‘শেষ পর্যন্ত সেমিফাইনালে উঠার আনন্দটাই বড়’
Published: 16th, April 2025 GMT
বার্সেলোনা মঙ্গলবার (১৫ এপ্রিল) দিবাগত রাতে চ্যাম্পিয়নস লিগের কোয়ার্টার ফাইনালের দ্বিতীয় লেগে ৩-১ গোলে হেরেছে বরুশিয়া ডর্টমুন্ডের বিপক্ষে। এরপরও ৫-৩ গোলের অগ্রগামিতায় সেমিফাইনালে উঠেছে কাতালান জায়ন্টরা। তাই ম্যাচ শেষে বার্সা কোচ হান্সি ফ্লিক জানালেন তিনি টুর্নামেন্টের শেষ চারে পৌঁছাতে পেরে আনন্দিত।
সিগনাল ইদুনা পার্কে কোয়ার্টার ফাইনালের দ্বিতীয় লেগে নামার আগে ২০২৫ সালে বার্সা ২৪ ম্যাচে অপরাজিত ছিল। সেরহু গিরাসির হ্যাটট্রিকে সেই রেকর্ড ভাঙে ডর্টমুন্ড। ২০১৯ সালের পর এই প্রথম বার্সেলোনা সেমিফাইনালে উঠেছে। যেখানে তারা বায়ার্ন মিউনিখ বা ইন্টার মিলানের মুখোমুখি হবে।
ম্যাচ পরবর্তী সংবাদ সম্মেলনে বার্সা কোচকে জিজ্ঞাসা করা হয়েছিল ডর্টমুন্ডের ফলাফল অতিরিক্ত নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে কিনা বার্সা খেলোয়াড়দের মনে। জবাবে ফ্লিক বলেন, “আমি মনে করি সবাই দলটির (বার্সার) এই মৌসুমের পারফরম্যান্সকে স্বীকৃতি দিচ্ছে ও দারুণভাবে গ্রহণ করেছে। আজ আমাদের সেরা খেলা হয়নি, কিন্তু আমি মনে করি আমরা এখনো খুশি হওয়ার মতো অবস্থানে আছি।”
আরো পড়ুন:
হেরেও ছয় বছর পর সেমিফাইনালে বার্সা
বার্সার বিপক্ষে ফিরতি লেগে ডর্টমুন্ড কোচের প্রেরণা লিভারপুল
“ড্রেসিং রুমেও ভালো পরিবেশ ছিল না। তখন আমি বললাম, ‘ছেলেরা, আমরা সেমিফাইনালে পৌঁছে গেছি।’ এর পরই যেন একটু প্রাণ ফিরে আসে। তবে অবশ্যই, খেলোয়াড়রা জয় আশা করে। তারা প্রতিটি ম্যাচ জিততে চায়। আজকে তারা কিছুটা হতাশ, তবে আমি মনে করি শেষ পর্যন্ত সেমিফাইনালে উঠার আনন্দটাই বড় হয়ে উঠবে।”
ফ্লিক এই ম্যাচে পেদ্রি ও ইনিগো মার্টিনেজকে বিশ্রাম দেন, আর আলেহান্দ্রো বালদে ছিলেন ইনজুরির কারণে স্কোয়াডের বাইরে। সেই সুযোগে দারুণভাবে কাজে লাগয়ে জয় ছিনিয়ে নেয় ডর্টমুন্ড। তবে শেষ পর্যন্ত শেষ চারে বার্সেলোনা।
ফ্লিক মনে করেন দুই লেগ মিলিয়ে যোগ্য দল হিসেবেই সেমিফাইনালে উঠেছে তারা, “আমরা দুইটি ম্যাচ খেলেছি। প্রথম ম্যাচ ৪-০ জিতেছি, আর এখানে ৩-১ হেরেছি। আমি মনে করি আমরা সেমিফাইনালে উঠার যোগ্য। ডর্টমুন্ড আমাদের কঠিন সময়ে ফেলেছে। পরিবেশ ছিল অসাধারণ, কিন্তু আমরা শেষ চারে পৌঁছেছি।”
“এই ম্যাচ বিশ্লেষণ করাটা গুরুত্বপূর্ণ হবে, তবে আমাদের অনেক ম্যাচ খেলতে হয়েছে, তাই পারফরম্যান্সে পতন আসা স্বাভাবিক। তবে আমি দল নিয়ে সন্তুষ্ট এবং এই মৌসুমের পারফরম্যান্স নিয়ে খুশি। আমরা এখনো তিনটি প্রতিযোগিতায় টিকে আছি। এটি একটি বড় সাফল্য এবং আমরা এতে খুশি হতে পারি।”- ফ্লিক বলেন।
