Samakal:
2025-05-05@18:20:37 GMT

রাফিনহাতে রোনালদিনহোর ছায়া!

Published: 5th, May 2025 GMT

রাফিনহাতে রোনালদিনহোর ছায়া!

তখন রাফিনহার বয়স কতইবা, বছর আটের শিশু। তখন থেকেই তাঁকে ঘিরে স্বপ্ন দেখতে শুরু করেন বাবা রাফায়েল। সময়টা ২০০৩, তাদের শহর পোর্তো আলেগ্রি তখন ঘরের ছেলে রোনালদিনহোকে নিয়ে রীতিমতো আপ্লুত। বিশ্বফুটবলের এ তারকা তখন বার্সার হয়ে ফর্মের তুঙ্গে।

বন্ধু রোনালদিনহোর কাছেই তখন ছেলেকে নিয়ে যান রাফায়েল। একটি স্বপ্নের কথা বলেন তিনি বন্ধুকে। ‘আমার ছেলেটি যদি ফুটবলার হয়, তাহলে যেন একদিন তোমার মতো স্পেনের বার্সেলোনার হয়ে খেলতে পারে।’

রাফিনহার কাছে তাঁর আঙ্কেল রোনালদিনহো শুধু আদর্শই নন, পারিবারিক আত্মীয়ও বটে। সেই রাফিনহাতেই এখন রোনাদিনহোর ছায়া পড়েছে বার্সেলোনায়। শনিবার লা লিগায় ভায়াদোলিদের বিপক্ষে গোল করে রাফিনহা তাঁর আঙ্কেলের একটি রেকর্ড ছাপিয়ে গেছেন।

বার্সার হয়ে ব্রাজিলিয়ান কিংবদন্তি রোনালদিনহো ২০০৫-০৬ মৌসুমে ৪৫ ম্যাচে ২৬ গোল আর ২৩ অ্যাসিস্ট করেছিলেন। মোট ৩৯ গোলে অবদান রেখেছিলেন ব্রাজিলিয়ান তারকা। সেখানে রাফিনহা এই মৌসুমে বার্সার হয়ে ৪৬ ম্যাচ খেলে ২৮ গোল আর ২২টি অ্যাসিস্ট করে মোট ৪০ গোলে অবদান রেখেছেন।

এদিন লা লিগার রেলিগেশন নিশ্চিত হয়ে যাওয়া ভায়াদোলিদের বিপক্ষে শুরুতে রিজার্ভ বেঞ্চের শক্তি পরীক্ষা করেছিলেন। শুরুর একাদশে ৯ পরিবর্তন এনে ভিক্টর, রদ্রিগুয়ের মতো একাডেমির খেলোয়াড়কে সুযোগ দিয়েছিলেন ফ্লিক। যেহেতু সামনেই চ্যাম্পিয়ন্স লিগে ইন্টারমিলানের বিপক্ষে ম্যাচ, তার ওপর আবার লা লিগায় এল ক্ল্যাসিকো রয়েছে, তাই দলের মূল তারকাদের বিশ্রামে রাখার পরিকল্পনাই ছিল বার্সা কোচের।

কিন্তু ম্যাচের ৬ মিনিটের মাথায় ইভান সানচেজের গোলে এগিয়ে যায় স্বাগতিক ভায়াদোলিদ। তাই একে একে ইয়ামাল, রাফিনহা, ওলমোদের মাঠে নামাতে বাধ্য হন ফ্লিক। আর তাতেই স্বমহিমায় বার্সা, ৫৪ মিনিটে রাফিনহা আর ৬০ মিনিটে লোপেজের গোলে ১-২ ব্যবধানের জয় নিয়ে মাঠ ছাড়ে বার্সা। ‘একাদশে এত পরিবর্তন আনার পর দুটি গোল, আমি হতাশ নই। এত বদল আনা হলে খেলার মানে কিছুটা প্রভাব পড়বেই। কয়েকজন ফুটবলারকে বিশ্রাম দেওয়ার প্রয়োজন ছিল, এজন্য কিছু ভুল হয়ছে।’

