যৌন হয়রানি: ২ বেরোবি শিক্ষকের কুশপুত্তলিকায় জুতা নিক্ষেপ
Published: 21st, April 2025 GMT
বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে (বেরোবি) শিক্ষার্থীকে যৌন হয়রানি ও ফলাফল জালিয়াতিতে অভিযুক্ত দুই শিক্ষকের কুশপুত্তলিকায় জুতা নিক্ষেপ করেছে শিক্ষার্থীরা।
ওই দুই শিক্ষক হলেন, রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের বিভাগীয় প্রধান ড.তানজিউল ইসলাম জীবন ও পরিসংখ্যান বিভাগের অধ্যাপক ড.রশীদুল ইসলাম।
সোমবার (২১ এপ্রিল) দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের কৃষ্ণচূড়া সড়কে নারী লোভি শিক্ষকদের শাস্তির দাবিতে এ প্রতিবাদী কর্মসূচির আয়োজন করেন তারা।
আরো পড়ুন:
বেরোবি শিক্ষকের বিরুদ্ধে যৌন হয়রানির অভিযোগ তদন্তে কমিটি
ভিক্ষুককে যৌন নিপীড়নের অভিযোগে গণধোলাই
সরেজমিনে দেখা গেছে, অভিযুক্ত শিক্ষকদের কুশপুত্তলিকা তৈরি করে হাফ প্যান্ট, টি শার্ট ও জুতার মালা পরিয়ে খুটিতে বেঁধে রাখা রাখা হয়েছে। কুশপুত্তলিকার গায়ে লেখা আমি নারী লোভি নিপীড়নকারী শিক্ষক। সেখানে শিক্ষার্থীরা একে একে জুতা পেটা করছেন।
এ বিষয়ে বেরোবি শিক্ষার্থী রহমত আলী বলেন, “এ বিশ্ববিদ্যালয়ে একাধিক শিক্ষকের বিরুদ্ধে যৌন হয়রানি ও রেজাল্ট টেম্পারিংসহ বিভিন্ন অভিযোগ উঠেছে। কিন্তু এর যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়নি। অবিলম্বে বাংলাদেশের প্রত্যেকটি বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার্থী নিপীড়নের যে চর্চা, তা বন্ধ করতে বিশেষ সেল গঠন করতে হবে।
শিক্ষার্থী আশিকুর রহমান বলেন, “আমাদের দাবি একটাই অপকর্মের সঙ্গে যেসব শিক্ষক জড়িত, তদন্ত সাপেক্ষে তাদের যেন যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়। যাতে ভবিষ্যতে কোনো শিক্ষক এ ধরনের ন্যাক্কারজনক কাজ করতে সাহস না পায়। নাম্বার কমিয়ে দেওয়ার ভয়ে অনেক শিক্ষার্থী কথা বলতে চায় না।”
গত ১৩ এপ্রিল সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের বিভাগীয় প্রধান ড.
এ বিষয়ে ড. তানজিউল ইসলাম জীবন সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি।
এছাড়া গত ১৯ এপ্রিল পরিসংখ্যান বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. রশীদুল ইসলামের বিরুদ্ধে এক ছাত্রীকে যৌন হয়রারির অভিযোগ উঠে। তার সঙ্গে মেসেঞ্জারে এক ছাত্রীর সঙ্গে কথোপকথনের স্ক্রিনশট ফাঁস হয়। স্ক্রিনশটে দেখা যায় ওই শিক্ষক ছাত্রীকে যৌন হয়রানির নানা ভাবে চেষ্টা করেছেন এবং বিভিন্ন অযুহাতে বাড়িতেও ডেকেছেন। সেটা ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী নিজেই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে জানান।
এ বিষয়ে ড. রশীদুল ইসলামের মুঠোফোনে একাধিকবার কল করা হলে তা বন্ধ পাওয়া যায়।
তবে বিশ্ববিদ্যালয়ের শৃঙ্খলা বোর্ডের সদস্য সচিব ও প্রক্টর অধ্যাপক ড. মো ফেরদৌস রহমান জানান, পরিসংখ্যান বিভাগ থেকে পরীক্ষার ফলাফল টেম্পারিংয়ের অভিযোগ এসেছে। এ বিষয়ে একটা তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটিকে তিন কার্যদিবসের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেওয়ার জন্য সময় বেঁধে দেওয়া হয়েছে।