এখন বার্সেলোনার সামনে লা লিগায় সেলটা ভিগো ও মায়োর্কার বিপক্ষে পরপর দুটি হোম ম্যাচ খলবে,। তারা এই মুহুর্তে লিগের শীর্ষে আছে চার পয়েন্টে এগিয়ে থেকে। এরপর ২৬ এপ্রিল তারা কোপা দেল রে'র ফাইনালে রিয়াল মাদ্রিদের মুখোমুখি হবে। আর রক্ষণভাগের খেলোয়াড় জুলেস কুন্দে চান দ্রুত ভুলগুলো শুধরে নিতে, যেগুলো তারা ডর্টমুন্ডে করেছে।
ঢাকা/নাভিদ
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর চ য ম প য়নস ল গ স ম ফ ইন ল
এছাড়াও পড়ুন:
টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের নতুন আসরে বাংলাদেশের প্রতিপক্ষ কারা, খেলা কবে-কোথায়
অভাগাদের বছরে ‘কুফা’ কাটানোর তালিকায় সর্বশেষ নাম দক্ষিণ আফ্রিকা। লর্ডসে গতকাল অস্ট্রেলিয়াকে ৫ উইকেটে হারিয়ে টেস্টের রাজদণ্ড হাতে পেয়েছে টেম্বা বাভুমার দল। প্রোটিয়াদের শ্রেষ্ঠত্বের মধ্য দিয়ে বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের তৃতীয় আসর শেষ হয়েছে।
তবে এর রেশ থাকতেই চলে এসেছে টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের চতুর্থ আসর বা চক্র। ২০২৫-২৭ চক্রের শুরুটা হচ্ছে বাংলাদেশকে দিয়েই। আগামী ১৭ জুন শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে গল টেস্ট খেলতে নামছে নাজমুল হোসেন দল। ২৫ জুন কলম্বোয় শুরু দুই দলের দ্বিতীয় ও শেষ টেস্ট। এবারের টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপ চক্রে এটিই প্রথম সিরিজ।
ক্রিকেটের অভিজাত এই সংস্করণে বাংলাদেশ প্রায় ২৫ বছর পার দিলেও রেকর্ড ভালো নয়। তবে টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপ আসার পর থেকে বাংলাদেশের পারফরম্যান্স ক্রমশ উন্নতির দিকে।
প্রথম চক্রে (২০১৯-২১) কোনো ম্যাচই জিততে পারেনি লাল-সবুজের প্রতিনিধিরা। দ্বিতীয় চক্রে (২০২১-২৩) মাউন্ট মঙ্গানুই টেস্টে ঐতিহাসিক জয় বাদ দিলে বলার মতো কিছু নেই। প্রথম দুই চক্র শেষ করতে হয়েছে পয়েন্ট তালিকার তলানিতে থেকে।
তবে তৃতীয় চক্রে (২০২৩-২৫) বাংলাদেশের পারফরম্যান্স বেশ আশাব্যঞ্জক। ১২ টেস্ট খেলে জিতেছে চারটিতে। এর মধ্যে গত বছর পাকিস্তানকে তাদের মাটিতে ধবলধোলাইয়ের সুখস্মৃতিও আছে। পয়েন্ট তালিকায় অবস্থান ছিল সাত নম্বরে; পাকিস্তান এবং ওয়েস্ট ইন্ডিজের ওপরে। তিন চক্র মিলিয়ে বাংলাদেশ খেলেছে ৩১ টেস্ট। জিতেছে পাঁচটি, ড্র করে দুটি আর হেরেছে ২৪টি।
