জুলাই সনদ প্রণয়নের পর দ্রুতসময়ে নির্বাচনে একমত খেলাফত মজলিস-এনসিপি
Published: 20th, April 2025 GMT
মৌলিক সংস্কারের সম্পন্ন করে সবার ঐকমত্যের ভিত্তিতে জুলাই সনদ প্রণয়ন করে দ্রুতসময়ের মধ্যে নির্বাচনের ব্যবস্থা করার বিষয়ে একমত হয়েছে জাতীয় নাগরিক পার্টি এবং বাংলাদেশ খেলাফতে মজলিস।
আজ রোববার রাজধানীর পুরানা পল্টনে খেলাফতে মজলিসের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে দুই দলের নেতাদের বৈঠকে আটটি বিষয়ে একমত হন তারা। সংলাপ শেষে দুই দলের পক্ষ থেকে এ সব বিষয় জানানো হয়েছে। বৈঠকে এনসিপির পক্ষে দলের আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম, সদস্যসচিব আখতার হোসেন, সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক আরিফুল ইসলাম আদীব, যুগ্ম আহ্বায়ক ড.
অন্যদিকে খেলাফত মজলিসের মহাসচিব ড. আহমদ আবদুল কাদের, নায়েবে আমীর মাওলানা সাখাওয়াত হোসাইন, মাওলানা আহমদ আলী কাসেমী, অধ্যাপক আবদুল্লাহ ফরিদ, যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট জাহাঙ্গীর হোসাইন প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
এনসিপির যুগ্ম আহ্বায়ক ড. আতিক মুজাহিদ বলেন, ‘আমরা মৌলিক সংস্কারে একমত হয়েছি। সবাই মিলে ঐক্যমতের ভিত্তিতে জুলাই সনদ হবে এবং এর পাশাপাশি দ্রুত নির্বাচনের ব্যাপারে আলোচনা হয়েছে। এছাড়াও রাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে যেন বোঝাপড়া থাকে, এ সব বিষয়ে কথা হয়েছে।’
খেলাফত মজলিসের প্রচার ও তথ্য সম্পাদক আবদুল হাফিজ স্বাক্ষরিত বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, ঐক্যমত্যে পৌঁছানো দাবিগুলোর মধ্যে উল্লেখ রয়েছে- চব্বিশের জুলাই অভ্যুত্থানে শহীদদের মর্যাদার সাংবিধানিক স্বীকৃতি দিতে হবে, আহতদের সুচিকিৎসার ব্যবস্থা এবং পারিবারকে পুনর্বাসন করতে হবে। গণহত্যার দায়ে ফ্যাসিবাদী দল হিসেবে আওয়ামী লীগের বিচার করতে হবে। বিচার শেষ না হওয়া পর্যন্ত আওয়ামী লীগের নিবন্ধন স্থগিত করতে হবে ও তাদের রাজনৈতিক ও সাংগঠনিক কার্যক্রমে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করতে হবে। এ লক্ষ্যে জুলাই অভ্যুত্থানকালীন সময়ের মত জাতীয় ঐক্য অটুট রাখতে হবে।
জুলাই গণঅভ্যুত্থানকালীন গণহত্যা, শাপলা চত্বরে গণহত্যা, পিলখানায় বিডিআর হত্যাসহ বিগত ১৫ বছরে গুম, খুন, হত্যায় জড়িতদের দ্রুত বিচার করতে হবে এবং আলেম-উলামাসহ রাজনৈতিক নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে দায়েরকৃত সকল মিথ্যা মামলা দ্রুত প্রত্যাহার করতে হবে।
সয়াবিন তেলের দাম প্রতি লিটারে ১৪ টাকা বৃদ্ধি ও শিল্পখাতে নতুন গ্যাস সংযোগে অতিরিক্ত ৩৩ শতাংশ মূল্যবৃদ্ধির সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার করতে হবে।
গাজায় ইসরায়েলি গণহত্যা বন্ধে জাতিসংঘসহ বিশ্ব সম্প্রদায়কে কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে এবং ভারতীয় মুসলমানদের সম্পদ লুট ও ধর্মীয় স্থাপনা ধ্বংসের জন্য ভারতের মুসলিম ওয়াকফ সংশোধনী বিল বাতিল করতে হবে। ভারতের সংখ্যালঘু মুসলমানদের ওপর জুলুম নির্যাতন বন্ধ করতে হবে।
