ব্যর্থতা স্বীকারের সঙ্গে বাস্তবতার আয়নায় সালাহউদ্দিন
Published: 20th, April 2025 GMT
‘‘একটা জাতীয় দলের যতটুকু প্রস্তুতি নেওয়ার দরকার ছিল, সিলেটে এসে আমরা সেটা পেয়েছি। আমরা ভালো করতে পারিনি এটা আমাদের ব্যর্থতা।’’
‘‘নিজেদের উন্নতির ব্যাপারে তারা অনেক বেশি সচেতন। হয়তো আমরা খুবই খারাপ খেলেছি। তাদের বড় হওয়ার ইচ্ছা নেই, এটা বলা যাবে না।’’
‘‘আজকে ব্যাটিং মোটেও ভালো হয়নি। বোলিংও ভালো হয়নি। চেষ্টা করবো এই জায়গা থেকে আমরা কিভাবে ম্যাচে তাড়াতাড়ি ফিরতে পারি।’’
আরো পড়ুন:
গা-ছাড়া ক্রিকেটে ডুবল আশার সূর্য
অবশেষে জিম্বাবুয়ে সিরিজ সম্প্রচারকারী চ্যানেল পেলো বিসিবি
বাংলাদেশের যে কোনো ব্যর্থতার দিনে দলের প্রতিনিধিরা যে সকল কথা গণমাধ্যমে এসে বলেন বিগত কয়েক বছর কিংবা তার-ও বেশি সময় আগে, আজ সিলেট আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে দলের সিনিয়র সহকারী কোচ মোহাম্মদ সালাউদ্দিন সেই কথাগুলোই বললেন। তাইতো সংবাদ সম্মেলন থেকে বেরিয়ে এক সাংবাদিক সরাসরিই বললেন, ‘‘বিশ বছর ঘুরিয়ে পেচিয়ে একই কথা বলে যাচ্ছেন।’’
জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে ১৯১ রানে অলআউট বাংলাদেশ। ব্যর্থতার কোনো অজুহাত থাকতে পারে না। জিম্বাবুয়ে দলে বড় কোনো নাম নেই। যারা আছেন তারা আহামরি বোলিংও করেননি। তারপরও কেন দুইশ ছুঁতে পারেনি বাংলাদেশ। ব্যর্থতার কোনো অজুহাত দেননি সালাহউদ্দিন। ক্রিকেটাররাও নিজেদের দোষ স্বীকার করে নিয়েছেন বলে দাবি করেছেন।
‘‘আমিও মনে করি টেকনিক্যালি আমরা কিছু মিসটেক করেছি। ম্যাচের মধ্যে হঠাৎ করে বাজে শট খেলে ফেলেছি। যখনই কামব্যাক করছি তখনই একটা সেট ব্যাটসম্যান আউট হয়ে গেছে। ম্যাচ অ্যাওয়ারনেসের ঘাটতির উত্তর আসলে সবাই জানে। এটা থেকে কিভাবে আমরা উত্তরণ করতে পারি সেটা আমাদের বের করতে হবে।’’
প্রশ্ন উঠছে, আধুনিক ক্রিকেট যে উচ্চতায় গিয়েছে। বড় দলগুলো নিজেদেরকে যেভাবে তৈরি করছে। সামর্থ্যের জানান দিচ্ছে সেই উচ্চতায় পৌঁছতে বাংলাদেশ ক্রিকেটের কত সময় লাগতে পারে? সালাউদ্দিন এবার বাংলাদেশ ক্রিকেটের বাস্তব চিত্রটা তুলে ধরার চেষ্টা করলেন একটু ভিন্ন আবহে।
সরাসরি উত্তর দেওয়ার পরিবর্তে সালাহউদ্দিন এবার কৌশলী। দায় চাপানোর চেষ্টা করলেন দেশের ক্রিকেটের স্ট্রাকচারের ওপর, ‘‘দেখুন, আমি আপনাদেরকে একটা কথা বলি। একটা দেশ যদি.