এবার কী হবে? শ্রীলঙ্কায় যাওয়ার আগে মিরপুরের শেরেবাংলা জাতীয় স্টেডিয়ামে সংবাদ সম্মেলনে আশার বাণীই শুনিয়েছেন অধিনায়ক নাজমুল। তিনি বলেছেন, ‘গত চক্রে আমরা চারটা ম্যাচ জিতেছি। আমাদের একটু উন্নতি হয়েছে। লক্ষ্য থাকবে এই চক্রে কীভাবে আরও একটা-দুইটা ম্যাচ বেশি জিততে পারি।’ সেটা কতটুকু সম্ভব, সময়ই বলে দেবে।
বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের আগের তিন চক্রের মতো এবারও অংশ নিচ্ছে ৯ দল। প্রত্যেক দল খেলবে ছয়টি করে সিরিজ—তিনটি নিজেদের মাঠে, তিনটি প্রতিপক্ষের মাঠে। পয়েন্ট সিস্টেমেও কোনো পরিবর্তন আসেনি (জিতলে ১২, ড্র করলে ৪, টাই করলে ৬ পয়েন্ট)।
তবে এবার ম্যাচের সংখ্যা গত দুবারের চেয়ে একটি বেড়েছে। ফাইনালসহ মোট ম্যাচ হবে ৭১টি, সিরিজ ২৭টি। প্রত্যেক সিরিজেই সর্বনিম্ন দুই ও সর্বোচ্চ পাঁচটি ম্যাচ হবে।
চতুর্থ চক্রের ফাইনালও লর্ডসে আয়োজনের প্রস্তাব করা হয়েছে। এই ম্যাচ হবে ২০২৭ সালের জুনে। ফাইনালের আগে শেষ সিরিজ হবে সেই বছরের মার্চে; পাকিস্তানে দুটি টেস্ট খেলতে যাবে নিউজিল্যান্ড।
এবার সবচেয়ে বেশি ২২ ম্যাচ খেলবে অস্ট্রেলিয়া, দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ২১ ম্যাচ খেলবে ইংল্যান্ড। সবচেয়ে কম ১২টি করে ম্যাচ খেলবে বাংলাদেশ ও শ্রীলঙ্কা, যাদের সিরিজ দিয়েই শুরু হচ্ছে এবারের চক্র। ২০২৫ সালে বাংলাদেশ দলের টেস্ট সিরিজ এই একটিই। নাজমুল-মুশফিক-তাইজুলদের বাকি পাঁচ সিরিজই ২০২৬ ও ২০২৭ সালে। সব সিরিজেই দুটি করে ম্যাচ।
২০২৬ সালে বাংলাদেশের প্রথম সিরিজ মার্চে, ঘরের মাঠে পাকিস্তানের বিপক্ষে। সেই বছরের আগস্টে দল যাবে অস্ট্রেলিয়ায়। ২০০৩ সালের পর অস্ট্রেলিয়ার মাটিতে সেটিই হবে লাল-সবুজের প্রতিনিধিদের প্রথম টেস্ট সিরিজ।
এই চক্রে বাংলাদেশের ঘরের মাঠে দ্বিতীয় সিরিজ খেলবে ২০২৬ সালের অক্টোবরে; খেলতে আসবে ওয়েস্ট ইন্ডিজ। পরের মাসে যাবে দক্ষিণ আফ্রিকা সফরে। বাংলাদেশের শেষ সিরিজ দেশের মাটিতেই; ২০২৭ সালের ফেব্রুয়ারিতে আসবে ইংল্যান্ড। ২০১৬ সালের পর এটিই হবে ইংলিশদের বিপক্ষে প্রথম টেস্ট সিরিজ।
অনুপ্রেরণা জোগানোর মতো খবর হলো ২০২৫-২৭ চক্রে বাংলাদেশ যে ছয় দলের বিপক্ষে খেলবে, এর চারটির বিপক্ষে সর্বশেষ সিরিজে তারা হারেনি। অস্ট্রেলিয়া, ইংল্যান্ড ও ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে সিরিজ ড্র করেছে আর পাকিস্তানকে করেছে ধবলধোলাই (দুই ম্যাচের সিরিজে ২-০ ব্যবধানে জয়)। সিরিজ হেরেছে শ্রীলঙ্কা আর বর্তমান চ্যাম্পিয়ন দক্ষিণ আফ্রিকার কাছে।