পোপ ফ্রান্সিসের মৃত্যুতে বিশ্বনেতাদের শোক
Published: 21st, April 2025 GMT
পোপ ফ্রান্সিস আজ সোমবার সকাল ৭টা ৩৫ মিনিটে ভ্যাটিকানে নিজ বাসভবন কাসা সান্তা মার্তায় মারা গেছেন। এক যুগের বেশি ক্যাথলিক চার্চের প্রধান যাজক হিসেবে দায়িত্ব পালনকালে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখেছেন পোপ ফ্রান্সিস। তাঁর মৃত্যুতে বিশ্বের উল্লেখযোগ্য প্রায় সব নেতাই শোক প্রকাশ করেছেন।
সমাজের দরিদ্র ও প্রান্তিক মানুষের প্রতি পোপ ফ্রান্সিসের বিশেষ দরদ ছিল। তাঁদের উন্নতির জন্য তিনি সব সময় কথা বলেছেন। বিশ্ব শান্তি ও পরিবেশ রক্ষায়ও তিনি ছিলেন উচ্চকণ্ঠ। ইউক্রেন ও গাজা যুদ্ধ বন্ধে তিনি প্রায় সময় আহ্বান জানাতেন।
এক শোকবার্তায় ইতালির প্রধানমন্ত্রী জর্জিয়া মেলোনি বলেন, ‘পোপ ফ্রান্সিসের মৃত্যুর খবর আমার জন্য একটি বড় ধাক্কা। আমরা একজন মহান ব্যক্তি ও অভিভাবককে হারালাম। তাঁর বন্ধুত্ব, উপদেশ ও শিক্ষা লাভের সুযোগ আমার হয়েছিল। নিজের খারাপ সময়েও তিনি আমাকে উপদেশ দেওয়া অব্যাহত রেখেছিলেন। ভারাক্রান্ত হৃদয়ে আমি তাঁকে বিদায় জানাচ্ছি।’
পোপ ফ্রান্সিস ১৯৩৬ সালে আর্জেন্টিনার বুয়েনস এইরেসে জন্মগ্রহণ করেছিলেন। দেশটির প্রেসিডেন্ট হাভিয়ের মিলেই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে লিখেছেন, ‘আজ সকালে পোপ ফ্রান্সিসের (জর্জ বারগোগ্লিও) মৃত্যুর খবর জেনে আমি গভীরভাবে দুঃখিত। তিনি শান্তিতে থাকুন। তাঁর সঙ্গে কিছু মতপার্থক্য ছিল, যা আজ গৌণ মনে হচ্ছে। তিনি ছিলেন এক প্রাজ্ঞ ব্যক্তি। তাঁর সঙ্গে সাক্ষাৎ ছিল আমার জন্য সম্মানের।’
দুঃসময়ে পোপ ফ্রান্সিস সব সময় পাশে ছিলেন জানিয়ে ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট এমানুয়েল মাখোঁ সাংবাদিকদের বলেন, ‘যুদ্ধ ও নিষ্ঠুরতার সময়ে সবচেয়ে অসহায় মানুষের পক্ষে কথা বলতেন তিনি। তাঁর মৃত্যুর শূন্যতা বিশ্বের ক্যাথলিক সমাজের পাশাপাশি ফ্রান্সেও দারুণভাবে অনুভূত হবে।’
পোপ ফ্রান্সিসের মৃত্যুতে প্রার্থনা করছেন এক নারী। আর্জেন্টিনার বুয়েনস আইরেসের মেট্রোপলিটন ক্যাথিড্রালের ভেতরে, ২১ এপ্রিল ২০২৫.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
দুর্নীতির অভিযোগে সহযোদ্ধাদের হাতে অবরুদ্ধ ছাত্র সমন্বয়ক ফাহিম
রংপুরের পীরগাছায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের স্থানীয় সমন্বয়ক ফারদিন এহসান মাহিমের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ তুলেছেন তারই সহযোদ্ধারা।
সোমবার (১৬ জুন) দুপুর ১টার দিকে ৪০ থেকে ৫০ জন ছাত্র উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) অফিসে তাকে প্রায় ২ ঘণ্টার মতো অবরুদ্ধ রেখে বিচার দাবি করেন। পরে উপজেলা বিএনপির সভাপতি আমিনুল ইসলাম রাঙ্গার হস্তক্ষেপে পরিস্থিতি শান্ত হয়।
