বন্দরে সন্ত্রাসীদের হামলায় পঙ্গু হতে চলেছে ফোন-ফ্যাক্স ও বিকাশ ব্যবসায়ী শাহজাহান (৪৪)। গত ১৫ এপ্রিল রাতে সন্ত্রাসীরা ব্যবসায়ী শাহজাহানকে মাঙ্কি টুপি পড়িয়ে এলোপাথারি কুপিয়ে নগদ ২ লাখ ২৫ হাজার টাকা ও ৫টি মোবাইল সেট ছিনিয়ে নিয়ে গেলেও পুলিশ এখনো কাউকে গ্রেপ্তার করতে পারেনি।

সন্ত্রাসীদের ছিনতাই করার দৃশ্য সিসিটিভি ফুটেজে পাওয়া গেলেও পুলিশ এখনো নিরব। আহত শাহজাহান জানান, তিনি রাতে তার দোকান বন্ধ করে টাকা নিয়ে বাসায় ফেরার পথে পুরান বন্দর চৌধুরীবাড়ি এলাকার চিহিৃত সন্ত্রাসী সোহান, সাব্বির, ইব্রাহীম, আমির হোসেন সহ ৮ জনের একটি দল পিছন থেকে এসে হঠাৎ তার মাথায় মাঙ্কি টুপি পরিয়ে দিয়ে তার নাক-মুখ বন্ধ করে তার হাতে থাকা টাকার ব্যাগ ছিনিয়ে নেয়।

তখন সে নিজে বাঁচার জন্য ধস্তাধস্তি করলে সন্ত্রাসীরা তাকে ধারারো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে জখম করে রাস্তায় ফেলে পালিয়ে যায়। পরে তাকে স্থানীয়রা উদ্ধার করে প্রথমে নারায়ণগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে ডাক্তার তাকে পঙ্গু হাসপাতালে পাঠায়।

এ ঘটনায় আহত ব্যবসায়ীর স্ত্রী সাইফুন নাহার থানায় মামলা করলেও পুলিশ কাউকে গ্রেফতার করতে পারেনি। এদিকে ঘটনাস্থলের দৃশ্য প্রতিবেশেীর বাড়ির সিসিটিভি ক্যামেরায় ধারন হলে সিসিটিভি ফুটেজে সন্ত্রাসীদের চিহিৃত করা গেলেও রহস্যজনক কারণে পুলিশ তাদের গ্রেফতার করেনি। এ ব্যপারে স্থানীয়রা জানান, সন্ত্রাসী সোহান বাহিনীর অত্যাচারে এলাকাবাসী অতিষ্ট।

তার বিরুদ্ধে থানায় একাধিক মামলা রয়েছে। সে তার বাহিনী নিয়ে এলাকায় চুরি, ছিনতাই করে বেড়াচ্ছে। এ ব্যপারে মামলার তদন্ত্রকারী কর্মকর্তা এসআই সাইফুল ইসলামকে বারবার ফোন দিলেও তিনি ফোন রিসিভ করেনি। এ বিষয়ে বন্দর থানার ওসি তরিকুল ইসলাম বলেন, এ ঘটনায় ২জন সন্দেভাজনকে গ্রেফতার করা হয়েছিল।

তবে চিহিৃত সন্ত্রাসীদের গ্রেফতার অভিযান অব্যাহত রয়েছে। আমরা কাউকে ছাড় দেব না। এ ব্যপারে আদালতে মামলা পরিচালনাকারী আইনজীবী তাজুল ইসলাম বলেন, ঘটনাটি ন্যক্কারজনক। পুলিশের অনিহার কারণে সন্ত্রাসীরা অপরাধ করতে সাহস পাচ্ছে।

ঘটনার ৭দিন হয়ে গেল পুলিশ সন্ত্রাসীদের গ্রেফতার করেনি। অপরদিকে গত শুক্রবার চৌধুরীবাড়ি এলাকায় সন্ত্রাসীদের দ্রুত গ্রেফতারর দাবিতে এলাকাবাসী মানববন্ধনও করেছে।

.

