উইকেটটা তাইজুল ইসলাম নিজেও পেতে পারতেন। কিন্তু হাতের মুঠোয় পাওয়া লোপ্পা সুযোগ নিতে পারেননি সাদমান ইসলাম। নিজের বোলিংয়ে তাইজুল উইকেট না পেলেও সতীর্থ মেহেদী হাসান মিরাজকে বঞ্চিত করেননি। এক্সট্রা কাভারে দাঁড়িয়ে অনেক উচুঁতে ওঠা বল তাইজুল মুঠোবন্দি করেন অতি সহজে। তাতে ঘরের মাঠে ২০২২ সালের পর মিরাজ পান ফাইফারের স্বাদ।

ওই উইকেট দিয়ে জিম্বাবুয়ে প্রথম ইনিংসে ৮২ রানের লিড নিয়ে গুটিয়ে যায় ২৭৩ রানে। প্রথম ইনিংসে ১৯১ রান করা বাংলাদেশ সোমবার দ্বিতীয় দিনের শেষ বিকেলে ১৩ ওভার খেলার সুযোগ পায়। কেবল সাদমান ইসলাম সাজঘরে ফিরলেও একই পথ ধরার সুযোগ তৈরি করেছিলেন মাহমুদুল হাসান জয়ও। স্লিপে সেই সুযোগ নিতে পারেননি জিম্বাবুয়ের ফিল্ডাররা। তাতে ১ উইকেটে ৫৭ রান নিয়ে দিন শেষ করেছে বাংলাদেশ। অতিথিদের থেকে এখনো ২৫ রানে পিছিয়ে বাংলাদেশ। হাতে ৯ উইকেট রেখে দ্বিতীয় ইনিংসে কত রান নিরাপদ হতে পারে?

ক্যারিয়ারের ১১তম বার ৫ উইকেটের স্বাদ পাওয়া মিরাজ জানালেন, ৩৫০ থেকে ৪০০ রান হতে পারে নিরাপদ স্কোর। জিম্বাবুয়েকে চতুর্থ ইনিংসে অন্তত ৩০০ রানের টার্গেট দিতে চায়। তাতে ম্যাচ জয় করা সম্ভব সেই প্রত্যাশার কথাও শুনিয়ে গেছেন তিনি। দিনের শেষে মিরাজের মুখে চওড়া হাসি থাকলেও এই উপলক্ষ্য তৈরি করে দিয়েছেন পেসার নাহিদ রানা। বিনা উইকেটে ৬৭ রানে দিন শুরু করা জিম্বাবুয়ে শিবিরে প্রথম সেশনে কাঁপন ধরিয়েছিলেন নাহিদ। তাকে সঙ্গ দেন দুই পেসার হাসান মাহমুদ ও সৈয়দ খালেদ আহমেদ।

আরো পড়ুন:

ইতিবাচক মানসিকতায় সর্বদা ফ্রন্ট ফুটে থাকতে চাই: সিমন্স

জাতীয় দলের বাইরে রিসোর্স কম, মনে করিয়ে দিলেন সালাউদ্দিন

নাহিদ বর্তমানে পেস বোলিংয়ের এক্স-ফ্যাক্টর। দলের অন্যতম ভরসা। গতির ঝড় তুলে নাহিদ প্রত্যাশা মিটিয়েছেন। অধিনায়ক তার কাছে ১৪০ কি.

মি.র বেশি বল চেয়েছিলেন। দিনের শুরু থেকে নাহিদ অক্ষরে অক্ষরে পালন করেছেন দলের নির্দেশনা। তাতে মিলেছেও সাফল্য। বাঁহাতি ওপেনার বেন কারেনকে শর্ট বলে শর্ট মিড উইকেটে তালুবন্দি করানোর পর ডানহাতি ব্যাটসম্যান ব্রায়ান বেনেটকে উইকেটের পেছনে আউট করেন। আক্রমণ অব্যহত রাখা হাসান উপচে ফেলেন নিক ওয়েলসের স্টাম্প।

