ময়মনসিংহের ব্রহ্মপুত্র নদের তীরে গড়ে ওঠা ময়মনসিংহ সাহিত্য সংসদের ঐতিহাসিক ‘বীক্ষণ’ মঞ্চ ভেঙে দিয়ে জেলা প্রশাসন ময়মনসিংহের আত্মাকে ক্ষতবিক্ষত করেছে বলে বিবৃতি দিয়েছে গণতান্ত্রিক অধিকার কমিটি।

গতকাল শুক্রবার গণতান্ত্রিক অধিকার কমিটির পক্ষে প্রতিবাদ জানানোর পাশাপাশি ‘বীক্ষণ’মঞ্চ আবার নির্মাণের দাবি জানানো হয়।

জেলা প্রশাসনকে ক্ষমা প্রার্থনা করার আহ্বান জানিয়ে গণতান্ত্রিক অধিকার কমিটির পক্ষে বিবৃতি দেন অর্থনীতিবিদ ও জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক শিক্ষক আনু মুহাম্মদ। তিনি বলেন, সরকারি ক্ষমতা ব্যবহার করে কিছু গোষ্ঠী শিল্প–সংস্কৃতি ও সৃজনশীল জগতে নানাভাবে হামলা করছে।

এর আগে গত বুধবার সরকারি জমিতে অবৈধ স্থাপনার অভিযোগ এনে ময়মনসিংহের ব্রহ্মপুত্র নদের তীরে অবস্থিত ময়মনসিংহ সাহিত্য সংসদের ‘বীক্ষণ’ মঞ্চ ভেঙে দেয় ময়মনসিংহ জেলা প্রশাসন। বুধবার দুপুর পর্যন্ত জেলা প্রশাসন উচ্ছেদ অভিযান পরিচালনা করে।

আনু মুহাম্মদ বলেন, দীর্ঘ ৪০ বছর ধরে তিলে তিলে গড়ে ওঠা ময়মনসিংহের সাহিত্য ও সংস্কৃতির এই প্রোজ্জ্বল বাতিঘরটিকে সরকারি ক্ষমতার দম্ভে যেভাবে গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়েছে, তা কেবল একটি স্থাপনার বিনাশ নয়; বরং মুক্তচিন্তা, সৃজনশীলতা এবং একটি অঞ্চলের দীর্ঘ লালিত সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের ওপর নগ্ন ও পরিকল্পিত আক্রমণ।

প্রশাসনের এমন আচরণ ক্ষমতার অপব্যবহার ও সংস্কৃতি কর্মীদের প্রতি চরম বিদ্বেষ ও অবজ্ঞা প্রদর্শনের শামিল উল্লেক করে বিবৃতিতে বলা হয়, এই পদক্ষেপ দেশের সংস্কৃতিচর্চার ধারাবাহিকতাকে মারাত্মকভাবে আঘাত করেছে।

দেশে ভিন্নমত ও সৃজনশীলতাকে নির্মূল করার জন্য রাষ্ট্রযন্ত্র নির্লজ্জভাবে ব্যবহৃত হচ্ছে উল্লেখ করে বিবৃতিতে বলা হয়, গত চার দশক, প্রতি শুক্রবার কবি-সাহিত্যিকদের পদচারণে মুখর থাকত ‘বীক্ষণ’ মঞ্চ। এই মঞ্চের ধ্বংসযজ্ঞ কোনো বিচ্ছিন্ন ঘটনা নয়; বরং এটি বাংলাদেশে ক্রমবর্ধমান জনবিরোধী ও কর্তৃত্ববাদী অপতৎপরতারই অংশ।

এ ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করে বিবৃতিতে বলা হয়, অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের সময়ে লেখক, শিক্ষক ও শিল্পীদের বিরুদ্ধে নির্বিচার হয়রানিমূলক মিথ্যা হত্যা মামলা দায়ের এবং কথিত মব জাস্টিসের নামে অরাজকতা ও ভীতিকর পরিস্থিতি সৃষ্টি করা হচ্ছে। এসব ঘটনার বিরুদ্ধে স্পষ্ট অবস্থান না নিলে সরকারকে এর দায় নিতে হবে।