‘‘এমনকি আপনারাও (সাংবাদিক) যদি ভালো লেখা না লেখেন, ওটাও বোঝা যাবে আমাদের মানটা কীরকম। সবকিছু বোঝা যাবে...একটা দেশের অর্থনীতি যেভাবে আগায়, একটা দেশের ক্রিকেটও সেভাবে আগাবে। শুধু খেলোয়াড়দের দোষ দিয়ে কোনো লাভ নাই। আমি মনে করি সবাইকে মিলেই কাজ করতে হবে। দোষাদোষী, রেষারেষি না। এর মধ্যে আমরা কীভাবে ভালো করতে পারি সেদিকে লক্ষ্য রাখা উচিত।’’ – যোগ করেন তিনি।
বড় দল হতে কত সময় লাগবে তা অজানা সালাহউদ্দিনেরও, ‘‘একটা দেশের ক্রিকেট কীভাবে আগাবে, এখানে সবারই সাহায্য করতে হবে। এখানে কেউ একা বের করতে পারবে না। আমার কোচ ভালো হলেও চলবে না, আমার খেলোয়াড় ভালো হলেও চলবে না, আমার সঙ্গে আরও অনেক কিছু ভালো হতে হবে। এখন যদি বলেন কতদিন অপেক্ষা করতে হবে, এটা আমার নিজেরও প্রশ্ন।’’
তবে এভাবে চলতে থাকলে যে অদূর ভবিষ্যতে আরো খারাপ দিন অপেক্ষা করছে তা বলতে দ্বিধা করলেন না সালাহউদ্দিন, ‘‘কত ইনিংস দেবো সেটা তো বলে দেওয়া যাবে না। সবকিছু দ্রুত করতে হবে। এটা আমরা খুব বেশি অপেক্ষা করতে পারবো না। কারণ, আন্তর্জাতিক দল ফল না করলে আমাকে সবসময় স্বীকার করে নিতে হবে। এটা আসলে আল্টিমেটলি পুরোটা জাতীয় দল কী করছে। একটা দেশের ক্রিকেট কীরকম করছে সেটা নির্ভর করে আপনার জাতীয় দল কেমন খেলছে। তার জন্য যা যা করা দরকার, তা তা করতে হবে।’’
সমস্যার গভীরে সালাহউদ্দিন নিজেও যেতে পারছেন না তা বোঝা গেল কথায়, ‘‘আমি কাছ থেকে দেখছি, ছেলেদের মানসিকতা বলেন, কাজের পরিধি বলেন, নিজের ইচ্ছে বলেন, তাদের সবই আছে। কিন্তু এটা (উন্নতি) শুধু তাদের একার পক্ষে সম্ভব না। পারিপার্শ্বিক অনেক ব্যাপার আছে যেগুলো সবসময় বলতে পারি না, বলা উচিতও না। আপনাদের একটু সময় দিতে হবে।’’
সিলেট/ইয়াসিন/আমিনুল
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর স ল হউদ দ ন আপন র
এছাড়াও পড়ুন:
৫ আগস্টের মধ্যে জুলাই সনদ না হলে অবরোধের হুঁশিয়ারি আপ বাংলাদেশের
জুলাই সনদ ও ঘোষণাপত্র জারির দাবিতে অন্তর্বর্তী সরকারকে ৫ আগস্ট পর্যন্ত সময় বেঁধে দিয়েছে ইউনাইটেড পিপলস (আপ) বাংলাদেশ। আজ শুক্রবার রাজধানীর শাহবাগে গণজমায়েত থেকে এ ঘোষণা দেওয়া হয়। দাবি পূরণ না হলে ৬ আগস্ট থেকে দেশজুড়ে অবরোধ কর্মসূচি পালনের হুঁশিয়ারি দিয়েছে সংগঠনটি।
‘৩৬ জুলাইয়ের মধ্যে জুলাই ঘোষণাপত্র ও সনদের দাবি’ শীর্ষক গণজমায়েতে অংশ নেন দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে আসা আপ বাংলাদেশের নেতা–কর্মীরা। জুলাই গণ–অভ্যুত্থানের এক বছর পার হলেও জুলাই সনদ ও ঘোষণাপত্র জারি না হওয়াকে অন্তর্বর্তী সরকারের ব্যর্থতা হিসেবে দেখছেন তাঁরা।