মধ্যাহ্ন বিরতির আগে পেসার নাহিদের আরেকটি সাফল্য বাংলাদেশকে লড়াইয়ে এগিয়ে নেন। জিম্বাবুয়ের অধিনায়ক ক্রেইগ আরভিন তার লাফিয়ে উঠা বলে ব্যাটের খোঁচা দিয়ে উইকেটের পেছনে ক্যাচ দেন। বাংলাদেশের আবেদনে সাড়া দেননি আম্পায়ার কাটেলবারোহ। রিভিউ নিয়ে বাংলাদেশ পায় চতুর্থ উইকেটের দেখা। প্রথম সেশনে ৬২ রানে ৪ উইকেট নিয়ে বাংলাদেশ এগিয়ে যায়।

তবে দ্বিতীয় সেশনে অতিথিরা জবাব দেয়। ২ উইকেট হারিয়ে তোলে ৮০ রান। তবে বাংলাদেশের বিপদ বড় বাড়েনি। কেননা শন উইলিয়ামস ও ওয়েসলি মাধভেরেকে ফেরাতে পেরেছিল। জিম্বাবুয়ের হয়ে সর্বোচ্চ ৫৯ রান করা উইলিয়ামস পথ ভুললেন ভুল শটে। মিরাজকে এগিয়ে এসে শট খেললেন। লং অনে তোলা বল সহজে নিয়ে নেন জয়। মিরাজের প্রথম সাফল্যে ডুব দেওয়ার আগে খালেদ উপচে ফেলেন মাধভেরের উইকেট।

দ্বিতীয় সেশনের বাকি সময়টা উইকেটরক্ষক ব্যাটসম্যান মায়াভো ও ওয়েলিংটন মাসাকাদজা কাটিয়ে দেন। বাংলাদেশ কিছুটা ব্যাকফুটে চলে গেলে শেষ সেশনে ঠিকই ৪ উইকেট নেয় প্রথম ঘণ্টায়। সবকটিই নেন মিরাজ। তাতে লিড শতরান ছুঁতে দেয়নি বাংলাদেশ। মিরাজ ৫২ রানে ৫ উইকেট নিয়ে বাংলাদেশকে লড়াইয়ে ফেরালেও ব্যাটিংয়ে আবার ডুবতে বসেছিল। পেসার মুজারাবানির বলে মাত্র ৪ রানে সাদমান আবার উইকেটের পেছনে ক্যাচ দেন। তাতে ১৩ রানে উদ্বোধনী জুটি ভাঙে বাংলাদেশের। ২৮ রান করা জয়ও ফিরতে পারতেন। কিন্তু দুইবার স্লিপে ক্যাচ দিয়ে বেঁচে যান। তার সঙ্গে ১৫ রানে অপরাজিত আছেন মুমিনুল। স্কোরবোর্ডে রান ৫৭।

বাংলাদেশের লক্ষ্য দ্বিতীয় ইনিংসে ভালো কিছু করে ম্যাচটা জেতার। প্রথম ইনিংসে ব্যাটিং ব্যর্থতা ভুলে দ্বিতীয় ইনিংসে কামব্যাক করতে পারে কিনা সেটাই দেখার। দিনের শেষটা মিরাজময় হয়ে থাকলেও নাহিদের শুরুর আক্রমণেই হাসি ফুটেছে বাংলাদেশ শিবিরে। তার শুরুর গতির ঝড় ও ৩ উইকেটই দিয়েছে বড় ধাক্কা। একদিক থেকে তিন পেসারের নিয়ন্ত্রিত বোলিং। আরেক প্রান্তে তাদের সঙ্গে তাল-লয় মেনে বোলিং করে যাওয়া এক স্পিনার। চতুষ্টয়ের এই আক্রমণে আড়াল হয়েছে আরেক স্পিনার তাইজুলের নির্বিষ পারফরম্যান্স। দ্বিতীয় ইনিংসে তার বোলিং কার্যকারী হলে সাফল্য আসতে কতক্ষণ?

