বিসিসি নির্বাচনের ফলাফল বাতিল চেয়ে আদালতে জাপা প্রার্থী
Published: 23rd, April 2025 GMT
২০২৩ সালে অনুষ্ঠিত বরিশাল সিটি করপোরেশন (বিসিসি) নির্বাচনের ফলাফল বাতিল চেয়ে আদালতে মামলা করেছেন জাতীয় পার্টির (জাপা) মেয়র প্রার্থী ইঞ্জিনিয়ার ইকবাল হোসেন তাপস। মামলায় নিজেকে মেয়র ঘোষণার দাবি জানিয়েছেন তিনি।
বুধবার (২৩ এপ্রিল) দুপুরে বরিশাল সিনিয়র সহকারী জজ এবং নির্বাচনী ট্রাইব্যুনাল বিসিসি ২০২৩ এ মামলাটি করেন তিনি। বিচারক হাসিবুল হাসান মামলাটি আদেশের জন্য রেখেছেন। বাদী পক্ষের আইনজীবী আজাদ রহমান এতথ্য নিশ্চিত করেছেন।
আরো পড়ুন: ফয়জুল করীমকে মেয়র ঘোষণা চেয়ে মামলা
আরো পড়ুন:
মাগুরার শিশু ধর্ষণ-হত্যা মামলার চার্জ গঠন, ২৭ এপ্রিল সাক্ষ্যগ্রহণ
গাজীপুরের আদালতে দীপু মনি-পলকসহ ৬ জন
মামলায় উল্লেখ করা হয়, ২০১৮ সালে অনুষ্ঠিত বিসিসি নির্বাচন সুষ্ঠু হয়নি। নির্বাচনে তাপসের নিশ্চিত জয় ছিনিয়ে নেওয়া হয়েছিল। ২০২৩ সালের বিসিসি নির্বাচন সুষ্ঠু না হওয়ার শঙ্কার কথা তৎকালীন প্রধান নির্বাচন কমিশনসহ বিভিন্ন ব্যক্তিদের কাছে জানিয়েছিলেন মেয়র প্রার্থী তাপস। তারপরও তৎকালীন ডিজিএফআই এবং এনএসআই সদস্যরা নৌকা প্রার্থী আবুল খায়ের আবদুল্লাহ খোকন সেরনিয়াবাতের পক্ষে প্রত্যক্ষভাবে কাজ করেছে। পাশাপাশি ইভিএম মেশিনের মাধ্যমে ভোটের ফলাফল পরিবর্তন করে নৌকার প্রার্থীকে বিজয়ী করা হয়।
নির্বাচনের আগ থেকেই বিভিন্ন জেলা ও উপজেলা থেকে বহিরাগতদের এনে বিভিন্ন হোটেলে রাখা হয়েছিল। ওই নির্বাচনের ভোটের দিন পর্যন্ত তাপসকে বিভিন্ন ভয় দেখানো হয়। পোলিং এজেন্টেদের কেন্দ্র থেকে বের করে দেওয়াসহ প্রার্থী তাপস সন্ত্রাসীদের হাতে আক্রান্ত হন। ভোটকেন্দ্র দখলে নিয়ে নৌকা প্রার্থীর লোকজন ইভিএম মেশিনের বাটন চেপে নিজেরাই ভোট দিয়েছিল। তখন একজন বহিরাগতকে ধরে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর হাতে দিলেও কোন ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। ৫০টি ভোট কেন্দ্রে উপস্থিতির হার শতকরা ২০-২৫ ভাগ লক্ষ্য করা গেলেও ফলাফলে মাত্রাতিরিক্ত ভোট গ্রহণ দেখানো হয়েছে।