আপ বাংলাদেশের আহ্বায়ক আলী আহসান জুনায়েদ বলেন, ‘আমরা একটি বৈষম্যহীন বাংলাদেশ চেয়েছিলাম। কিন্তু আহতদের ভাগ্যের পরিবর্তন হয়নি। আমরা দেখেছি, যারা জুলাইয়ের নেতৃত্বে ছিল, জুলাইয়ের পরে তাদের পকেট ভারী হয়েছে। আমি বলতে চাই, আপনাদের এই পকেটের হিসাব দিতে হবে।’
অন্তর্বর্তী সরকারকে উদ্দেশ করে আলী আহসান বলেন, ‘আপনারা জুলাই ঘোষণাপত্র দিতে পারবেন কি পারবেন না, তা জানান; না পারলে আমরা আছি। যারা জীবন দিতে প্রস্তুত ছিলাম, বাংলাদেশের (সেই) ২০ কোটি জনগণ জুলাই ঘোষণাপত্র জারি করবে।’
আপ বাংলাদেশের আহ্বায়ক বলেন, ‘৩৬ জুলাইয়ের মধ্যে যদি জুলাই ঘোষণাপত্র না হয়, তাহলে ৬ আগস্ট থেকে দেশজুড়ে অবরোধ শুরু হবে। এ সরকারের কোনো হুমকি আমাদের দমিয়ে রাখতে পারবে না।’
গণজমায়েতে অংশ নিয়ে ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরীফ ওসমান বলেন, আপ বাংলাদেশের নেতারা এখনো কোনো প্রটোকল ছাড়া রাস্তাঘাটে হাঁটেন। কিন্তু তাঁরা যেদিন প্রটোকল নিতে শুরু করবেন, সেদিন থেকে তাঁদের বিরুদ্ধেও তিনি কথা বলা শুরু করবেন।
জুলাই সনদ ও ঘোষণাপত্র জারির আহ্বান জানিয়ে শরীফ ওসমান বলেন, এখন পর্যন্ত বিদ্যমান আইনি কাঠামোয় জুলাই শহীদেরা রাষ্ট্রদ্রোহী। তাঁদেরকে আইনি স্বীকৃতি দেওয়া হয়নি। আজকের মধ্যে সরকার দিনক্ষণ না জানালে আগামী ৩ তারিখ (আগস্ট) ইনকিলাব মঞ্চের উদ্যোগে কফিন মিছিল নিয়ে সচিবালয় অবরোধ করা হবে।
বিগত এক বছর থেকে একটি দুর্বল সরকার দেশ চালাচ্ছে উল্লেখ করে আপ বাংলাদেশের সদস্যসচিব আরেফিন মোহাম্মদ বলেন, ‘জুলাই গণ–অভ্যুত্থানের এক বছর পূর্তিতে ঘোষণাপত্রের জন্য আমাদের আবারও গণজমায়েত করতে হচ্ছে। এর চেয়ে লজ্জাজনক আর কী হতে পারে?’
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী এ বি জুবায়ের বলেন, ‘আমরা যে মৌলিক সংস্কার চেয়েছিলাম, এখনো তার কিছুই হয়নি। এখনো শহীদ পরিবারের পুনর্বাসন ও আহতদের চিকিৎসা নিশ্চিত হয়নি। আমি উপদেষ্টাদের উদ্দেশে বলতে চাই, অবিলম্বে জুলাই সনদ ঘোষণা করুন। আপনাদের কাছে আমাদের চাওয়া–পাওয়া খুব বেশি নেই।’
গণজমায়েতে র্যাপ গান পরিবেশন করেন আপ বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় সদস্য আহনাফ তাহমিদ। স্বাগত বক্তব্য দেন জুলাই শহীদ ওসমান পাটোয়ারীর বাবা আবদুর রহমান। গণজমায়েতে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন আপ বাংলাদেশের প্রধান সমন্বয়কারী রাফে সালমান রিফাত, প্রধান সংগঠক নাঈম আহমেদ, মুখপাত্র শাহরিন সুলতানা প্রমুখ।