যৌন নিপীড়নের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি জানান, এ বিষয়ে এখনো কেউ অভিযোগ দেয়নি। অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এদিকে, সোমবার সন্ধ্যা ৭টায় অভিযুক্ত শিক্ষকদের সাময়িক বরখাস্ত দাবিতে মশাল মিছিল করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। মিছিলটি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটক থেকে শুরু হয়ে বিভিন্ন সড়ক ঘুরে পুনরায় সেখানে গিয়ে শেষ হয়।
সাময়িক বরখাস্ত দাবি করে তারা বলেন, দোষী যে-ই হোক, তার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চান তারা। ভবিষ্যতের জন্য নিরাপদ ক্যাম্পাস গড়ে তোলা হোক। একাধিক ছাত্রীকে যৌন হয়রানির অভিযোগ সামনে আসতেই ফুঁসে ওঠে পুরো ক্যাম্পাস। নিপীড়নের বিরুদ্ধে তাদের লড়াই অব্যাহত থাকবে বলে জানিয়েছেন শিক্ষার্থীরা।
ঢাকা/সাজ্জাদ/মেহেদী
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর য ন হয়র ন ল ইসল ম তদন ত
এছাড়াও পড়ুন:
বিশ্ব ইজতেমা মার্চে
প্রতিবছর জানুয়ারিতে বিশ্ব ইজতেমার আয়োজন করা হলেও এবার জাতীয় সংসদ নির্বাচনের কারণে তা পিছিয়ে মার্চ মাসে করা হবে।
সোমবার (৩ নভেম্বর) জাতীয় প্রেস ক্লাবে সংবাদ এ তথ্য জানিয়েছেন তাবলিগ জামাত বাংলাদেশ বা শুরায়ী নেজামের শীর্ষ নেতা মুফতি কেফায়েতুল্লাহ আজহারি।
আরো পড়ুন:
শেষ হলো দাওয়াতে ইসলামীর ইজতেমা
দ্বিতীয় পর্বের ইজতেমা শুরু
সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, বিগত বছরগুলোতে দুই পর্বে বিশ্ব ইজতেমা হলেও আগামী বছর এক পর্বে হবে। মাওলানা সাদ কান্ধলভীর অনুসারী বা সাদপন্থিদের ইজতেমা আয়োজনের সুযোগ থাকবে না।
মুফতি কেফায়েতুল্লাহ বলেছেন, “তাবলিগ জামাত বাংলাদেশ তাবলিগি এ মেহনতকে দ্বীনি মেহনত হিসেবে বিশ্বাস করে। দ্বীনি কাজের অংশ হিসেবে বর্তমান সরকারের অনুরোধ শ্রদ্ধার সঙ্গে গ্রহণ করে আমরা আগামী বিশ্ব ইজতেমা মার্চে আয়োজনের বিষয়ে একমত হয়েছি। আমরা বিশ্বাস করি, এ সিদ্ধান্ত রাষ্ট্রীয় কার্যক্রমে সরকারের প্রতি সহযোগিতার শামিল।”
বিশ্ব ইজতেমা সাদপন্থিরা আয়োজন করতে পারবেন কি না, এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, “সরকারের কাছে তারা লিখিত দিয়ে গতবার শেষবারের মতো ইজতেমার আয়োজন করেছিল। সেক্ষেত্রে তাদের আর ইজতেমা করার সুযোগ নেই।”
বিশ্ব ইজতেমা সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করতে সংবাদ সম্মেলনে অন্তর্বর্তী সরকারের কাছে তিনটি অনুরোধ তুলে ধরা হয়।
১. আগামী ডিসেম্বরের প্রথম সপ্তাহের আগেই ইজতেমার দিন-তারিখ ঘোষণা এবং সংশ্লিষ্ট কার্যক্রম শুরু করার জন্য সংশ্লিষ্ট সরকারি সংস্থাগুলোকে অবহিত করা।
২. ইজতেমা যথাযথভাবে সম্পন্ন করতে টঙ্গী বিশ্ব ইজতেমা ময়দানকে অস্থায়ীভাবে কেপিআই (কি পয়েন্ট ইন্সটলেশন) ঘোষণা।
৩. ইজতেমায় আসা বিদেশি অতিথিদের সময়মতো উপস্থিতি নিশ্চিত করতে নভেম্বরের শেষ সপ্তাহে ভিসা সহজীকরণ-সংক্রান্ত পরিপত্র জারি করা।
ঢাকা/রায়হান/রফিক