আর্থিক দুর্নীতির অভিযোগের তদন্তের জন্য আবার তলব করা হলো ভারতের কংগ্রেসের সংসদ সদস্য প্রিয়াঙ্কা গান্ধীর স্বামী রবার্ট ভদ্রকে। আজ মঙ্গলবার সকালে আরও একবার সমন পেয়ে এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেটের (ইডি) দপ্তরে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য হাজির হন রবার্ট।

ইডির দপ্তরে যাওয়ার আগে গণমাধ্যমকে রবার্ট ভদ্র বলেন, দেশের স্বার্থে যখনই তিনি বা তাঁর শ্যালক কংগ্রেসের সংসদ সদস্য রাহুল গান্ধী কিছু বলেন, তখনই তাঁদের কণ্ঠ রোধ করা হয়। এটা প্রতিহিংসার রাজনীতি ছাড়া আর কিছু নয়।

বেআইনি আর্থিক লেনদেন ও বেনামে সম্পত্তি কেনাবেচার মামলায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য রবার্ট ভদ্রকে ইডি আগেও তলব করেছিল। তিনি সেই খবর জানিয়ে আজ মঙ্গলবার বলেন, গত ২০ বছরে ইডি তাঁকে ১৫ বার জিজ্ঞাসাবাদ করেছে। প্রতিবার জেরা করেছে অন্তত ১০ ঘণ্টা করে। ২৩ হাজার নথি প্রস্তুত করা হয়েছে।

৮ এপ্রিল ইডি রবার্টকে তলব করেছিল। কিন্তু তিনি যেতে পারেননি। আজ মঙ্গলবার সেই প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘লুকোনোর কিছুই নেই। এড়ানোরও কিছু নেই। তাই হাজিরা দিতে এসেছি। আশা করি, এবার একটা সুরাহা হবে। আমি সেই আশাতেই আছি।’

গত সোমবার রবার্ট বলেছিলেন, কংগ্রেস চাইলে তিনি রাজনীতিতে নামতে প্রস্তুত। পরিবারের আশীর্বাদ নিয়ে তিনি রাজনীতি শুরু করবেন। আজ মঙ্গলবারই তাঁকে সমন করা হয়।

সেই প্রসঙ্গে টেনে প্রিয়াঙ্কার স্বামী বলেন, যখনই তিনি বা রাহুল দেশ বা রাজনীতি নিয়ে মন্তব্য করেন, রাজনীতিতে আসার ইচ্ছা প্রকাশ করেন, তখনই তাঁর বিরুদ্ধে তদন্তকারী সংস্থা সক্রিয় হয়ে ওঠে। এটাই প্রতিহিংসার রাজনীতি।

হরিয়ানার শিকোহপুর গ্রামে একটি জমি কেনাবেচাসংক্রান্ত দুর্নীতির অভিযোগে রবার্টের বিরুদ্ধে তদন্ত করা হচ্ছে। হরিয়ানা পুলিশের কাছে ২০১৮ সালে এ ঘটনার যে এফআইআর দাখিল করা হয়েছিল, তারই সুবাদে ইডির এই সমন।

হরিয়ানায় কংগ্রেস আমলে জমি কেনাবেচা নিয়ে রবার্টের বিরুদ্ধে একাধিক অভিযোগ রয়েছে। একটি অভিযোগ উঠেছিল ২০০৮ সালে। সেই বছর রবার্টের এক সংস্থা সাড়ে সাত কোটি টাকা দিয়ে এক খণ্ড জমি কেনে।

অভিযোগ উঠেছিল, সেই জমির মিউটেশন মাত্র এক দিনেই সম্পন্ন হয়েছিল। পরে সেই জমি রবার্ট বেচে দেন নগরায়ণ সংস্থা ডিএলএফের কাছে ৫৮ কোটি টাকায়। দীর্ঘদিন ধরে তদন্ত চললেও হরিয়ানার বিজেপি মুখ্যমন্ত্রী মোহনলাল খাট্টার ২০২৩ সালে আদালতে স্বীকার করেছিলেন, ডিএলএফের সঙ্গে রবার্টের সংস্থা স্কাইলাইট হসপিটালিটির জমি চুক্তিতে বেআইনি কিছু ছিল না।

ইডির তদন্তের আওতায় রয়েছে লন্ডনে রবার্ট ও তাঁর স্ত্রী প্রিয়াঙ্কার কেনা একটি সম্পত্তিও। অভিযোগ, ২০০৯ সালে অস্ত্র ব্যবসায়ী সঞ্জয় ভান্ডারির সঙ্গে রবার্ট বেনামে ওই সম্পত্তি কিনেছিলেন। ওই মামলার অভিযোগপত্রে রবার্টের সঙ্গে প্রিয়াঙ্কার নামও রয়েছে। সেই মামলার তদন্তের জন্য ইডি ২০১৯ সালে রবার্টকে জেরা করেছিল।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: রব র ট র কর ছ ল র জন য র জন ত তদন ত

এছাড়াও পড়ুন:

