‘বীক্ষণ’ মঞ্চ ধ্বংস করে ময়মনসিংহের আত্মাকে ক্ষতবিক্ষত করেছে প্রশাসন: গণতান্ত্রিক অধিকার কমিটি
Published: 2nd, May 2025 GMT
ময়মনসিংহের ব্রহ্মপুত্র নদের তীরে গড়ে ওঠা ময়মনসিংহ সাহিত্য সংসদের ঐতিহাসিক ‘বীক্ষণ’ মঞ্চ ভেঙে দিয়ে জেলা প্রশাসন ময়মনসিংহের আত্মাকে ক্ষতবিক্ষত করেছে বলে বিবৃতি দিয়েছে গণতান্ত্রিক অধিকার কমিটি।
গতকাল শুক্রবার গণতান্ত্রিক অধিকার কমিটির পক্ষে প্রতিবাদ জানানোর পাশাপাশি ‘বীক্ষণ’মঞ্চ আবার নির্মাণের দাবি জানানো হয়।
জেলা প্রশাসনকে ক্ষমা প্রার্থনা করার আহ্বান জানিয়ে গণতান্ত্রিক অধিকার কমিটির পক্ষে বিবৃতি দেন অর্থনীতিবিদ ও জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক শিক্ষক আনু মুহাম্মদ। তিনি বলেন, সরকারি ক্ষমতা ব্যবহার করে কিছু গোষ্ঠী শিল্প–সংস্কৃতি ও সৃজনশীল জগতে নানাভাবে হামলা করছে।
এর আগে গত বুধবার সরকারি জমিতে অবৈধ স্থাপনার অভিযোগ এনে ময়মনসিংহের ব্রহ্মপুত্র নদের তীরে অবস্থিত ময়মনসিংহ সাহিত্য সংসদের ‘বীক্ষণ’ মঞ্চ ভেঙে দেয় ময়মনসিংহ জেলা প্রশাসন। বুধবার দুপুর পর্যন্ত জেলা প্রশাসন উচ্ছেদ অভিযান পরিচালনা করে।
আনু মুহাম্মদ বলেন, দীর্ঘ ৪০ বছর ধরে তিলে তিলে গড়ে ওঠা ময়মনসিংহের সাহিত্য ও সংস্কৃতির এই প্রোজ্জ্বল বাতিঘরটিকে সরকারি ক্ষমতার দম্ভে যেভাবে গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়েছে, তা কেবল একটি স্থাপনার বিনাশ নয়; বরং মুক্তচিন্তা, সৃজনশীলতা এবং একটি অঞ্চলের দীর্ঘ লালিত সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের ওপর নগ্ন ও পরিকল্পিত আক্রমণ।
প্রশাসনের এমন আচরণ ক্ষমতার অপব্যবহার ও সংস্কৃতি কর্মীদের প্রতি চরম বিদ্বেষ ও অবজ্ঞা প্রদর্শনের শামিল উল্লেক করে বিবৃতিতে বলা হয়, এই পদক্ষেপ দেশের সংস্কৃতিচর্চার ধারাবাহিকতাকে মারাত্মকভাবে আঘাত করেছে।
দেশে ভিন্নমত ও সৃজনশীলতাকে নির্মূল করার জন্য রাষ্ট্রযন্ত্র নির্লজ্জভাবে ব্যবহৃত হচ্ছে উল্লেখ করে বিবৃতিতে বলা হয়, গত চার দশক, প্রতি শুক্রবার কবি-সাহিত্যিকদের পদচারণে মুখর থাকত ‘বীক্ষণ’ মঞ্চ। এই মঞ্চের ধ্বংসযজ্ঞ কোনো বিচ্ছিন্ন ঘটনা নয়; বরং এটি বাংলাদেশে ক্রমবর্ধমান জনবিরোধী ও কর্তৃত্ববাদী অপতৎপরতারই অংশ।
এ ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করে বিবৃতিতে বলা হয়, অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের সময়ে লেখক, শিক্ষক ও শিল্পীদের বিরুদ্ধে নির্বিচার হয়রানিমূলক মিথ্যা হত্যা মামলা দায়ের এবং কথিত মব জাস্টিসের নামে অরাজকতা ও ভীতিকর পরিস্থিতি সৃষ্টি করা হচ্ছে। এসব ঘটনার বিরুদ্ধে স্পষ্ট অবস্থান না নিলে সরকারকে এর দায় নিতে হবে।
বিবৃতিতে ‘বীক্ষণ’ মঞ্চ ধ্বংসের সঙ্গে জড়িত সংস্কৃতিবিদ্বেষীদের বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যাবস্থা ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানানো হয়।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: সরক র