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: এনস প গণহত য মজল স র করত
এছাড়াও পড়ুন:
হাইতিতে গ্যাং হামলায় ৫০ জনের বেশি নিহত
ক্যারিবীয় দ্বীপপুঞ্জের দেশ হাইতিতে গত সপ্তাহে একাধিক গ্যাং হামলায় ৫০ জনেরও বেশি মানুষ নিহত হয়েছে। জাতীয় মানবাধিকার প্রতিরক্ষা নেটওয়ার্কের (আরএনডিডিএইচ) তথ্যানুসারে, সংকটে জর্জরিত দেশটিতে সর্বশেষ ভয়াবহ গণহত্যার ঘটনা এটি।
মঙ্গলবার (১৬ সেপ্টেম্বর) বার্তা সংস্থা এএফপির বরাত দিয়ে এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে মার্কিন সংবাদমাধ্যম ব্যারন’স।
গতকাল সোমবার এএফপিকে পাঠানো এক প্রতিবেদনে আরএনডিডিএইচ জানায়, গত ১১ ও ১২ সেপ্টেম্বর রাজধানী পোর্ট-অ-প্রিন্সের উত্তর এলাকায় এই হামলাগুলো ঘটে।
ওই প্রতিবেদনে বলা হয়, ‘২০২৫ সালের ১৪ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত নিহত হওয়া বহু মানুষের লাশ এখনও পাওয়া যায়নি। লাশগুলো এখনও ঝোপের মধ্যে পড়ে আছে এবং কুকুর লাশগুলো খেয়ে ফেলেছে।’
পশ্চিম গোলার্ধের সবচেয়ে দরিদ্র দেশ হাইতি। দেশটির একটি অংশ ও রাজধানী পোর্ট-অ-প্রিন্সের বেশিরভাগ এলাকা সশস্ত্র গ্যাংগুলোর নিয়ন্ত্রণে থাকায় সহিংসতা বৃদ্ধি পাচ্ছে।
২০২৪ সালের শুরুর দিকে গ্যাংগুলোর একটি জোট লাগাতার হামলা শুরু করলে পরিস্থিতির চরম অবনতি হয়। যার ফলে প্রধানমন্ত্রী এরিয়েল হেনরি পদত্যাগ করেন এবং প্রেসিডেন্টের অন্তর্বর্তীকালীন পরিষদের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করেন।
হাইতির পুলিশকে সমর্থন করার জন্য কেনিয়ার নেতৃত্বাধীন বহুজাতিক বাহিনী মোতায়েন করার পরও সহিংসতা দমন করা সম্ভব হয়নি।
আরএনডিডিএইচ জানিয়েছে, ভিভ আনসানম গ্যাং জোট, যারা ২০২৪ সালের মার্চ মাস থেকে ক্যাবারেট শহরের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে, তারা গত সপ্তাহে নিকটবর্তী ল্যাবোডেরি শহরে বেসামরিক জনগণের বিরুদ্ধে অত্যন্ত নিষ্ঠুর গণহত্যা চালিয়েছে। শহরটি রাজধানী পোর্ট-অ-প্রিন্স থেকে প্রায় ২৫ কিলোমিটার উত্তরে অবস্থিত।
সংস্থাটি আরো জানায়, ‘তারা ৫০ জনেরও বেশি মানুষকে হত্যা করেছে এবং বেশ কয়েকটি বাড়িতে আগুন ধরিয়ে দিয়েছে।’
প্রতিবেদনে আরো বলা হয়, ‘বেঁচে থাকা কয়েকজন পার্শ্ববর্তী এলাকায় পালিয়ে যেতে সক্ষম হন। অন্যান্যরা আক্রমণকারীদের হাত থেকে বাঁচতে নৌকায় করে সমুদ্রে পালিয়ে যায়।’
জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস গত মাসে সতর্ক করে বলেছেন, হাইতিতে ‘রাষ্ট্রীয় কর্তৃত্ব ভেঙে পড়ছে।’
তিনি নিরাপত্তা পরিষদকে সতর্ক করে বলেন, হাইতির রাজধানীর বাইরেও সহিংসতা ছড়িয়ে পড়ছে। সেখানকার ৯০ শতাংশ অঞ্চলের ওপর গ্যাংগুলোর নিয়ন্ত্রণ রয়েছে।
রবিবার, তিনি ক্যাবারে কমিউনে হামলার নিন্দা জানিয়েছেন এবং দেশগুলোকে প্রয়োজনীয় ‘সরবরাহ, কর্মী ও তহবিল দিয়ে বহুজাতিক নিরাপত্তা সহায়তা মিশনকে শক্তিশালী করার প্রচেষ্টা ত্বরান্বিত করার’ আহ্বান জানিয়েছেন।
জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক হাইকমিশনারের তথ্যানুসারে, চলতি বছরের প্রথমার্ধে হাইতিতে কমপক্ষে ৩ হাজার ১৪১ জন নিহত হয়েছে।
ঢাকা/ফিরোজ