শাহ মো. মোফাচ্ছির আলী ও তাহমিনা আক্তারের সংসার জীবনের শুরু ২০১৬ সাল থেকে। ২০১৮ সালে তাদের ঘর আলো করে আসে প্রথম কন্যাসন্তান। ২০২১ সালে দ্বিতীয় কন্যাসন্তানের মুখ দেখেন এ দম্পতি। এরপর ২০২৫ সালের ১৪ এপ্রিল, মানে বাংলা বছরের প্রথম দিনের প্রথম প্রহরে তৃতীয় কন্যাসন্তান আসে তাদের কোলে। একে একে তিন কন্যা এলো আপনাদের কোলে। কেমন লাগছে? এই প্রশ্নের উত্তরে মোফাচ্ছির আলী বলেন, ‘এই মেয়েটা আমার বেহেশতের টিকিট। তিন কন্যা মা-বাবার জন্য আল্লাহর অনেক বড় নিয়ামত। আমরা স্বামী-স্ত্রী খুব চেয়েছিলাম এবারও আল্লাহ যেন আমাদের মেয়ে দান করেন। আল্লাহ আমাদের কথা রেখেছেন। আমরা এখন এই তিন মেয়েকে যথাযথ বড় করে তুলতে পারলেই হয়। কেননা, এ মেয়েরাই আমাদের বেহেশতের পথ দেখাবে ইনশাআল্লাহ!’
মোফাচ্ছির-তাহমিনার ঘরে একে একে তিন কন্যাসন্তানের জন্ম নেওয়ায় পরিবারে বিরাজ করছে উৎসবের আমেজ। নববর্ষের দিনে তৃতীয় কন্যাসন্তানের জন্ম তাদের আনন্দ যেন দ্বিগুণ করে দিয়েছে। হবিগঞ্জের নবীগঞ্জ উপজেলার মান্দারকান্দি গ্রামের মৃত শাহ মো.
মোহাম্মদ মোফাচ্ছির আলী বলেন, ‘আমার স্ত্রী তাহমিনা আক্তার লিমাকে প্রথম থেকেই ডা. ফেরদৌসী ইসলামের তত্ত্বাবধানে রেখেছি। আল্ট্রার তারিখ অনুযায়ী ১৫ এপ্রিল ছিল সন্তান জন্ম নেওয়ার তারিখ। তবে ১৪ এপ্রিল ভোরেই তাঁর ব্যথা শুরু হয়। সঙ্গে সঙ্গে একটি সিএনজি অটোরিকশায় করে গ্রামের জরাজীর্ণ রাস্তা পেরিয়ে নিয়ে যাই হবিগঞ্জ সদর আধুনিক হাসপাতালে। সকাল ৭টার দিকে তাঁকে হাসপাতালে ভর্তি করা হলে সাড়ে ৭টার দিকে ঘর আলোকিত করে আমার তৃতীয় কন্যাসন্তান। বাহুবল উপজেলার স্নানঘাট গ্রামের তাহমিনা আক্তার লিমার সঙ্গে আমার পারিবারিকভাবেই বিয়ে হয়। বিয়ের পর থেকে আমাদের সংসার সুখে শান্তিতেই চলছে। আল্লাহ আমাকে একে একে তিন কন্যাসন্তান দিয়েছেন; যা পেয়ে আমি খুবই খুশি। আমি চাই আমার সন্তানরা মানুষের মতো মানুষ হোক। বেশি শিক্ষিত নয়, মানুষ হওয়াটাকেই আমি বেশি গুরুত্ব দিচ্ছি। আমার অন্য দুই কন্যাসন্তানের নামের সঙ্গে মিল রেখে আমার প্রবাসী ভাই শাহ মোজাক্কির একটা নাম নির্ধারণ করেছে– নৈশিন আঞ্জুম জেরিন। এ নামই রেখেছি আমরা।’
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: ম ফ চ ছ র আল আল ল হ আম দ র জন ম ন প রথম
এছাড়াও পড়ুন:
যেকোনো উৎসবকে রাজনৈতিক প্রভাবের ঊর্ধ্বে রাখার আহ্বান বাংলা একাডেমির মহাপরিচালকের
কেবল বাংলা নববর্ষই নয়, যেকোনো উৎসবকে রাজনৈতিক প্রভাবের ঊর্ধ্বে রাখার আহ্বান জানিয়েছেন বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক অধ্যাপক মোহাম্মদ আজম।