মামলায় আরো উল্লেখ করা হয়, নির্বাচনে তাপসের যে ভোট দেখানো হয়েছে, তা তার জনসমর্থনের চেয়ে কম। বিষয়গুলো তৎকালীন দায়িত্বপ্রাপ্তদের জানালেও কোনো সমাধান হয়নি। ভোটাররা সঠিকভাবে ভোট দিতে পারলে তিনি বিজয়ী হতেন। তাই ২০২৩ সালের নির্বাচনের ফলাফল বাতিল ঘোষণা করে তাপসকে মেয়র হিসেবে ঘোষণা দেওয়ার দাবি জানানো হয়েছে মামলায়।
এর আগে, বরিশাল সিটি করপোরেশন নির্বাচনে অনিয়ম ও অসঙ্গতির অভিযোগে এনে বরিশাল সদর সিনিয়র সহকারী জজ ও নির্বাচনী ট্রাইব্যুনালে মামলা দায়ের করেছেন ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের সিনিয়র নায়েবে আমির ও হাতপাখা প্রতীকের প্রার্থী মুফতি সৈয়দ মুহাম্মাদ ফয়জুল করীম।
ঢাকা/পলাশ/মাসুদ
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর বর শ ল স র ফল ফল
এছাড়াও পড়ুন:
আইএমএফের পর্ষদ বৈঠক ২৩ জুন, এরপর মিলতে পারে দুই কিস্তি অর্থ
২৩ জুন আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) নির্বাহী পর্ষদের বৈঠক ডাকা হয়েছে। সেই বৈঠকে বাংলাদেশের সঙ্গে আইএমএফের চলমান ঋণ কর্মসূচির দুই কিস্তির অর্থ ছাড়ের বিষয়টি উত্থাপনের কথা রয়েছে। বৈঠকে অনুমোদন হলে চলমান ঋণ কর্মসূচির আওতায় একসঙ্গে দুই কিস্তির অর্থ পাবে বাংলাদেশ। আইএমএফ গতকাল শুক্রবার তার কার্যসূচিতে নির্বাহী পর্ষদের বৈঠকের এ তারিখ নির্ধারণসংক্রান্ত তথ্য প্রকাশ করেছে।
অর্থ মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা যায়, আইএমএফের এ বৈঠকে চলমান ঋণ কর্মসূচির তৃতীয় ও চতুর্থ পর্যালোচনার (রিভিউ) প্রতিবেদন উপস্থাপনের কথা রয়েছে। এ প্রতিবেদন পর্ষদ অনুমোদন করলে বাংলাদেশ একসঙ্গে পেয়ে যাবে চতুর্থ ও পঞ্চম কিস্তির অর্থ। দুই কিস্তির অর্থ একসঙ্গে হতে পারে ১৩০ কোটি মার্কিন ডলার।
এর আগে ২০২৩ সালের ৩১ জানুয়ারি আইএমএফ বাংলাদেশের জন্য সাড়ে তিন বছর মেয়াদি ৪৭০ কোটি ডলারের ঋণ প্রস্তাব অনুমোদন করে। ঋণ অনুমোদনের সময় আইএমএফ বলেছিল, বাংলাদেশের সামষ্টিক অর্থনীতির স্থিতিশীলতা বজায় রাখা, ঝুঁকিতে থাকা ও পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠীকে সুরক্ষা দেওয়া এবং অন্তর্ভুক্তিমূলক ও পরিবেশসম্মত প্রবৃদ্ধি অর্জনে সহায়তা করবে এ ঋণ কর্মসূচি। চলতি হিসাবের ঘাটতি বেড়ে যাওয়া, টাকার দরপতন ও বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ কমে যাওয়া—মূলত এ তিন কারণে ওই সময় আইএমএফের কাছে ঋণ চেয়েছিল তৎকালীন আওয়ামী লীগ সরকার।