মাঠ নিয়ে শ্রাবণের আফসোস

আলোচনা-সমালোচনার মধ্যেও বসুন্ধরা কিংসের গোলরক্ষক মেহেদী হাসান শ্রাবণ নিজের সেরাটা দেওয়ার চেষ্টা করেছেন। ফেডারেশন কাপের ফাইনালে আবাহনীর বিপক্ষে টাইব্রেকারে কিংসের জয়ের নায়ক ক্যারিয়ার নিয়ে কথা বলেছেন সমকালের সঙ্গে। শুনেছেন সাখাওয়াত হোসেন জয়

সমকাল: দু’দিনের ফাইনালের অভিজ্ঞতাটা কেমন হলো?
শ্রাবণ: (হাসি) না, এটা খুব কঠিন ছিল। আমরা সম্পূর্ণ প্রস্তুতি নিয়েছি এক দিন ফাইনাল খেলব, জিতব এবং উদযাপন করব। কিন্তু প্রাকৃতিক কারণে খেলা অনেকক্ষণ বন্ধ ছিল। বাকি ১৫ মিনিট আরেক দিন। এটা একটা নতুন অভিজ্ঞতা। একই চাপ দু’বার নিতে হলো।

সমকাল: এই মাঠের সমস্যার কারণেই কি এমনটা হয়েছে?
শ্রাবণ: অবশ্যই। এত বড় একটা টুর্নামেন্টের ফাইনাল খেলা যে মাঠে, সেখানে ফ্লাডলাইট নেই। যদি ফ্লাডলাইটের সুবিধা থাকত, ওই দিনই খেলাটা শেষ করা যেত। আমার মনে হয়, দেশের ফুটবলের কিছু পরিবর্তন করা উচিত। বিশেষ করে আমরা যখন জাতীয় দলের হয়ে বিদেশে খেলতে যাই, তখন দেখি অন্যান্য দেশের মাঠ খুব গতিশীল। আমাদের দেশের মাঠগুলো আন্তর্জাতিক পর্যায়ের না। প্রায় সময়ই সমস্যা হয়। আমরা স্লো মাঠে খেলি। বিদেশে গতিশীল মাঠে খেলতে গিয়ে সমস্যায় পড়তে হয়। আমাদের লিগটা যদি আন্তর্জাতিক মানের মাঠে হতো।

সমকাল: পেনাল্টি শুটআউটের সময় কী পরিকল্পনা ছিল আপনার?
শ্রাবণ: আমি আগেও বলেছি যে অনুশীলনের সময় আগের ম্যাচের টাইব্রেকার নিয়ে কাজ করেছি। কে কোন দিকে মারে, সেগুলো ট্রেনিংয়ে দেখিয়ে দিয়েছেন কোচ। কোচের দিকনির্দেশনা অনুযায়ী কাজ করছি এবং সফল হয়েছি।

সমকাল: এমেকার শট ঠেকানোর পর মার্টিনেজের মতো উদযাপন করেছেন। এটি কি আগে থেকেই পরিকল্পনা ছিল?
শ্রাবণ: না, সেভ দেওয়ার পর মাথায় এলো। তাই এমি মার্টিনেজের মতো উদযাপন করেছি। বলতে পারেন, এটি কোনো পরিকল্পনা ছিল না। তৎক্ষণাৎ মাথায় এলো।

সমকাল: জাতীয় দল আর ক্লাব– দুটোর অভিজ্ঞতা যদি একটু বলতেন।
শ্রাবণ: ক্লাব আর জাতীয় দল– দুটো ভিন্ন বিষয়। ক্লাব হচ্ছে শুধু একটা ক্লাবকে প্রতিনিধিত্ব করা। আর জাতীয় দল তো পুরো বাংলাদেশকে প্রতিনিধিত্ব করা। যারা ক্লাবে ভালো পারফরম্যান্স করে, তাদেরই জাতীয় দলে ডাকে। আর জাতীয় দলে ডাক পাওয়াটা একজন প্লেয়ারের সবচেয়ে বড় অর্জন।

সমকাল: আপনি একটি সেভ করেছেন। কিন্তু আবাহনীর মিতুল মারমা পারেননি। জাতীয় দলে বেস্ট ইলেভেনে থাকতে পারবেন?
শ্রাবণ: না না, ব্যাপারটা এমন না। ও (মিতুল) সেভ করতে পারেনি আর আমি পারছি– এটি কিন্তু বড় বিষয় না। ও কিন্তু সেমিফাইনালে সেভ করে দলকে ফাইনালে এনেছে। বরং অনুশীলনে কোচ যাঁকে ভালো মনে করেন, তাঁকেই শুরুর একাদশে রাখেন।

সমকাল: একজন গোলরক্ষক হিসেবে নিজেকে কোথায় দেখতে চান?
শ্রাবণ: আমি চাই দেশসেরা গোলরক্ষক হতে। আমার স্বপ্ন আছে, বিদেশে লিগে খেলব।    

সম্পর্কিত নিবন্ধ