বরপক্ষের ৩০ জন অতিথির খাবার স্বল্পতায় বিয়ে ভাঙার উপক্রম হয়েছিল। এতে বিয়ে না করেই ফিরে যেতে চান বর। বিব্রত ও অসহায় হয়ে পড়েন কনে পক্ষ। পরে কমিউনিটি সেন্টারের এক কক্ষে পাওয়া যায় লুকিয়ে রাখা খাবার। এতে শেষ রক্ষা মেলে। হাফ ছেড়ে বাঁচেন কনে পক্ষ। বৃহস্পতিবার দুপুরে কুমিল্লার দেবিদ্বারে মেজবান কমিউনিটি সেন্টারে বরযাত্রীর খাবার চুরি করা নিয়ে এই ঘটনা ঘটে। 

ওই খাবার চুরি করে লুকিয়ে রেখেছিল কমিউনিটি সেন্টারের এক কর্মচারী। এতেই বাঁধে বিপত্তি। চুরি হওয়া খাবার উদ্ধার হলে অবসান হয় ভুল বোঝাবুঝির। দুপক্ষের মুরুব্বিদের সমঝোতায় এর পর সম্পন্ন হয় বিয়ে।

জানা গেছে, দেবিদ্বার পৌর এলাকার মেজবান কমিউনিটি সেন্টারে গুনাইঘর উত্তর ইউনিয়নের রেহান উদ্দিনের ছেলে প্রবাসী শাহ জালালের সাথে মুরাদনগর উপজেলার মাস্টারপাড়া গ্রামের শের আলীর মেয়ে জান্নাতের বিয়ের অনুষ্ঠান চলছিল। ওই অনুষ্ঠানে বর পক্ষের সঙ্গে প্রায় ১২০ জন অতিথি আসেন। বরযাত্রী ব্যাচের সবাই খাবার খেলেও শেষের দিকে ৩০ জন অতিথির খাবার সংকট দেখা দেয়। এ নিয়ে বরপক্ষ ও কনে পক্ষের মধ্যে বাকবিতন্ডা শুরু হলে এক পর্যায়ে বরযাত্রী ক্ষুব্ধ হয়ে বিয়ে না করেই চলে যেতে চান। 

এদিকে খাবার স্বল্পতার কারণ খুঁজতে গিয়ে কনে পক্ষের লোকজন ওই কমিউনিটি সেন্টারের এক‌টি পরিত্যক্ত কক্ষে তল্লাশি চালিয়ে বিভিন্ন বালতি ও বলে ঢাকনা দেওয়া অবস্থায় বরযাত্রীর জন্য রান্না করা খাবার ও তবারকের জন্য আনা খেজুর দেখতে পায়। বিষয়‌টি কমিউনিটি সেন্টারের মালিক মির্জা তাজুল ইসলামকে সঙ্গে সঙ্গেই জানান।

বরযাত্রীর সঙ্গে আসা নাঈম বিন মুসা বলেন,  বরযাত্রীর সঙ্গে আসা অতিথিরা প্রথম দিকে খাবার পেলেও শেষের দিকে এসে অন্তত ৩০ জন খাবার স্বল্পতা দেখা দেয়। এ নিয়ে বর ও কনে পক্ষের মধ্যে বাকবিতণ্ডা শুরু হয়। পরে কমিউনিটি সেন্টারের পরিত্যক্ত কক্ষে থেকে বরযাত্রীর জন্য রান্না করা খাবার উদ্ধার করা হয়। 

বরের ভাই কামরুল ইসলাম বলেন, কমিউনিটি সেন্টারে যারা খাবার প‌রি‌বেশন করেছেন তারাই খাবার চুরি করে লুকিয়ে রাখে। এক পর্যায়ে যখন খাবার পাওয়া যায় তখন দুই পক্ষ শান্ত হয়। 

কনের বাবা শের আলী বলেন, আমরা কমিউনিটি সেন্টারের মালিক পক্ষের কাছে ২০০ জন অতিথির খাবার অর্ডার করি। কিন্তু তারা ১৭০ জনের খাবার দিয়ে বাকি ৩০ জনের খাবার চুরি করেন। খাবার চুরি করে তারা আমাদের মান-সম্মান নষ্ট করেছে।   

এ বিষয়ে মেজবান কমিউনিটি সেন্টারের মালিক মির্জা তাজুল ইসলাম বলেন, যারা এই কাজে জড়িত তাদের সবাইকে সেন্টার থেকে বাদ দেওয়া হয়েছে। এগুলো বয় ও আয়ারা করে থাকতে পারে। তবে আমরা দেখেনি। আমাদের কমিউনিটি সেন্টার কোন পরিত্যক্ত কক্ষ নাই। 

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: বরয ত র র

এছাড়াও পড়ুন:

৫ আগস্টের মধ্যে জুলাই সনদ না হলে অবরোধের হুঁশিয়ারি আপ বাংলাদেশের

জুলাই সনদ ও ঘোষণাপত্র জারির দাবিতে অন্তর্বর্তী সরকারকে ৫ আগস্ট পর্যন্ত সময় বেঁধে দিয়েছে ইউনাইটেড পিপলস (আপ) বাংলাদেশ। আজ শুক্রবার রাজধানীর শাহবাগে গণজমায়েত থেকে এ ঘোষণা দেওয়া হয়। দাবি পূরণ না হলে ৬ আগস্ট থেকে দেশজুড়ে অবরোধ কর্মসূচি পালনের হুঁশিয়ারি দিয়েছে সংগঠনটি।

‘৩৬ জুলাইয়ের মধ্যে জুলাই ঘোষণাপত্র ও সনদের দাবি’ শীর্ষক গণজমায়েতে অংশ নেন দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে আসা আপ বাংলাদেশের নেতা–কর্মীরা। জুলাই গণ–অভ্যুত্থানের এক বছর পার হলেও জুলাই সনদ ও ঘোষণাপত্র জারি না হওয়াকে অন্তর্বর্তী সরকারের ব্যর্থতা হিসেবে দেখছেন তাঁরা।

আপ বাংলাদেশের আহ্বায়ক আলী আহসান জুনায়েদ বলেন, ‘আমরা একটি বৈষম্যহীন বাংলাদেশ চেয়েছিলাম। কিন্তু আহতদের ভাগ্যের পরিবর্তন হয়নি। আমরা দেখেছি, যারা জুলাইয়ের নেতৃত্বে ছিল, জুলাইয়ের পরে তাদের পকেট ভারী হয়েছে। আমি বলতে চাই, আপনাদের এই পকেটের হিসাব দিতে হবে।’

অন্তর্বর্তী সরকারকে উদ্দেশ করে আলী আহসান বলেন, ‘আপনারা জুলাই ঘোষণাপত্র দিতে পারবেন কি পারবেন না, তা জানান; না পারলে আমরা আছি। যারা জীবন দিতে প্রস্তুত ছিলাম, বাংলাদেশের (সেই) ২০ কোটি জনগণ জুলাই ঘোষণাপত্র জারি করবে।’

আপ বাংলাদেশের আহ্বায়ক বলেন, ‘৩৬ জুলাইয়ের মধ্যে যদি জুলাই ঘোষণাপত্র না হয়, তাহলে ৬ আগস্ট থেকে দেশজুড়ে অবরোধ শুরু হবে। এ সরকারের কোনো হুমকি আমাদের দমিয়ে রাখতে পারবে না।’

গণজমায়েতে অংশ নিয়ে ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরীফ ওসমান বলেন, আপ বাংলাদেশের নেতারা এখনো কোনো প্রটোকল ছাড়া রাস্তাঘাটে হাঁটেন। কিন্তু তাঁরা যেদিন প্রটোকল নিতে শুরু করবেন, সেদিন থেকে তাঁদের বিরুদ্ধেও তিনি কথা বলা শুরু করবেন।

জুলাই সনদ ও ঘোষণাপত্র জারির আহ্বান জানিয়ে শরীফ ওসমান বলেন, এখন পর্যন্ত বিদ্যমান আইনি কাঠামোয় জুলাই শহীদেরা রাষ্ট্রদ্রোহী। তাঁদেরকে আইনি স্বীকৃতি দেওয়া হয়নি। আজকের মধ্যে সরকার দিনক্ষণ না জানালে আগামী ৩ তারিখ (আগস্ট) ইনকিলাব মঞ্চের উদ্যোগে কফিন মিছিল নিয়ে সচিবালয় অবরোধ করা হবে।

বিগত এক বছর থেকে একটি দুর্বল সরকার দেশ চালাচ্ছে উল্লেখ করে আপ বাংলাদেশের সদস্যসচিব আরেফিন মোহাম্মদ বলেন, ‘জুলাই গণ–অভ্যুত্থানের এক বছর পূর্তিতে ঘোষণাপত্রের জন্য আমাদের আবারও গণজমায়েত করতে হচ্ছে। এর চেয়ে লজ্জাজনক আর কী হতে পারে?’

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী এ বি জুবায়ের বলেন, ‘আমরা যে মৌলিক সংস্কার চেয়েছিলাম, এখনো তার কিছুই হয়নি। এখনো শহীদ পরিবারের পুনর্বাসন ও আহতদের চিকিৎসা নিশ্চিত হয়নি। আমি উপদেষ্টাদের উদ্দেশে বলতে চাই, অবিলম্বে জুলাই সনদ ঘোষণা করুন। আপনাদের কাছে আমাদের চাওয়া–পাওয়া খুব বেশি নেই।’

গণজমায়েতে র‌্যাপ গান পরিবেশন করেন আপ বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় সদস্য আহনাফ তাহমিদ। স্বাগত বক্তব্য দেন জুলাই শহীদ ওসমান পাটোয়ারীর বাবা আবদুর রহমান। গণজমায়েতে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন আপ বাংলাদেশের প্রধান সমন্বয়কারী রাফে সালমান রিফাত, প্রধান সংগঠক নাঈম আহমেদ, মুখপাত্র শাহরিন সুলতানা প্রমুখ।

সম্পর্কিত নিবন্ধ