ম্যাচ শেষে ৩ পয়েন্ট পাওয়ায় খুশি ফ্লিক। সেই সঙ্গে ইনজুরি কাটিয়ে ২২২ দিন পর গোলরক্ষক টার স্টেগান মাঠে ফেরায় স্বস্তি ছিল বার্সা কোচের মধ্যে। দলে এত বদল আনার পরও কোচের ভরসা ছিল রাফিনহার ওপর। গোল করে সেই আস্থার মর্যাদা দিয়েছেন ব্রাজিলিয়ান তারকা। এক সময় রোনালদিনহোর ওপরই কোচ রাইকার্ডের আস্থা ছিল। তাই প্রায় কুড়ি বছর আগের সেই ব্রাজিলিয়ানকেই এবার যেন বারবার মনে করিয়ে দিচ্ছেন রাফিনহা।

দু’জনের খেলার ধরনে অমিল রয়েছে অনেক। রোনালদিনহো অ্যাটাকিং মিডফিল্ডার থেকে লেফট উইঙ্গার পজিশনে খেলতেন। মাঝমাঠ থেকে প্রতিপক্ষের ডিবক্স ম্যাজিক দেখাতেন তিনি। রাফিনহা সেখানে শুধুই একজন উইঙ্গার। খুব প্রয়োজন না হলে মাঝমাঠে তাঁর বিচরণ কম। তার পরও গোল করা আর করানোতে কীভাবে যেন মিলে যান দু’জন।

.

উৎস: Samakal

এছাড়াও পড়ুন:

