পর্তুগালের মেধাবী তরুণেরা কেন দেশ ছাড়তে চান
Published: 11th, April 2025 GMT
পর্তুগালের মেধাবী তরুণদের অনেকেই বিদেশে চলে যাচ্ছেন। তাঁদের ধরে রাখতে সরকার কর কমানোর মতো উদ্যোগ নিয়েছে। তারপরও তরুণেরা দেশে থাকতে চান না। কিন্তু কেন?
পর্তুগালের একজন নার্স রিটা ব্রাঙ্কো বলছেন, ‘জীবনযাপনের খরচ বাড়ছে, কিন্তু সে অনুপাতে বেতন বাড়ছে না।’
সদ্য চিকিৎসাবিদ্যায় পড়াশোনা শেষ করা কারোলিনা আজেভেদোও দেশ ছাড়তে চান। কারণ হিসেবে তিনি বলেন, ‘প্রথম বছরের মূল বেতন প্রতি মাসে ১ হাজার ৭০০ ইউরো। আমি এক বছর পর্তুগালে কাজ করব যেন অর্থ সাশ্রয় করতে পারি। আর জার্মান ভাষাটা শিখতে পারি। বড় শহরগুলোতে বাসাভাড়া হিসেবে আপনাকে প্রায় ৮০০ বা ৯০০ ইউরো দিতে হয়।’
এক বছর কাজ করার পর আর দেশে থাকতে চান না কারোলিনা। কারণ, তিনি শুধু বেতন নিয়ে হতাশ নন।
পড়াশোনার সময় কারোলিনা বিদেশে ইন্টার্নশিপ করেছেন এবং সেখানে সবকিছু কীভাবে চলে, তা দেখেছেন। তাই তিনি এখন জার্মান ভাষা শিখতে চান, যেন তিনি সুইজারল্যান্ডে চাকরির আবেদন করতে পারেন।
কারোলিনা বলেন, ‘আমার ভাই সেখানে কাজ করে। তার কাছ থেকে আমি সরাসরি তথ্য পাই। সে কারণে আমি নিশ্চিত যে আমি কোনো মায়ার পেছনে ছুটছি না।’
পর্তুগালের সমস্যাগুলোর কথা রাজনৈতিক বিলবোর্ডে লেখা আছে—খুব কম জরুরি কক্ষ, আবাসনের অভাব এবং অবশ্যই মেধা পাচার। পর্তুগিজ সরকার জানে, অনেক তরুণ দেশ ছেড়ে যাচ্ছেন এবং সে কারণে তারা তাঁদের কর মওকুফ করতে চায়।
তরুণেরা দেশ ছাড়ছেন কেন
কর–বিষয়ক সরকারি কর্মকর্তা ক্লাউদিয়া দুয়ার্তে বলেন, ‘এক দশক ধরে আমরা একটি মৌলিক জনসংখ্যাগত সমস্যার সঙ্গে লড়াই করছি। বর্তমানে ভৌগোলিকভাবে পর্তুগালের কাছাকাছি দেশগুলোর তুলনায় আমাদের কম্পিটিটিভনেস, উৎপাদনশীলতা এবং বেতন কম হওয়ার সমস্যা আছে। আমরা বিশ্বাস করি, এ উদ্যোগ সাড়ে তিন লাখ থেকে চার লাখ তরুণ-তরুণীর ওপর প্রভাব ফেলতে পারবে।’
লিসবনকে স্টার্টআপের মক্কা বিবেচনা করা হয়। বায়োটেক কোম্পানি মাইক্রোহার্ভেস্টের মতো আন্তর্জাতিক বিভিন্ন কোম্পানির শাখা লিসবনের ট্যাগাস নদীর তীরে আছে, যেমনটা আছে জার্মানির হামবুর্গেও।
মাইক্রোহার্ভেস্টের প্রতিষ্ঠাতা লুসিয়া ক্রুজ বলেন, ‘লিসবনে আমাদের উপস্থিতির মাধ্যমে আমরা দেখাতে চাই, এখানেও উদ্ভাবনী কাজ করা সম্ভব এবং সেটার সুযোগ আছে।’
পর্তুগালে বড় ও মাঝারি কোম্পানির অভাব আছে। আর করের বোঝা এতটাই বেড়েছে যে এমনকি উৎসাহী উদ্যোক্তারাও স্বীকার করছেন, দীর্ঘ মেয়াদের জন্য এটি একটি বড় সমস্যা।