ঢাকা/আমিনুল

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর দ ব ত য় ইন উইক ট ন উইক ট র স ফল য ত ইজ ল প রথম

এছাড়াও পড়ুন:

লামিনে ‘মেসি’ ইয়ামাল

১৭ বছর বয়সী ক্রিস্টিয়ানো রোনালদো: ১৯ ম্যাচ, ৫ গোল, ৪ গোলে সহায়তা।

১৭ বছর বয়সী লিওনেল মেসি: ৯ ম্যাচ, ১ গোল, গোলে সহায়তা নেই।

১৭ বছর বয়সী লামিনে ইয়ামাল: ১০০ ম্যাচ, ২২ গোল, ৩৩ গোলে সহায়তা।

মেসি–রোনালদোর সঙ্গে তুলনা নয়, লামিনে ইয়ামালের শুরুটা বোঝাতে এই পরিসংখ্যান হাজির করেছে টিএনটি স্পোর্টস। ধূমকেতুর মতো শুরু হলেও ধূমকেতুর মতোই মিলিয়ে যাওয়ার পাত্র তিনি নন।

বার্সেলোনার এস্তাদি অলিম্পিক লুইস কোম্পানিসে  গত রাতের ম্যাচটি স্মরণ করতে পারেন। ৬ গোলের থ্রিলার, যেখানে বার্সেলোনা–ইন্টার মিলান সেমিফাইনাল প্রথম লেগের ‘ক্লাসিক’ লড়াই ৩–৩ গোলে অমীমাংসীত। দুই দলের হয়েই ‘সুপার হিরো’ ছিলেন বেশ কজন। ইন্টারের যেমন ডেনজেল ডামফ্রিস ও মার্কাস থুরাম, বার্সার তেমনি রাফিনিয়া, ফেরান তোরেসরা। কিন্তু সবাইকে ছাপিয়ে ঠিকই রবির কিরণের মতো আলো দিয়েছেন এক কিশোর—লামিনে ইয়ামাল নাসরাউয়ি এবানা। সংক্ষেপে লামিনে ইয়ামাল।

আরও পড়ুন৬ গোলের থ্রিলারে বার্সেলোনা–ইন্টার সেয়ানে সেয়ানে টক্কর৮ ঘণ্টা আগে

২৪ মিনিটে ইয়ামালের করা গোলটির প্রসঙ্গে পরে আসা যাবে। যেভাবে খেলেছেন তাতে গোলটি না করলেও লোকে কাল রাতে তাঁর পারফরম্যান্স মনে রাখতেন। পরিসংখ্যান বলছে ১০২টি টাচ, একটি গোল, ২টি গোল হওয়ার মতো পাস, ৬টি শট (পোস্টে মেরেছেন দুবার) এবং ১০টির মধ্যে ৬টি সফল ড্রিবলিং।

কিন্তু পরিসংখ্যানে এ তথ্য নেই—মাঠে ডান প্রান্তকে ইয়ামাল ফাইনালে ওঠার হাইওয়ে বানিয়ে যতবার কাট–ইন করে ইন্টারের বক্সে ঢুকেছেন, সেটা আসলে ইতালিয়ান ক্লাবটির রক্ষণের জন্য দুঃস্বপ্নের। প্রতিবারই মৌমাছির মতো ছেঁকে ধরা হয়েছে ইয়ামালকে। কিন্তু আটকানো কি সম্ভব হয়েছে? রাত থেকেই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভিডিওগুলো ভাসছে। সেসব আসলে ইয়ামালের পায়ের কারুকাজে ইন্টারের রক্ষণকে স্রেফ খোলামকুচির মতো উড়িয়ে দেওয়ার ভিডিও।

ইয়ামাল কত ভয়ংকর সেটা এই এক ছবিতেই পরিস্কার। সবাই ছেঁকে ধরেও তাঁকে আটকাতে পারেননি

সম্পর্কিত নিবন্ধ