধা পেয়ে রাস্তায় বসে পড়েন তারা। এতে পল্টন থেকে কদম ফোয়ারা পর্যন্ত সড়কে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়।

দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে আসা শিক্ষকরা হাতে ব্যানার, ফেস্টুন ও প্ল্যাকার্ড নিয়ে নানা স্লোগান দিতে থাকেন— “এমন কোনো দেশ নাই, চাকরি আছে বেতন নাই”, “ইবতেদায়ি শিক্ষক, হয়েছে কেন ভিক্ষুক?”, “এক দফা এক দাবি, জাতীয়করণ করতে হবে”, “বৈষম্য নিপাত যাক, জাতীয়করণ মুক্ত পাক”। 

এ সময় ঘটনাস্থলে বিপুল সংখ্যক পুলিশ মোতায়েন করা হয়। তারা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে সতর্ক অবস্থানে ছিলেন।

লং মার্চ শুরুর আগে প্রেসক্লাবের সামনে সংক্ষিপ্ত সমাবেশে শিক্ষকদের প্রতি সংহতি প্রকাশ করেন জামায়াতে ইসলামীর নেতাসহ বিভিন্ন সংগঠনের প্রতিনিধিরা।

বক্তারা বলেন,  ইবতেদায়ি শিক্ষকদের দাবি দীর্ঘদিনের এবং সম্পূর্ণ ন্যায্য। তারা ২১ দিন ধরে রাস্তায় অবস্থান করছেন, যা কোনোভাবেই কাম্য নয়। 
সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়ে তারা বলেন, অবিলম্বে জাতীয়করণের ঘোষণা দিয়ে শিক্ষকদের কর্মস্থলে ফেরার সুযোগ দিতে হবে।

আন্দোলনরত শিক্ষকরা জানান, আমলাতান্ত্রিক জটিলতা ও রাজনৈতিক প্রতিহিংসার কারণে জাতীয়করণ প্রক্রিয়া দীর্ঘায়িত হচ্ছে। সরকারের ঘোষণার নয় মাস পেরিয়ে গেলেও তা বাস্তবায়িত হয়নি। ফলে বাধ্য হয়েই তারা আবারও আন্দোলনে নামতে বাধ্য হয়েছেন।

সরকার পর্যায়ক্রমে সব স্বতন্ত্র ইবতেদায়ি মাদ্রাসা জাতীয়করণের ঘোষণা দিলেও বাস্তবায়ন না হওয়ায় শিক্ষকরা দীর্ঘদিন ধরে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে অবস্থান কর্মসূচি পালন করে আসছেন।

ঢাকা/রায়হান/ইভা 

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • লং মার্চে বাধা, সড়কে বসে পড়লেন ইবতেদায়ি শিক্ষকরা