২০১১ সালের মে মাসের ২ তারিখ। যুক্তরাষ্ট্রের তৎকালীন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা সদর্পে ঘোষণা দেন, আল–কায়েদা নেতা ওসামা বিন লাদেনকে হত্যা করা হয়েছে। দীর্ঘ ১০ বছর ধরে এ মানুষটির খোঁজে হন্যে হয়ে ছুটছিলেন মার্কিন গোয়েন্দারা। অভিযোগ—২০০১ সালের ১১ সেপ্টেম্বর যুক্তরাষ্ট্রে ভয়াবহ হামলার মূলহোতা ছিলেন ওসামা বিন লাদেন।

‘নাইন–ইলেভেন’ নামে পরিচিত ওই হামলার পর সে সময় যুক্তরাষ্ট্রের চোখে বিশ্বের ‘শীর্ষ সন্ত্রাসী’ হয়ে উঠেছিলেন ওসামা বিন লাদেন। এরপর সন্ত্রাসবাদ দমনের কথা বলে আটঘাট বেঁধে যুদ্ধে নামে দেশটি। হামলা চালায় ইরাক ও আফগানিস্তানে। এই আফগানিস্তানেই দীর্ঘ সময় ঘাঁটি গেড়ে ছিলেন ওসামা বিন লাদেন। মার্কিনিদের চোখে ধুলো দিয়ে সেখানে বহুদিন বসবাস করেছিলেন তিনি।

শেষ পর্যন্ত পাকিস্তানে খোঁজ পাওয়া যায় আল–কায়েদাপ্রধানের। এলাকাটির নাম অ্যাবোটাবাদ—রাজধানী ইসলামাবাদ থেকে ১০০ কিলোমিটারের মতো দূরে। সব হিসাব মিলিয়ে নিশ্চিত হওয়ার পর ২০১১ সালের ২ মে রাতে ওসামা বিন লাদেনের বসবাস করা বাড়িটিতে অভিযান চালায় যুক্তরাষ্ট্রের নৌবাহিনীর একটি দল। গুলি করে হত্যা করা হয় তাঁকে।

ওসামা বিন লাদেনকে হত্যার সময় অ্যাবোটাবাদের ওই বাড়িটি থেকে বহু ব্যক্তিগত নথিপত্র সংগ্রহ করেছিলেন মার্কিন সেনারা। অতি গোপনীয় সেসব তথ্যের অনেকগুলোই পরে একে একে প্রকাশ করেছে যুক্তরাষ্ট্র সরকার। এমনকি আল–কায়েদাপ্রধানের মরদেহ নাকি ইসলামের রীতি অনুযায়ী গোসল দিয়ে কাফন পরানো হয়েছিল—সে তথ্যও উঠে এসেছে এসব নথিতে।

অ্যাবোটাবাদের ওই বাড়িতে ওসামা বিন লাদেনের ব্যক্তিগত জিনিসপত্রের মধ্যে একটি কাগজে আল-কায়েদায় যোগ দেওয়াসংক্রান্ত বিভিন্ন তথ্য লেখা ছিল।

যুক্তরাষ্ট্রের বয়ানে ইতিহাসের অন্যতম ‘কুখ্যাত এই সন্ত্রাসী’ নেতার মৃত্যু দিনে চলুন জেনে নেওয়া যাক তাঁর মরদেহ নিয়ে কী করেছিল মার্কিন বাহিনী, অ্যাবোটাবাদের ওই বাড়িটি থেকে পাওয়া ব্যক্তিগত নথিপত্রে কী ছিল, আর সব শেষে থাকবে মৃত্যুর ১৪ বছর পরে এসেও ওসামা বিন লাদেনকে নিয়ে কীভাবে নেটফ্লিক্স ঝামেলায় পড়েছে—এমন কিছু তথ্য।

অ্যাবোটাবাদের এই বাড়িতে হত্যা করা হয় ওসামা বিন লাদেনকে.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: আল ক য় দ

এছাড়াও পড়ুন:

স্টিভ জবসের পথেই রয়েছেন টিম কুক

অ্যাপল কম্পিউটারের সহপ্রতিষ্ঠাতা স্টিভ জবসের পর ২০১১ সাল থেকে অ্যাপলকে বেশ ভালোভাবে নেতৃত্ব দিচ্ছেন প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) টিম কুক। তাঁর নেতৃত্বেই অ্যাপল বর্তমানে প্রায় চার লাখ কোটি মার্কিন ডলারের প্রতিষ্ঠানে পরিণত হয়েছে। প্রযুক্তি দুনিয়ার শীর্ষ তিন প্রতিষ্ঠানের একটি হিসেবে পরিচিত অ্যাপল নিত্যনতুন প্রযুক্তি উদ্ভাবনেও পিছিয়ে নেই।

টিম কুকের জন্ম ১৯৬০ সালের ১ নভেম্বর যুক্তরাষ্ট্রের আলাবামা অঙ্গরাজ্যের মোবাইল শহরে। অবার্ন বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইন্ডাস্ট্রিয়াল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে স্নাতক এবং ডিউক বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এমবিএ করার পর তিনি প্রযুক্তিশিল্পে কর্মজীবন শুরু করেন। অ্যাপলে যোগদানের আগে তিনি আইবিএমের পার্সোনাল কম্পিউটার ব্যবসায় ১২ বছর কাজ করেন। পরবর্তী সময়ে ইন্টেলিজেন্ট ইলেকট্রনিকস ও কম্প্যাকের মতো প্রতিষ্ঠানে গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করেন।

১৯৯৮ সালে স্টিভ জবসের আমন্ত্রণে অ্যাপলে সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট অব ওয়ার্ল্ডওয়াইড অপারেশনস পদে যোগ দেন টিম কুক। দ্রুতই অ্যাপলের সরবরাহ শৃঙ্খল ও  উৎপাদনব্যবস্থাকে ঢেলে সাজানোর পাশাপাশি অ্যাপলের কারখানা বন্ধ করে চুক্তিবদ্ধ প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে বিভিন্ন প্রযুক্তিপণ্য তৈরি শুরু করেন তিনি। ফলে অ্যাপলের উৎপাদন খরচও কমে আসে। ২০০৫ সালে তিনি অ্যাপলের চিফ অপারেটিং অফিসার পদে পদোন্নতি পান। স্টিভ জবসের অসুস্থতার সময় তিনি একাধিকবার অ্যাপলের অন্তর্বর্তীকালীন প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন টিম কুক।

জবসের মৃত্যুর কয়েক মাস আগে ২০১১ সালের আগস্ট মাসে টিম কুক আনুষ্ঠানিকভাবে অ্যাপলের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তার দায়িত্ব গ্রহণ করেন। এর পর থেকেই স্টিভ জবসের উদ্ভাবনী জাদুকরের ভাবমূর্তি থেকে বেরিয়ে এসে টিম কুক অ্যাপলকে দক্ষভাবে পরিচালনা করছেন। তাঁর নেতৃত্বেই অ্যাপল বিশ্বের প্রথম ট্রিলিয়ন বা এক লাখ কোটি মার্কিন ডলারের প্রতিষ্ঠানে পরিণত হয়।

অ্যাপল ইকোসিস্টেমকে শক্তিশালী করার জন্যও আলোচিত টিম কুক। তাঁর নেতৃত্বেই অ্যাপল ওয়াচ ও এয়ারপডসের মতো সফল পণ্য বাজারে আসে এবং ইন্টেলের পরিবর্তে নিজস্ব চিপ এম১ প্রসেসর ব্যবহার শুরু করে অ্যাপল, যা অ্যাপলের অন্যতম সাহসী ও সফল কৌশলগত পদক্ষেপ হিসেবে ধরা হয়। বর্তমানে প্রযুক্তিশিল্পের অন্যতম প্রভাবশালী ব্যক্তি হিসেবে পরিচিতি পেলেও স্টিভ জবসের গড়ে তোলা আইফোন আর ম্যাকের মতো প্রযুক্তিপণ্যের উদ্ভাবনের ধারাকে অব্যাহত রেখেছেন টিম কুক।

সূত্র: অ্যাপল

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • স্টিভ জবসের পথেই রয়েছেন টিম কুক