পর্তুগাল তরুণদের ভালোভাবে প্রশিক্ষণ দেয়। তাঁদের জন্য পর্যাপ্ত আবাসনের ব্যবস্থাও আছে। তারপরও তাঁদের বেশির ভাগই দেশে থাকতে চাইছেন না। যেমন ২৭ বছর বয়সী টিয়াগো। বর্তমানে তিনি লিসবনের একটি ব্যবস্থাপনাবিষয়ক পরামর্শক প্রতিষ্ঠানে কাজ করছেন। তবে কয়েক মাসের মধ্যে ডেনমার্ক চলে যেতে চান।
টিয়াগো বলেন, ‘আমি দেখেছি, সেখানে কাজ এবং পরিবারের মধ্যে খুব স্পষ্ট ও লক্ষণীয় ভারসাম্য রয়েছে। আমি শুধু বেতনের কথা বলছি না, আমি মানুষের ভালো ব্যবহারের কথা বলছি, সরকারি পরিষেবার মান, এমনকি গণপরিবহনের কথাও বলছি।’
এর অর্থ দাঁড়াচ্ছে, নিজ দেশের তরুণদের ধরে রাখার জন্য শুধু কর কমানোই যথেষ্ট নয়।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: পর ত গ ল র ক জ কর সরক র সমস য
এছাড়াও পড়ুন:
বিশ্ব ইজতেমা মার্চে
প্রতিবছর জানুয়ারিতে বিশ্ব ইজতেমার আয়োজন করা হলেও এবার জাতীয় সংসদ নির্বাচনের কারণে তা পিছিয়ে মার্চ মাসে করা হবে।
সোমবার (৩ নভেম্বর) জাতীয় প্রেস ক্লাবে সংবাদ এ তথ্য জানিয়েছেন তাবলিগ জামাত বাংলাদেশ বা শুরায়ী নেজামের শীর্ষ নেতা মুফতি কেফায়েতুল্লাহ আজহারি।
আরো পড়ুন:
শেষ হলো দাওয়াতে ইসলামীর ইজতেমা
দ্বিতীয় পর্বের ইজতেমা শুরু
সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, বিগত বছরগুলোতে দুই পর্বে বিশ্ব ইজতেমা হলেও আগামী বছর এক পর্বে হবে। মাওলানা সাদ কান্ধলভীর অনুসারী বা সাদপন্থিদের ইজতেমা আয়োজনের সুযোগ থাকবে না।
মুফতি কেফায়েতুল্লাহ বলেছেন, “তাবলিগ জামাত বাংলাদেশ তাবলিগি এ মেহনতকে দ্বীনি মেহনত হিসেবে বিশ্বাস করে। দ্বীনি কাজের অংশ হিসেবে বর্তমান সরকারের অনুরোধ শ্রদ্ধার সঙ্গে গ্রহণ করে আমরা আগামী বিশ্ব ইজতেমা মার্চে আয়োজনের বিষয়ে একমত হয়েছি। আমরা বিশ্বাস করি, এ সিদ্ধান্ত রাষ্ট্রীয় কার্যক্রমে সরকারের প্রতি সহযোগিতার শামিল।”
বিশ্ব ইজতেমা সাদপন্থিরা আয়োজন করতে পারবেন কি না, এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, “সরকারের কাছে তারা লিখিত দিয়ে গতবার শেষবারের মতো ইজতেমার আয়োজন করেছিল। সেক্ষেত্রে তাদের আর ইজতেমা করার সুযোগ নেই।”
বিশ্ব ইজতেমা সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করতে সংবাদ সম্মেলনে অন্তর্বর্তী সরকারের কাছে তিনটি অনুরোধ তুলে ধরা হয়।
১. আগামী ডিসেম্বরের প্রথম সপ্তাহের আগেই ইজতেমার দিন-তারিখ ঘোষণা এবং সংশ্লিষ্ট কার্যক্রম শুরু করার জন্য সংশ্লিষ্ট সরকারি সংস্থাগুলোকে অবহিত করা।
২. ইজতেমা যথাযথভাবে সম্পন্ন করতে টঙ্গী বিশ্ব ইজতেমা ময়দানকে অস্থায়ীভাবে কেপিআই (কি পয়েন্ট ইন্সটলেশন) ঘোষণা।
৩. ইজতেমায় আসা বিদেশি অতিথিদের সময়মতো উপস্থিতি নিশ্চিত করতে নভেম্বরের শেষ সপ্তাহে ভিসা সহজীকরণ-সংক্রান্ত পরিপত্র জারি করা।
ঢাকা/রায়হান/রফিক