রাবিতে সিন্ডিকেট থেকে আওয়ামীপন্থি শিক্ষকদের অপসারণের দাবি
Published: 17th, April 2025 GMT
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে (রাবি) সিন্ডিকেট থেকে আওয়ামীপন্থি শিক্ষকদের অপসারণ ও শিক্ষক নিয়োগে অভিন্ন ইউজিসি নীতিমালা বাস্তবায়নের দাবিতে মানববন্ধন করা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (১৭ এপ্রিল) বিকেল সাড়ে ৫টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনেট ভবন সংলগ্ন প্যারিস রোডে এ মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেন শিক্ষার্থীরা।
এ সময় বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের সাবেক সমন্বয়ক সালাউদ্দিন আম্মার বলেন, “রাবির বর্তমান প্রশাসনের কাছে প্রতিটি দাবি আদায়ের জন্য আমাদের রাজপথে নামতে হচ্ছে। মেডিকেলের সমস্যা, হলের সমস্যা, খাবারের সমস্যা, বিভাগের সভাপতির সমস্যা ইত্যাদি কারণে আমাদের পথে নামতে হচ্ছে। বিপ্লবের প্রায় ৯ মাস হতে চলেছে, কিন্তু আজও আওয়ামীপন্থি শিক্ষকরা ক্যাম্পাসের মধ্যে অবাধে চলাফেরা করছে এবং তারা বিভিন্নভাবে শিক্ষার্থীদের ব্রেইন ওয়াশ করছে।”
আরো পড়ুন:
রাকসুর গঠনতন্ত্র অনুমোদন করে নির্বাচন কমিশন গঠন
১৫ বছরের দুর্নীতির তথ্য উদঘাটনে রাবিতে সত্যানুসন্ধান কমিটি
তিনি বলেন, “আমরা এ ধরনের আওয়ামীপন্থি শিক্ষকদের তালিকা প্রশাসনের কাছে দিয়েছি। কিন্তু এখনো কোনো পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি। রাবির ৩৪ হাজার শিক্ষার্থীর দাবি, অনতিবিলম্বে সিন্ডিকেট থেকে আওয়ামীপন্থি শিক্ষকদের অপসারণ করে বিচারের আওতায় নিয়ে আসতে হবে এবং ইউজিসির অভিন্ন নীতিমালা প্রণয়ন করতে হবে।”
রাবি শাখা ছাত্রশিবিরের সভাপতি মোস্তাকুর রহমান জাহিদ বলেন, “আমাদের রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে কোনো শিক্ষার্থী শিক্ষক হতে পারবে কী পারবে না, তা আওয়ামী সিন্ডিকেট নির্ধারণ করে দিতে পারবে না। আপনারা এসব সুশীলগিরি বাদ দেন। আমরা অনতিবিলম্বে ইউজিসি নীতিমালা বাস্তবায়ন করতে চাই। আপনারা আওয়ামী শিক্ষকদের কথা চিন্তা করেই ইউজিসি নীতিমালা বাস্তবায়ন করতে চান না, আমরা তা বুঝি।”
তিনি আরো বলেন, “অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয় যদি ইউজিসি নীতিমালা বাস্তবায়ন করতে পারে, তাহলে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে বাস্তবায়ন করলে সমস্যা কোথায়, প্রশাসনের কাছে আমার প্রশ্ন থাকলো। আওয়ামী সিন্ডিকেটের স্টেকহোল্ডারদের অনতিবিলম্বে দূরে ঠেলে দিয়ে আমাদের ডিসিশন মেকিংয়ের জায়গায় ছাত্র সংগঠনসহ শিক্ষার্থীদের মতামত নিতে হবে। কারণ ছাত্রদের মাধ্যমেই এই বিপ্লব সংগঠিত হয়েছে।”
ঢাকা/ফাহিম/মেহেদী
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর শ ক ষকদ র র সমস য আম দ র ইউজ স
এছাড়াও পড়ুন:
চামড়াশিল্প ধ্বংস করার ষড়যন্ত্র রুখে দিতে হবে