আইএমএফের ঋণ কর্মসূচির মধ্যে বর্ধিত ঋণসহায়তা (ইসিএফ) ও বর্ধিত তহবিলসহায়তা (ইএফএফ) বাবদ ঋণ রয়েছে ৩৩০ কোটি ডলার। আর রেজিলিয়েন্স অ্যান্ড সাসটেইনেবিলিটি ফ্যাসিলিটি (আরএসএফ) বাবদ ঋণ রয়েছে ১৪০ কোটি ডলার। আরএসএফ আইএমএফের একটি নতুন তহবিল, যেখান থেকে এশিয়ার মধ্যে বাংলাদেশকেই প্রথম ঋণ দেওয়া হচ্ছে। ২০২৩ সালের ২ ফেব্রুয়ারি আইএমএফের কাছ থেকে প্রথম কিস্তির ৪৭ কোটি ৬৩ লাখ ডলার পায় বাংলাদেশ। একই বছরের ডিসেম্বরে দ্বিতীয় কিস্তির ৬৮ কোটি ১০ লাখ ডলার ও ২০২৪ সালের জুনে তৃতীয় কিস্তির ১১৫ কোটি ডলার পেয়েছে বাংলাদেশ। অর্থাৎ তিন কিস্তিতে আইএমএফ থেকে এখন পর্যন্ত ২৩১ কোটি ডলার পেয়েছে বাংলাদেশ। বাকি আছে ঋণের ২৩৯ কোটি ডলার।
আইএমএফের ঋণের চতুর্থ কিস্তির অর্থ গত বছরের ডিসেম্বরে পাওয়ার কথা থাকলেও তা আর পাওয়া যায়নি। আইএমএফের সদর দপ্তর যুক্তরাষ্ট্রের ওয়াশিংটনে অবস্থিত। প্রায় প্রতিবছর ওয়াশিংটনসহ প্রতিবেশী রাজ্যগুলোতে বড় ধরনের তুষারপাত হয়। গত বছরও তাই হয়েছে। অতিমাত্রার বরফের কারণে অচল হয়ে যায় জনজীবন। মার্কিন প্রশাসন সতর্কবার্তা জারি করে। তুষারপাতের কারণে আইএমএফসহ অনেক প্রতিষ্ঠান বন্ধ ছিল অনেক দিন।
পরে আইএমএফের পক্ষ থেকে প্রথমে এ বছরের ফেব্রুয়ারি ও পরে মার্চে পর্ষদ বৈঠকের কথা বলা হয়। গত এপ্রিলে আইএমএফের একটি দল পর্যালোচনা করতে ঢাকায় আসে দুই সপ্তাহের জন্য। এর মধ্যে শর্ত পরিপালন নিয়ে দর–কষাকষিতে চতুর্থ ও পঞ্চম কিস্তির অর্থ ছাড় আটকে যায়। এরপর ওয়াশিংটনে গত ২১ থেকে ২৬ এপ্রিল অনুষ্ঠিত আইএমএফ-বিশ্বব্যাংকের বসন্তকালীন বৈঠকে এ বিষয়ে আরও আলোচনা হলেও কোনো সুরাহা হয়নি। তখন দর-কষাকষি হচ্ছিল মূলত মুদ্রা বিনিময় হার বাজারভিত্তিক করা নিয়ে। আইএমএফ তা চাইলেও করতে চাইছিল না সরকার।
সবশেষে গত মাসে এ নিয়ে আইএমএফের সঙ্গে কয়েকটি ভার্চ্যুয়াল বৈঠক করে বাংলাদেশ ব্যাংক। গত ১২ মে দুই পক্ষ চূড়ান্ত সমঝোতায় পৌঁছায় ও বিনিময় হার বাজারভিত্তিক করে বাংলাদেশ। ১৪ মে আইএমএফ ওয়াশিংটন থেকে এক বিবৃতিতে জানায়, দুই পক্ষের মধ্যে সমঝোতা হয়েছে এবং ঋণের অর্থ ছাড় করা হবে জুনে।
অর্থ মন্ত্রণালয়ের অর্থ বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, সাধারণত পর্ষদ বৈঠকে অনুমোদন হওয়ার দুই থেকে তিন দিনের মাথায় আইএমএফ অর্থ ছাড় করে দেয়। এবারও এর ব্যতিক্রম হবে না।