উৎস: Narayanganj Times

কীওয়ার্ড: ব যবস য় ন র য়ণগঞ জ

এছাড়াও পড়ুন:

ভারত-পাকিস্তানের মধ্যে উত্তেজনা কমাতে গুরুত্ব আরোপ

কাশ্মীরের পেহেলগামে হামলার পর ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে উত্তেজনা কার্যত সামরিক সংঘাতে রূপ নেওয়ার আশঙ্কা ক্রমেই বাড়ছে। এ পরস্থিতিতে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ ও ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্করকে ফোন করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও। বুধবার দুজনকে করা এ ফোন কলে তিনি ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে সৃষ্টি হওয়া উত্তেজনা কমানোর ওপর গুরুত্ব আরোপ করেন। এছাড়া দুই 

ফোনালাপের বিষয়ে মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তর থেকে দেওয়া পৃথক বিবৃতিতে এই তথ্য জানানো হয়েছে।

ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্করের সঙ্গে ফোনে কথা বলার সময় মার্কো রুবিও বলেন, তিনি পেহেলগাম হামলায় নিহতদের জন্য দুঃখ প্রকাশ করছেন এবং যুক্তরাষ্ট্র সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে ভারতের সঙ্গে কাজ করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। 

তবে তিনি আরও বলেন, ভারত যেন পাকিস্তানকে অভিযুক্ত করার আগে সতর্ক থাকে, কারণ এখনও পর্যন্ত ভারত এই হামলায় পাকিস্তানের সম্পৃক্ততার কোনও প্রমাণ প্রকাশ করেনি।

মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র ট্যামি ব্রুস এক বিবৃতিতে বলেছেন, পররাষ্ট্রমন্ত্রী পেহেলগামে ভয়াবহ সন্ত্রাসী হামলায় প্রাণহানির জন্য দুঃখ প্রকাশ করেছেন এবং সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে ভারতের সঙ্গে সহযোগিতার জন্য যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করেছেন। তিনি দক্ষিণ এশিয়ায় উত্তেজনা কমাতে এবং শান্তি ও নিরাপত্তা বজায় রাখতে ভারতকে পাকিস্তানের সঙ্গে কাজ করার জন্য বলেছেন।

পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র ট্যামি ব্রুস বলেন, পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরিফের সঙ্গে ফোনালাপে রুবিও- ২২ এপ্রিল ভারত-শাসিত কাশ্মীরের পর্যটন কেন্দ্র পেহেলগামে সন্ত্রাসী হামলার নিন্দা করার প্রয়োজনীয়তার কথা বলেছেন।

তিনি এক বিবৃতিতে বলেছেন, রুবিও এই অযৌক্তিক হামলার তদন্তে পাকিস্তানি কর্মকর্তাদের সহযোগিতার আহ্বান জানিয়েছেন।

জবাবে প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ বলেন, ভারতের উস্কানিমূলক আচরণ শুধু উত্তেজনাই বাড়াচ্ছে এবং পাকিস্তানের সন্ত্রাসবিরোধী প্রচেষ্টাকে বিভ্রান্ত করছে। তিনি যুক্তরাষ্ট্রের প্রতি আহ্বান জানান, যেন তারা ভারতের ওপর দায়িত্বশীল আচরণ ও ভাষার ব্যবহার নিশ্চিত করতে চাপ প্রয়োগ করে।

এর আগে গত ২২ এপ্রিল মঙ্গলবার বিকেলে কাশ্মীরের পেহেলগাম জেলার বৈসরণ তৃণভূমিতে বন্দুকধারীদের হামলায় অন্তত ২৬ জন নিহত হন, যাদের প্রায় সবাই পর্যটক। হামলার দায় স্বীকার করে রেজিস্ট্যান্স ফ্রন্ট নামে একটি সংগঠন। এটিকে পাকিস্তানভিত্তিক লস্কর-ই-তৈয়্যেবার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট বলে মনে করা হয়।

এ ঘটনায় আরও বেশ কয়েকজনকে আহত হন। যাদের গুলি করে হত্যা করা হয়েছে, তারা সবাই পুরুষ। বস্তুত, ২২ এপ্রিলের হামলা ছিল ২০১৯ সালের পুলোয়ামা হামলার পর জম্মু ও কাশ্মীরে সবচেয়ে বড় প্রাণঘাতী হামলা। বর্তমানে এ ঘটনায় দুই দেশের মধ্যে চরম উত্তেজনা বিরাজ করছে।

পেহেলগামের ভয়াবহ ওই হামলার জেরে ভারত-পাকিস্তানের মধ্যে কূটনৈতিক সম্পর্ক তলানিতে ঠেকেছে। দুই দেশের মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ সিন্ধু পানিবণ্টন চুক্তি স্থগিত করেছে ভারত। জবাবে সিমলা চুক্তি স্থগিত ও ভারতীয় বিমানের জন্য নিজেদের আকাশসীমা বন্ধের ঘোষণা দেয় পাকিস্তান।

তাছাড়া, হামলার পরে দুই দেশই ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে প্রতিবেশী দেশের নাগরিকদের ভিসা বাতিল করে ফিরে যাওয়ার নির্দেশ দেয়। সূত্র-এএফপি 

সম্পর্কিত নিবন্ধ