ছাত্ররা অভিযোগ করেন, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে তারা সবাই সক্রিয় ভূমিকা রেখেছেন। তারা সবাই মাহিমের সহযোদ্ধা ছিলেন। গত বছরের ৫ আগস্টের পর আন্দোলনকারী ছাত্রদের প্রতিনিধি বা মুখপাত্র হিসেবে ফারদিন এহসান মাহিমকে দায়িত্ব দেওয়া হয়। এই সুযোগে মাহিম বিভিন্ন অনিয়ম-দুর্নীতি, চাঁদাবাজি, মামলা বাণিজ্যে জড়িয়ে পড়েন।
আরো পড়ুন:
রাজবাড়ীতে ২ শিক্ষার্থীকে ধর্ষণ, গ্রেপ্তার ১
মাদারীপুরে মাদক নিয়ন্ত্রণে প্রশাসনের হস্তক্ষেপ দাবি
এছাড়া, পীরগাছা জেএন হাইস্কুল মাঠে ক্রিকেট খেলার আয়োজন করা হয়। এই খেলাকে কেন্দ্র করে সরকারিভাবে ১ লাখ ১০ হাজার টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছিল। সেই টাকা বুঝিয়ে পেয়েছে মর্মে কয়েকজন খেলোয়ারের কাছ থেকে স্বাক্ষর নেওয়া হলেও কাউকে কোনো টাকা বা খেলাধুলা সামগ্রী দেওয়া হয়নি। পুরো টাকা ফাহিম আত্মসাৎ করেছেন।
শীতের কম্বল, ঈদের ভিজিএফ স্লিপ নিয়েও তিনি দুর্নীতি করেছেন। এসব অপকর্মের সঙ্গে তার বাবা, বোন ও পরিবারের লোকজন জড়িত। তার বোনের নামে তিনি খাদ্য বান্ধব কর্মসূচির ডিলারশিপ নিয়েছেন।
অভিযোগকারীরা জানান, দীর্ঘদিন থেকে ফাহিম এসব অপকর্ম করছে। আজকে এসবের প্রতিবাদ করতে তারা ইউএনও অফিসে এসেছেন। ইউএনওর নিকট তারা মাহিমের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ করেছেন। ইউএনও তা তদন্ত করে তার বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা নেবে বলে আশ্বাস দিয়েছেন।
ছাত্ররা জানান, আজ থেকে পীরগাছা উপজেলায় ছাত্র প্রতিনিধি হিসেবে কেউ পরিচয় দিতে পারবেন না। কোথাও কোনো প্রয়োজন হলে সব ছাত্ররা একসঙ্গে কাজ করবেন।
অভিযোগের বিষয়ে ফারদিন এহসান মাহিম বলেন, “যখন কোনো ব্যক্তি দায়িত্বে থাকে তার বিরুদ্ধে নানা ধরনের অভিযোগ থাকবেই। আমার বিরুদ্ধে যেসব অভিযোগ উঠেছে তা লিখিতভাবে তারা দায়ের করুক। সেটা তদন্ত হোক, তা আমিও চাই। আমারও হয়তো কিছু ভুল আছে।”
তিনি বলেন, “আমি সাংগঠনিকভাবে সবার সঙ্গে প্রথম দিকে যোগাযোগ রাখলেও পরে যোগাযোগ রাখতে পারিনি। এ জন্য ভুল বুঝাবুঝি ও ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।”
ফারদিন এহসান মাহিম বলেন, “খেলার টাকার বিষয়ে যাদের স্বাক্ষর নেওয়া হয়েছে, তাদের টাকা দেওয়া হয়েছে। আমার বিরুদ্ধে করা অভিযোগের বিষয়ে তদন্ত কমিটি গঠন করে তদন্ত করা হোক। তদন্তে যদি আমি দোষী হই তাহলে আমি মাথা পেতে নেব।”
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. নাজমুল হক সুমন বলেন, “ফারদিন এহসান মাহিমের বিরুদ্ধে ছাত্রদের অভিযোগগুলো লিখিতভাবে দিতে বলা হয়েছে। এবিষয়ে কমিটি গঠনের মাধ্যমে তদন্ত করে খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
ঢাকা/আমিরুল/মাসুদ