বিবৃতিতে ‘বীক্ষণ’ মঞ্চ ধ্বংসের সঙ্গে জড়িত সংস্কৃতিবিদ্বেষীদের বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যাবস্থা ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানানো হয়।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: সরক র

এছাড়াও পড়ুন:

ঈশ্বরগঞ্জে বিদ্যুৎস্পৃষ্টে প্রাণ গেল তরুণ ফুটবলারের

ময়মনসিংহ ঈশ্বরগঞ্জে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে মো. তাইজুল ইসলাম (২৫) নামে এক তরুণ ফুটবলারের মৃত্যু হয়েছে। শুক্রবার দুপুরে সদর ইউনিয়নের আশ্রবপুর এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।

নিহত তাইজুল ওই এলাকার মো. আব্দুস সাত্তার ছেলে। তিনি ময়মনসিংহ মোহামেডান ক্লাব ও ঈশ্বরগঞ্জ আব্দুল হালিম ফুটবল একাডেমির নিয়মিত ফুটবলার ছিলেন। 

নিহতের পরিবার ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, শুক্রবার দুপুরে বাড়ির পাশেই ক্ষেত থেকে প্লাস্টিকের বস্তা দিয়ে বাড়িতে ধান আনছিলেন তাইজুল। কয়েকদফা ধান বাড়িতে রেখেও যান। একপর‌ জুমার নামাজের সময় হয়ে যাওয়ায় তড়িঘড়ি করে পাশেই আরেক ধানক্ষেত দিয়ে আসতে চাচ্ছিলেন। এসময় মাটিতে পড়ে থাকা বৈদ্যুতিক তারের স্পর্শে বিদ্যুতায়িত হন তাইজুল। পরে স্বজনেরা তাকে উদ্ধারকরে ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

এদিকে তরুণ ফুটবলারের অকাল মৃত্যুতে পরিবারে চলছে শোকের মাতম। এলাকার পাশাপাশি ফুটবল অঙ্গনেও শোকের ছায়া নেমে এসেছে।

ঈশ্বরগঞ্জ ক্রিড়া সংস্থার সদস্য ও ময়মনসিংহ জেলা ফুটবল দলের অধিনায়ক মো. আরিফুল হক বলেন, তাইজুলের মৃত্যুতে ফুটবল অঙ্গনে যেই শূন্যতা হয়েছে তা কখনোই পূরণ হবার নয়। আমি তার জন্য দোয়া করি, আল্লাহ তাকে সর্বোত্তম বেহেশত দান করুক।

ঈশ্বরগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত (কর্মকর্তা) মো. ওবায়দুর রহমান বলেন, পরিবারের আবেদনের প্রেক্ষিতে বিনা ময়নাতদন্তে মরদেহ হস্তান্তর করা হয়েছে। এ বিষয়ে থানায় একটি অপমৃত্যুর মামলা হয়েছে। 

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • সংস্কৃতিচর্চার পরিসর আরও সংকুচিত হলো
  • ঈশ্বরগঞ্জে বিদ্যুৎস্পৃষ্টে প্রাণ গেল তরুণ ফুটবলারের
  • জাতীয় কবির স্মৃতিধন্য ত্রিশালে ধারণকৃত ‘ইত্যাদি’র প্রচার আজ
  • গান-কবিতায় ময়মনসিংহ সাহিত্য সংসদের মুক্তমঞ্চ গুঁড়িয়ে দেওয়ার প্রতিবাদ
  • ২৩৮ বছরে কী পেল আর কী পেল না ময়মনসিংহ জেলা
  • হাড়ভাঙা পরিশ্রমে পুরুষের অর্ধেকের কম বেতন নারীর
  • ময়মনসিংহে সাহিত্য আড্ডার স্থানসহ নানা স্থাপনা গুঁড়িয়ে দিল প্রশাসন
  • ময়মনসিংহ সাহিত্য সংসদের মুক্তমঞ্চ গুঁড়িয়ে দিল প্রশাসন, সংস্কৃতিকর্মীদের প্রতিবাদ
  • ময়মনসিংহ সাহিত্য সংসদের মুক্তমঞ্চ ভেঙে দিল প্রশাসন