চার মাস পরে সোমবার লন্ডন থেকে দেশে ফিরছেন বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া। সঙ্গে আসছেন তার দুই পুত্রবধূ জোবাইদা রহমান এবং সৈয়দা শামিলা রহমান। দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর গণমাধ্যমকে এই তথ্য জানান।
তিনি বলেন, বেগম খালেদা জিয়া আগামী ৫ তারিখ সকালে দেশে ফিরছেন। আমরা যতদূর জানি যে, সঙ্গে উনার দুই পুত্রবধূর (তারেক রহমানের স্ত্রী জোবাইদা রহমান ও আরাফাত রহমানের স্ত্রী সৈয়দা শামিলা রহমান) আসার কথা রয়েছে।
বিএনপি চেয়ারপারসন গত ৭ জানুয়ারি উন্নত চিকিৎসার জন্য কাতারের আমিরের পাঠানো বিশেষ এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে লন্ডন যান। লন্ডনে পৌঁছেই লন্ডন ক্লিনিকে ভর্তি হন তিনি। টানা ১৭ দিন লন্ডন ক্লিনিকে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক অধ্যাপক প্যাট্রিক কেনেডি ও অধ্যাপক জেনিফার ক্রসের তত্ত্বাবধায়নে চিকিৎসাধীন ছিলেন। পরে ২৫ জানুয়ারি খালেদা জিয়াকে তারেক রহমানের বাসায় তাদের অধীনে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রাখা হয়।
অর্ধযুগের বেশি সময় পরে এবারই পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে ঈদ উদযাপন করেছেন খালেদা জিয়া। কেমন আছেন খালেদা জিয়া জানতে চাইলে বিএনপি মহাসচিব বলেন, আগের চাইতে উনি (খালেদা জিয়া) ডেফিনেটলি ভালো আছেন।
কিভাবে দেশে ফিরছেন সে বিষয়ে মির্জা ফখরুল বলেন, কাতারের আমিরের কাছ থেকে পাওয়া যে এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে করে বিএনপি চেয়ারপারসন লন্ডনে গিয়েছিলেন সেটি টেকনিক্যাল সমস্যার কারণে একটু বিলম্বিত হচ্ছে। সেজন্য তিনি ঠিক করেছেন যে, এয়ার অ্যাম্বুলেন্স যদি শেষ মুহূর্তে না পাওয়া যায় উনি বাংলাদেশ বিমানেই আসবেন। বাংলাদেশ বিমানে সমস্ত ব্যবস্থা করা হয়েছে। ৪ তারিখ উনি রওনা হলে ৫ তারিখ সকাল ১১টার দিকে দেশে পৌঁছাবেন।
এদিকে গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের বাসা ‘ফিরোজা’কে প্রস্তুত করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন মিডিয়া সেলের সদস্য শায়রুল কবির খান। তিনি বলেন, বিএনপি চেয়ারপারসনের জন্য বাসভবন পরিস্কার-পরিচ্ছন্ন করা হয়েছে।
খালেদা জিয়ার একান্ত সচিব এবিএম আবদুস সাত্তার জানান, সাবেক প্রধানমন্ত্রী বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া দেশে ফিরছেন। এ সংক্রান্ত সব প্রস্তুতির কাজ আমরা করছি। ইতোমধ্যে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীসহ সংশ্লিষ্ট সংস্থায় সব কিছু জানানো হয়েছে।
লন্ডন থেকে দেশে ফেরার বিষয়টি জানিয়ে গত সপ্তাহে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর অন্তর্বর্তী সরকারের পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো.
