রায়গঞ্জে ‘মিনি আয়নাঘর’, খতিয়ে দেখছে পুলিশ
Published: 2nd, May 2025 GMT
সিরাজগঞ্জের রায়গঞ্জে ‘মিনি আয়নাঘরের’ সন্ধান মিলেছে। এ ঘরে সাধারণ মানুষকে বন্দি রেখে নির্যাতন, চাঁদা আদায়, কিডনি বিক্রিসহ নানা অপকর্ম পরিচালনা করা হতো বলে অভিযোগ উঠেছে।
শুক্রবার (২ মে) সকালে উপজেলার চান্দাইকোনা ইউনিয়নের সোনারাম গ্রামে ‘মিনি আয়নাঘরের’ সন্ধান মেলে। খবর পেয়ে উৎসুক জনতা ‘আয়নাঘর’ দেখতে ভিড় করেন।
এর আগে, ভোররাতে সুড়ঙ্গ বানিয়ে ‘আয়নাঘর’ থেকে একই ইউনিয়নের পূর্ব পাইকড়া গ্রামের বৃদ্ধ আব্দুল জুব্বার (৭৫) ও শিল্পী খাতুন (৪৮) নামের এক গৃহবধূ বের হয়ে এসেছেন বলে দাবি করেন। তারা ওই গুপ্তস্থানে প্রায় ছয় মাস বন্দি ছিলেন বলে অভিযোগ করেন।
ভুক্তভোগী শিল্পী খাতুন বলেন, ‘‘পাঁচ মাস ধরে বন্দী ছিলাম এখানে। এক মাস অন্য জায়গায় রেখেছিল। তবে কোথায় রেখেছিল, বলতে পারি না। মাঝেমধ্যে শরীরে ইনজেকশন দিয়ে অজ্ঞান করে রাখত। পল্লিচিকিৎসক আরাফাত, শরীফ মেম্বার, কামরুল ইসলাম, হাফিজুল, পান্নাসহ আরো কয়েকজন মুখোশ পরে এখানে আসত। ‘আয়নাঘরে’ আমি ছাড়াও আবদুল জুব্বার নামের একজন ছিলেন।’’
জুব্বারের ছেলে শফিকুল ইসলাম বলেন, ‘‘গত বছরের ৮ নভেম্বর বাবা নিখোঁজ হন। পরে কোথাও খুঁজে না পেয়ে ওই বছরের ১২ নভেম্বর থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করি। শুক্রবার ভোররাতে বাবা ‘আয়নাঘর’ থেকে পালিয়ে এসেছেন। তিনি এখন অসুস্থ। তাকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে।’’
স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, এই বাড়ির মালিক সুমন সেখ নামের এক ব্যক্তি। তার কাছ থেকে ভাড়া নিয়ে ভবনের নিচে বেশ কয়েকটি ছোট কক্ষ করে ‘আয়নাঘর’ বানিয়েছেন পশ্চিম লক্ষ্মীকোলা গ্রামের পল্লিচিকিৎসক নাজমুল হোসেন তালুকদার ওরফে আরাফাত। গভীর রাতে এই বাড়িতে যাতায়াত করতেন তিনি ও তার সহযোগীরা।
রায়গঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আসাদুজ্জামান আসাদ বলেন, ‘‘এটি সত্যিকারের ‘আয়নাঘর’ কি না, তা যাচাই করা হচ্ছে। এ ঘটনায় জড়িত সন্দেহে একজনকে আটক করা হয়েছে।’’
সিরাজগঞ্জের পুলিশ সুপার (এসপি) ফারুক হোসেন বলেন, ‘‘আয়নাঘর কি না, সেটা এখনই বলা যাচ্ছে না। বিষয়টি নিয়ে পুলিশ কাজ করছে। এ ঘটনায় পরবর্তী আইনি কার্যক্রম প্রক্রিয়াধীন।’’
উল্লেখ্য, ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর দেশজুরে ‘আয়নাঘর’ আলোচনায় আসে। অভিযোগ রয়েছে, ‘আয়নাঘরে’ আটকে রেখে বিভিন্ন মানুষকে নির্যাতন, গুম ও খুন করা হয়েছে।
ঢাকা/রাসেল/রাজীব
.উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
যুদ্ধ পর্যবেক্ষণ করছে সরকার, এখনই বাড়ছে না জ্বালানি তেলের দাম: অর্থ উপদেষ্টা
ইরান-ইসরায়েল যুদ্ধ পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে জানিয়ে অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ বলেছেন, ‘জ্বালানি তেলের দাম বাড়ানোর বিষয়ে আরও অপেক্ষা করব। আপাতত পর্যবেক্ষণ করছি, যুদ্ধটা যদি বেশি দিন চলে তখন আমাদের ওপর একটা প্রভাব পড়বে।’
আজ মঙ্গলবার সচিবালয়ে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সম্মেলন কক্ষে অর্থনৈতিক বিষয়ক সংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদ কমিটি ও সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদ কমিটির বৈঠক শেষে ইরান-ইসরায়েলের চলমান সংঘাতে আমাদের দেশের জ্বালানি তেলের দামে কোনো প্রভাব পড়বে কিনা- সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি একথা বলেন।
অর্থ উপদেষ্টা বলেন, ‘ইরান-ইসরায়েল যুদ্ধটা পর্যবেক্ষণ করছি। আমরা দেখেছি ইতোমধ্যে কিছুটা দাম বেড়েছে। তবে যেগুলোতে আমরা অর্ডার করেছি সেগুলোতে প্রভাব ফেলে নাই।’
তিনি বলেন, ‘আমরা পর্যবেক্ষণ করছি গ্যাস, এলএনজির দাম যদি বেড়ে যায়, তাহলে আমরা বিবেচনায় নেবো। আজকে যে এলএনজি আমদানির অনুমোদন দিয়েছি, সেটা পুরোনো দামেই কোড করেছে। আমাদের ভাগ্য ভালো যে আমরা আগের দামেই পাবো।’
আপাতত আমাদের বাণিজ্য ক্ষেত্রে কোনো সমস্যা কী নেই- এমন প্রশ্নের জবাবে অর্থ উপদেষ্টা বলেন, ‘না না, আপাতত বাণিজ্যে কোনো প্রভাব পড়বে না।’
বিশেষ কোনো প্রস্তুতি নিয়ে রাখছেন কিনা জানতে চাইলে উপদেষ্টা বলেন, ‘বিশেষ প্রস্তুতি বলতে আজকে আমরা যে এলএনজি, সার আনার প্রস্তাব অনুমোদন দিলাম সেটা পুরোনো দামে। ভবিষ্যতে যখন নতুন কোনো কিছু আনব তখন হয়তো কিছুটা ইফেক্ট করবে।’
যুদ্ধ যদি দীর্ঘায়িত হয় তাহলে বিকল্প কিছু চিন্তা করছেন কিনা- এমন প্রশ্নের জবাবে অর্থ উপদেষ্টা বলেন, ‘বিকল্প চিন্তা বলতে অবশ্যই জ্বালানি মন্ত্রণালয় করছে। যেহেতু আমরা এলএনজির ওপর নির্ভর করি বেশি। যুদ্ধতে শুধু জ্বালানি না, সার, জাহাজ চলাচলেও প্রভাব পড়বে। হরমুজ প্রণালি দিয়ে জাহাজ আসে, সেখানে প্রভাব পড়তে পারে। মনে হয়, যুদ্ধটা বেশি দিন চলবে না।’