মঙ্গলবার বিশ্ববিদ্যালয়ের কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং (সিএসই) বিভাগের ভার্চুয়াল ক্লাসরুমে "বাংলা নববর্ষ: ইতিহাস, সংস্কৃতি ও উত্তরাধিকার" শীর্ষক এক সেমিনারে বাংলা নববর্ষের ঐতিহাসিক প্রেক্ষাপট, সাংস্কৃতিক তাৎপর্য ও সামাজিক প্রভাব নিয়ে আলোচনা অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ অনুরোধ করেন।
সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক অধ্যাপক মোহাম্মদ আজম বলেন, কেবল বাংলা নববর্ষই নয়, যেকোনো উৎসবকে রাজনৈতিক প্রভাবের ঊর্ধ্বে রাখা জরুরি। রাজনীতির সঙ্গে রাষ্ট্র ও সমাজের সম্পর্ক সঠিকভাবে গড়ে উঠলে কোনো উৎসবই নেতিবাচকভাবে প্রভাবিত হয় না। মানুষের দৈনন্দিন জীবনে সাংস্কৃতিক চিন্তা-চেতনার যে স্বকীয়তা রয়েছে, তা অক্ষুণ্ন রাখাই আমাদের প্রধান লক্ষ্য হওয়া উচিত। বুদ্ধিভিত্তিক ও সচেতন উদ্যোগের মাধ্যমে ঐতিহ্যকে টিকিয়ে রাখা সম্ভব। বাংলা নববর্ষের প্রতি জনগণের গভীর অনুরাগ রয়েছে, তাই এটিকে রাজনৈতিক প্রভাবমুক্ত রাখতে হবে।
সেমিনারে আইআরডিসি’র সাধারণ সম্পাদক ও বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ তাজাম্মুল হকের সঞ্চালনায় সভাপতিত্ব করেন
আইআরডিসি-এর সভাপতি ও ইতিহাস বিভাগের অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ বিলাল হোসাইন।
সেমিনারে ইতিহাস বিভাগের অধ্যাপক ড. নাছির আহমেদ তার মূল প্রবন্ধে বাংলা নববর্ষের ঐতিহাসিক বিবর্তন এবং নববর্ষ উদযাপনের ঐতিহ্য ও উত্তরাধিকার নিয়ে দুই পর্বে বিশদ আলোচনা করেন। তিনি বলেন, বাংলা নববর্ষ কেবল বাঙালিদের উৎসব নয়, বরং এটি ধর্ম, গোত্র ও সম্প্রদায় নির্বিশেষে সকল বাংলাদেশির একটি সমন্বিত সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। এছাড়া, বাংলা সনের উৎপত্তি, এর অর্থনৈতিক প্রাসঙ্গিকতা এবং ধর্মীয় ও সাংস্কৃতিক মাত্রা নিয়েও তিনি গভীরভাবে আলোকপাত করেন।
এছাড়াও ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. মো. রইছ উদ্দীন এবং বাংলা বিভাগের অধ্যাপক ড. ফজলে এলাহি চৌধুরী প্যানেল আলোচক হিসেবে বক্তব্য প্রদান করেন। তাঁরা বাংলা নববর্ষের আন্তর্জাতিক ও সামাজিক সংহতি এবং সাংস্কৃতিক বিকাশে এর ভূমিকা নিয়ে গুরুত্বপূর্ণ মতামত তুলে ধরেন। একইসাথে বাংলা নববর্ষের বহুমাত্রিক তাৎপর্য ও এর প্রাসঙ্গিকতা নিয়ে গঠনমূলক আলোচনা করেন।
এসময় সেমিনারে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষক, শিক্ষার্থী, গবেষক উপস্থিত ছিলেন।