বিএনপির মহাসচিবের চিঠির পরিপ্রেক্ষিতে সরকার লন্ডন ও দোহার বাংলাদেশ হাইকমিশনের মাধ্যমে সাবেক প্রধানমন্ত্রীকে দেশে ফেরাতে প্রস্তুতি নিচ্ছেন বলে জানা গেছে।
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: ত র ক রহম ন রহম ন ব এনপ
এছাড়াও পড়ুন:
রাউজানে যুবদল কর্মীকে গুলি করে হত্যার ঘটনায় তাঁর সহযোগী গ্রেপ্তার
চট্টগ্রামের রাউজানে মোটরসাইকেলে বাড়ি ফেরার পথে যুবদল কর্মী আলমগীর আলমকে গুলি করে হত্যার ঘটনায় এক যুবককে পুলিশ গ্রেপ্তার করেছে। গ্রেপ্তার যুবক আলমগীর আলমের সহযোগী ছিলেন। গতকাল শনিবার রাতে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়।
গ্রেপ্তার যুবকের নাম মুহাম্মদ রাজু (২৮)। তিনি পৌরসভার ৯ নম্বর ওয়ার্ডের রহমতপাড়ার মৃত নুর নবীর ছেলে। পুলিশ জানিয়েছে, আলমগীর আলমকে গুলি করার সময় তাঁর পেছনে একটি মোটরসাইকেলে ছিলেন মুহাম্মদ রাজু।
গত ২৫ অক্টোবর বিকেলে রাউজান পৌরসভার ৯ নম্বর ওয়ার্ডের চারাবটতল বাজারসংলগ্ন কায়কোবাদ জামে মসজিদের সামনে গুলি করে হত্যা করা হয় আলমকে। এ সময় তাঁর স্ত্রী ও সন্তান পেছনে একটি অটোরিকশায় ছিলেন। পাশের গ্রামের এক আত্মীয়ের বাড়ি থেকে দাওয়াত খেয়ে বাড়িতে ফিরছিলেন তাঁরা। আলমের বাড়ি পার্শ্ববর্তী ঢালারমুখ এলাকায়।
ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, কবরস্থানে লুকিয়ে থাকা আটজন অস্ত্রধারী আলমকে লক্ষ্য করে গুলি ছোড়েন। এ সময় মোটরসাইকেলে থাকা আলম ঘটনাস্থলেই নিহত হন। অস্ত্রধারীরা তাঁকে হত্যার পর রাঙামাটি সড়ক দিয়ে অটোরিকশা ও মোটরসাইকেলে পালিয়ে গেছেন। নিহত আলমের শরীরে পাঁচটি গুলির চিহ্ন পাওয়া যায়।
রাউজান থানা-পুলিশ জানায়, আলম নিহত হওয়ার দুই দিন পর তাঁর বাবা আবদুস সাত্তার বাদী হয়ে ২১ জনের নামোল্লেখ এবং অজ্ঞাতনামা আরও ৬ থেকে ৭ জনকে আসামি করে রাউজান থানায় মামলা করেন। মামলার এজাহারে রাজুর নাম নেই। তবে ঘটনার তদন্তে হত্যাকাণ্ডে তাঁর সম্পৃক্ততার তথ্য পাওয়া গেছে।
এর আগে এ মামলায় এজাহারভুক্ত দুই আসামি গ্রেপ্তার হয়েছেন। তাঁরা হলেন রাউজান কলেজ ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি মুহাম্মদ রাসেল খান (৩২) ও পৌরসভার ৯ নম্বর ওয়ার্ডের রহমতপাড়ার বাসিন্দা ও যুবদল কর্মী মুহাম্মদ হৃদয় (৩০)।
রাউজান থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মনিরুল ইসলাম ভূঁইয়া প্রথম আলোকে বলেন, যখন অস্ত্রধারীরা আলমগীর আলমকে গুলি করার জন্য কবরস্থানে লুকিয়ে ছিলেন, তখন আলমগীর আলমের পেছনে একটি মোটরসাইকেলে ছিলেন রাজু। তিনি আলমগীরের সহযোগী হিসেবে পরিচিত। তবে হত্যাকাণ্ডে তাঁর সম্পৃক্ততার তথ্য পাওয়া গেছে। রোববার তাঁকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে অস্ত্র-মাদকসহ বিভিন্ন মামলায় ১২ বছর কারাগারে ছিলেন আলম। তিনি গত বছরের ৫ আগস্টের পর জামিনে মুক্তি পান। চট্টগ্রাম উত্তর জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি গোলাম আকবর খন্দকারের অনুসারী হিসেবে পরিচিত তিনি।