হাঁটু ব্যথার কারণ ও চিকিৎসা

ব্যথা কোনো রোগ নয়, ব্যথা বিভিন্ন লক্ষণ মাত্র। ব্যথা হচ্ছে এক প্রকার অনুভূতি, যার মাধ্যমে আমরা বুঝতে পারি আমাদের শরীরের কোনো একটি অংশ স্বাভাবিকভাবে কাজ করছে না। ব্যথা মানব শরীরের বিভিন্ন অংশ হতে পারে। যেমন জোড়াগুলোতে ও মাংশপেশিতে। তবে জোড়ার ব্যথায় মানুষ বেশি আক্রান্ত হয়। এসব জোড়ার ব্যথার মধ্যে হাঁটুর ব্যথা বয়স্ক লোকদের মধ্যে বেশি দেখা যায়। বয়স হলে হাঁটুর ব্যথা নিত্যসঙ্গী হয়ে দাঁড়ায়। এ বয়সে কাউকে না পেলে একাই চলতে হয়। এ একা চলার পথকে ধরে বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর বলেছেন, যদি তোর ডাক শুনে কেউ না আসে তবে একলা চল রে। এই একলা চলার পথের সঙ্গী হচ্ছে আমাদের হাঁটু। হাঁটা ছাড়া আমরা এক স্থান থেকে অন্য স্থানে যেতে পারি না। ব্যথা সব বয়সেই হয়, তবে বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে হয়, যাকে ইংরেজিতে বলা হয় অস্টিও-আর্থ্রাইটিস।
কী কী সমস্যা হতে পারে
l বসা থেকে উঠতে কষ্টবোধ করা 
l বেশিক্ষণ হাঁটতে না পারা 
l নামাজ পড়তে গিয়ে হাঁটু যখন তখন টন টন করে 
l কখনও কখনও হাঁটুতে শব্দ হয়
l হাঁটু নড়াচড়া করলে বা ভাঁজ করলে কষ্ট বাড়ে
l তীব্র ব্যথা হলে ফুলে যায় বা লাল হয়ে যায় 
এমন ব্যথার কারণ
l আঘাতের কারণে হাঁটুতে ব্যথা হতে পারে
l লিগামেন্ট বা মিনিসকাস-এর ইনজুরির কারণে হাঁটুতে ব্যথা হতে পারে
l খেলাধুলা বা দাঁড়ানোর সময় হঠাৎ পড়ে গিয়ে হাঁটু মচকে গিয়ে ব্যথা হতে পারে 
l বারসা বা টেনডনের আঘাতের কারণে হাঁটুতে ব্যথা হতে পারে 
l লিগামেন্ট ইনজুরির কারণে হাঁটুতে ব্যথা হতে পারে
হাঁটু মজবুত রাখার উপায়
হাড়ের মূল উপাদান আমিষ কোজেন এবং ক্যালিসিয়াম। প্রাকৃতিক নিয়মে ৩০ বছরের পর থেকে হাড়ের ঘনত্ব ও পরিমাণ কমতে থাকে। হাঁটু দুর্বল ও ভঙ্গুরও হতে থাকে। ৫০ থেকে ৬০ বছরের দিকে হাড় অনেক দুর্বল হয়ে পড়ে। এজন্য হাড়কে মজবুত রাখতে হলে আমিষ কোলাজেন ও ক্যালসিয়াম জাতীয় খাবার খেতে হবে।
হাঁটু ব্যথা প্রতিরোধে উপায়
v হাঁটু ভাঁজ করে বেশিক্ষণ বসে কাজ করবেন না।
l অতিরিক্ত ওজন পরিহার করুন এবং স্বাভাবিক ওজন বজায় রাখুন 
l এক জায়গায় বেশিক্ষণ দাঁড়িয়ে থাকবেন না
l ভারী বস্তা বহন করবেন না
l হাই কমোড ব্যবহার করুন 
l খাওয়ার সময় চেয়ারে বসে খান
l সিঁড়ি দিয়ে ওঠানামা করার সময় সিঁড়ির রেলিং ব্যবহার করুন
ফিজিওথেরাপি চিকিৎসা
হাঁটু ব্যথার চিকিৎসা করে পুরোপুরি সারিয়ে তোলা সম্ভব নয়। কারণ সমস্যা সঠিকভাবে নিরূপণ করে, সঠিক চিকিৎসা দিলে অবশ্যই ভালো হবে। ব্যথা যখন খুব বেশি হয়, তখন অনেকে ব্যথানাশক ওষুধ, মালিশ ও গরম শেক দিয়ে ব্যথা কিছুটা কমায়। কারণ তারা না বুঝে নিজেদের চিকিৎসা নিজেরাই করে। এভাবে চলে দীর্ঘ দিন। যখন এগুলোও কাজ করে না, তখন ব্যথা তাদের জীবনের নিত্যসঙ্গী হয়ে যায়। যদি প্রথম পর্যায়ে এসব রোগী ফিজিওথেরাপি চিকিৎসা নিত এবং নিয়মকানুন মেনে চলত, তাহলে এ রোগের পরিপূর্ণ চিকিৎসা করা সম্ভব এবং অস্টিও আর্থ্রাইটিস নামক রোগটিও হতো না। এ রোগটি পরিপূর্ণ নিয়ন্ত্রণে রাখা যেত। ফলে এ রোগ থেকে তাকে পরিপূর্ণ সুস্থ করা যেত। জীবন অনেক সুন্দর। সুন্দরভাবে বাঁচতে বা ব্যথামুক্তভাবে জীবন-যাপন করতে হলে এ অবস্থায় দৈনন্দিন জীবন-যাপনে কিছুটা পরিবর্তন আনতে হবে। সঠিক ও মানসম্মত ফিজিওথেরাপি চিকিৎসা নিতে হবে। v

[বাত-ব্যথা, আর্থ্রাইটিস, প্যারালাইসিস ও ব্যাক পেইন ফিজিওথেরাপি বিশেষজ্ঞ ও কনসালট্যান্ট, আলোক হেলথকেয়ার লিমিটেড] 

সম্পর্কিত নিবন্ধ