এছাড়াও পড়ুন:
চার সমুদ্রবন্দরে ৩ নম্বর সতর্কতা, ভারী বর্ষণের আশঙ্কা
দেশের উপকূলীয় এলাকায় সক্রিয় রয়েছে স্থানীয় মৌসুমী বায়ু। এর প্রভাবে চার সমুদ্রবন্দর চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, মোংলা ও পায়রাকে ৩ নম্বর স্থানীয় সতর্কতা সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে। দেশের বিভিন্ন স্থানে ভারী বৃষ্টি হতে পারে বলেও জানিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর।
আবহাওয়ার পূর্বভাসে বলা হয়েছে, মঙ্গলবার (৩০ জুলাই) সকাল ৯টা থেকে পরবর্তী পাঁচ দিন দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে বৃষ্টিপাতের প্রবণতা অব্যাহত থাকতে পারে। কোথাও কোথাও মাঝারি ধরনের ভারী থেকে অতি ভারী বর্ষণের সম্ভাবনাও রয়েছে।
আজ ঢাকা, খুলনা, বরিশাল ও চট্টগ্রাম বিভাগের অধিকাংশ জায়গায় এবং রংপুর, রাজশাহী, ময়মনসিংহ ও সিলেট বিভাগের অনেক জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা হাওয়াসহ হালকা থেকে মাঝারি ধরনের বৃষ্টি বা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। খুলনা, বরিশাল ও চট্টগ্রামে কোথাও কোথাও মাঝারি ধরনের ভারী থেকে অতি ভারী বর্ষণ হতে পারে।
বৃহস্পতিবার ও শুক্রবার ঢাকা, ময়মনসিংহ, খুলনা, বরিশাল, চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের অধিকাংশ জায়গায় এবং রাজশাহী ও রংপুরে অনেক জায়গায় বৃষ্টিপাত হতে পারে। একইসঙ্গে কোথাও কোথাও ভারী বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে।
শনিবার রংপুর, রাজশাহী, ঢাকা, ময়মনসিংহ ও সিলেট বিভাগের অধিকাংশ এলাকায় এবং খুলনা, বরিশাল ও চট্টগ্রামে অনেক জায়গায় বৃষ্টিপাত হতে পারে। সারা দেশের কোথাও কোথাও ভারী থেকে অতি ভারী বর্ষণের আশঙ্কা রয়েছে। এই দিন থেকে দিন ও রাতের তাপমাত্রা সামান্য কমতে পারে।
আগামী পাঁচ দিনের মধ্যে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে বৃষ্টিপাতের প্রবণতা অব্যাহত থাকবে বলে পূর্বাভাসে জানানো হয়েছে।
আবহাওয়া অধিদপ্তর সতর্ক থাকার পরামর্শ দিয়েছে, বিশেষ করে নদীতীরবর্তী ও নিম্নাঞ্চলের বাসিন্দাদের। একইসঙ্গে সম্ভাব্য জলাবদ্ধতা ও কৃষিক্ষেত্রে ক্ষতির বিষয়ে নজর রাখতে বলা হয়েছে স্থানীয় প্রশাসন ও সংশ্লিষ্ট দপ্তরগুলোকে।
গত ২৪ ঘণ্টায় সর্বোচ্চ বৃষ্টি হয়েছে খুলনায় ৭৫ মিলিমিটার। সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল নরসিংদীতে ৩৫ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস। গতকাল ঢাকায় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ৩২ দশমিক ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
ঢাকা/ইভা