কোরবানির পশুর চামড়া নিয়ে পতিত ফ্যাসিস্ট আমলের পুরোনো চক্র ও সিন্ডিকেট সক্রিয় হয়ে উঠেছে বলে অভিযোগ করেছে জাতীয় ভোক্তা অধিকার রক্ষা আন্দোলন। এই সিন্ডিকেট ও চামড়াশিল্প ধ্বংসের দেশি-বিদেশি ষড়যন্ত্র রুখে দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছে সংগঠনটি।
গতকাল বৃহস্পতিবার রাজধানীর জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে সংগঠনটি আয়োজিত ‘চামড়া শিল্পের নৈরাজ্য ও সিন্ডিকেট রুখো’ শীর্ষক মানববন্ধনে এসব কথা বলা হয়। এতে সভাপতিত্ব করেন সংগঠনের আহ্বায়ক মির্জা শরিফুল আলম। সভায় বক্তব্য দেন সংগঠনটির চেয়ারম্যান মুহাম্মদ আতা উল্লাহ খান, কলামিস্ট মীর আবদুল আলীম, রাজনীতিবিদ নুরুজ্জামান হীরা, মানবাধিকারকর্মী আব্দুল্লাহ আল-মামুন প্রমুখ।
কয়েক বছর ধরে কাঁচাচামড়ার দাম কমছে। দাম না পেয়ে মৌসুমি ব্যবসায়ীরা চামড়া নদী বা খালে ফেলে দিয়েছেন কিংবা মাটিতে পুঁতে ফেলেছেন– এমন ঘটনাও ঘটছে। এবারও তার ব্যতিক্রম হয়নি। চলতি বছর ৮৫ থেকে ৯০ লাখ পশুর চামড়া সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা রয়েছে ট্যানারি মালিকদের। এর ৬০ থেকে ৭০ শতাংশ সংগ্রহ হয় কোরবানির সময়।
জাতীয় ভোক্তা অধিকার রক্ষা আন্দোলনের চেয়ারম্যান মুহাম্মদ আতা উল্লাহ খান বলেন, এবার বাণিজ্য মন্ত্রণালয় প্রতি বর্গফুট গরুর চামড়ার দাম ৬০ থেকে ৬৫ টাকা নির্ধারণ করে দিলেও বিক্রি হয়েছে ৫৫ থেকে ৬০ টাকায়। কিছু ক্ষেত্রে বর্গফুটের হিসাবে চামড়ার দাম আরও কম পড়েছে। কোরবানিদাতাদের থেকে মৌসুমি ব্যবসায়ীরা ৪০০ থেকে ৬৫০ টাকায় গরুর চামড়া কিনেছেন। সেসব চামড়া আড়তদার ও ট্যানারি মালিকদের কাছে বিক্রি করেছেন ৫০০ থেকে ৮০০ টাকায়। মৌসুমি ব্যবসায়ীরা বাড়ি বাড়ি ঘুরে চামড়া সংগ্রহ করলেও ন্যায্য দাম পাচ্ছেন না। সিন্ডিকেটের কারণে চামড়ার দাম পড়ে গেছে তলানিতে।
তিনি আরও বলেন, প্রতিবছরের মতো এবারও বেশির ভাগ ছাগলের চামড়া নষ্ট হয়েছে। বিদেশি চক্রান্ত ও ষড়যন্ত্রে পা দিয়ে অসাধু ট্যানারি মালিকদের ফ্যাসিস্ট সিন্ডিকেট কৌশলে চামড়ার দাম কমিয়ে লাভবান হলেও ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে দেশের চামড়া শিল্প। দেশে ও বিশ্ববাজারে চামড়াজাত পণ্যের দাম আকাশচুম্বী। অথচ কোরবানির চামড়া শিল্প নিয়ে গভীর চক্রান্ত ও ষড়যন্ত্র চলছে। এ অবস্থা থেকে উত্তরণে বিদেশি বিনিয়োগের সুযোগ সৃষ্টির পাশাপাশি প্রতিযোগিতার সক্ষমতা বাড়াতে হবে।
মানববন্ধনে বক্তারা আরও বলেন, বিদেশি চক্রান্তে দেশের সোনালি আঁশখ্যাত পাট শিল্পকে সুকৌশলে ধ্বংস করা হয়েছে। এবার আরেক সম্ভাবনাময় চামড়া শিল্পকে শেষ করে দেওয়ার ষড়যন্ত্র চলছে। এ ষড়যন্ত্রে পা দিয়ে অসাধু ট্যানারি মালিকদের সিন্ডিকেট কৌশলে চামড়ার দাম কমিয়ে লাভবান হলেও ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে দেশের চামড়া শিল্প। গত বছরের মতো এবারও কম দামে সব ধরনের চামড়া বিক্রি করতে হয়েছে। এতে করে গরিব-অসহায় মানুষ আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন। সিন্ডিকেটকে চিহ্নিত করে আইনের আওতায় আনার দাবি জানান বক্তারা।